- নিতান্তই একান্ত

লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৭:০৭:০৪ সন্ধ্যা

পরীমনির ব্যাপারটা নিয়ে যতোটা না হৈ চৈ তার ধারে কাছে নেই নাগরিকত্ব আইনের খসড়াটা ব্যাপারে। আমরা নির্মোহ থাকি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতি। যখন মোহ আসে তখন পানি অনেক গড়িয়ে যায়।

নাগরিকত্ব আইনে দেখা যাচ্ছে নাগরিক ইন আউট এর ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে। ইন কে হবে? কেন হবে? কিভাবে হবে এসব বিষয়ে যেমন স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার তার চাইতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আউট হবার ব্যাপারটা।

যুদ্ধ অপারাধী সাজাপ্রাপ্ত ব্যাক্তিরা একদিক দিয়ে সৌভাগ্যবান কারন তারা পাঁচ/দশ মিনিটের কষ্ট পেয়ে পার পেয়ে যাবেন, কিন্তু তাদের পরিবারবর্গের জন্য নতুন খড়গ নেমে আসবে নাগরিকত্ব আইনে। কারন তারাও হারাতে যাচ্ছে তাদের নাগরিকত্ব।

ওদিকে কথা উঠেছে তাদের সম্পত্ত্বি বাজেয়াপ্ত করা হবে। কথা যখন তুলেছে তাহলে বুঝতে হবে সামনে সেটা আসবেই এবং এখন বলে বলে গা সওয়ার ব্যাপারটা করা হচ্ছে।

আর একটা ব্যাপার হলো, যদি কেউ বিদেশি কোনো সামরিক বা আধাসামরিক বাহিনী বা অন্য কোনো বিশেষ বাহিনীতে যোগদানপূর্বক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে বা বাংলাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকার ও দেশবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকলে তাদের সন্তানরাও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবেন না।

এখন বিষয়টা যদি আরো একটু সংক্ষিপ্ত করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয় তাহলে কেমন হয়!! বাংলাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকার ও দেশবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকলে তাদের সন্তানরাও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবেন না। এখানে কিন্তু আর মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপার নেই। রাষ্ট্রের যদি মনে হয় কারো কর্মকান্ড দেশবিরোধী তাহলে তার নাগরিকত্ব চলে যেতে পারে। তাই আমাদের সকলের এ ব্যাপারে চোখ রাখা, মতামত আদান প্রদান করে রাষ্ট্রের কাছে নিশ্চয়তা চাইতে হবে যে, মুক্তযুদ্ধের বিরোধীতা ছাড়া এটার যেন অপব্যাবহার না হয় সেই নিশ্চয়তা এবং সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে যে, বর্তমান ইস্যুতে এটার প্রয়োগ হবেনা। অন্যথা হলে আজকে জন্মগ্রহণ করেও রাজাকার উপাধী পাওয়া এবং রাষ্ট্রবিরোধী হয়ে নাগরিকত্ব হারানো কোন ব্যাপার হবেনা।

এবার আসুন সম্পদ এর নিরাপত্তা নিয়ে। যদিও এই আইনে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ব্যাপারে বলা হয়নি, কিন্তু পরে যদি সেটাও ঢুকানো হয় তাহলে সম্পদ নিয়ে হরিলুটের ব্যাপার হবে। একজন যুদ্ধপরাধীর ভিটামাটি তার পৈত্রিক সম্পদ, সে মারা গেলে তার ছেলেমেয়েরা ভোগ করবে, কিন্তু তাদেরও নাগরিকত্ব হরণ করা হচ্ছে তাহলে সম্পদ পাবে তার স্বামী বা স্ত্রী বা ভাইবোন। সন্তান যেহেতু নাগরিকত্ব হারাচ্ছে। কিন্তু বাজেয়াপ্ত করলে রাষ্ট্র সব নিলামে তুলে দিতে পারে। সুতরাং কার সম্পদ কে নিলামে তুলবে? ভিটামাটিতো তার সম্পদ ছিলনা, তার পৈত্রিক সম্পদ আবার পরিবারের একজন যদি অভিযুক্ত হয় তাহলে তার পৈত্রিক সম্পদ বলে পুরো সম্পদ কেড়ে নিলে তার ভাইবোনরাও পথে বসবে।

শেষ কথা হলো যাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হবে তারা যাবে কোথায়? তারা কি ভিসা নিয়ে থাকবে? নাকি নির্বাসন যাবে? তাদের গন্তব্য কোথায়!!!

