নো রোহিঙ্গা
লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৫৫:২৮ সকাল
কথা বলছিলাম আহমদ রফিক এর সাথে। সে থাকে সওদি আরব। মায়ানমারে বাবা, মা, ভাই, বোন। বিয়ে করেছে সওদি আরবেই। কখনো দেশে যেতে পারবে কিনা সন্দেহ। সওদি আরবে এখন কর্মসংস্থান সংকুচিত। দেশ থেকে পয়সার খবর আসে, সে নিরুপায়। এখানে সংসার চালাতেই হিমশিম, দেশে পাঠানোর পরিস্থিতি নেই। তার মতো অনেকেই এখানে বিয়ে করে সংসার করছে।
তাকে প্রশ্ন করেছিলাম আরসা কেন হামলা করলো, কাজটাতো ঠিক হয়নি, যুদ্ধের একটা ব্যাপার আছে, যে আগে হামলা করবে দোষটা তার ঘাড়েই পড়ার সম্ভবনা বেশী, আবার যে হেরে যাবে দোষটা তার ঘাড়েই পড়ে এটাই নিয়ম। এখানে নৈতিকতা কাজ করেনা। সে বলল বড় ভাই কি করবো আর। আমাদের কিভাবে নির্যাতন করে সেটা দেখলে বা জানলে প্রশ্নটাই করতেননা। আমরাতো এমনিতেই মরে যাচ্ছি তাই এই পথ ছাড়াতো আর উপায় দেখছিনা।
তাদের নাগরিকত্ব নেই, কোথাও যাবার উপায় নেই, সেনাবাহিনী কিছুদিন পরপর এসে সুমারী করে, কার ঘরে কয়জন থাকে, হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগলের পর্যন্ত হিসাব করে রাখা হয়, কোথাও সংখ্যায় গড়মিল হলে শুরু হয় অত্যাচার। আর বিভিন্ন ছুতায় ধরে নিয়ে যায় যুবসমাজকে। তারা খবর দেয় পুরো এলাকার সবাই যেন নির্দিষ্ট সময়ে থাকে। তারপর ঘরেঘরে ঢুকে যুবসমাজকে ধরে নিয়ে যায়। আগে তাদের জেল জরিমানা করতো, এখন মেরে ফেলে। তারা যুব সমাজ রাখবেনা।
তাদের সাহায্য করে কিছু অনুচর আছে, আমরা একাত্তরে যাদের রাজাকার বলতাম তেমনই। তারা বলে তাপ্পে। তাপ্পেরা সেনাবাহিনীকে খবর দেয় কোন নতুন আগন্তুক আসলে, সেটা মেহমান হতে পারে কিংবা বিদেশ থেকে পরিবারেরই সদস্য। সেনাবাহিনী এসে ধরে নিয়ে যায়, আর তাপ্পেরা এসে কন্টাক্ট করে কতো দিলে ছেড়ে আনবে। এভাবে তাপ্পেরা ভালোই কামাচ্ছিল।
আরসা সংগঠিত হবার ফরে গ্রামে গ্রামে তারা পাহাড়া দিয়ে আসছিল আর তাপ্পেদের একএক করে পার করছিল পরপারে। পুরোগ্রামে শান্তি নেমে এসেছিল। সেনাবাহিনীও চিন্তিত হয়ে পড়লো এখন আর আগের মতো খবর আসেনা। রোহিঙ্গারা তাদের গ্রাম নিয়ে ভীষণ খুশি একমাত্র সরকার আর বৌদ্ধদের নির্যাতন ছাড়া। সেখানে মাটি খুবই উর্বর। তারা গর্ব করে বলে এক বছর চাষ করলে দুই বছর বসে খাওয়া যায় এমন ফসল ফলে।
তারা স্বাধীনতা চাইনি, তারা চেয়েছিলো তাদের মতো করে থাকতে, কিন্তু তা আর হলোনা, সব উল্টেপাল্টে গেল। এখন শুধু হাহাকার আর দীর্ঘশ্বাস।
বিষয়: বিবিধ
৬৩২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দখল করতে পারবে না মায়ানমারের এই অংশকে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন