রাজনীতির হালচাল
লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:০৪:১৬ সকাল
রাজনীতি তার নীতিতে চলে। সেখানে আবেগ অনুভূতির ধরণটা একটু ভিন্ন। চলমান সময় এর সাথে তালটা যেমন মেলাতে হয় আবার চোখ রাখতে হয় অনেক দূর, আগামীর পথে। আজকে যে বীজটা বপন করা হবে আগামীতে তার ফলটা কেমন হবে তার উপর।
বর্তমান আওয়ামিলীগ সরকার এমন এক অবস্থানে আছে সেখানে নেই কোন প্রতিদ্বন্দি। ঘরের সুন্দরী বউটা যদি একটু দুষ্টুমি না করে, মাঝে মধ্যে ঝগড়াঝাটি না করে, তাহলে যতই তার রূপ থাক অল্পদিনেই অরুচি আসবে স্বাভাবিক। খাতা কলমে বিরোধী দল নামক সুন্দরী বউটার অবস্থা তেমন। প্রথম দিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল বিএনপি জোট নির্বাচনে আসেনি, জাতীয় পাটিই এখন বিরোধী দল। কিন্তু যখন দেখা গেল সুন্দরী বউটার রূপ ছাড়া আর কোন গুণই নেই তখন অরুচি ঠিকই ধরল তার প্রতি। তারপরে হাঁটে মাঠে ঘাটে বিএনপি জোট এর দোষত্রুটি খোঁজা হল যেন বিরোধী দল বিএনপি জোট। এবং সেভাবেই চলছে।
বর্তমান আওয়ালীগ সরকার সংকটে পড়ল গ্রহণযোগ্যতার। সেই গ্রহণযোগ্যতার পরীক্ষায় পাশ হবার জন্য আগামী নির্বাচণটাকে টার্গেট করেই এগুচ্ছে। তার মাঝে এক ঝড় আসলো বিচারপতি সিনহা। মানুষও পড়ে গেল দ্বন্দে। এই ঝড় কি খোদ আওয়ামী সরকারের সৃষ্টি নাকি বিচারপতির বিবেকের তাড়না, নাকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের একটা চাল? নির্বাচনের আগে আওয়ামিলীগকে বুঝেয়ে দেয়া আমাকে এড়িয়ে কিছু করতে চাইলে চেয়ার এর খুঁটি ধরে টান দেবার মাল মসলা আমার আছে তার একটা উদাহরণ দেখিয়ে দিলাম সিনহা। সাধারণ মানুষ এখনো ঘোর অন্ধকার দোলাচলেই আছে, আসলে ব্যাপারটা কী?
আসল বন্যা। সরকারের নির্বাচনের হাওয়াতে দ্বিতীয় ধাক্কা।নির্বাচনি হাওয়া তৈরীর করার সময়টায় আবার বন্যা এসে বাগড়া। প্রিন্ট মিডিয়া, চ্যানেল কোথাও বন্যাকে প্রাধন্য দিয়ে নিউজ করতে চায়নি, ফেইসবুক যেখানে সরব সেখানে আর কিছুই চাপিয়ে রাখা যায়না আজকাল। অবশেষে ঠিকই বেকফুটে চলে গেল বন্যা, কারন নতুন উপসর্গ রোহিঙ্গা ইস্যু। এই গণহত্যা আসার ফলে সত্যিই বঞ্চিত হলো বন্যাপিড়ীত মানুষগুলো। তাদের খবরটা আড়ালে চলে গেল। আবার এদিকেও রোহিঙ্গাদের প্রতি গণহত্যায় বাংলার মানুষ না কেঁদে পারলনা।
বর্তমান সরকার পড়ল আরেক বিপাকে, রোহিঙ্গারা বন্যার পানির মতো আসতে থাকলো। ফিরিয়ে দিলে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে, ভারত আর চীন প্রত্যক্ষভাবে মায়ানমার এর পক্ষে এবং আমেরিকাও পরোক্ষভাবে সাপোর্ট দিচ্ছে কারন সবাই সেখানে ব্যাবসা করতে আগ্রহী। রোহিঙ্গাদের সরিয়ে সেখানে ইন্ডষ্ট্রিয়াল জোন করা হবে, চীন একা খাবে কেন? ভারত চাইছে কিছু পেলে মন্দ কী? আমেরিকাও ছাড় দিবে কেন? তাছাড়া বাংলাদেশ সহ অঞ্চলটা বন্দর কেন্দ্রিক ব্যাবসা ও অঞ্চল আধিপত্য বজায় রাখার কেন্দ্রস্থল। সবাই চাইবে এই জায়গাটতে নিজেদের অবস্থান জোড়ালো হোক।
আমাদের এসব ব্যাপারগুলো মাথায় রেখে এগুতে হবে, এখানে বাণিজ্য ও আধিপত্য দুটোরই আগ্রাসণ হবে। সেটা নাহয় পরের বিষয়, তাৎক্ষণিক বিষয় হলো সরকার এর ভূমিকা কি হবে রোহিঙ্গা বিষয়ে? দায়বদ্ধতা আছে ইসলাম আর মুসলিম ভাবধারার এবং হিসাব নিকাশ আছে ভোটেরও। গ্রহণযোগ্যতার পরীক্ষায় পাশ করার এটাও একটা সুযোগ। আগে যারা সরকারারে গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে দূরে ছিল বা নিরব ছিল সেইসব মুসলিম দেশ এখন সরকারের কাছে ধরা দিতে বাধ্য যদি রোহিঙ্গাদের পক্ষে কোন পদক্ষেপ নিতে চায়। সরকারের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করতে চাইলে নিশ্চয় গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কোন প্রশ্ন বা কিন্তু নেই। সুতরাং এটাও একটা বড় সুযোগ। ইসলামি ভাবাপন্ন দেশগুলোর সাথে সরাসরি কাজ করে যেমন নিজের গ্রহণযোগ্যতা আদায় করে নিতে পারে আবার জাতিসংঘ ন্যাটো জোটে মানবাধীকার ও গণহত্যার কথা তোলে তাদের সাথেও স্বাভাবিক হবারও একটা পথ খোলা যায়। তারপর একফাঁকে নির্বাচন দিয়ে আবার ক্ষমতায় থাকতে চাইলে সমিকরণ কেমন হবে সেটা ভবিষ্যতই বলে দেবে। কারণ প্রত্যক্ষ প্রভাব ছাড়া বর্তমান সরকার নির্বাচন দেবে তেমনটার কোন লক্ষণ এখনো ধরা দেয়নি।
বিষয়: বিবিধ
৬৩০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন