বিএনপির রাজনীতি,গণহত্যা,ডান্ডা বেড়ী,ইলিয়াস আলী
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:১৫:২৫ দুপুর
বিএনপির রাজনীতি কেমন বা বিএনপি কিসের রাজনীতি করে? এই প্রশ্ন করলে বিএনপির সাধারণ কর্মীরা বলবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রাজনীতির কথা।
একটু সচেতন হলে বলবে, জিয়ার প্রণীত ১৯ দফার রাজনীতি কথা।
আরেকটু সচেতন হলে বলবে, সামগ্রিক জাতীয়াতাবাদি রাজনীতি।যার সাথে আছে কয়েক চিমটি ইসলামী মুল্যবোধ।
জিয়ার আমলের বিএনপি আর বর্তমান বিএনপির মিল কোথায়? কি আদর্শে? কি আচরণে? কি চেতনায়?
বিএনপি কঠিন আন্দোলন দিচ্ছে এই ঘোষনার বয়স কত?
বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতাদেরকে জেলে পাঠানো,ডান্ডাবেড়ী পরিয়ে আদালতে হাজির করা,গুম করা,হত্যা করা,মামলা দিয়ে নযর বন্দী করা ইত্যাদি শুরু হয়েছে কখন থেকে?
যে দিন এক কাপড়ে খালেদা জিয়াকে বের করা হল বাড়ি থেকে।খালেদা জিয়া চোখের পানি ফেললেন। আশে পাশের বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতারা কত হাহুতাশ দেখালো? ইলিয়াছ আলীকে যখন গুম করা হল তখন বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতারা হাফ ছেড়ে বাচলেন? ব্যটা উঠকো ভারতের বিরুদ্ধে বেশী কথা বলতো।নেতাদের ভাবখানা এমন যে একটা আপদ বিদায় হয়েছে। জেদ্দাতে বিএনপির একজন কেন্দ্রিয় নেতার সাথে কথা হচ্ছিল ইলিয়াস আলীকে নিয়ে। তিনি সাফ জবাব দিলেন ইলিয়াস আলী যেভাবে রাজনীতিতে এসেছিল ঠিক সেভাবে তার সমাপ্তি হয়েছে।
নির্মম পরিহাস হল এই নেতাকে কিছু দিন আগে ডান্ডাবেড়ী পরিয়ে আদালতে হাজির করেছে দেখে আমার বড়ই করুনা হয়েছিল। আমার সুযোগ হলে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতাকে জিজ্ঞেস করতাম তিনি কি ডান্ডা বেড়ী পরাবার মত ভংকর অপরাধ করেছেন কি না? এভাবে আরো অসংখ্য উদাহারন দেয়া যেতে পারে।
বিএনপি গত চার বছর দেশের জনগণের দাবী নিয়ে কখনো আন্দোলন করেছে, শক্ত ভাবে এই প্রমান দিতে পারবেনা। আন্দোলনের নামে কিছু মানববন্ধন আর প্রেসক্লাবে বসে কিছু অনুষ্ঠান করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে নাই।তবে সবসময়ই হুংকার দেয়া হয়েছে আমরা কঠিন আন্দোলনের কর্মসুচি দিব।বাগাড়ম্বর কিছু বক্তৃতা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি দলটি।
শেয়ার বাজারের ৩৩ লক্ষ মানুষের শেষ অবলম্বনটুকু নব্য ডিজিটাল কাবুলীওয়ালারা যখন গিলে খাচ্ছিল তখন বিএনপি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিল।এই একটি ইস্যূতে সরকারের পতন করানো যেত। একটি স্বাধীন দেশে এভাবে গরীব মানুষকে ডেকে এনে সবকিছু কেড়ে নেবার ডাকাতি পৃথিবীর কোথাও হয়েছে কিনা সন্দেহ।বাংলাদেশে সম্ভব হয়েছে একটি মাঝাভাংগা,অপাদর্থ,মেরুদন্ডহীন বিরোধীদল হওয়াতে। এর জন্য দায়ী শুধু সরকার নয় বরং বিএনপি ও।
২০১৩ তে এসে সরকার যে গণহত্যা চালালো, তার জন্য দায়ী কি শুধু শেখ হসিনা।একটি গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় সরকারের পার্টনার হল বিরোধী দল।
আজ থেকে দুই বছর পূর্বে বিএনপি কঠিন আন্দোলনে যেত, তাহলে ইতিহাসের এত বড় ম্যাসাকার হত না।
শেখ হাসিনা এই সাহস পেয়েছেন বিএনপির দুর্বল অবস্থানের কারনে।
বলা হয়ে থাকে বিএনপি হল, ড্রইংরুমের রাজনৈতিক দল।আবার বলা হয়ে থাকে বিএনপি হল, সরকারী দল।
আবার কেউ বলে থাকেন বিএনপিতে বিএনপির রাজনীতি কেউ করেনা। শুধু মাত্র বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া আর কেউ ই বিএনপির রাজনীতিতে আত্মস্ত নয়।
সবাই নিজের আখের গোছাবার বিএনপি করেন। এমন কি তারেক জিয়াও।
বিএনপির ৯০ এর ছাত্র নেতারা আজ কোথায়? না তাদেরকে দলে মূল্যায়ন করা হয়েছে সঠিক ভাবে আর না তারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করার প্রমান দিতে পেরেছে।
বিএনপি ক্ষমতায় ছিল সবচেয়ে বেশী সময়। বুদ্ধিভিত্তিক একটি বলয় তৈরী করার যথেষ্ট সময় পেয়েছিল।
আজ মিডিয়াতে সবচেয়ে বেশী আক্রমনের লক্ষ্যবস্তু হল বিএনপি। ক্ষমতায় থাকতে শুধু লাইসেন্সব্যবসা করেছেন। কাদেরকে দেয়া হচ্ছে,কেন দেয়া হচ্ছে,তাদের যোগ্যতা কি? ইত্যাদি বিবেচনা করে মিডিয়ার লাইসেন্স দিলে আজ বিএনপির এই করুণ দশা হত না।প্রিন্ট মিডিয়া এবং স্যটালাইট মিডিয়াতে বিএনপি আজ মরা এতিম।
কোথাকার এক টোকাই ফালূ কে মিডিয়া টাইকুন বানানো হল।দুইটা টিভি দুইটা জাতীয় দৈনিক আরো কত কিছু। এই ফালু সাহেবের বর্তমান ভুমিকা কেমন? ঐতিহাসিক ৭ ই নভেম্বর বা জিয়ার জন্ম, শাহাদাত দিবস ইত্যাদি পালনে ফালূ সাহেবের টিভি এনটিভি অন্য দশটা টিভির মতই। বরং বিএনপি বা জামায়াতের খবর পরিবেশনে তথাকথিত নিরপেক্ষ।সমস্যা হল বিএনপি করেন মিডিয়ার মালিক কিন্তু তার মাথায় বিএনপির রাজনীতি নেই।জাতিয়তাবাদি চিন্তুা চেতনা কাহাকে বলে এগুলো কিছুই তাদের জানা নেই। বিএনপির বনিক শ্রেনী রয়েছেন। তারা বিএনপি করেন কিন্তু তাদের মিডিয়াতে জিয়া,বিএনপি,জাতিয়তাবাদ,ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর ইত্যাদি হল অপাংক্তেয়। এটাই তো বাস্তবতা।
আওয়ামীলীগকে পছন্দের জায়গা অনেক, তারা যা বলে তা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। আশেপাশের কিছুই তাদেরকে প্রভাবিত করেনা। এর জন্য যতই বদনাম হউক না কেন। চুড়ান্ত অমানবিকতা,হিংস্রতা,রাজনৈীতক ডিগবাজি দিতে হলেও আওয়ামীলীগ দেয়।আওয়ামীলীগের বর্তমান নেত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ তার আপন লক্ষ্যে পৌছার জন্য সকল প্রকার ভদ্রতা,সামাজিকতা,আইন আদালত কিছুই তোয়াক্কা করেননা।
এমন একটি জঙ্গী,অসভ্য,অমানবিক,দানবের মহা ক্ষতি থেকে দেশ, জাতিকে বাচাতে হলে ড্রইংরুমের রাজনীতি করে সম্ভব নয়। বরং মামলা হামলা রিমান্ড আর ডান্ডাবেড়ী কপালে আছে। যারা ইতিমধ্যে জেলের ভিতরে রয়েছেন তারা কিছুদিনের মধ্যেই নতুন মেহমানদেরকে স্বাগত জানাবেন। আপাদত বিএনপির রাজনীতি সে দিকে ই অগ্রসর হচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
১৭৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন