আপনার অভিমত প্রকাশ করুন

লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ০১ মে, ২০১৭, ০৪:২১:১৩ রাত

লেখক : গবেষক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী সাহেবের নিম্নের লেখাটা পড়ে আপনার অভিব্যাক্তি প্রকাশ করুন। এটা নিয়ে সবার মতামত কামনা করছি, এই উপলক্ষ্যে একটা ব্লগ আড্ডাও হয়ে যেতে পারে।

রবীন্দ্রনাথ শ্যাষ, এহন কাসেম্মার যুগ

২৯ এপ্রিল ২০১৭, ২০:২৫

আফসান চৌধুরী

ভদ্দরলোক ভাই ও বোনেরা, আপনাগো বই কেউ পড়ে না। আপনারা নিজেরাও পড়েন না, কেনা তো দূরের কথা। আপনারা পয়সা দিয়া সমালোচনা লেখান। উপসচিবরে তেল মাইরা পুরস্কার নেওয়ার চেষ্টা করেন। রেস্টুরেন্টে বইয়া আড্ডা দেন, মদ খান, প্রেম আর পরকীয়া করেন। আর শেখ হাসিনারে প্রশংসা কইরা ভাবেন যে উনিই আপনাগো রক্ষা করব। সেই শেখ হাসিনা চইলা গেছে আপনাগো ফালায় দিয়া। তাঁর বেস্ট ফ্রেন্ড এখন হেফাজত।

সেই হেফাজত আর কওমি মাদ্রাসারে তাই সমানে গালি দিতাছেন। অবশ্য রইয়া-সইয়া। কারণ আপা যদি চেইত্যা যায়, সেই ভয়ও আছে। আপনাগো কেউ পাত্তা দেয় না, যহন নিজেদের লোক নিজেগো পাত্তা দেয় না, তহন শেখ হাসিনার কি ঠ্যাহা পড়ছে আপনাগো পাত্তা দেওয়ার? আপা ঠিকই বুঝছে আপনাগো দিয়া কাম হইব না।

২. চাকরি, সুবিধা, ফ্ল্যাট, অনুষ্ঠানে দাওয়াত, সফর, বিভিন্ন পুরস্কারের পেছনে দৌড়াইতে দৌড়াইতে ভুইল্লাই গেছিলেন যে আপনাগো পায়ের নিচে কোনো মাটি নাই। যেইডা ভাসে পানিতে, হেইডারে কচুরিপানা কয়। কাসেম বিন আবুবাকাররে এত যে গালি দিতাছেন দরজা-জানালা খুইলা, একবার কি ভাবছেন, আপনারা হগলে মিল্লা যত বই লিখছেন তার বিক্রি কাসেম্মার একখান বইয়ের থন কম বিক্রি। পালান ভাইসাবরা। আপনাগো দিন শ্যাষ। মাইন্না লন, বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা হইতাছে কাসেম বিন আবুবাকার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেয়ে সাধারণ মানুষগো কাছে তাঁর দাম বেশি। হুঁশ কইরা হিসাব কইরেন।

৩. এই কাসেম্মা বুইড়া নাকি চটি লেহে, বোরকা পইরা যৌনকর্ম করে! আবার ধর্মের কথা কয়। এইডা দেইখা আপনাগো বুক জ্বইলা যাইতাছে। কারণ আপনারা করেন এই সব কু-কাম, লেখেনও মাঝে-মধ্যে। কিন্তু তাও কেউ পাত্তা দেয় না। যতক্ষণ না শাহাবুদ্দীন নাগরী কিসিমের পাবলিক ধরা পইড়া যায়। তা ভাই ভদ্দর লোকগণ, একটা কাসেম বিন আবুবাকারের লাহান বই লিখা দ্যাখেন তো, একশ বই বিক্রি করতে পারবেন কি না। আপনারা তো পুলিশের পাহারা না হইলে সাংস্কৃতিক বিপ্লব করতে পারেন না। আপনারা বুড়া কাসেমের সাথে লইড়া একবার দেহান পাবলিকরে।

৪. আসল কথা হইল, আপনারা হইতাছেন শহরের মধ্যবিত্ত ভদ্দরনোক। রবীন্দ্র-জীবনানন্দ শ্রেণির পার্টি। আপনাগো লেহায় যেই সব উহ! আহ! আহে হেগুলা গাও-গ্রামের মুরখ্য মানুষ পড়তে চায় না। যেহানে আপনারা নিজেরাই পড়তে চান না, হেরা পড়ব ক্যান? কাসেম্মা হেই মানুষগো জন্য লিখতাছে, হেগো ভাষায়, হেগো চিন্তায়, হেগো সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা লইয়া। হেরা পড়ছে, খুশি হইছে। আপনাগো এত লাগে ক্যান?

