বাকশালের প্রথম দিনে একজন আম জনতার প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ২০ মে, ২০১৩, ১০:২৫:৪৮ সকাল



বাকশালের আনুষ্ঠানিক ঘোষনার পর দেশের সবাই যেন একটু নড়েচড়ে বসছেন। তাইতো এইটা কি হলো? এমন একটা ভাব। তারা যেন ভুলেই গিয়েছে গত চার বছর ধরে দেশে বাকশাল চলছে। ঘোষনাটা মাত্র বাকি ছিলো। কাল মখা ঘোষণাটা দিয়েছেন। হঠাৎ অনেক বুদ্ধিজীবী বেশ কড়া কড়া কথা বলে নিজেদের জাতির বিবেক হিসেবে ভাব নিতে দেখলাম। বেসরকারী বিটিভি গুলো কেটে ছেটে তা প্রচার করছে।

সোসাল মিডিয়ায় ও ব্যাপক লেখা হচ্ছে। একে তাকে দোষ দিয়ে নানা মুনির নানা মত প্রচা করছে। চামে বিএনপির সমালোচনা ও হচ্ছে। দূবর্ল বিরোধী দলের জন্যই নাকি এই অবস্থা!

যাইহোক আজকের সব গুলো পত্রিকার প্রধান শিরোনাম হয়েছে এই খবরটা। তবে শিরোনাম যাইহোক সবাই যেন সরকারের পক্ষেই লিখেছেন। একমাত্র মানব জমিন আর আমার দেশ বাদে।

এতদিন সুযোগ পেলেই হাসিনা আপা তার ভাই সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদ কে নানান ভাবে উপহাস করতেন, বলতেন এরশাদ সংবিধান লংঘন করে একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্র চালু করে ছিলেন। কিন্তু এখন দেখছি স্বৈরাচারের সঙ্গে জোট করে গনতন্ত্রের মানষকন্যা বলে কথিত নেত্রীও স্বৈরতন্ত্র কে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা দিলেন। ক্ষমতার ধরে রাখার প্রাণন্তকর প্রচেষ্টার পর তাকে কি আর গনতন্ত্রের সেবক বলা যায়?

যদিও সরকার ক্ষমতা গ্রহন এর পর থেকেই গনতন্ত্রকে বিকাশিত হতে দেয়নি, বরং ১/১১ ওয়ালাদের পুরোনা জুতা পড়েই দেশ চালাতে ছিলেন।

তিনটি টিভি ষ্টেশন বন্ধ, ভিন্ন মতের জাতিয় দৈনিক, আর ব্লগ বন্ধ এবং তাদের সম্পাদকদের গ্রেফতার করে অত্যাচার করা হচ্ছে। ইউটিউব বন্ধ, ইন্টারনেটের স্পীড কমিয়ে দেয়া সহ নানান কায়দায় জনগণকে তাদের মত প্রকাশে বাধা দিয়ে যাচ্ছে সরকার।

মামলার পর মামলা আর রিমাণ্ডে নিয়ে নির্যাতন করে বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের মনোবল ভেংঙ্গে দিয়েছে সরকার। গুম খুন আর নৈরাজ্য সবর্ত্র ছড়িয়ে পড়েছে।

বিরোধী দলের প্রধান অফিস দিনের পর দিন অবরুদ্ধ। রাস্তায় নামলে মোবাইল কোর্ট সহ মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশসহ আইন প্রয়োগ কারী সংস্থা গুলো চরম নিঃষ্ঠুর আচরণ জাতিকে হতবিহব্বল করে দিয়েছে।

সভাসমাবেশ নিষিদ্ধ করার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মুখপাত্র দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই দেশটা যেন সরকার মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকার ১৯৭৪ সালকেও হার মানিয়েছে। তিনি বলেন, দেশে এখন ১৯৭২-৭৫ সালের মতো শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। তৎকালীন সরকার প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।

সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধানের ৩৭ এবং ৩৯ অনুচ্ছেদ এখনও বহাল আছে। এ দু’টি অনুচ্ছেদে সভা-সমাবেশ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তবে এসব অধিকারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র চাইলে যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ আরোপ করতে পারে। কিন্তু সারাদেশে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিশ্চয়ই এর মধ্যে পড়ে না। ঢালাওভাবে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা অসাংবিধানিক।

দুই তৃতীয়াংশ ভোট পাওয়া দলটি হঠাৎ করেই কেন এমন গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেল? কেন তারা জনগণকে ভয় পাচ্ছে এটাও ভাবনার বিষয়। তবে এভাবে খড় কুটো ধরে কি বাচতে পেরে ছিলো কেউ? আওমীলীগের বাকশাল আর স্বৈরশাসক এরশাদের জাতিয় পার্টির কি পরিনতী হয়ে ছিলো? আওমী বুদ্ধিজীবীরা উত্তর দিবেন দয়াকরে।

বামদল গুলো সব সময় গনতন্ত্র নিয়ে বড়বড় কথা বলে কিন্তু তারা নৌকা প্রতিক নিয়ে সংসদে গিয়ে যখন মন্ত্রী হন দেখা গেল তারা্ই যেন বাকশালের আর্দশের সবচেয়ে বড় সৈনিক। তথ্য মন্ত্রী ইনু গভীর রাতে কোন প্রকার নোটিশ প্রদান করার ছাড়াই বন্ধ করে দিয়েছেন দুটি টিভি চ্যানেল আর একটি পত্রিকা।

অবশ্য মহাজোটের অন্যতম নেতা রাশেদ খান মেনন বলে ফেলেছেন, ‘এটা গণতন্ত্রবিরোধী। এর ফলে বিরোধী দল হাতে এক কার্যকর অস্ত্র পাবে।’

মেনন এটা হয়ত কথার কথা বলেছেন, আসলে এই দেশের দু:ভাগ্য যে এই দেশে যারা রাজনীতি করছেন তাদের দেশ প্রেম শূন্যের কোঠায়। তার দেশের গণ মানুষের কথা একবারও ভাবছেন না। ক্ষমতারমম মোহে অন্ধ হয়ে গেছেন। আমৃত্যু তারা ক্ষমতার লোভেই দৌড়াচ্ছেন। এর পরিনাম বড় নির্মম।



বিষয়: বিবিধ

১৪৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File