নিতান্তই একান্ত
লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ১১ আগস্ট, ২০১৩, ০১:৫৮:৫২ দুপুর
বিগব্যাং শব্দটা দ্বার কি বোঝানো যায়? এটা কি সৃষ্টি নাকি ধ্বংস? ধ্বংসটা যদি সামগ্রীক বিষয়টা ধারণ করে তাহলে সেটাকে নিশ্চিত করে বলা যায়, ধ্বংসটার পুরো আদল বদলে গিয়ে নতুন একটা কিছু সৃষ্টি হবে, কথাটা বললাম এ জন্য যে, আমার ধারণা, ভারত এখন বিগব্যাং এর দাঁড়প্রান্তে, তুমুল একটা ঝাকুনি আসবে রাষ্ট্রটির উপর, সেই ঝাকুনিতে হয়ে যেতে পারে প্রতিটা রাজ্য একটা করে রাষ্ট্র, কারণটা রাজনৈতিক নয়, আমার কাছে কারণ অন্য জায়গায়
ভারত এর ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি এখন খুবই উচ্চমার্গে আছে সেটা ব্যাবসা সফল এর জন্য এবং ব্যাক্তি ও সমাজের মনন, মানসিকতাকে পরিবর্তন এর অন্যতম অনেকাংশে একমাত্র নিয়ামক হিসেবে, ভারত এর মানুষের আচার-আচরণ, চাল-চলন, পোশাক-আশাক, কথা-বার্তা, চিন্তা-চেতনার মতো সবকিছু এখন নিয়ন্ত্রণ ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রির হাতে, তারা ফলো করছি তাদের ফিল্মের চরিত্রগুলোকে, আর হয়ে যেতে চাচ্ছে সেই স্বপ্ন ভূবনের এক একটা সুখপরী হয়ে বিচরণ করতে
এমন হওয়াটা নতুন কিছু নয়, পাশ্চাত্য বলতে আমরা যা বুঝি সেটা এমনই একটা সভ্যতা হযে গেছে, তবে ভারতএ ব্যাপারটা একটু ভিন্ন, পাশ্চাত্য খুব সহজেই ধর্মকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে, তারা নিজেরাই নেশা করে টালতো হয়েছেই, উল্টো ধর্মকেই নেশা খাইয়ে দিয়েছে, পুরো সপ্তাহ বা মাস ব্যাপি যে রংগ তামাশা করবে, সেটা গির্জায় গিয়ে ক্ষমা চাইলেই নিষ্পাপ হবার একটা ব্যাবস্থা তারা করে নিয়েছে, তাই বলা যায়, তারা যদি পাপ করেও থাকে সেটা সর্বোচ্ছ এক সপ্তাহ বা মাস এর জন্য কিননা তার আগের পাপগুলো গির্জায় গিযে মোচন করা গেছে, তাই তাদের পরকাল নিয়ে খুব একটা মাথা ব্যাথা নেই, গড নিশ্চয় এক সপ্তাহ বা মাস এর পাপা ক্ষমা না করে হিনমন্যতার পরিচয় দেবেনা
ভারত সনতনধর্মীয় একটা রাষ্ট্র, যাকে আমরা হিন্দু বলে থাকি, যদিও হিন্দু ধর্ম বলতে আদতে কোন ধর্ম বোঝায়না, এখানে অনেকগুলো ধর্ম বিদ্যমান সেগুলো গণনা করলে শত পেরিয়ে হাজার ছোয়ার ও সম্ভবনা আছে, তবে তারা পুজোরী, একটা একটা রাজ্যের পূজোর উপকরণ, দেব-দেবী ভিন্ন, তাই এতবড় একটা রাষ্ট্রে এতগুো ধর্মকে একবিন্দুতে আনার জন্য যে শব্দটার উৎপত্তি সেটা হল হিন্দু, তার মানে হিন্দু শব্দ দ্বারা বুঝায় অনেকগুলো ধর্মের একটা সমন্বিত রূপ যারা পুজারী।
মজার ব্যাপার হলো হিন্দু শব্দটা এসেছে সিন্ধু তীরবর্তী অঞ্চলের লোকজনদের চিহ্নিত করার প্রতীক হিসেবে এবং তার সাথে ধর্মের কোন যোগসূত্র নেই, আবার শব্দটার উৎপত্তি নিয়ে ইতিহাস বিদদের অনেক ব্যাখ্যা আছে, তবে আমার কাছে যেটা খুব মজাদার আর চমকপ্রদ মনে হয় সেটা হল, ধারণা করা হয মুসলমানরায় এই হিন্দু শব্দটা প্রথম ব্যাবহার করে এটাকে পাকাপোক্ত করে দেয়, প্রেক্ষাপটটা এমন, মুসলমানরা যখন বাণিজ্য করার মানসে ভারতে যখন নোংগর করে আর ভারতের মানুষের চাল-চলন, আচার ব্যাবহার নিয়ে কেন্দ্রে রিপোর্ট পেশ করে তখন সেখানে উল্লেখ করা হয়, ভারতের মানুষগুলো হরেক রকম দেব-দেবীর পুজো করে, তারা মূর্তি পূজক এবং নির্দিষ্ট কোন ধর্ম এখানে নেই, তবে সবগুলোর সমন্বিতরূপ হিন্দু ধর্ম বলা যেতে পারে, সেই থেকে হিন্দু ধর্ম শব্দটার পাকাপোক্ত হয় বলে অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন
সেই যায় হোক যে কথাটা বলার জন্য আমার এই হাড়ির ভেতরে ঢু মারা তা হল, ভারত তথা এই সনাতন ধর্মীয় অনুরাগীরা এক উত্তপ্ত সমাজের দিকে ধাবিত হচ্ছে, যা থেকে উত্তরণের উপায় পাওয়া খুবই কঠিন এবং আমার ধারণা সকলে একসাথে উত্তপ্ত হয়ে বিগব্যাং এর মতো এক বিষ্ফোণ ঘটিযে দেবে, কারণ হলো, ভারতে কর্পোরেট সমাজে এখন আস্তিকতার বিন্দুমাত্র উপকরণ পাওয়া যা্চ্ছেনা, তারা হয়ে উঠছে চরম নাস্তিক, যার ফলে তারা ছুড়ে ফেলতে চাইছে ধর্ম, দেব-দেবী, নৈতিক, আধ্যাত্মিক সবগুলো উপকরণ, আর ধর্মের জায়গাটা দখল করে খোদ ধর্মের আদলে যে জেকে বসে যেতে চাইছে তা হল ভারতের ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রিজ, কি জোয়ান, কি প্রৌড়, কি কিশোর, সবাই এখন ফলো করছে ফিল্ম এর চরিত্রগুলোকে
ফলাফল যা হবার তাই হচ্ছে, সেখানে এখন সমাজ বিজ্ঞানের বিষয় হয়ে যাচ্ছে সমকামিতা, বিযে না করেও একসাথে স্বামী-স্ত্রীর আদলে থাকা, ঘরে বউ-ঝি, রেখে মিথ্যে কথা বলে প্রেম করা, আর প্রেম বলতে এখন আর বুঝায়না যে, দুটো মন মিল হয়েছে বিয়েটা বাকি, এখন প্রেম শব্দটার অর্থ দাড়িঁয়ে গেছে তারা গোপনে একবিছানায় রাত কাটায়, এখন প্রতিদিনকার খবরের কাগজের চমক হচ্ছে কোন নায়ক নায়িকা কার সাথে ডিটিং করছে, আগে কার সাথে করত এসব, এখন আর ঘর ভাংগেনা, এখন ভাংগে প্রেম, নায়ক নায়িকার বিয়ে করছে খবর যখন আসে, তার সাথে এটাও আসে, তার আগে কে কতটা বিয়ে করেছিল, তিন অথবা চার এমন সংখ্যাও পাওয়া যায়
ভারতের কোর্ট কাচারীতে এখন নতুন নতুন সমস্যা এবং সংকট দেখা দিচ্ছে, তাদের নতুন নতুন ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে নিত্য দিনের হরেক রকম ঝুট ঝামেলার, প্রতিদিন কত শিশু রক্তজমাট হযে গলে যা্চ্ছে তার ইয়াত্তা নেই, ডাষ্টবিনের শিশু এখন কুকুরের মুখের খাবার, সমাকামীরা আন্দোলন করছে তাদের অধীকার চাই, দু'জনের সম্মতিতে বিছানায় গিয়ে পরে মামলা হচ্ছে ধর্ষণ বলে, বেচারা বিচারক হিমশিম খাচ্ছে, যখন তারা বিছানায় ছিল তখন কোন এক পক্ষ কি চিৎকার করেছিল কিনা, প্রতিরোধ করেছিল কিনা, যদি না করে থাকে তাহলে সেটা ধর্ষণ হবে নাকি প্রতারণা হবে এসব হরেক রকম প্রেমলীলার উপসর্গ এখন ভারত মাতার মাথার উপর
মোট কথা ভারতের বর্তমান হত্যা, ধর্ষণসহ যত মানবিক বিপর্যয় সেটার কেন্দ্র মুলত তার ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রীজ যা অদূর ভবিষ্যতে এক মহামারী আকার ধারণ করার খুবই সম্ভবনা আছে বলে আমি মনে করি, তাই বলা যায়, ব্যাভিচার এর জ্বালামুখে এখন ভারত, সিনেমার প্রভাবে সেখানে হারাতে বসেছে ধর্ম, পরিবার, নৈতিকতা সবকিছু, যে কোন মুহুর্তে গর্জে উঠতে পারে ভারতর এই ধর্মপ্রাণ মানুষগুলো ঢের হয়েছে আর চলতে দেয়া যায়না বলে, অত্যন্ত দু:খের বিষয় আমরা বাংলাদেশীরা বিষয়টা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা খুবই জরুরী, রোকেয়া, মিতারা কোন সভ্যতার ইংগীদ বহন করতে চাইছে সেটা যদি আমরা গুরুত্ব না দিই তাহলে, ভারতের উত্তপ্ত জ্বালামুখের আভার আচেঁ আমরাও হারাতে পারি আমাদের শেকড়
রিলেটেড লিংক : Click this link
বিষয়: বিবিধ
২০১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন