ইন্টার(মি)ইডিয়েট (পর্ব-২)
লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:১৫:১৬ সকাল
লতিফা পারভিন, সহপাঠিরা তাকে পারু বলেই ডাকে, সে একটা বিষয় খেয়াল করেছে, রাহিন আসলে খুব একটা দুষ্টু না, সে সব সময় ফেসে যায় মনির এর জন্য, মনির যেহেতু রাহিন এর বেষ্ট ফ্রেন্ড তাই তার দুষ্টুমির জন্য রাহিনও ফেসে যায়, টিচাররা যখন রাহিনকে শাস্থি দেয় সেটা পরীর খুব মন খারাপ হয়, বিষয়টা অবশ্য কখনো বলেনি সে রাহিনকে, তবে অফ পিরিয়ড এ সে মাঝের মধ্যে রাহিন এর পাশে এসে বসে, পরামর্শও দেয় মনির এর সংগ ছাড়ার এটা সেটা, লিখা পড়ায় অমনোযোগী কেন, নোট লাগলে আমার কাছ থেকে নেবে, ইত্যাদি।
ধামমমম করে একটা সাউন্ড হলো, সবাই দৌড়ে বের হল ক্লাশ থেকে, কি হল কি হল বলতে বলতে, সাউন্ডটা ওয়াশ রুম এর উদিক থেকেই আসল, গিয়ে পাওয়া গেল সেখানে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মনির আর রাহিন, হ্যান্ড ওয়াশ এর বেসিনটা পড়ে ভেংগে গেছে, ইনভেষ্টিগেট করে রিপোর্ট হলো মনির আর রাহিন দু'জন মিলে ওটা ফেলে ভেংগেছে। কিভাবে ভেংগেছে সেটা আর কেউ জানলনা তবে এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন একটা বেসিন কেনার জরিমানা দেবে সেই দায় মাথায় নিয়ে সেবার নিস্তার পাওয়া গেল।
অফ পিরিয়ডে পরী এসে বসল রাহিন এর কাছে, রাহিন এর হাতটা রাখল পরীর হাতে, প্রায়ই সে এমনটা করে, রাহিন এর হাতটা পরীর খুব পছন্দ সেটা অবশ্য রাহিন বুঝতনা বা জানতনা তখন কিংবা খেয়ালই করেনি, তারা যখন পাশাপাশী বসে কথা বলত তখন পরী তার হাতটা নিজের হাতে রেখে হালকা চেপে ধরত, আরো অনেক বছর পর ব্যাপারগুলো যখন রোমন্থন করত রাহিন, তখন তার চোখে ভেসে আসত পরী তার হাত ধরে সেদিন আবেগ প্রবণ হয়েছিল, পরীর কোন ভাবেই বিশ্বাস হলোনা রাহিন কাজটা করেছে, নিশ্চয় এটা মনির এর কাজ, আর তাকে বলতেই হয়েছিল সত্য কথাটা, মনির বেসিন এর উপর পা তুলে দিয়েছিল দুষ্টুমি করে, পাশে দাঁড়িয়েছিল রাহিন, কিছু বোঝার আগেই সব ভেংগে চুরমার, সত্য কথাটা বলা গেলনা, কেননা মনির কে কলেজ থেকে বের করে দেবার সম্ভবনা আছে তাই, জরিমানাটাও দুই ভাগে ভাগ করে নিল, রাহিন বিকেলে একটা টিউশনি করত, ক্লাশ টু এর একটা পিচ্ছিকে পড়াত, সেখান থেকে অগ্রীম বেতনের টাকা এনে মনিরকে ধারও দিয়েছিল।
এবারের পরিস্থিতি আরো জটিল, শিউ মেডাম রাহিনকে এনে দাঁড় করাল মেয়েদের ব্যাঞ্চ এর সামনে, বলল দাঁড়িয়ে থাকতে, কেন বলল সেটা জানা গেলনা, মেডাম শুধু মেয়েদের বলল, এই চেহারাটা দেখে রাখ, পালের গোদা, তোমরা একশ হাত দূরে থাকবে এর কাছ থেকে, তারপর রোল কল শেষে বলল, যাও সিটে গিয়ে বস, আর ক্লাশ শেষে আমার সাথে যাবে টিচার্স রুমে। ব্যাপারগুলো সবার কাছে স্বাভাবিক ঠেকল, মনির রাহিনরা দুষ্টুমি করতেই থাকবে, টিচাররা দাঁড় করিয়ে রাখবে, টিচার্স রুমে ডেকে নিয়ে যাবে ইত্যাদি। পরী রেগে লাল হয়ে আছে আবার কি হল রাহিন এর, আরো দুএকজ ছাত্রী এসে জিজ্ঞেস করেছিল মেডাম কেন ডাকল? এমনি ডেকেছে বলে সবাইকে এড়ানো গেল কিন্তু পরী নাছোড় বান্দা তাকে তো বলতেই হবে।
সামনে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা, রেজিষ্ট্রেশান এর কাজ চলছে, মনিরকে আসফিয়া ম্যাডাম পরীক্ষা দেবার জন্য এলাউ করেনি, সে প্রি-টেষ্ট এ বাংলা ছাড়া প্রায়ই সাবজেক্ট এর গোল্লা মেরেছে কিংরা ঠেলা পাশ, ফেইল করে কলেজ এর বদনাম বয়ে আনবে তাই তাকে রেজিষ্ট্রাশান করতে দিলনা আসফিয়া ম্যাডাম, খুবই জাদরেল ম্যাডাম ছিলেন তিনি, নৌবাহিনীর কোন এক কমান্ডার এর বউ ছিলেন, ইংরেজী পড়াতেন, এমন ষ্টাইল আর স্পিডে ইংরজী বলতেন যে, মেডাম এর লেকচার বুঝতে ঘাম ঝড়তো রাহিন এর, ফাষ্ট ইয়ার এর প্রথম দিকে একদিন একটা মজার কান্ড হলো, মেডাম রোল করার পর মনির আর রাহিনকে বলল ষ্ট্যান্ড আপ, তারপর বিড়বিড় করে কি ইংরেজী বলেছিল সেটা তাদের দুজনের কাছে উল্কার মতো মনে হল, হা করে দাঁড়িয়েছিল দু'জন। তারপর যখন বাংলায় বলল, এখনো দাঁড়িয়ে আছো? বের হও আমার ক্লাশ থেকে, আর কখ্খনো আমার ক্লাশ করবেনা তোমরা দু'জন, মনিরতো খুবই খুশী ক্লাশ করতে হবেনা ভেবে, রাহিন পড়ল দোটনায়, এমনিতে সে ইংরেজীতে দূর্বল, তার উপর এমন শাস্থি, পরীই তাকে বুদ্ধিটা দিয়েছিল, টিচার্সরুমে মেডাম যখন একটু ফ্রি থাকবেন তখন যেন গিযে ক্ষমা চেযে নিয়ে অবরোধটা তোলা হয় এবং বুদ্ধিটা কাজে দিয়েছিল।
(বি.দ্র. চরিত্র/ঘটনা কাল্পনিক)
পর্ব তিন : Click this link
পর্ব এক : Click this link
বিষয়: বিবিধ
১২০৬ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তয় ধন্যবাদ দিতে তো আর পয়সা খরচ হচ্ছে না। এই লন--
ভালো লাগলো || ধন্যবাদ || পিলাচ || অনেক ধন্যবাদ || স্বাগতম ||
আর চলবেনা-
পর্ব তিনে খালাস
এবার একটু সমালোচনা; আপনার না লেখার
পারু/পরি...
গল্পটা কেমন যেন
চালিয়ে যান লেখা। শুকরান
মন্তব্য করতে লগইন করুন