রাষ্ট্রপ্রতি আপনি আমাদের আহত করেছেন। তারপরও আপনার কাছেই বিচার চাইছি।

লিখেছেন লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ২৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:৫৯:২৬ সকাল



গতকাল সন্ধায় ২০তম রাষ্ট্রপ্রতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন আবদুল হামিদ এ্যাডভোকেট।

সারা দেশ যখন শোকে মুহূম্যান। অশ্রুস্বজল চোখে তাকিয়ে আছে টিভি পর্দার দিকে সেখানে হঠাৎ করেই ক্যামেরা গুলি এক যোগে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রধানদের হাসি ভরা মুখ দেখানো শুরু হওয়ায় জাতি বিস্মিত হয়েছে। আহত হয়েছে।

জাতি হিসেবে আমরার বরাবরি একটু অন্যরকম। প্রতিবেশি অথবা সারা দেশের যেকোন মানুষ আহত বা নিহত হলেই আমাদের প্রান কেঁদে উঠে। পরের দুঃখকে নিজের দুঃখ মনে করে। সমবেদনায় কেঁদে উঠে মন।

আমরা এখনও ইউরোপীয় কালচারেরর সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারিনি।

আপনার শপথ অনুষ্ঠানে জৌলুস, আপনার দলীয় কলিগদের হাসি ঠাট্রা আমাদের চোখে দৃষ্টিকটু লাগছে। আমরা ঠিক বুঝতে পারিনি আসলেই কি রাষ্ট্র এই ঘটনায় শোকাহত? নাকি নিছক দেখানোর জন্যই শোক দিবষ!

আপনার এই আলোকৃত অনুষ্ঠান কি পেছানো যেতো না?

মহান রাষ্ট্রপ্রতি গতকাল আপনাকে আমরা শুভেচ্ছা জানাইনি। জানাতে পারেনি। হৃদয় সায় দেয়নি। কেননা সাভারে তখন প্রযাপ্ত আলোর অভাব ছিল।

ভবনের নিচে চাপা পড়া আমার ভাইদের করুন আর্তনাথ আমাদের দিশাহারা করে তুলছিলো। আমরা কড়জোড়ে আল্লাহর দরবারে মিনতি করতে ছিলাম হে পরম করুনাময় আর একজন ভাই-বোনের মৃত্যুও তুমি দিওনা। তাদের অক্সিজেন কেড়ে নিওনা। ....

মহান রাষ্ট্রপ্রতি, আমি দুঃখিত আপনি প্রথম দিনেই আমাদের মনে আঘাত দিয়েছেন।

তারপরও আপনার কাছেই দাবী করছি রানা প্লাজার মালিক আপনার দলের লোক রানাকে গ্রেফতার করুন। তার বিচার করুন।

আওমীলীগ অনেক বড় দল দুএকজন রানাকে ফাসিতে ঝুলিয়ে দিলে কিছুই হবেনা। জনগন চায় চার গামেন্টর্স মালিকের বিচার । যারা নিরপরাধ শ্রমিক ভাইদের জোর করে লাঠি পেটা করে বেতন না দেবার ভয় দেখিয়ে ঐ ভবনে শ্রমিকদের কাজ করাতে নিয়ে গিয়ে ছিলো।

আমি শুনেছি হিমঘরে আপনার আপন ছোট ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে। তার দাফন হবে আজ। আপনার ভাইয়ের মত স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি শ্রমিক ভাইদের। তারা অকালে মারা গিয়েছে। তাদের আপন ভাই মনে করে দয়াকরে রাষ্ট্রকে নির্দেশ দিন যেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে সকল দায়ী ব্যাক্তি কে গ্রেফতার করা হয়।

এই ভবন এর যে ডিজাইন করছে, যেই ইঞ্জিনিয়ার এই ভবন নির্মাণের দ্বায়িত্বে ছিল তাদেরও গ্রেফতার করা হোক।

অনেক কেঁদেছি আমরা। আর কাঁদতে চাইনা।

বিচার না হলে লাশের স্তুব বাড়বেই। গামের্ন্টস মালিকদের অর্থ লিপ্সা গামের্ন্টস গুলোকে মৃত্যুকুপ বানিয়ে ফেলেছে।

এখন বিচার না হলে আরো ঘটবে।

হাওড় পাড়ের ছেলে আপনি, গরীবের কষ্ট আপনার বোঝার কথা।

আপনার কাছে বিচার চাই।

বিচার চাই।

এই নরহত্যার বিচার করুন দয়াকরে।

আপনার দলের প্রতি আমাদের কোন আস্থা নেই। তারা হল মার্কের বিচার করেনি। পদ্মা সেতু খেকোদের বিচার করেনি। তাজরিনের মালিকের বিচার করেনি। তারা চট্রগ্রামে ফ্লাইওভার ভেঙে পড়ে মানুষ হত্যার বিচারও করেনি।

দলীয় বিবেচনায় সবাইকে মাফ করে দেওয়া হয়েছে।

অথচ আপনার দলই আবার একজন সম্পাদককে ১৪দিনের রিমাণ্ড দিয়েছে কথিত গাড়ি পোড়ানো মামলায়!

এই দেশের মানুষ কোন সাজানো খেলা দেখতে চায়না। গতকাল আপনি শপথ অনুষ্ঠান করে আমাদের আহত করেছেন। এবার রানাদের বিচার করে আমাদের আস্বস্ত করেন, মহামান্য রাষ্ট্রপ্রতি।

বিষয়: বিবিধ

১৪০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File