ইয়াবা কথন

লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ০২ জুন, ২০১৮, ০৪:৪৪:৩৮ বিকাল

অডিও ক্লিপ সোরগোল পড়ে গেছে গোটা দেশে। কন্যা এবং বাবার সংলাপগুলো শুনলে চোখে জল না গড়ানোটাই কষ্টকর। ক্রসফায়ার এর গোড়াটা সবার কাছে এখন পরিষ্কার।

ক্রস ফায়ার এর সূত্রপাত চারদলীয় ঐক্যজোট সময়ে। সন্ত্রাসীরা যখন একে একে পড়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ খুব একটা বিব্রত হয়নি বরঞ্চ খুশিই হয়েছিল। মানবাধিকার কর্মীরাই তখন তীব্র প্রতিবাদ করেছিল। এখনো ক্রসফায়ারের স্বীকার অধিকাংশ নানা অপরাধকান্ডে জড়িত। কিছু কিছু নিরীহ মানুষদের ফাঁসানোরও অভিযোগ উঠে আসছে।

টেকনাফে ইয়াবা কেন্দ্রীক অভিযান বেশ জোড়ালো হতে যাচ্ছে বা চলছে। বিষয়টাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কথা বলে জানা গেছে যারা ক্ষেতে খামারে কাজ করে কোন রকম দিন গুজরান করত তারাই এখন মোটর বাইক হাঁকিয়ে এমন ভাব নিয়ে চলে অন্যরা লজ্বা পায়। ভাবে যাকে বাড়ির কামলা হিসেবে রাখতে সংকোচ ছিল সে যখন বুক ফুলিয়ে হাঁটতে থাকে তখন হাসি যেমন পায় আবার আক্ষেপও থাকে। রাজনীতির হাত ধরে এরাইতো নেতৃত্ব দেবে আগামীতে। চারিত্রিক সনদপত্র তো এদের হাত থেকেই নিতে হবে।

পুরো টেকনাফের চিত্র পাল্টে গেছে ইয়াবা কেন্দ্রীক ব্যাবসায়। সেখান থেকে যারা মধ্যপ্রাচ্যে আছে তারাও অবাক হয়ে বলে, বিদেশে থেকে আর লাভ কী? দেশে যারা আছে তারাতো আমাদের চাইতে বেশী স্বচ্ছল, তাদের সামনে দাঁড়াতেইতো লজ্বা লাগে। হাঁটতে বসতে টাকা ওড়ছে।

ইয়াবা ব্যাবসায় মসজিদের ইমাম, ছাত্র, শিক্ষক হতে শুরু করে মহিলা কেউ বাদ পড়েনি। সমাজের যতগুলো ভাল উপসর্গ আছে, যাদের দেখলে মানুষ নিঃশংকোচে শ্রদ্ধা করবে কিংবা কোন প্রকার মন্দ সন্দেহ মনে আনবেনা তারাও ব্যাবহৃত হয়ে গেছে ইয়াবা ব্যাবসায়।

এমন যখন চিত্র সেই অঞ্চলে ভাল মানুষ থাকাটাই মুশকিল। ব্যাবসা বাণিজ্য বা রাজনীতি যাই করুকনা কেন তাকে ইয়াবার সাথে কম্প্রোমাইজ করেই থাকতে হবে। নিজে না করলেও দেখা যাবে পরিবারের এমন একজন সদস্য জড়িয়ে গেছে না পারবে বলতে না পারবে সইতে। ভয়ংকর অবস্থা।

টেকনাফ কক্সবাজার অঞ্চল আবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জায়গা, এমন একটা জায়গায় ইয়াবা সংযোগ। এটা রাষ্ট্রের জন্য বিরাট একটা হুমকি। তাছাড়া ইয়াবার প্রথম বাহকতো এই রোহিঙ্গারাই। তারাইতো ওপার থেকে এপারে নিয়ে আসে। তারপর সেটা পুরো দেশেই ছড়িয়ে গেছে।

ইয়াবা অভিযানটা অবশ্যই সাধুুবাদ জানানোর মতো ব্যাপার তবে ক্রসফায়ার এর গ্রহণযোগ্যতা তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে বাবা কন্যার অডিও ক্লিপ এর পর। মানবাধীকার কর্মীরাও আজকাল অবস্থা বুঝে কথা বলে।

ইয়াবার বৃক্ষগুলো এখনো আইনের আওতায় আসেনি। ডালপালা ছাটাই হচ্ছে। ক্রসফায়ার নয়, বৃক্ষগুলোর মূলোৎপাটন সময় এর দাবী, আইনের আওতায় আনা হোক। ক্রসফায়ার অনেক হল এবার এটা বন্ধ করা প্রয়োজন।

বিষয়: বিবিধ

৭১৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385479
০৫ জুন ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:৩৪
হতভাগা লিখেছেন : মাদক ব্যবসায়ীদের সাইজ করার সাথে সাথে যদি যারা মাদক নেয় তাদেরকে মোটিভেট করা যেত তাহলে এ নেশার প্রকোপ কমে আসতো। এরকম না করলে অভিযান বন্ধ হলেই আবার তা পূর্বের চেয়ে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়বে।
০৫ জুন ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
317738
বাকপ্রবাস লিখেছেন : মাদক সেবীরা খাক আমার কোন আপত্তি নাই, গরীবরা খায় দুঃখ ভুলে, আর বেশী ভাল লাগে যখন ধনী ছেলে মেয়েরা খায়, শিক্ষিতরা খায়। গরীবদেরটা ওদের বুঝানো যেতে পারে, ধনী ও শিক্ষিত শ্রেণী খেলে ওদের আমি সাপ্লাই দিতে আগ্রহী

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File