ইসলামপন্থীদের নিয়ে ভারতের পোড়ামাটি নীতি ও বিএনপির রাজনীতি

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০৬ মে, ২০১৩, ০৩:০৩:২১ দুপুর



আজ সকাল বেলা নাস্তা করছিলাম আর টিভি দেখছিলাম।(০৬.০৫.২০১৩) গতকাল রাতে হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের চিত্র দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।সকাল বেলা টিভি খুলতে দেখি দিগন্ত চলছে না। ইসলামিক টিভি ও না। একটু পর খবর নিয়ে জানতে পারলাম আমার প্রিয় দেশ আবার ১৯৭৫ পূর্ব অন্ধকারের দিকে যাত্রা শুরু করেছে।১৯৭৫ পূর্ব বাকশালী ফ্যসিষ্টরা একই কাজ করেছিল।প্রতিদিনের অফিসের তাড়া।বাসা থেকে অফিস আসতে আসতে ভাবছিলাম রাতের এই পরিকল্পিত হত্যার দ্বায় কাদের বেশী। যাদেরকে হত্যা করা হল তাদের অপরাধের মাত্রাটা কত ভয়ংকর ছিল।তা না হলে কেন আমাদের পুলিশ আমাদের বিজিবি আমাদের র্যব এই গণহত্যা জড়ীত হল।তাহলে মাদ্রাসার হজুরদের এটাই কি ছিল একমাত্র প্রাপ্য। আল্লাহ রাসূলের পক্ষে দাড়াবার উত্তম শাস্তি?

কালো পিচঢালা রাজপথে এখনও পানির মতো গড়িয়ে যাচ্ছে তাজা রক্তের ধারা। রোববার গভীর রাতে সেখানে ফ্যাসিবাদি আওয়ামী সরকারের যৌথ বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে নিরস্ত্র আলেম-ওলামাদের ওপর। রাত আড়াইটা থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলা এ তান্ডবে কতজন মারা গেছেন বা আহত হয়েছেন তার কোনো পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি।কেউ বলছেন হাজারের উপর। আবার কেউ বলছেন আরো অনেক বেশী।

তথাকথিত নির্বাচিত সরকারের পক্ষ থেকে জনগনের জন্য এটাই ছিল হয়তো শেষ সমাধান?

আমরা এ কোন হালাকুর দেশে, হিটলারের দেশে বসবাস করছি?এর দ্বায়টা কাদের।কেউ কি এই দায়িত্বটা নিতে হবে না।

বিএনপিকে বলা হয় তারা জাতীয়তাবাদি এবং ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসীর দল। ২০১২ থেকে আজ পর্যন্ত যারা নিহত হলেন।তাদের অপরাধ কি ছিল?

যারা নিহত হলেন তাদের ঘামের পয়সায় এই পুলিশ,র্যব,বিজিবি, আর্মিদের পোশাকআশাক খাদ্য সরবরাহ হয়ে থাকে।শাপলা চত্তরে রাতের আধারে যারা গুলি আর গ্র্যনেড চার্চ করলেন তাদের পরিচয় কি? তারা কি এদেশের সন্তান নয়। তাদের আত্মীয় স্বজন রা কি এদেশে বসবাস করেন না। তারা কি ভাড়াটে খুনি না ভাড়াটে সন্ত্রাসী?

গত সপ্তাহে একটি খবর চাউর হচ্ছিল বাংলাদেশের হজুরদেরকে শায়েস্তা করার জন্য ভারত পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে। সরকারকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যে করে হউক এদেরকে দমন করতে হবে। এর কিছুদিন পূর্বে আমাদের সেনা বাহিনীর প্রধান ভারত সফর করে এসেছেন। তখন নাকি এই সিদ্ধান্ত হয়।

আরো বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের যে কোন বাহিনী কোন আবেগী সিদ্ধান্ত নিলে ভারত হস্তক্ষেপ করবে।এই খবরগুলো ছিল শুধুমাত্র খবর। কিন্তু যেদিন ড্যানম্যজিনা ম্যডাম খালেদার সাথে দেখা করলেন এবং বিএনপির সদস্য সচিবের মত করে গুলশানের অফিসে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন তখন কেউ কেউ বলেছিল একটা বড় ড্রিল হয়েছে।
এই ড্রিলটা কি তা গত রাতে দেখালো সরকার। মাঝখানে নিরাপরাধ কিছু আলেম ওলামাকে মরতে হল।বিএনপি তারা ভদ্রলোকের মত রাতে মিটিং করে ই দায়িত্বটা শেষ করলো।

গত রাতে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সাধারণ গণমানুষের পক্ষে দাড়াবার জন্য। কিন্তু বিএনপির ড্রইংরুমের রাজনৈতিক নেতারা কেউ ই তাদের ড্রইংরুম ছেড়ে ময়দানে আসেন নাই। হয়তো তারা বসে বসে হিসাব করছেন কে কোন মন্ত্রীত্বের আসন গ্রহণ করবেন।এই বাস্তবতায় শেষ সমীকরণ কি করা যায়। গণহত্যার দ্বায়টা কি ম্যডামকে নিতে হবে না? দেশের মানুষ যাকে দেশনেত্রী উপাধী দিল সেই নেত্রী তার মেইকআপ করা নেতাদের নিয়ে গুলশানে বসে আলোচনা করবেন। দায়িত্ব বলতে কি এটুকুনকেই বুঝায়?

আজ দিগন্ত বন্ধ,ইসলামীক টিভি বন্ধ। তার পর কার পালা।

গণহত্যার স্বীকার আজ ইসলাম পন্থীরা,এটা কি অসম্ভব আওয়ামী ফ্যসিষ্ট ও বাকশালীদের জন্য,যে বিএনপির নেতৃত্বকে এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি করা। তখন যারা পাশে দাড়াবার কথা তারা তো এখন লাশ হয়ে যাচ্ছে।গতকাল রাতে যদি বিএনপির নেতা কর্মীরা বের হয়ে আসতো তাহলে তো এই ম্যসাকার হত না।নিরপরাধ এই মানুষগুলোর প্রাণ দিতে হত না।

এই বাস্তবতায় যদি বলি এই হত্যার দ্বায় বিএনপিকেও নিতে হবে।

তাই সিদ্ধান্ত নেবার সময় এসেছে বাংলাদেশের ইসলাম পন্থীদের। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ফ্যসিষ্ট বাকশালীদের মোকাবেলা এবং অন্যের নির্বাচনী ভাড়া খাটা কমলা না হওয়ার।আগামী নির্বাচনে সকল ইসলাম পন্থীরা এক হয়ে নির্বাচন করলে এবং সবাই যদি এক বাস্কে ভোট দেয় তাহলে যারা ড্রইংরুমে বসে মন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখছেন তাদের কিছুটা হলেও বোধদ্বয় হতে পারে।

পারবে কি সকল ইসলাম পন্থীরা এক হয়ে নির্বাচনে আওয়ীলীগ ও বিএনপির মোকাবেলা করতে?

গত রাতের শহীদদের রক্তের বদলা এভাবে ই নেয়া সম্ভব। নতুবা আমাদের সম্মানীত আলেম ওলামারা এভাবেই প্রতারিত হবেন। অন্যের নির্বাচনী বৈতরণী পারাপারের খেয়া হয়ে ই সারা জীবন রাজনীতি করতে হবে।রাজনীতির মাঠে যারা বিটিম হয়ে রাজনীতি করেন তারা কখনো নিজেদের খেলা দেখাতে পারেন না।

প্রত্যাশাটা একটু বেশী নয়। কারন গতকাল যে রক্ত ঝরেছে সেই রক্তের দাম পরিশোধ করা আমাদের তথা দেশের জনগণের দায়িত্ব।


বিষয়: বিবিধ

১৯৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File