কাসেম্মা কইছে কখনো, আমারে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেন? আপনারা কন, আপনারা চান, হেয় চায় না। হের পাবলিক আছে, আপনাগো নাই। এই জন্য এত কষ্ট হইতাছে? এককাঠি মাইরা তারে কেউ কেউ জামাতি বানাইছেন, হেফাজতি বানাইছেন। ফেসবুকে সুবহানাল্লা প্রচুর কিছু লিখছেন গালি দিয়া। হেয় লিখছে? ফেসবুকের বাইরেও যে দুনিয়া, যেমন ধরেন গার্মেন্টসের আপারা। যারা তার বই পড়ে, তাগো কিছু আসে-যায় না আপনার পোস্টে। আপনারা তো ফ্রেন্ড-আনফ্রেন্ড লইয়াই আছেন। যতজন আপনাগো লাইক দেয় একটা পোস্টে, তার চেয়ে বেশি লোক আপনাগো বই পড়ে?

৫. এই দেশের অর্থনীতিতে গাও-গ্রামের মানুষের উন্নতি হইছে। বিশেষ কইরা ১৯৯০ সালের পরে। বর্তমান সরকারের টাইমে হেইডা আরো বাড়ছে। হেরা হাতে কিছু পয়সা পাইছে, লেহাপড়া শিখছে, বই পড়ে আপনাগো চেয়ে বেশি। এতে তো খুশি হওনের কথা আপনাগো। অসুবিধা হইল, আপনারা আপনাগো লাইগাই লেখেন, পাবলিকের জন্য না। পাবলিক বইলা যে কিছু আছে, এটাই মানতে চান না। আপনাগোর সিলসিলা কলকাতার ভদ্দরনোকের সিলসিলা, সুনীল-হুমায়ূনের সিলসিলা, শহরের মানুষগো সিলসিলা। ওই সিলসিলার এহন জানাজা হইতাছে। শুনতে পাইতাছেন? আর যেই মানুষটা ওই জানাজায় ইমামতি করতাছে, হের নাম কাসেম বিন আবুবাকার।

শেষ কথা চটি লইয়া। আমগো দেশের বেশির ভাগ মানুষ বিশেষ কইরা ভদ্দর লোকেরা ইন্টারনেটে গিয়া কী দ্যাখেন হেইডা জানেন না? হের নাম পর্নো, আপনারা কাসেম্মার একটা কিস সহ্য করতে পারেন না। আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা পর্নো দ্যাহেন, তাতে কোনো অসুবিধা নাই? আপনাগো কী নামে ডাকুম। রবীন্দ্রনাথের যুগের শেষ হইছে। এহন কাসেম্মার যুগ। সালাম দেন।

লেখক : গবেষক ও সাংবাদিক

বিষয়: বিবিধ

৮২০ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382832
০১ মে ২০১৭ রাত ০৪:৪৪
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : লেখাটা সকালে দিয়ে আড্ডার আয়োজন করলে ভালো হত, জমতো।
০১ মে ২০১৭ সকাল ০৫:১৭
316299
বাকপ্রবাস লিখেছেন : ব্লগে কেউ নেই এখন, সকালেও থাকবে উপরের দিকে, ফেইসবুকেও শেয়ার দিয়েছি, সবাইকে ট্যাগ করে আবার রিমুভ করলাম ভয়ে, মাইন্ড খাইলে সেই ভয়ে
০১ মে ২০১৭ দুপুর ০২:৪২
316305
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ট্যাগ ত্যাগ করলেন কেন।যাদের কে ট্যাগ করেছেন তারা মাইইন্ড খাইতো না মনে হয়।
382833
০১ মে ২০১৭ রাত ০৪:৪৮
বাকপ্রবাস লিখেছেন : মূল লেখাটা এখানে আছে, আমি কপি পেষ্ট করেছি Click this link
382837
০১ মে ২০১৭ সকাল ০৯:৫১
সায়িদ মাহমুদ লিখেছেন : "কাসেম্মা" একটা বিকৃত শব্দ ব্যাবহার করে আফসান চৌধুরীদের পরশ্রী কাতরতা লোকেদের দেখিয়ে দিয়েছেন। ভদ্রলোকেরা নাম অসুন্দর লিখে না।

তবে লিখাটা আমার ভাল লেগেছে।
০১ মে ২০১৭ দুপুর ১২:১০
316300
বাকপ্রবাস লিখেছেন : উনি আবার সুদ্ধ নামটাও লিখেছেন, এমনও কি হতে পারে কাশেম্মা বলার অন্য মানেও আছে?
"আপনাগোর সিলসিলা কলকাতার ভদ্দরনোকের সিলসিলা, সুনীল-হুমায়ূনের সিলসিলা, শহরের মানুষগো সিলসিলা। ওই সিলসিলার এহন জানাজা হইতাছে। শুনতে পাইতাছেন? আর যেই মানুষটা ওই জানাজায় ইমামতি করতাছে, হের নাম কাসেম বিন আবুবাকার।"
382838
০১ মে ২০১৭ সকাল ১০:২১
হতভাগা লিখেছেন : যত লেখক হিট হয়েছেন তারা কাসেম সাহেবের থিউরী ফলো করেছেন ।

রবিন্দ্রনাথের চেলাদের সমস্যা হল উনারা মনে করতেন যে রবিন্দ্রনাথই ওয়ান এন্ড অনলি ।
প্রত্যেক লেখকই পাঠকের মন বিচার করে তার লেখা সাজায় । লিখা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই অধিকার সবার আছে।

সামুতে একজন পোস্টদাতার একটা উপসংহার ভালই লেগেছে :

যার বইয়ের ৩০ তম সংষ্করণ বের হয় , কপি বিক্রি ২ লাখ ছাড়িয়ে যায় - তাকে নিয়ে তো সমালোচনা হবেই।
০১ মে ২০১৭ দুপুর ১২:২৪
316301
বাকপ্রবাস লিখেছেন : শহুরে সমাজ তাকে চিনেইনা এমনটা হল কেন? বর্তমান যুগেও এমনটা হতে পারে? এমন অচেনা কেন থেকে গেল? প্রিন্ট মিডিয়ায় না আসলেও মানুষইতো পড়েছে, সেই খবরটা শহরে পৌঁছালনা কেন? শহরের মানুষকে গ্রামের সাথে সম্পর্ক রাখেনা?
382843
০১ মে ২০১৭ সকাল ১১:১৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কাসেম বিন আবুবকর এর বই বিক্রি হয় কয়েক লক্ষ কপি। আর এই আফসান চেীধুরির বই কয় কপি বিক্রি হয় কেউ জানে কি!!!
তার ভাষা দেখেই তার চরিত্র অনুমান করা যায়।
০১ মে ২০১৭ দুপুর ১২:২৪
316302
বাকপ্রবাস লিখেছেন : উনি আবার সুদ্ধ নামটাও লিখেছেন, এমনও কি হতে পারে কাশেম্মা বলার অন্য মানেও আছে?
"আপনাগোর সিলসিলা কলকাতার ভদ্দরনোকের সিলসিলা, সুনীল-হুমায়ূনের সিলসিলা, শহরের মানুষগো সিলসিলা। ওই সিলসিলার এহন জানাজা হইতাছে। শুনতে পাইতাছেন? আর যেই মানুষটা ওই জানাজায় ইমামতি করতাছে, হের নাম কাসেম বিন আবুবাকার।"
382851
০১ মে ২০১৭ দুপুর ১২:৪১
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : এই সাংঘাতিক (সাংবাদিক) এর লেখাটা গতকালই নজরে এসেছে।এমন অভদ্র ভাষায় সামালোচনা কেবল বেয়াদপ টাইপের লোকের পক্ষেই করা সম্ভ্যব।

সমালোচনা করার আগে ওনার যোগ্যতা কতটুকু একটু ভাবা দরকার ছিল।
০১ মে ২০১৭ সন্ধ্যা ০৬:২৫
316310
বাকপ্রবাস লিখেছেন : আমার আপাত দৃষ্টিতে ওনি লেখক এর পক্ষ নিয়ে লিখেছেন বলে মনে হচ্ছে, তাই এটা শেয়ার কলাম, ভদ্র সমাজকে হেয় করে লিখেছেন, আমি টোটালি কনফিউজ্ড
382855
০১ মে ২০১৭ দুপুর ০২:৪৪
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : অনেকে লেখকের উদ্দেশ্য বুঝতে পারছেন না বলেই অনুমিত হচ্ছে।
০১ মে ২০১৭ সন্ধ্যা ০৬:২৬
316311
বাকপ্রবাস লিখেছেন : আমারও তাই মনে হয়, তাই এটা শেয়ার করলাম ব্লগে, সবার মতামত নেবার জন্য
382926
০৮ মে ২০১৭ সকাল ১১:৫৭
তিতুমীর লিখেছেন : এই লোক টরন্টো শহরে বাস করতেন, BCS নামক একটা NGO-এর সাথে জড়িত ছিলেন। সম্ভবত: কানাডা'র নাগরিকত্ব পাওয়ার পর আবার বাংলাদেশে বড় লাভের আশায় ফিরে গেছেন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File