মৌলবাদী অর্থনীতি বনাম নির্মূল কোম্পানীর অর্থনীতি পর্ব - ৩
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৪ জুন, ২০১৩, ০৪:৩২:০০ রাত
পাঁচ
জাতীয়তাবাদী মিডিয়া টাইকুন হিসাবে পরিচিত জনাব ফালূ সাহেব বেশ কয়েকবছর আগে জেদ্দায় এসেছিলেন। ঘরোয়া পরিবেশে জিজ্ঞেস করছিলাম এনটিভির প্রোগ্রাম বিষয়ে।তখন তিনি দুটি টিভি ও দুটি পত্রিকার মালিক। তিনি সাফ জবাব দিলেন এটা আমার ব্যবসা।এটা নিয়ে কোন কথা বলা যাবেনা।এর একদিন পর দেখলাম পবিত্র হারামে (মক্কায়) বেগম খালেদা জিয়ার পিছনে চেয়ার ধরে দাড়িয়ে আছেন।
বর্তমানে জেলবন্ধী এক জাতীয় নেতাকে পেলাম জেদ্দায় তার পরিচিতজনের বাসায়। সংবাদ মাধ্যমের ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা চলছিল। তখন তিনি জানালেন আমার মিডিয়া হাউসে চাকুরীর জন্য ছাত্র দলের একটা যোগ্য ছেলেকে পাইনি। ওরা শুধু পলিটিক্স করে।পরে শুনলাম পল্টনের আওয়ামীলীগের অফিস নাকি বিএনপির এই মিডিয়া ব্যক্তিত্বের জায়গায়।তা উপহার স্বরুপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন।নিন্দুকেরা বলে গত ৬ মে ২০১৩ তারিখে এই টিভি বন্ধ করার জন্য ইনু বাহিনী এসেছিল।কিন্তু তখন নাকি রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তির লাল টেলিফোন আসে। বাঙ্গালী চেতনার প্রচার আর মৌলবদী অর্থনীতি ঠেকাবার প্রচার প্রসার চালাবেন বলে মুচলেকা দিয়ে স্বগৌরবে প্রতিষ্ঠিত আছেন।
এই মহত বাঙ্গালী ও বাংলাদেশী খিচুড়ি মার্কা সাংবাদিকতার কারনে আজ জাতী জানতে পারে নাই নির্মূল অর্থনীতির উৎস কোথায়?
সোনালীব্যাংক,ডেসটিনি,শেয়ারবাজার,কুইকরেন্টাল,পদ্ধাসেতুর দুর্নিতির সমুদয় টাকা কাদের পকেটে জমা হয়েছে?টাকাগুলো কাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে? কিভাবে মিডিয়ার মুখ বন্ধ করা হচ্ছে।
কিভাবে নির্মূল অর্থনীতির রাঘব বোয়ালরা দেশের সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক ইসলামী ব্যাংক,ইবনে সিনার বিরুদ্ধে মিডিয়া ক্যাম্পেইন করছে। এর ভাগ ভাটওয়ারা কোন কোন মিডিয়া হাউস পেয়েছে। ইনভেস্টিগেশন জার্নালিজমেন মৃত্যু হয়েছে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে।
আর স্বাধীন সাংবাদিকতার দাফন কাফন সম্পন্ন করেছেন গলাকাটা রাজনীতির মহান নায়ক হাসানুল হক ইনু সাহেব যেদিন থেকে তথ্যমন্ত্রী হয়েছেন।
ছয়
মিডিয়াকে বাহন করে আজ জাতীকে বিভক্ত করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। অথচ একটা জাতীকে ঐক্যবদ্ধ করার মূল কাজটি করে থাকে রাষ্ট্রোর চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম।বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সম্পুর্ণ ভির্ন।সত্যিকার অর্থে আমার দেশের গণমাধ্যমগুলো গণশত্রুর ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।আর এই কাজে ব্যবহার হচ্ছে তথাকথিত অমৌলবাদী অর্থনীতি।কিভাবে একটু ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।
মাত্র কিছুদিন আগে ও আমরা রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত ছিলাম। সমাজে এই বিভেদরেখাটি ছিল মোটামোটি স্পষ্ট।কিন্তু বর্তমান সরকারের উপর ভর করা বামপন্থী,রামপন্থী,আর হাইব্রিড বাকশালীরা মিলে ১৬ কোটি মানুষকে সব ক্ষেত্রে বিভক্ত করেছে।
১৬ কোটি মানুষ রাজনৈতিক ভাবে বিভক্ত ছিল। বাঙ্গালী আর বাংলাদেশী।
সাংস্কৃতিক ভাবে এই বিভাজনটা শুরু হয়েছে সেই ৬০এর দশক থেকে।আজ তা ষোলকলায় পূর্ণ হয়েছে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে জাতি তেমন বিভক্ত ছিলনা। ২১ বছর ক্ষমতার বাহিরে থেকেও বাঙ্গালী চেতনার ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহন করেছেন।কিন্তু বর্তমানে শাহবাগ নামক ভারতের অবৈধ গোষ্ঠীদের দিয়ে মৌলবাদী আর ধর্মনিরপেক্ষবাদী অর্থনীতির একটি বিভেদ রেখা গড়া হয়েছে।এতে সুবিধা কাদের বেশী।
আবুল বারাকাত সাহেব যে ব্যাংকের প্রধান সেই ব্যাংক ফতুর হয়ে গেছে তাদের হাতে যাদের ৭১ এর চেতনা খুবই তীব্র। সরকারী চারটি ব্যাংকের অবস্থা সোনালী ব্যাংকের মতই। গত চার বছরের কালো টাকাগুলো হালাল করার জন্য প্রাইভেট ব্যাংক দেয়া হয়েছে সবার সামনেই। সেগুলোর মার্কিটিং করার জন্য ইসলামী ব্যাংকের বারোটা বাজানো প্রয়োজন। সেই কাজটা করছে ৭১ এর চেতনা নামক উৎপীড়ক দিয়ে। বাংলাদেশের মানুষ এদেরকে বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করে না তাদের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমুহকে। তাই ধর্মনিরপেক্ষ অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন মৌলবাদী অর্থনীতি নামক এক ছায়া শত্রুর। আবুল বারাকাত,ইব্রাহিম খালিদের মত গবেষকের প্রয়োজন এই জায়গায়। মিডিয়াতে তাদের কদর এজন্য ই বেশী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর যিনি রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক পুত্র বলে জাহির করেন। তার আমলেই বাংলাদেশের ইতিহাসে ব্যাংকিং জগতের সবচেয়ে বড় কলংকের তীলক অতি যোগ্যতার সাথে ই জুড়ে দিয়েছেন।
হয়তো আগামীতে তিনি এই মহত! কর্মের জন্য ভারতীয় বড় কয়েকটি পদক পেয়ে যাবেন। অসম্ভব নয় তাকে ইতিহাসের সেরা ব্যাংকার পদবীটা ও দেয়া হতে পারে।
বিষয়: রাজনীতি
১৪৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন