ডান আর বাম নয় যুদ্ধটা চলছে ইসলাম এবং এন্টি ইসলাম এর
লিখেছেন লিখেছেন বাকপ্রবাস ০৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:৫৬:৫২ বিকাল
দেশে যুদ্ধাবস্থা চলছে, সবার কাছে এখন আলোচনার বিষয় আস্তিক আর নাস্তিক, এই দু্ই পন্থি একেবারে এখন মুখোমুখি, কিন্তু বর্তমানে দেশে যে কর্মকান্ড চলছে সেটা শুধু আস্তিক আর নাস্তিক এর ব্যাপার নয়, ব্যাপারটা আসলে একটু অন্য রকম, আসল ব্যাপারটা হল আস্তিক আর নাস্তিক নয়, যুদ্ধ চলছে ইসলাম আর এন্টি ইসলাম এর সাথে
@
আমি নিজেকে একজন আস্তিক বলে দৃঢ় ভাবে মনে করি, কিন্তু একজন নাস্তিক যদি সত্যিকার অর্থে নির্ভেজাল নাস্তিক হয় তাহলে তাকে আমি সাপোর্ট করি এবং আমার পছন্দের তালিকায় রাখতেও দ্বিধাবোধ করিনা, উদহরণ দিতে হলে সর্বপ্রথম যার নাম বলব তিনি হলেন ফরহাদ মজহার, যাকে আমি এমন পছন্দ করি যে, বর্তমানে বাংলাদেশের কোন আস্তিক কে আমি এতটা পছন্দ করিনা, যদিও ফরহাদ মজহারকে যদি প্রশ্ন করা হয় আপনি আস্তিক নাকি নাস্তিক ওনি নির্দিধায় নাস্তিক বলবেন যদিও এমন প্রশ্ন করাটা হাস্যকার হবে, তার জীবন দর্শন, গবেষণা, ইত্যাদি যে জানে সে কোনদিন এমন ঠুনকো প্রশ্ন করবেনা
@
বিষয়টা একটু চিন্তা করে দেখুন, ফরহাদ মজহার আজকে বাধ্য হলেন হেফাজত ইসলামের লং মার্চকে সাপোর্ট করতে, কিন্তু কেন? ওনিতো কখনো কোরান হাদিস নিয়ে কথা বলেননি, ইসলামি সমাজ নিয়ে ওনিতো কোনদিন মাথা ঘামাননি, তবুও আজ ওনি কেন বাধ্য হলেন ইসলামি ভাবধারার একটা অরাজনৈতিক সংগঠনকে সমর্থন করার, ওনার কি এমন ঠেকা পড়েছে!
@
ওনি কেন বাধ্য হলেন তার বিষদ বিবরণ আসলে স্বল্প পরিসরে বোঝানোও দুস্কর, ব্যাপারটা বুঝতে হলে রাজনীতি, রাষ্ট্র, সরকার, সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে ওনার যে ধারণা, লিখালিখি, বই, প্রবন্ধ বা কলাম আছে সেগুলোর সাথে জানাশুনা না থাকলে ব্যাপারটা সহজে ধরা দেবেনা, তবুও সংক্ষেপে বলা যায়, আজকের শাহবাগ কেন্দ্রিক যে আয়োজন তার পেছনের এবং সুদুর প্রসারি যে ফলাফল উনি নিশ্চিত দেখতে পাচ্ছেন বলেই আজকে বাধ্য হলেন রাজনীতির ঢামাঢোলে ভয়, বিপদ, শংকা, আশংকা থাকার পরও রাজনীতি বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে, ফরহাদ মজহার কখনো এই তথাকথিত ঠুনকো রাজনীতি নিয়ে কথা বলবেন, মাথা ঘামাবেন সেই মাপের লোক উনি নন, অন্তত ওনার একজন পাঠক হিসেবে আমি সেটা উপলব্ধি করি।
@
যারা ফরহাদ মজহার এর লিখালিখির ন্যুনতম খবরাখবর রাখেন তার খুব সহজেই বুঝতে পারেন ভারত কিভাবে আমাদের রাজনীতি, রাষ্ট্র এবং সার্বভৌমত্ব নিয়ে ছেলেখেলা করে, ভারত এর সাথে ইসরাইল এবং আমেরিকার যে গোপন সামরিক চুক্তি আছে সেসব খবরাখবর আমি ফরহাদ মজহার এর লিখালিখি থেকেই জানতে পারি, এবং কি এসবের মোকাবেলা করতে হবে, এসব বিষয়ে বিস্তারিত উনি লিখেছেন, ফরহাদ মজহার বলেছেন আমাদের প্রতিটা নাগরিককে সৈনিকতা শিক্ষা বাধ্যতামুলক করার প্রয়োজন আছে যদি আমরা ভারতের সাথে মোকাবেলা করতে চাই এবং বর্তমান বিশ্বের ভূরাজনীতি আর অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে হলে সমগ্র জাতিকে একতাবব্দ হওয়া এবং সৈনিকতা শিক্ষা ছাড়া আর কোন উপায় নেই
@
সৈনিকতা কি জিনিস তার বিশদ বিবরনে আর যাচ্ছিনা, শুধু বলে রাখি আমাদের স্কুল কলেজে স্কাউট এবং বি এন সি সি আছে এবং আমরা অনেকেই সেখানে সম্পৃক্ত হই, এগুলো এক প্রকার সৈনিকতার একটা ধরণ, দেশ যখন বিপদে পড়বে তখন যারা ছাত্র জিবনে বি এন সি সি করেছে তারাই যোদ্ধা ফোর্স এর সহকারী ফোর্স হিসেবে কাজ করবে, এবং এই শিক্ষাটাই আর একটা দর্শন আর আদর্শ দিয়ে এমন করে জাতিকে গঠন করতে হবে যাতে প্রতিটা নাগরিক এর মনে বজায় থাকে আমি একজন দেশ প্রেমিক এবং সৈনিক, এমন করে যদি আমরা একটা জাতি তৈরি করতে পারি তাহলে দেশে যদি ষোলকোটি মানুষ থাকে তাহলে শিশু আর বৃদ্ধ ছাড়া সকলকেই সৈনিক হিসেবে কাওন্ট করা যাবে, আর তখন আমাদের সামরিক শক্তিটা কত বড় ব্যাপার হয়ে যাবে একটু ভেবে দেখুন
@
কিন্তু আজ আমরা যে বিভাজনের রাজনীতি করছি এসব চিন্তা সম্পূর্ণ যেন অমুলক, আমরা আজ বন্দুকের নল নিজেদের দিকেই তাক করে বসে আছি, আর আমাদের এই হানা হানিতে যে দেশটা ষোল আনা সরাসরি লাভবান হচ্ছে তা হল ভারত, আমাদের ভারতের সাথে আমাদের অসম বাণিজ্য তো আছেই, আমাদের গার্মেন্টস শিল্পে আমরা ভারতকে পেছনে ফেলে দিয়েছি সেই শিল্পটা এখন ভারতের হাতে যাওয়াটা সময় এর ব্যাপার, আর কিছুদিন হানাহানি বজায় থাকলে এখানকার গার্মেন্টস শিল্প এমনিতেই গুটিয়ে যাবে, আর অন্যান্য শিল্প তার আগেই গুটাবে
@
ভারতের সাথে আমাদের রয়েছে সীমান্ত, আমাদের যেমন বিজিবি আছে ভারতের আছে বিএসএফ, সেই বিএসএফ শুধু বাংলাদেশের সীমান্ত পাহাড়া দেয়না, তাকে দিতে হয় পাকিস্তান আর চিনের সাথে যে সীমান্ত আছে তারও পাহাড়া, তায় ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে অনেক বেশী বরাদ্ধ করতে হয়, বাংলাদেশ সীমান্তে যেমন পাখির মতো মানুষ মারে অন্য সীমান্তে কিন্তু এমন নয়, বাংলাদেশের সাথে ভারতের যে আচরণ অন্য দেশের সাথে তেমনটা করতে পারেনা, কিন্তু আমরা যদি, জাতি হিসেবে আরো আত্মমর্যাদার পরিচয় দিতে পারি আমরা যদি প্রতিরোধ গড়তে পারি বিএসএফ এর তাহলে ভারতের নতুন মাথা ব্যাথা দেখা দেবে এবং তাদের প্রতিরক্ষা ব্যায় আরো বেড়ে যাবে, তায় হয়তো বিডিআর আজ নিশ্চিহ্ন, বদলে গেছে নাম, পোশাক, আদর্শ এবং দর্শন, আর তায় বিডিআর বিজিবি হয়ে বন্দুকের নল এখন নিজের দিকেই, ওদের ডিউটি এখন সীমান্তে নয়, ডিউটি নিজের ঘরে, নিজের ভাই এর দিকে বন্দুকের নল
@
আমি একজন ফরহাদ মজহার এর পাঠক বলেই হয়তো বিষয়গুলো এমন করে ভাবছি এবং বুঝতে পারছি, আজকে দেশের যে রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি এবং সর্বশেষ সংযোজন যে শাহবাগ সেটা পুরোটাই ভারতের ছকে হচ্ছে, আমরা আজ দারুণভাবে অস্তিত্বের সংকটে, আর দেশে আজ যে যুদ্ধ চলছে সেটা কোনভাবেই আস্তিক আর নাস্তিকের নয়, যদি তেমন হতো তাহলে ফরহাদ মজহার কোনভাবেই হেফাজত ইসলামকে সমর্থন করতে পারতেননা, ওনি সমর্থন করছেন কেন ব্যাখ্যা ওনি প্রতিদিন দিচ্ছেন, তা থেকেই সবাই বুঝতে পারছেন, আর যে ব্যাখ্যাটা সরাসরি বলা যায়না, কিছু উপলব্ধি, চিন্তা, দর্শন ইত্যাদি প্রয়োগে বুঝে নিতে হয় আর তা হল বর্তমান সংকটের কলাকাঠি নাড়ছে অবশ্যই ভারত, আরো সহজভাবে বুঝতে হলে মনমোহন এর বাংলাদেশ সফর এর প্রেক্ষাপট টা একটু চোখ বোজে ভাবলেই সবাই উত্তর পেয়ে যাবেন
@
আমি আবারও বলছি বর্তমান সংকটটা ডান বাম নয়, সংকট হলো ইসলাম এবং এন্টি ইসলাম, ভারত এবং ভারতিয় দালালরা আজ সরাসরি ইসলামকে আঘাত করতে চায়, নিশ্চিন্হ করে দিতে চায়, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়, কিন্তু এখানে বার বার ফেনা তোলা হয় সাম্প্রদায়িক দাংগা শব্দটা ব্যাবহার করে, আজ দেশে ধর্মপ্রিয় মুসলমানরা নির্জাতিত, রাষ্ট্রিয় সন্ত্রাষ চলছে সর্বত্র সেই সূত্রে প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ করার জন্য ফরহাদ মজহার এগিয়ে এসেছেন, একটা গোষ্ঠি আজ নির্মূল করে দিতে চায় সরকার, গণহত্যা চলছে দেশে সেই সূত্রে ফরহাদ মজহার আজ এগিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন বিবেকের তাড়নায়, অন্যথা ইসলাম কায়েম করা ওনার লক্ষ্য না
আস্তিক এর নাস্তিক একটা দ্বন্ধ থাকতে পারে তবে সেটা একাডেমিক হবে, কখনো শরীর এর উপর আক্রমণ করে নয়, নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে নয়, গণহত্যা করে নয়, দেশে আর যা চলছে সেটা উদ্দেশ্যমুলক ইসলামকে ধ্বংস করার ভারতের ষড়যন্ত্র
@
আক্রমণ শুরু হয়ে গেছে শিক্ষা ব্যাবস্থায়ও, ইসলাম ধর্মের অপব্যাক্ষা চলছে স্কুলের ধর্মশিক্ষা বই এ, আর শারিরীক শিক্ষা বইয়ে উসকে দিচ্ছে যৌনতা এভাবে সর্বদিক দিয়ে দেশকে পংগু করে ফেলা হচ্ছে তায় আমাদের হতে হবে আরো সচেতন এবং তথাকথিত শিক্ষিত না হয়ে প্রকৃত শিক্ষিত হতে হবে, হতে হবে দেশপ্রেমিক
বিষয়: বিবিধ
১২০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন