আড়াই বছর ধরে অপহৃীত সাত বাংলাদেশী ভাইকে উদ্ধারে এগিয়ে আসুন সবাই

লিখেছেন লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ১৫ জুলাই, ২০১৩, ০৩:০৭:৫০ দুপুর



২০১০ সালের নভেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে কেনিয়া যাওয়ার পথে মালয়েশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ আলবেদো সোমালিয়া উপকূলে ৭ বাংলাদেশিসহ ২৩ জন নাবিক নিয়ে জলদস্যুদের কবলে পড়ে ।

ইতিমধ্যে কেটে গেছে দীর্ঘ আড়াই বছর।

মুক্তিপণের বিনিময়ে পাকিস্তানি নাবিকরা দেশে ফিরলেও বাংলাদেশি নাবিকদের মুক্তি হয়নি সরকার এবং জাহাজ কতৃপক্ষর গাফলতির কারনে চরম ঝুকিতে আছে ৭টি তাজা প্রাণ।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট শিপিং অডিন্যান্স ১৯৮৩ অনুযায়ী জাহাজে কর্মরত নাবিকের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সরকার এবং এর মালিকপক্ষের। কর্মরত অবস্থায় নাবিকের চাকরি, স্বাস্থ্য ও পুনরায় জাহাজ থেকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্বও সরকার এবং মালিকপক্ষের। সে অনুযায়ী আটককৃত নাবিকদেরও ফিরিয়ে আনার জন্য শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে তাদের। এবং ধারা ১৩৬-এ বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ বিপদগ্রস্ত হলে নাবিকদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের।

অথচ এ বিষয়ে নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক নুরুল আলম নিজামী জানান, সরকারিভাবে জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেয়া আইনসিদ্ধ না হওয়ায় বেসরকারিভাবে অর্থ সংগ্রহ করে নাবিকদের উদ্ধারে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।



প্রশ্ন হলো এই পক্রিয়া কত দিন ধরে চলবে?

এই সাতজন বাংলাদেশি নাগরিক প্রবাসে গিয়ে ছিলো তাদের স্বজনদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য। তাদের বৃদ্ধ বাবা মা আর স্ত্রী সন্তানদের চোখে ছিলো অনেক স্বপ্ন।

তাদের সেই স্বপ্ন ভেংঙে দেয় সোমালীয়ান জলদুস্যরা। মোটা অংকের মুক্তিপণ দেওয়া ঐ দুস্থ পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তারা বার বার সরকারের কাছে দেশের সুশীল সমাজের কাছে অনুনয় জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার দৃশ্যত কিছুই করেনি।

সাতটি পরিবারের স্বজনরা কোন উপায় না দেখে সেদিন অশ্রু ভেজা চোখে রাস্তায় দাড়ায়। বুকের সংঙ্গে অপহরণ হওয়া স্বজনের লাশ। টিভি পর্দায় ঐ দৃশ্য দেখে অনেকক্ষন বাকরুদ্ধ হয়ে বসে থাকি।

মাত্র আড়াই কোটি টাকা হলেই মুক্তি পেতে পারে এই হতভাগ্য মানুষ গুলো। যে দেশের অর্থমন্ত্রী সংসদে দাড়িয়ে বলেন চার হাজার কোটি টাকা কোন টাকা নয়! সেই দেশের নাগরিক কেন আড়াই বছর ধরে বন্দি থাকবে?

মানব অধিকার সংগঠন গুলির কাছে প্রশ্ন আপনারা কি করছেন? এসিরুমের শিতল হাওয়ায় বসে সেমিনার করে শুধু বড় বড় কথা বলেন অথচ আজ যখন আমার ভাই অনাহারে অর্ধাহারে বন্দি তখন আপনারা নুসপুংসুকের মত তাকিয়ে আছেন কেন?

পরিবারের একমাত্র উর্পাজনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে সাতটি পরিবার আজ বাকরুদ্ধ! তাদের পক্ষে টকশো নেই। আলোচনা নেই। সংসদে কোথাকার কোন তেতুল নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অশ্রিল আলোচনা হতে পারে অথচ রাষ্ট্রের সাতজন নাগরিক কে মুক্ত করতে রাজনৈতিক দল গুলো নিঃশ্চুব!

প্রবাসিরা এই দেশকে বছরের পর বছর ধরে রেমিটেন্স দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে যাচ্ছে। অথচ রাষ্ট্র তাদের বিপদে কোন রকম দায় নিচ্ছে না!!



ফেসবুকে এবং ব্লগে আমরা অনেক সময় হালকা বিষয় নিয়ে মাতামাতি করি। আমরা অনেক ভালেঅ ভালো ব্যাপারেও কাজ করি। অনেক অন্যায়ের প্রতিবাদ করে কাপিয়ে দেই প্রসাশন কে।

আমরা কি পারিনা এই ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসতে?

আমরা কি পারিনা কোন ইভেন্ট করে এই সাতজন দুষ্থ মানুষকে তাদের পরিবারের বুকে ফিরিয়ে দিতে?

কেউ কি আছেন আমার সংঙ্গে?

একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক, যেই দেশ মাত্র নয়মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করার গৌরব অর্জন করেছিলো। সেই দেশের নাগরিক কে কার সাধ্যে আটকে রাখার?

না আসুক কোন সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, সুশীল আমরাই উদ্যোগ নেই না !

দেখি কি হয়!

এই পোষ্টটিতে লাইক নয় বরং শেয়ার প্রতাশ্যা করছি। কমেন্ট প্রত্যাশা করছি।

আশা করছি পরামর্শ এবং প্রতিবাদ করবেন সবাই।

এই পবিত্র রোজার মাসে আমার একান্ত অনুরোধ আসুন এই ভালো কাজটি করি।

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File