পাকিস্থানের নির্বাচন এবং জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১৪ মে, ২০১৩, ০৪:১৪:৩৩ বিকাল
এক)
পাকিস্থানের ইতিহাসে এই প্রথম একটি নির্বাচিত সরকার তার পুরা মেয়াদ শেষ করলো।মিষ্টার ১০% (দুর্নীতিবাজ) জারদারীর সরকার এই প্রথম সংসদের মেয়াদ শেষ করতে পারলো।এবং বলা যায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল।যদি ও নির্বাচনের প্রচারণার সময় বলা হচ্ছে ১৩০ এর উপর মানুষ নিহত হয়েছে।বোমা মেরে দেশের জনশক্তি কমাবার প্রকৃষ্ট উদাহারন হল পাকিস্থান। আর এটাই তাদের বর্তমান বাস্তবতা।
কোন এক বিদেশী পত্রিকায় পড়েছিলাম ২০১২ তে গড় হিসাবে প্রতিদিন ২৩ জন করে বোমার আঘাতে জীবন দিতে হয়েছে। অবশ্য পাকিস্থানের বন্ধু আমেরিকার প্রাত্যহিক উপহার ড্রোন বোমায় নিহত বনি আদম এই ২৩ সংখ্যার মধ্যে নেই।সেই হিসাব আলাদা।
১১ তারিখের নির্বাচনটা পাকিস্থানের গণমানুষের জন্য একটি ইতিবাচক ইতিহাস।তবে পাকিস্থান নামক রাষ্ট্রের এবং নেতেৃত্বের জন্য একটি কলংকের ইতিহাস।
সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। হিসাবের খাতায় সেই ১৯৪৭ সাল থেকে আজ ২০১৩ সাল। সিন্দু নদী আর পাখতুন উপত্যকার উপর দিয়ে অনেক রক্ত গড়িয়েছে।এ পর্যন্ত পাকিস্থান রাষ্ট্রযন্ত্রের মালিক যারা ছিলেন তারা সবাই দেশটির জন্মের ইতিহাসের সাথে মিরজাফরী করেছেন। এটাই ছিল তাদের রাজনীতি।পাকিস্থানের রাজনীতিবিদরা কখনো দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যমত হতে পারেননি। বরাবরই তারা ভিন দেশের ক্রীড়ণক হয়ে রাজনীতি করেছেন।
উপমহাদেশের একমাত্র দেশ পাকিস্তান যারা নিউক্লিয়ার পাওয়ারের মালিক হবার পরও রাষ্ট্রের মালিকরা বরাবরই আমেরিকার দালালী করেছেন।দেশটির ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে ওয়াশিংটনে অথবা দুবাইতে।এই ত্রিভুজ থেকে পাকিস্থানের জনগণ কখনো বের হতে পারে নাই।
নতুন প্রধানমন্ত্রী পান্জাবের ব্যবসায়ী জমিদার পুত্র নওয়াজ শরীফ এর ব্যতিক্রম নয়।নওয়াজ শরীফ সরাসরি দালাল নয় বরং সার্টিফিকেট পাওয়া দালালদের একনিষ্ঠ দালাল।পারভেজ মোশারফ যখন নওয়াজ শরীফকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্থান থেকে তখন তিনি আমার পাশে ই থাকতেন। একই মসজিদে সালাত আদায় করতাম। প্রতিদিন ই প্রায় তার গাড়ি বহরের সাথে দেখা হত। তিনি থাকতেন জেদ্দা শহরের আল রঈস এলাকার আলীশান এক মহলে।
দুই)
একদিন আগে পরে স্বাধীন হওয়া ভারত আর পাকিস্থান। দুটি দেশই নিউক্লিয়ার পাওয়ারের মালিক।ভারতের নিউক্লিয়ারের জনক আবুল কালামকে প্রথমে ভারতরত্ম পদক দিয়ে সম্মানিত করে। তার পর দেশের প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে তিনি ভি ভি আইপির মার্যাদায় রয়েছেন।
অপরদিকে পাকিস্থানের নিউক্লিয়ারের জনক জনাব আব্দুল কাদের খাঁনকে প্রথমে নযর বন্দী করে রাখা হয়। তারপর টেলিভিশনে জাতির কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার দৃশ্য পাকিস্থানে গণমানুষ দেখে। সর্বশেষ আরো ১৭ মাস আবার নযর বন্দী করে রাখা হয়। এখন তিনি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন জমিয়তে তালাবার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
ডক্টর কিউ খান ভুপাল থেকে পাকিস্থানে এসেছিলেন।তার পিতা ছিলেন একজন হাইস্কুল মাষ্টার। আর ডক্টর আবুল কালাম মাদ্রাজ থেকে প্রথমে চন্ডিগড় তারপর আবার মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা।তার পিতা ছিলেন একজন মাছ বিক্রেতা।
দুজনই তার দেশের জন্য কাজ করেছেন।কিন্তু দুইজনের মুল্যায়ন হয়েছে সম্পূর্ণ ভির্ন।একজন জাতীর হিরোর আসনে রয়েছেন। আর অন্যজন জাতীয় ভিলেনে রুপান্তরিত হয়েছেন।জাতীয় চরিত্রগুলোকে এভাবে ই মূল্যায়ন করেছে।
পাকিস্থানের উদাহরণকে অনুসরন করে বর্তমান ডিজিটাল সরকার আমাদের একমাত্র নোবেল লরিয়েট ডঃ ইউনুছকে একই রকম অপমান করেছে। বেচারা ইউনুছ সাহেব বিশ্ব জয় করতে পারলে ও নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রীর মন জয় করতে পারেননি।
এই একটি উদাহারন থেকে বুঝা যায় পাকিস্থান আর বাংলাদেশের রাজনীতির আজিব এই মানুষগুলোর মানসিকতা,মানবিকতা,দেশ প্রেম বা জাতির প্রতি দ্বায়বদ্ধতা।
তিন)
১১ মে ২০১৩ তারিখে যে নির্বাচন হল সেটাকে পাকিস্থানের ইতিহাসে সবচেয়ে নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন বলছেন পর্যবেক্ষক সবাই। সবচেয়ে বেশী ভোটারের আগমন ছিল ভোট ক্যাম্পে। এর মধ্যে তরুন ভোটারই বেশী ছিল।করাচিতে যে সমস্যা হচ্চে (এখনো চলছে) এবং নির্বাচন কমিশনে সিদ্ধান্ত (বাতিল করেছে কয়েকটি প্রাদেশিক আসনের নির্বাচন) তার জন্য বরং নির্বাচন কমিশনারকে বাহবা দিচ্ছে সবাই।
এই পর্যন্ত যা ফলাফল এসেছে তাতে প্রদেশ ভিত্তিক একটি পর্যালোচনা করা যেতে পারে।কারন যত বিরোধ আর সমালোচনা করা হউক পাকিস্থানের। মন্দ উদাহারনগুলো অনুসরনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নেতারা অগ্রসর।বাংলাদেশের জামায়াত এই ক্ষেত্রে বিপরীত।
পাকিস্থানের এই নির্বাচনে সবচেয়ে অবস্থা করুন হল জামায়াতে ইসলামীর।একেবারে গোহারা হেরেছে। যদিও আজ একটি ভিডিও বার্তায় জামায়াতে ইসলামী পাকিস্থান এর আমীর জনাব সাঈয়্যেদ মনোয়ার হোসেন একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি নির্বাচনকে মেনে নিয়েছেন। স্বাগত জানিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রীকে। আবার তার দলের নেতা কর্মীকে শান্তনার জন্য কিছু বিষয়ের অবতারণা করেছেন।এগুলো গতানুগতিক মূল্যায়ন।তবে তাকে খুবই বিব্রত মনে হয়েছ।আবার আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শুরা মিটিং ডাকবেন এবং নির্বাচনের পরাজয়ের কারন বিশ্লেষন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
তবে এটা নিশ্চিত জামায়াতের যে সংস্কারের পদ্ধতি তাতে কিছুই করা হবে না।বরং পাকিস্থান জাতিকে বোকা,নিমক হারাম,ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা,গোত্র সিসটেম ইত্যাদি দোষ চাপিয়ে নিজেরা আড়ালে ই থাকবেন।নিজেদের সাংগঠনিক পদ্ধতি,জামায়াত নেতাদের চিন্তার জগতটাকে সেই ১৯৪১ সালেই অবস্থান করছে। চিন্তা,চেতনা এবং পদ্ধতিগত দিক থেকে জামায়াত কখনো সময়ের সাথে সাযুজ্যতা রেখে তাদের কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করে নাই।বরং নিজেদের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে ইসলাম প্রিয় ব্যক্তি,সমাজ এবং গোষ্ঠিকে।গত ৭৩ বছর এভাবে চলছে উপমহাদেশের এই বৃহত ইসলামী আন্দোলন।
জামায়াত কখনো সময়ের প্রয়োজনে বা যুগের চাহিদাকে সামনে রেখে অথবা গণমানুষের আশাআকাংখার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সংস্কার করে নাই। বরং যখনই বাহির থেকে (রাষ্ট কতৃক) চাপিয়ে দেয়া বিষয়গুলো পরিবর্তন করেছে। এটা যেমন ছিল সেই আয়ুবী আমলে ঠিক তেমন বর্তমান ডিজিটাল যুগে।জামায়াতের আভ্যন্তরীন বাস্তবতাটা এরকমই।
তবে সান্তনা হল পাকিস্থানের জামায়াতের আমীর মৌখিক একটা ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন, কিন্তু আমার দেশে এই কাজটাও করার কোন প্রয়োজন মনে করা হয় না।বরং সকল ব্যর্থতার দায়ভার সব হয় মিসকিন জনগনের। এ ভাবে ই চলছে গত ৭৩ বছরের জামায়াতের ইসলামী রাজনীতি।
যে আন্দোলন ৭৩ বছরেরও জাতিকে একটা রাজনৈতিক ধাক্কা দিতে পারলোনা সেই আন্দোলনের পদ্ধতিতে অবশ্যই গলদ রয়েছে।
৭৩ বছরে কয়জন নেতা তৈরী হয়েছে যারা জাতির রাহবার হবার মত যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়েছেন গণমানুষের কাছে।
৭৩ বছরে কয়জন জাতীয় আর্ন্তজাতিক ইসলামী স্কলার,রাজনৈতিক,প্রফেশনালিষ্ট তৈরী করতে পেরেছেন যাদের আযান গণমানুষের কান পর্যন্ত পৌছায়।
৭৩ বছরে ইসলামী সাহিত্যের কোন বিভাগে কাজ হয়েছে যার জন্য মুসলিম উম্মাহ গর্ব করতে পারে।
সেই ১৯৪১ ইংরেজীর তাফসীর,সাহিত্য নিয়ে তো জামায়াতের বর্তমান পথ চলা।
আমি পাকিস্তানের নির্বাচনে জামায়াতের ভুমিধঃসের কারণগুলো পর্যালোচনা করছি না। ২৭২ আসনের মধ্যে মাত্র তিনটি আসন পাওয়াকে পরাজয় বললে হয়তো পরাজয় শব্দের ও অপমান হবে।
চার)
পাকিস্থানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন সংখ্যা হল ২৭২ টি।দুইজন ইতিমধ্যে পরাপারে চলে গেছেন বোমা হামলায়।তাই আসন সংখ্যা হল ২৭০।
২৭০ টি আসনের মধ্যে ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে মোট ২৬৪ এর।হয়তো আগামী কাল পর্যন্ত বাকি ছয়টি আসনের ফলাফল পাওয়া যাবে।
পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের (প্রাদেশিক) আসন সংখ্যা হল - যেমন
পান্জাব প্রদেশে মোট আসন সংখ্যা ২৯৭ টি।
সিন্ধ প্রদেশে মোট আসন সংখ্যা ১৩০ টি।
পাখতুন প্রদেশে মোট আসন সংখ্যা ৯৯ টি।
বেলুচিস্তান প্রদেশে মোট আসন সংখ্যা ৫১ টি।
জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে প্রাপ্ত দলীয় অবস্থান হল
এরকমর ঃ
মুসলিমলীগ (নুন) সংক্ষেপে পিএমএল। তারা পেয়েছে ১২৪ টি আসন।
পান্জাবে পেয়েছে ২০১ টি।সিন্ধে মাত্র ১টি। পাখতুনে ১২ টি।আর বেলুচিস্তানে ৯টি।
--------------------------------------------------------------
তেহরীকে ইনসাফ সংক্ষেপে পিটিআই। তারা পেয়েছে ৩২ টি আসন।
পান্জাবে পেয়েছে ২০ টি।সিন্ধে কোন আসন পায় নাই।পাখতুনে ৩৪ টি।আর বেলুচিস্তানে কোন আসন পায় নাই।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছে জাতীয় পরিষদে ৩১ টি আসন।
পান্জাবে পেয়েছে ৪৩ টি।সিন্ধে পেয়েছে ১৩টি আসন।পাখতুনে ১৩ টি।আর বেলুচিস্তানে ৭টি।
-------------------------------------------------------
পাকিস্থান পিপলস পার্টি সংক্ষেপে পিপিপিপি। তারা পেয়েছে ৩০ টি আসন।
পান্জাবে পেয়েছে ৬ টি।সিন্ধে মাত ৬৯টি। পাখতুনে ২ টি।আর বেলুচিস্তানে কোন আসন পায় নাই।
--------------------------------------------------------
এমকিউএম - করাচি ভিত্তিক দল - তারা পেয়েছে ১৭ টি আসন।
চারটি প্রদেশের মধ্যে শুধুমাত্র সিন্ধে পেয়েছে প্রাদেশিক পরিষদে ১৮টি। বাকি কোন প্রদেশে তারা কোন আসন পায় নাই।
--------------------------------------------------------------
জমীয়তে উলামায়ে ইসলাম সংক্ষেপে জেইউআই (মুফতি ফজলুর রহমান) তারা পেয়েছে ১০ টি আসন।
পান্জাবে পেয়েছে ০১ টি।সিন্ধে কোন আসন পায় নাই।পাখতুনে ১৩ টি।আর বেলুচিস্তানে ৪ টি।
---------------------------------------------------------
পাকিস্থান মুসলিম লীগ এফ সংক্ষেপে পি এম এল। তারা পেয়েছে ০৬ টি আসন।
পান্জাবে পেয়েছে ০১ টি।সিন্দে ৬ টি।পাখতুনে ৩ টি।আর বেলুচিস্তানে কোন আসন পায় নাই।
------------------------------------------------------------
পাকিস্থান জামায়াতে ইসলামী সংক্ষেপে জেআই। তারা পেয়েছে ০৩ টি আসন।
পান্জাবে পেয়েছে ০১ টি।সিন্দে কোন আসন পায় নাই।পাখতুনে ০৭ টি। এবং বেলুচিস্তানে কোন আসন পায় নাই।
---------------------------------------------------------------
মিল্লি আওয়ামী। তারা পেয়েছে ০৩ টি আসন।
তারা শুধু মাত্র বেলুচিস্তানে পেয়েছে ৯ টি আসন। বাকি তিন প্রদেশে কোন আসন পায় নাই।
পাচ)
পাকিস্তানের ঐতিহাসিক এই নির্বাচনের এই হল ফলাফল। ইতিমধ্যে নওয়াজ শরীফ খুচরা দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা শুরু করেছেন। তিনি হবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তাকে দুই বারই বিতাড়িত হতে হয়েছে পাকিস্তানের আর্মি নামক মহা দানব দ্বারা। দানব বললাম এই জন্য পাকিস্থানের আর্মি সবসময় তার দেশের জনগণের সাথে যুদ্ধে জয়ী হয়েছে।কেননা পাকিস্থানের আর্মীর জেনারেলরা বিদেশীদের দালালী করাই তাদের চাকরি কন্ট্রাক্ট। এবার ও জেনারেল কায়ানী সাহেব তার সিগনাল দিয়েছেন নওয়াজ শরীফকে। ৭০ জন আর্মি সিনিয়র অফিসার ইতিমধ্যে দেখা করে জিজ্ঞেস করেছেন তাদের প্রাক্তন বস মোশারফের ভবিষৎ সম্পর্কে।
আরেকটি বড় ফ্যক্টর হল আদালতের বিচারপতিরা।এখনো আলোচিত বিচারপতি রয়েছেন তার পদে। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে তিনি ২০১৮তে অবসরে যাবেন।তাকে সন্তুষ্ট রেখে নওয়াজ শরীফ দেশ কিভাবে চালাবেন তা দেখার বিষয়।
পিপির প্রধানমন্ত্রীদেরকে যেভাবে আদালত পাড়ায় হাজির হয়ে মুসলেকার পর মুচলেকা দিয়ে সময় পার করতে হয়েছে, ঠিক সেভাবে নওয়াজ শরীফকে দিতে হয় কি না কে জানে। কারন ইতিমধ্যে পাকিস্থানের মানুষের কাছে আলোচিত বিচারপতি সাহেব বিতর্কিত হয়ে আছেন।অবশ্য তিনি ঐতিহাসিক বেশ কিছু পদক্ষেপের কারনে আলোচিত,সমালোচিত হয়ে আছেন।আরেকটি নেপথ্য ফ্যক্টর হল জামায়াত।
জামায়াত সম্পর্কে একটা কথা রয়েছে। সেটা হল জামায়াত সবসময় সরকার পতনের কাজটি করতে পারে দক্ষ ভাবে। কিন্তু তার পর সেই ফল ঘরে তুলতে পারে না।বরাবরই অন্যের কামলা খাটে জামায়াত। কিন্তু নিজের ভীশন জাতীর প্রতিটি সদস্যকে আন্দোলিত করার মত নেতৃত্ব বা ভীশন নেই জামায়াতের। জনাব সাইয়্যেদ মনোয়ার হোসেন সাহেবের আগে যিনি ছিলেন আমীর তিনি ছিলেন পাঠান সম্প্রদায়ের। তার একটি গ্রহনযোগ্যতা ছিল গোটা পাকিস্থানে। কিন্তু বর্তমানে জামায়াতে সাইয়্যেদ মনোয়ার হোসেন সাহেবের পর লিয়াকত বেলুচ কে ভাবা হচ্ছে আমীর হিসাবে। কিন্তু জামায়াতের গঠনতান্ত্রিক পদ্ধতির বেড়াজালে হয়তো লিয়াকত বেলুচ পারবেন না।আবার নতুন পরিস্থিতিতে কি হয় দেখতে হবে আরো কিছু দিন।
আরেকটি ইতিহাস রয়েছে জামায়াতের। এটা শুধু পাকিস্থানে নয় বরং বাংলাদেশেও একই অবস্থা। গতিশীল নেতৃত্ব,মেধাবী,গণচরিত্রের নেতৃত্ব এবং অগ্রসর চিন্তার মানুষগুলো কেন যেন জামায়াতে বরাবরই কোনঠাসা হয়ে পড়ে।একসময় নির্জীব হয়ে হজম কমিটির গর্বিত সদস্য হিসাবে জীবন কাঠাতে হয়। আমি উদাহরন দিলাম না। কারন এতে আমাদের অনেকের ই পছন্দ হবে না।
জামায়াত ৭৩ বছর থেকে নিরন্তর একটি আদর্শবাদী দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। এই সফলতা কম কিসের। জামায়াত তার নিজের সকল সীমাবদ্ধতা নিয়ে ময়দানে টিকে আছে এটা একটা রাজনৈতিক দলের বড় সফলতা।
কিন্তু তার পর ও বেলা শেষে প্রশ্ন থেকে যায়। আখেরাতের নাযাতের জন্য না হয় অপেক্ষা করা গেল দুনিয়ার সফলতার জন্য আর কত বছর? আর কত রক্ত? আর কত সমঝোতা? আর কত কৌশল? ইসলামী আন্দোলন? ইসলামী আন্দোলন? তার পর বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলন?
পাকিস্থান এর পূর্বে একটি বৃহত নির্বাচন হয়েছিল ১৯৭০ সালে। সেই নির্বাচনে পাকিস্থান দুই ভাগ হয়েছিল। ১১ মে ২০১৩ সালের নির্বাচনে পাকিস্থান চারভাগে ভাগ হয়েছে। নওয়াজ শরীফ পান্জাবে তিনি পান্জাবী। ইমরান খান পাখতুনে তিনি পাঠান।জারদারী (বেলাওয়াল) সিন্ধে।বেলুচিস্তানে আলতাফ।
বিষয়: বিবিধ
২১০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন