হিজাব এবং অর্থনীতি
লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:৩৭:০৬ দুপুর
আমাদের মতো টানাটানির দেশে, সমাজে, পরিবারে ও ব্যক্তি জীবনে হিজাব কি করে অর্থনীতি সাশ্রয় এর উপায় হতে পারে তার একটা নমুন দেখা যেতে পারে। ধর্মীয় অবদান থেকে আলোচনায় যাদের আপত্তি ও চেতনায় টান পড়ে তারা অর্থনীতি বিবেচনায় চিন্তা করতে পারেন।
১. সকল প্রকার প্রশাধনী সাশ্রয় হবে। ফর্সা হবার ক্রীম হতে শুরু করে কৃত্রিম ফর্সা হবার সব উপকরণ এর ব্যবহার কমে যাবে। কেননা হিজাব এর প্রভাবে লোক দেখানো ভাবটা কমে যাবে, তায় নিজের চেহারা ফর্সা করে দেখানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবেনা।
২. কৃত্রিম সৌন্দর্যতা দেখানোর প্রবণতা হ্রাস পাবার সাথে সাথে তার সাথে সম্পৃক্ত উপকরণ যেমন ভ্রু, নাক, কান, ঠোট, চুল এসব কাটা, ছেড়া, রাঙ্গানোর উপকরণগুলোর প্রয়োজন পড়বেনা।
৩. পোষাকে পরিবর্তন আসবে, এক একদিন এক একটা পোষাক দেখানোর প্রবণতা হ্রাস পাবে, একটা একটা ষ্টাইল দেখানোর প্রবণতা হ্রাস পাবে, ষ্টাইলটা তখন বোরকা বা আবায়ার উপর চলে আসলেও সেটা খুব একটা বড় ধরণের প্রভাব ফেলবেনা, কেননা একটা আবায়া যদি সপ্তাহে সাতদিনও ব্যবহার করা হয় কেউ বলবেনা তুমি কাপড় চেন্জ করনা কেন? ইত্যাদি। সেই ভয়টা নেই। কারন সবাই জানে এটা উপরের মলাট। প্রতিদিন পরিধেয় বস্তু।
৪. অঙ্গ প্রত্যঙ্গ প্রদর্শনের মনোভাব হ্রাস। এই প্রবণতটা খুবই ব্যয় বহুল। যেটা উন্নত দেশে খুচ চলে। যেমন ধরুণ একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা একটা স্কার্ট এর সাথে হাফ প্যান্ট পরিধান করল। তার কাঁধ থেকে হাত এবং হাটু থেকে পা পুরোটাই প্রদর্শণ করবে। লোমগুলোতো আর রাখা চলেনা। সেটা রিমুভ করা চায়। হাতের পায়ের লোম রিমুভ করা কম ঝাক্কির ব্যপার নয়। ঘরে দুইদিন চেষ্টা করে পরে যাও বিউটি পার্লারে।
৫. ঘনঘন বিউটি পার্লারে যাবার প্রয়োজন হবেনা। স্বাভাবিক নারী সূলভ প্রয়োজনে গেলেই চলবে। চুলটা একটু চেগি কাট দেবেন, ভূরোটা একটু প্লাক করাবেন এইতো। আপনারতো আর এক গামলা পানিতে মেডিসিন ঢেলে পার্লারে গিয়ে তাদের দিয়ে পা মাজানোর আর নখ খোঁচানোর প্রয়োজন পরবেনা। ফেসিয়াল করে করে চামড়া পাতলা করার প্রয়োজন পরবেনা।
৬. এতসব বিষয় এড়িয়ে চললে আপনার মন মানসিকতারও পরিবর্তন হবে, আপনাকে রূপ প্রদর্শন এর জন্য বাড়তি চিন্তা বা দুশ্চিন্তা যেমন করতে হবেনা তেমনি আপনার হাতেও প্রচুর সময় থাকবে। সেই সময় ভাল কোন কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
৭. অহংকার জাতীয় বিষয়গুলো আপনার মন থেকে দূরে সরে যেতে থাকবে, আগে যেমন কোথাও যাবার আগে আমাকে কেমন দেখাচ্ছে, এই ফ্রগটা গতবার পরেছি আরেকটা পরতে হবে, অমুকের জামাটা তাকে মানায়নাই, আমারটা বেষ্ট ছিল এই টাইপের বিষয়গুলো মনে ঘুরপাক খাবেনা।
উপরের বিষয়গুলোর কারণে ব্যবসা বাণিজ্যে ধস নামতে পারে তায় এমন একটা পরিবেশ বা সমাজ বা রাষ্ট্র ব্যবস্থা ক্রিয়েট হলে প্রথম আঘাতটা আসবে সেই ব্যবসায়ীদের ইনভেষ্ট এর হাত ধরে। তারা পয়সা ঢালবে, এটা মৌলবাদী চিন্তা, এখানে অধীকার রক্ষা হয়নি ইত্যাদি। আর সেই পয়সাটার ভাগ পাবে ছোটখাট ড্রেস পরে নারী স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেয়া সেই নারীটা।
পরিশেষে বলা যায় এটা যেহেতু অর্থনীতির দিক থেকে আলোচনা তায় এখানে বাধ্যবাধকতা নেই কতটুকু হিজাব পরিধেয়, আপনি যতটুকু চর্চা করবেন ততটুকু সাশ্রয়ী হবেন। আপনি পুরো শরীরে হিজাব করে মুখটা খোলা রাখবেন তাহলে সেটা প্রদর্শন এর জন্য যে খরচ সেটাই বহন করতে হবে, যেমন লিপিষ্টিক, ফর্ষা করার ক্রিম, হাবিজাবি ইত্যাদি। বাকী শরীরের খচচাটা সাশ্রয়ী হবে।
বিষয়: বিবিধ
১০৪৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন