দিগন্ত টিভি বন্ধ। মুক্তমত আজ ধর্ষিত নিপিড়িত!
লিখেছেন লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ০৬ মে, ২০১৩, ১১:০২:৪৪ সকাল
দিগন্ত টিভি বন্ধ করে দিয়েছ সরকার। বাকশালের ষোলকলা পূর্ণ হলো এর মাধ্যেমে। গতরাত জেগে থেকে অনেক কিছুর সঙ্গে এই ঘটনারও স্বাক্ষী হয়েছি।
গভীর রাতে স্বৈরাচারী কায়দায় হত্যা করা হলো দিগন্ত টিভিকে।
একই রাতে নিউজে দেখলাম, সাংবাদিক এবং প্রখ্যাত কলামিষ্ট শফিক রেহমানের বাড়িতে হামলা হয়েছে।
সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে ভীন্নমত খুব বেশি সস্তা হয়ে গেছে। চাইলেই গলা টিপে হত্যা করে ফেলা যায় যেকোন মিডিয়া। কোন শব্দ করবে না কেউ।
চ্যানেল ওয়ান, সোনার বাংলা ব্লগ, দৈনিক আমার দেশ,আমার বর্ণমালা ব্লগ, এর পর লাশের সারিতে যোগ হলো দিগন্ত টিভি ষ্টেশনটি।
এভাবে একের পর এক মিডিয়া হত্যার পরও গণমাধ্যোম নিঃশ্চুব। তারা হয়ত ভাবছে হলুদ সাংবাদিকতা আর সরকারের পক্ষে অবিরাম প্রচারণা চালাতে পারলে নিজেদের আখের গোছাতে পারবে।
দুঃভাগ্য জাতির। কেউ সত্য কথাটি প্রচার করতে সাহস পাচ্ছে না। তারা ভাবছে না সরকার পরিবর্তন হলে থেমে যেতে পারে তাদের মিডিয়াটিও।
ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে ভারী অনিহা মিডিয়ার। মনে পড়ে বিএনপি শাসন আমলে একুশে চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো।
মিথ্যাচারের একটি নমুনা দেখুন আওমীলীগ নেতা দরবেশ বাবা খ্যাত সালমান এফ রহমানের চ্যানেলের সংবাদের ভাষা ছিলো, দশ মিনিটের পুলিশি অভিযানে পালিযে গেল হেফাজত!
কিন্তু আসলেই কি তাই?
অন্য একটি মিডিয়া বলছে তিন ঘন্টার রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষর পর রণে ভংঙ্গ দিতে বাধ্য হয় নিরস্ত্র হেফাজত কর্মীরা।
আসলে দুঃখ করে বলতে ইচ্ছে করে, এই দিন দিন না আরো দিন আছে!
একটি মিডিয়া যখন বন্ধ করে দেওয়া হয়, বেকার হয়ে যায় অনেক গুলো মানুষ। বিপদে পড়ে তার পরিবারও। আমি যেকোন মিডিয়া বন্ধ হবার পক্ষে নেই। এই ধরণের কাজকে তীব্র ঘৃর্ণা জানাই।
আমার কথা হলো কলমের জবাব কলম দিয়ে দেওয়া হোক। কথার জবাব কথা দিয়ে দেওয়া হোক। কারো কণ্ঠরোধ করার বাকশালী মনোভাবের প্রতিবাদ করছি। পাঠক প্রতিবাদ করুন আপনিও।
বলা হতে পারে দিগন্ত টিভি জামায়াতের মালিকানায় পরিচালিত একটি টিভি ষ্টেশন।
তাহলে প্রশ্ন করতে পারি কোন চ্যানেলটির মালিক নিরপেক্ষ?
এনটিভির মালিক বিএনপির নেতা ফালু, ইনডিপেনড চ্যানেলের মালিক সালমান এফ রহমান (আওমীলীগ নেতা), আইনমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সময় টিভি, মাহফুজের এটিএন, আসাদুজ্জামান নূরের দেশ টিভি, মোহনা টিভি আওমী এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারের মালিকানায়।
আসলে এই দেশের মিডিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় দুঃভাগ্য যে, মিডিয়ার চলে গেছে অসৎ ধনকুবের রাজনৈতীক নেতাদের দখলে।
সাংবাদিকরা এখন গামের্ন্টস কর্মীদের মত কামলা মাত্র। মালিকের ইশারায় চলতে হচ্ছে তাদের। সৃজনশীলতার কোন প্রয়োজন নেই।
আজ যখন মিডিয়ার গাড়ি কোন রাজনৈতীক দল পুড়ে দেয়, যখন হেফাজতের কর্মীরা সাংবাদিকদের উপর লাঠি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে তখন বুঝতে হবে তারা আর সবার কথা বলছে না। একটি গোষ্টির পক্ষে দৃষ্টিকটু প্রচারণা চালাচ্ছে।
নিরপেক্ষতার ভান করে যাচ্ছে।
এই অবস্থায় আসলে মিডিয়া চলছে হজবরল ভাবে। সংবাদ হারিয়েছে তার মান।
অপর দিকে দু একটা যা ভীন্নমতের মিডিয়া রয়েছে তা দখলে সরকার হয়ে পড়ছে মরিয়া। যেকোন মূল্যে তাদের দখলে রাখতে চাইছে সকল মিডিয়া।
৭৫ এর আদর্শ ছিলো একদলীয় বাকশাল। ভিন্ন মতের উপর তখন খড়গ নেমে এসেছিলো, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সরকারী ৪টি পত্রিকা বাদে সকল পত্রিকা। আজও সেই ৭৫এর মতই অবস্থা এখন আর কোন ভীন্ন মতের মিডিয়া রইলো না।
দিগন্ত টিভি এর পর হয়ত নয়া দিগন্ত পত্রিকা বন্ধ করে সরকার তাদের মিশন শেষ করবে।
শুধু তাই নয় এখন শুনছি ফেসবুকে যারা সরকারের সমালোচনা করছে তাদেরও তালিকা করা হচ্ছে। আজব এক সময় পেরুচ্ছি আমরা!
মুক্তমত আজ ধর্ষিত নিপিড়িত!
আমারদেশের কর্মচারীদের দেখছি নানান প্রতিবাদ কর্ম চালাচ্ছে। বিপন্ন হয়ে গেছে তাদের জীবন। তারা বিজ্ঞপ্তি প্রচার করছে দুইটাকা করে দেবার জন্য। কতটা অসহয় হলে এমন মানবিক আবেদন করতে পারে একটি জাতিয় পত্রিকা?
আসলেই জাতির চরম দুঃভাগ্য যে স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও আজ মুক্ত মত প্রকাশ করতে পারছেনা মিডিয়া। স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারছিনা আমরা সাধারণ আমজনতাও। আজ ফেসবুকে লেখার জন্য গ্রেফতার হতে হয়।
এই অবস্থা কত দিন চলবে জানিনা। তবে একজন অতি সাধারণ মানের ক্ষুদ্র লেখক হিসেবে অনুভব করছি নিপিড়িত মুক্ত মতের জন্য কাজ করা দরকার। আপনারা কি ভাবছেন?
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন