নিতান্তই একান্ত
লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৩৪:৩৮ রাত
বর্তমান সরকার বা আ্ওয়ামিলীগ এর কর্মকান্ড এ পর্যন্ত যা করেছে তার চাক্ষুষ ক্ষয় ক্ষতি যেগুলো দেখা যাচ্ছে তা হল লাশ আর অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি, কিন্তু আর একটু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় আমরা ন্যুনতম পঞ্চাশ বছর একটা আত্মঘাতি সংঘাতের দিকে যার প্রধান কারণগুলো হল
১) সরকার প্রথমে টার্গেট করেছিল এবং সফল হয়নি এবং এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা হল জামাত শিবিরকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া, এই বিষয়টা একটু ব্যাখ্যা করা যাক:
-স্বাধীনতা যুদ্ধে জামাত এর বিতির্কিত অবস্থানের জন্য জামাত শিবিরকে যেভাবে এখন নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস চলছে শংকা হল নিশ্চিহ্ন করার পর তারা যাবে কোথায়! তারা যদি অন্য একটা উপজাতি হত তাহলে একটা উপায় ছিল রাষ্ট্রের মৌলিক যে অধীকার এমন কি ঘরবাড়ি ব্যাবসা বাণিজ্য জবর দখল করে হলেও একটা উপায় বের করা যেত, যুদ্ধের পর যেমন এ দেশে থাকা পাকিস্তানীদের এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় অথবা বার্মায় যেমন এখন রোহিংগারা যে পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে, তারা উপায় না দেখে সব ফেলে নাফ নদিতে নৌকা ভাসিয়ে দিচ্ছে।
-জামাত শিবিরকে যেহেতু এমন কিছু করা সম্ভব নয় এবং তাদেরকে বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদ থেকে যেহেতু কোন ভাবেই পৃথক করা যাবেনা তাই আওয়ামিলীগ যতই তাদের নিশ্চিহ্ন করতে চাইবে তাতে নিজ ঘরেই আগুণ দেবার মতো কাজ হচ্ছে, আজ হোক কাল হোক যেটা করা যায় তা হল জামাত শিবিরকে তার দোষ স্বিকার করিয়ে দেশেই রাজনীতি করার একটা পথ বের করা হয়
-কথাটা শুনতে হয়তো খারাপ বা বেখাপ্পা লাগতে পারে, কিন্তু বাস্তবতা হল আমাদের অন্য কোন উপায় নেই, কেননা জামাত শিবির এর অবস্থান এমন যে দেখা যাবে এক ঘরে এক ভাই আওয়ামিলীগ বা বিএনপি করছে অন্য ভাই জামাত শিবির, এখন যতই তাদের নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হবে তাতে ভাই এর বুকে ভাই ছুরী চালানো হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই
-আর এখন যেহেতু তাদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে সেই হিংসা বিদ্বেষ বহন করবে পরবর্তী প্রজন্ম পর্যন্ত, আমরা ঠিক তখনও মারামারি হানাহানি করব কিন্তু তখন যারা এসব করব এমনকি এখনও তারা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম, সুতরাং যারা যুদ্ধের পরে জন্ম নিল তাদেরও রাজাকার আলবদর বলে চিহ্নিত করে দীর্ঘ মেয়াদি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মতর হানাহানির একটা প্রক্রিয়া আওয়ামিলীগ চলমান রাখতে চাইছে, যার ফলে জাতি হিসেবে আমরা দূর্বল থেকে দূর্বল হব অন্য কিছু নয়
- এখন আইন করে দলটি নিষিদ্ধ করা যেতে পারে কিন্তু এরা তো দেশেই থাকবে, অন্য একটা দল করবে, সেটাতো আর রোধ করা যাবেনা, কেননা জামাত শিবির গণতন্ত্র কে মেনে নিয়েই রাজনীতি করছে, গণতন্ত্রে শর্তগুলো মানা হলে একটা দলকে তো আর নিষিদ্ধ বা রোধ করা যাবেনা, বরঞ্চ দেশে এখন কোন রাজনৈতিক দল গণতন্ত্র চর্চা করে বলে মনে হয়না যতটা না করে জামাত শিবির, এমনকি তাদের ব্যাবসা বাণিজ্য ইত্যাদি নিয়ে ভাবলে দেখা যাবে তারা চেষ্টা করে যতটুকু সম্ভব বৈধ ভাবে আয় রোজগার করা যায়, তাদের সাথে দর্শণগত মতদ্বৈততা থাকতে পারে অন্যদের সাথে কিন্তু তাকে সেভাবে ফেইস করা হচ্ছেনা, তাকে আদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করা হচ্ছেনা, তাকে দমন পীড়ন দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা হচ্ছে, যা তাদের সাময়িক ক্ষয় ক্ষতি হলেও তাদের নিশ্চিহ্ন করা যাবেনা কোন ভাবেই
-যার ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি এখন, তাদের নিশ্চিহ্ন করা গেলনা, তাই আওয়ামিলীগ এর দ্বিতীয় অপশন বেছে নিল ব্নিপির উপর চড়াও হওয়া, জামাত শিবির চাইতে বিএনপির উপর নৈরাজ্য চালানো কিছুটা সহজ কেননা তারা সংঘটিত হয় কোন আদর্শ এর চাইতে অর্থনৈতিক লাভ লোকশান হিসাব নিকেশ এর উপর, সুতরাং কারো আর্থিক কোন ক্ষতি হবে মনে করলে সে হয়তো বিএনপি থেকে বের হয়ে যেতে পারে, নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে কিন্তু জামাত শিবির এর বেলায় তা হয়নি, যুদ্ধ অপরাধী বিচার তারা মোকাবেলা করেছে দেশে থেকেই, ফাঁসী হবে তাও তারা পালিয়ে যায়নি।
-কথায় কথায় দেশকে পাকিস্তান বানাতে চাই এমন একটা ধোয়া তোলা হয় নিয়ত কিন্তু এবার চাক্ষুষ দেখা গেল ভারত কি পরিমাণ আমাদের দেশ তথা আওয়ামিলীগকে কব্জা করে বসে আছে, পুরো বিশ্বকে হতবাক করে দিয়ে একলা চল নীতিতে বর্তমান সরকার, একমাত্র ভারত এর উপর ভর করে কতদূর এগুনো যাবে সেটা আল্লাহ ভাল যানেন, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে কোন জনগোষ্ঠী এমন মাথানত সার্বভৌম মেনে নেবেনা সেটা নির্দিধায় বলা যায়, এখন হয়তো ভুলেয়ে ভালিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে কিন্তু অধীনতা কেউ সহ্য করেনা সেটা ব্যাক্তি বা রাষ্ট্রীয় জীবনে
-যেভাবে যাত্রা শুরু করলাম তাতে আরো অনেক জানালা খোলা হয়ে গেল যা বর্ণনা করা আরো সময় সাপেক্ষ এবং দীর্ঘ পথ কাউকে ধরে রেখে বিরক্তভাজন হবারও সম্ভবনা আছে তাই ন্যালসন ম্যান্ডালের এই প্রয়াণ দিবসে আওয়ামিলীগ যদি তার কাছে থেকে এই শিক্ষাটা অন্তত নিতে পারে তাহলে দেশটা বেঁচে যেত একটা দীর্ঘ মেয়াদী গৃহযুদ্ধ না হলেও হানাহানি থেকে, তা হর, ম্যান্ডেলা যখন ক্ষমতায় অধীষ্ঠিত হল তখন সাদা চামড়া লোকেরা ভাবল এবার তাদের কচু কাটা করা হবে, কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে সে অতীতকে ফুল ষ্টপ দিয়ে শুরু করল নতুন একটা অধ্যায় এর, কেউ কেউ হয়তো আমার উপর রেগে মেগে ঘেমে যেতে পারেন এই ভেবে যে জামাত শিবিরকে ক্ষমা করার একটা উপায় বলে দিলাম, কিন্তু না, তাদের বিচার করার ই্চ্ছা থাকলে করুন, কিন্তু প্রহসন এর বিচার নয়, হাত পা বেঁধে নয়, এতে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হব এবং হচ্ছি
বিষয়: বিবিধ
৯৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন