মুন্নি সাহাদের খুটির জোর কোথায়? হলুদ সংবাদ উৎপাদনের মাধ্যেমে দেশকে কেন বিভান্ত করা হচ্ছে?

লিখেছেন লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ১০ মে, ২০১৩, ০৯:৫৭:৫০ রাত



জীবিকার জন্য সমাজে অনেক পেশা থাকলেও সাংবাদিকতার সম্মানটা একটু বেশিই ছিল সব সময়। ছাত্র জীবনে কিছুকাল আমি স্থানীয় একটি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছিলাম।

সেই ছাত্র বয়েসে যেই সম্মান আমি পেয়ে ছিলাম তা এখনও ভুলতে পারিনি।

মফস্বল এলাকায় যেখানেই যেতাম সবাই সমাদর করতো।

কিন্ত আজ পনেরো বছর পর কি দেখছি আমি?

সাদা কালো কমদামী নিউজ প্রিন্টের বদলে এখন ঝকঝকে কাগজে রঙ্গিন পত্রিকা বের হচ্ছে প্রতিদিন। বাজারে পত্রিকার কোন অভাবও নেই।

কিন্তু সেই পত্রিকা এখন আর গণমানুষের কথা বলছে না। মুক্ত মতের পক্ষে নেই কেউ।

সাধারন একটি দুঃঘটনার নিউজ পড়লেই ব্যাপারটা ধরতে পারবে পাঠক। কেউ লিখবে ৬ জন নিহত ১৭ জন আহত, আবার অন্য একটি পত্রিকায় দেখবো ১১ জন নিহত ৮ জন আহত!

তথ্য বিকৃত করে ছাপানো হচ্ছে দিনের পর দিন। দলীয় মতবাদ প্রচার করছে তারা। সত্য আর সঠিক তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে পত্রিকা গুলির এরকম গা ছাড়া ভাব দেখে সচেতন পাঠক মাত্রই আহত হয়।

পকেটের পয়সা খরচ করে পত্রিকা কিনে যখন দেখি পত্রিকার প্রতিটি নিউজ আর কলাম এ সরকারের দালালী করছে। তখন খারাপ লাগে। কিন্তু কি করা?

গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে স্যাটালাইট চ্যানেল গুলিও সংবাদ প্রচার করছে। প্রথম দিকে বেশ নিরপেক্ষতার প্রমাণ রেখে ছিলো চ্যানেল গুলি।

কিন্তু ১/১১ পরবর্তী সেনা বাহীনীর মদদ পুষ্ট ফকর উদ্দিন সরকার ক্ষমতায় এসে মিডিয়ার গলা চেপে ধরেন। অলিখিত বিভিন্ন নিয়ম কানুন দিয়ে বেধে ফেলতে চেষ্টা করে বিভিন্ন টিভি প্রগাম। এই সরকারতো ফকর ইদ্দিনের ফেলে দেওয়া জুতা পড়েই রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। তাই বদলায়নি পরিবেশ।

তবে সাংবাদিকরা চাইলেই সিমাবদ্ধতার ভেতর থেকেও সঠিক তথ্য প্রচার করতে পারে। এই কাজে দরকার সততা মেধা, আর সাহস।

কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ সাংবদিক উর্পাজনের জন্য নানান ভাবে হলুদ সংবাদ তৈরীর মেশিন হয়ে যাচ্ছেন। তাদের সৃজনশীলতা হারিয়ে গেছে।

এই ক্ষেত্রে আজকের ঘটনার একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে।

টিভি টেলপে হঠাৎ করেই বেকিং নিউজ দেখলাম, রেশমা নামের একটি মেয়ে দীর্ঘ সতেরো দিন পরও সাভারের ধসে পড়া ভবনের নিচে বেচে আছে!

নড়ে চড়ে বসলাম।

পুরো পরিবার রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছি। দীর্ঘ ৪০ মিনিট পর রেশমাকে জীবিত উদ্ভার করা হলো।

আনন্দে আমার চোখে পানি চলে এলো। উদ্ধারকর্মী সেনাসদস্য মাইকে ব্রিফ করতে ছিলেন কেমন করে রেশমাকে উদ্ভার করা হলো সেই গল্প। গর্বে আমার বুকের ছাতি ফুলে উঠতে ছিলো।

হঠাৎ করেই টিভির মাইক্রোফোন নিয়ে সেখানে এটিএন নিউজের সাংবাদিক মুন্নি সাহার আগমন ঘটলো। তিনি অকারনেই অপ্রাসংঙ্গিক সব প্রশ্ন শুরু করলেন। একসময় তার উৎসাহ বেড়ে গেল। মুন্নি সাহা জেরা করতে শুরু করলো। এবং সবচেয়ে আশ্চর্য সে এখানে রাজনীতিও টেনে আনলো!

তার প্রশ্ন ছিলো দৃষ্টিকটু এবং জঘর্ন্য।

...... তার পোষাক এত পরিছন্ন কেন?সে একদম আঘাত পায় নি এটা কি ভাবে সম্ভব? সে না খেয়ে এত দিন কি করে বেচে ছিল?

যাইহোক আসলে মুন্নি সাহারা অনেক ক্ষমতাবান হয়ে গিয়েছেন। অর্থবিত্ত সবি তাদের অঢেল হয়েছে। তারা এখন হলুদ সংবাদ উৎপাদন করে ক্রমাগত জাতিকে বিভান্ত করে যাচ্ছেন।

এর থেকে বের হবার পথ কি?

পথ হলো আমাদেরও সচেতন হতে হবে। অপসাংবাদিকার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে রাস্তায় নামতে হবে। মনে রাখতে হবে, সত্য তথ্য পাওয়া আপনার আমার মৌলিক অধিকার।

হলুদ সংবাদ নিয়ে একটি ধারাবহিক লেখা লিখবো ভাবছি।

তখন বিস্তারিত অনেক কিছুই লিখবো।

বিষয়: বিবিধ

১৬২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File