কেউ লুট করে

কেউ লুটে পড়ে

কার কপালে কোনটা

যানেনা তার কপালটা!!!

বিষয়: বিবিধ

৭৬৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

358203
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:২৬
চেতনাবিলাস লিখেছেন : এইদেশটাকে একটা সাক্ষাৎ নরক বানাতেই এমন আইনের কথা ভাবা হচ্ছে। কোন সভ্য দেশে এমন আইন থাকতে পারেনা। বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:৪৫
297164
বাকপ্রবাস লিখেছেন : বাবা যদি অপরাধ করে থাকে সন্তান কেন তার দায় বহণ করবে, আইয়ামে জাহেলিয়াতেও ছিলনা এমন আইন
358225
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:২৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন এর পরিপন্থি হলেও এই আইন হবে এবং এই আইনে তারা দখল করে নেবে অনেকের সম্পদ। কারন এখন শক্তি তাদের হাতে। তবে ফেরাউন এর ও মৃত্যু এসেছিল।
০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০২:২৮
297196
বাকপ্রবাস লিখেছেন : তারাতো মৃত্যু কি জিনিস জানে বা বুঝে বলে মনে হয়না
358231
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:৩৩
আফরা লিখেছেন : এই লিখাটা নিতান্তই একান্ত হবে কেন !!এটা তো ভাইয়া আপনি দেশে নিয়ে দেশের মানুষকে নিয়ে ভেবেছেন সবাইকে সচেতন করতে চেয়েছেন এটা নিয়ে সবারই ভাবা উচিত ।

ধন্যবাদ ভাইয়া ।
০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০২:২৯
297197
বাকপ্রবাস লিখেছেন : তা অবশ্য ঠিক, আমিও ভাবছিলাম, তবুও আমার ভাবনাটা শেয়ার করলাম তাই নিতান্তই একান্ত করে দিলাম
358246
০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:২৩
হতভাগা লিখেছেন : এটা হল বাংলাদেশের মানুষের হুজুগে সিদ্ধান্তের ফল ।

শুধু হাওয়ার উপর বিশ্বাস করেছে হাওয়া ভবন সংক্রান্ত অভিযোগ । যেটার সত্যতা এখনও প্রমান হয় নি , এফবিআই নিয়ে কাহিনী করেও কাজ হয় নি । উপরন্তু এক রায়ে তারেক রহমানের খালাসও হয়ে গেছে ।

বাংলাদেশীরা আসলে এরকম মানসিকতারই । লর্ড ক্লাইভ তার জবানিতে বলেছিলেন - ইংরেজরা যখন সিরাজ উদ্দৌলাকে ধরে নিয়ে আসছিল তখন ক্ষেতে খামারে কাজ করা যে সংখ্যক কৃষকরা কাজ করছিল তারা যদি সেটা রুখতে এগিয়ে আসতো তাহলে ক্লাইভ বাহিনী প্রাণ নিয়ে আসতে পারতো না । তারা এই ভেবে বসেছিল যে , রাজায় রাজায় সমস্যা - আমাদের কি ?
০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০২:৪৯
297224
বাকপ্রবাস লিখেছেন : পলাশী পিরিয়ডই চলছে দেশে
361404
০৫ মার্চ ২০১৬ দুপুর ১২:৫৮
আশাবাদী যুবক লিখেছেন : মগের মুল্লুক চলছে দেশে,
কথা বল্লেই বাঁশ খাবেন পিছে ৷
০৫ মার্চ ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯
299496
বাকপ্রবাস লিখেছেন : সদা লাজ সদা ভয়
যদি আবার গুম হয়

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File