সম্ভবত আদালত ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি অজনপ্রিয় অবস্থা পেরুচ্ছে।

লিখেছেন লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৮:১৭:১০ রাত



আদালত অবমাননা সর্ম্পকে আমার তেমন একটা ধারণা নেই। এই লেখা আদালত অবমাননা করবে কিনা জানিনা। কেননা কোন কথায় আদালত অবমাননা হয় তার স্পষ্ট কোন অভিধান নেই। দেখা গেল আমি একটা সাধারণ কথা বলেও জেল জরিমানার স্বীকার হতে পারি। অপর দিকে সরকারী দলের লোক হলে হয়ত আদালত কানেই তুলতো না আমার কথা। ইতিপূর্বে সত্যি কথা লেখা আর প্রকাশের দায় নোমান এবং মাহমুদুর রহমান সাহেব জেল খেটে এসেছেন। আদালত বলেছিলো, লেখা সত্য ......!

বাংলাদেশে অসম্ভব বলে কিছু নেই। অলিউল্লাহ নোমান এখন নির্বাসিত। অথচ সত্য প্রকাশ করার জন্য সরকারের উচিৎ ছিলো তাকে পুরস্কৃত করা।

কেননা একজন বিচারক কোন যুক্তিতেই বলতে পারেনা ..সরকার গ্যাছে পাগল হইয়া ,তারা একটা রায় চায়.!

একজন বিচারক কোন যুক্তিতেই বিচারাধীন মামলা নিয়ে সিভিল পাবলিকের সংগে আলোচনা করতে পারেনা।

‍‍‌‌‌‌......আমি দাড়ামু আপনি বসাইয়া দিবেন" টাইপের কথা বার্তা একটি বিচার ব্যাবস্থাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছে। এই দায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন বটে তবে সেটাও প্রহসন। আমরা দেখছি তিনি এখনও বিচারকই আছে। এই সরকার এর আমলে প্রায় পঞ্চাশ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের অভিযোগ রয়েছে।

এই ট্র্যাইবুনাল তাদের বিচার কার্য নিয়ে দেশ বিদেশে আলোচিত হয়েছেন। এতে করে একটি ভালো উৎদোগ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

স্বাক্ষীর নিখোজ হওয়া আর ভিডিও ফাস হওয়া সব কিছুই কেমন যেন লাগছে। এটা জনগনের আস্থার উপর আঘাত করেছে বলে অনেক বিশেজ্ঞ মত দিয়েছেন। বিচারের নামে নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে বলেই অভিযুক্তদের পরিবার দাবী করেছেন। টিভি টকশোতেও আদালতের সমালোচনা করা হয়েছে।

আদালতের বারান্দায় দাড়িয়ে রায়ের আগে পরে সরকার পক্ষর আইনজীবীদের ডায়লগ এত বেশি নগ্ন ভাবে আদালতের উপর তাদের প্রভাব দেখায় যে মানুষ অবাক হতেও ভুলে যায়।

মাহমুদুর রহমান, আদিলুর রহমান অথবা বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের সংগে আইন- আদালত যে আচরণ করছে তা অনেক সময় মানুষকে ব্যাথিত করেছে।

কেননা সরকার দলীয়দের ব্যাপারের সম্পূর্ন ভিন্ন এক বিচার বিবেচনা দেখছে জনগণ।

আরো দুঃখজনক হলো সরকারের রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক মামলাকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগি বিচার প্রার্থীদের আবেগ চাওয়া পাওয়ার চেয়ে সরকারের স্বার্থ বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। খুনের মামলার আসামীও ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।

আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিনা কারনে একজন প্রকোশলী, সম্পাদক জেল খাটছে। আরেক জন সাংবাদিক পিটিয়ে ও জামীন পাচ্ছে। এসব খালি চোখে অনেক প্রশ্ন মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি করে।

ন্যায় বিচার পাবার আশাকে সংকুচিত করে।

সব সময়ই সরকার দলের জন্য আইন যেন কেমন কুয়সাময় বলে মনে করছে জনগণ।

সংবিধান যেখানে সকল নাগরিককে সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে বলেছে সেখানে একই অপরাধে ভিন্ন সাজা দেওয়ার প্রবণতা বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

আদালতের সমালোচনা করে একমাত্র মাহমুদুর রহমান ছাড়া সবাই মাফ চেয়ে পার পেয়েছে। কিন্তু আদালত কি তার মান ধরে রাখতে পারছে ?

এখন রায়ের আগেই সরকারের মন্ত্রী এমপি গণ আগাম বলে দিচ্ছেন কি রায় দেওয়া উচিৎ। দুঃভাগ্য আমাদের। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও বাক স্বাধীনতার জন্য জেলে যেতে হচ্ছে। টিভির টকশো তে বক্তার একটা কথা সহ্য করতে পারছে না আদালত!

অথচ এই সরকারের আমলে আদালত বিচার কাজের চেয়ে বেশি মনযোগ দিয়েছে রাজনৈতীক সিধান্ত গুলির উপর। ত্বাবধায়ক বাতিল এর মত অস্পষ্ট রায় এখন সারা দেশের মানুষের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাজ ফেলে দিয়েছে।

আদালত এতবেশি রাজনৈতীক কাজ কর্ম করেছে যে আমজনতা বলছে, আদালত বিচার কার্যর চেয়ে সরকারের নানা ফরমায়েসি কাজেই বেশি মনোযোগ দিয়েছে।

সম্ভবত আদালত ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি অজনপ্রিয় অবস্থা পেরুচ্ছে।

সামনে যে কালো মেঘ দেখছি এর দায় এড়াতে পারবে কি আদালত

https://www.facebook.com/pages/এম-এম-ওবায়দুর-রহমান-এর-লেখা-সমগ্র-/112753505583832

বিষয়: বিবিধ

১৪৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File