ইনকিলাব বন্ধ আর মখার উপর জুতা বৃষ্টি ! মিডিয়া রিভিউ
লিখেছেন লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ১৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:১৮:৪৮ রাত
অবশেষে ইনকিলাব পত্রিকাও বন্ধ করা হয়েছে। আমারদেশ স্টাইলে কমান্ড অভিযানের মাধ্যমে পত্রিকা অফিসকে চারপাশ থেকে পুলিশ দিয়ে ঘিরে ফেলে সকল কে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সকলকে জড়ো করে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই ঘন্টার তল্লাসি অভিযান চালানো হয়। যেন এটি কোন পত্রিকা অফিস নয় বরং ওসামা বিন লাদেন টাইপের কোন জংগি সন্ত্রাসীর গুহা!
অতি উৎসাহী পুলিশ বাহীনী সাংবাদিকদের কম্পিউটার জব্দ করেছেন।এবং সম্পাদক কে না পেয়ে তিনজন সাংবাদিক কে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছেন!
বাকশাল এবং ইনুর দ্বিতীয় মেয়াদের বউনি করা হলো ইনকিলাব কে দিয়ে। এরপর হয়ত মানব জমিন এবং নয়া দিগন্ত এবং একুশে টিভি আর বাংলাভিশন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এটা একটি স্বাভাবিক পক্রিয়া বলেই তেমন একটা গুরুত্ব পায়নি মিডিয়ায়। বরং সরকারপন্থী মিডিয়া যেন খুব মজা পেয়েছে। তাদের গাছাড়া নিউজ পড়ে কিছুটা পুলকিত হলাম। কেননা আমার দেশ বন্ধ করে সম্পাদক কে গ্রেফতার করার পর ইনকিলাব ও এমনি নিউজ করেছিল। ইনকিলাব গত প্রায় আট বছর আওয়ামী সেবকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছিল। তবে বছর খানেক ধরে কিছুটা সরকারের সমালোচনা করার চেষ্টা করে ছিলো যার পরিনামে এটি সিলগালা হল।
ইনকিলাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা একটি নিউজ করেছে যার শিরোনাম, ‘সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর অপারেশনে ভারতীয় বাহিনীর সহায়তা’ ঐ রিপোর্টটি মূলত ফেসবুকে ফাস হওয়া একটিফাক্স বার্তা নিয়ে। যেখানে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে সাতক্ষিরায় যৌথ্য বাহীনির অভিযানের সময়ে ইনডিয়ান সামরিক বাহীনির সদস্য প্রবেশ করে ছিলো ।
সংবাদটি তারা ফেসবুকের বরাত দিয়ে লিখে ছিল সেখানে সাংবাদিকতার সকল নিয়ম মেনে সবার বক্তব্য নেওয়া হয়েছিলো। তারপর ও যদি সেটি মিথ্যা সংবাদ হয় তা প্রতিবাদ করা যেত । মামলা করে আদালতে যেতে পারতো সরকার। কিন্তু সরকার বাকশালকে ফলো করেছে। অবশ্য এর মাধ্যমে এটাও প্রমান হল যে ইনকিলাবের প্রকাশিত রিপোর্ট টি সত্য। সত্য বলেই সরকার সহ্য করতে পারেনি। এর মাধ্যমে সরকার এই ম্যাসেজ দিল যে সত্য প্রতিষ্ঠতই হোক তা প্রকাশ করা যাবে না। যার প্রমান একই দিনে মহিউদ্দিনের উপর জুতা নিক্ষেপের ঘটনা। আমারদেশের রিপোর্টে লিখেছে,…….এ সময় তারা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘নাস্তিক ও খুনি’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তাকে লক্ষ্য করে শত শত জুতাও নিক্ষেপ করা হয় এবং তাকে উপর্যুপরি কিল ঘুষি লাথি মারা হয়। এ সময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা ও কচুয়া থানা পুলিশ তাকে দ্রুত মঞ্চ থেকে নামিয়ে গাড়িতে তুলে দেন।
গাড়িতে করে ওই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার সময় মুসল্লিরা ধর ধর বলে ধাওয়া করে ইটপাটকেল ও শত শত জুতা নিক্ষেপ করে। এ সময় মখা আলমগীর শারীরিকভাবে চরম লাঞ্ছনার শিকার হন। এতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়িসহ তার বহরের তিনটি গাড়ি ভাংচুরের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এ সময় ৬ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।
কিন্তু প্রথম আলো লিখে,………চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার একটি মাদ্রাসার মাঠে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। হামলাকারীরা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। তবে এতে তাঁর কোনো ক্ষতি হয়নি। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
একই দিনে আরেকটি আওমী অনলাইন পত্রিকা বাংলানিউজ২৪ নিউজের সংবাদ লেখার স্টাইল দেখতে পারেন। ছাত্র লীগের গুন্ডামী এবং গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার শিরোনাম কতটা আদর মাখা! …..সামলানো গেলনা ছাত্রলীগ কে সার্কিট হাউজের ভেতর সংর্ঘর্ষ গাড়িতে অগ্নি সংযোগ ।
এসব রিপোর্ট পড়লেই স্পষ্ট হয় যে এই দেশে এখন আর স্বাধীন কোন গনমাধ্যম নেই। সবাই মিডিয়া নিজেদের স্বার্থে নগ্নভাবে ব্যাবহার করছে। সংবাদ কর্মীরা ভাড়াটে খুনিদের মত মালিকের ইচ্ছে পুরণ করছে। কোন স্বতন্ত্র সৃজনশীলতা নেই তাদের। কলের পুতুলের মত ব্যাহার হচ্ছে মিডিয়া কর্মীরা!
মিডিয়া হাউজ গুলির মালিক সুবিধাবাদি ব্যাবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। ফলে তারা এক হতে পারছে না। জনগণের অধিকার নিয়ে লিখতে পারছে না। জনগণ সত্য নিউজের পয়সা দিয়ে হলুদ মিথ্যা নিউজ পড়তে বাধ্য হচ্ছে।
সত্য লেখার চেষ্টা করায় ইতিমধ্যই অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চ্যানেল ওয়ান, সিএসবি, আমারদেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, সোনার বাংলা ব্লগসহ বেশ কিছু ব্লগ সাইট এখন নতুন সংযোজন হলো ইনকিলাব।
এই প্রক্রিয়া আশা করছি অব্যাহতই থাকবে কেননা সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা হরনের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য বহনকারী আওমীলীগ সরকার কায়দা করে আবারো ক্ষমতায়।
আমি এখন সংবাদ পত্র পড়া প্রায়ই ছেড়ে দিয়েছি। ফেসবুকের তথ্যই আমার কাছে সত্য মনে হচ্ছে। অন্যরাও ট্রাই করতে পারেন।
http://mmobidur.wordpress.com/2014/01/17/ইনকিলাব-বন্ধ-আর-মখার-উপর-জ/
বিষয়: বিবিধ
১৪৬০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কয়েকটি জেলা নয় পুরো দেশটি ভয়ঙ্কর ডাকাত দল কর্তৃক আক্রান্ত । ওরা মানুষও না, মন্ত্রিও না, ওরা আওয়ামিলীগ। তাই জুতা বৃষ্টি, ঝাটা আর গুসি বৃষ্টি শুরু করেছে সচেতন জনগন ।
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন