তাবলীগ জামাতের মূল উদ্দেশ্য ইসলামী হুকুমত কায়েম করা।
লিখেছেন লিখেছেন তায়িফ ১১ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৬:১৬:১৮ সন্ধ্যা
“ তার চেয়ে ভাল কথা আর কি হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা আয়াত-৩৩)[৩]
ডেনমার্কে দ্যা লাইট অব কুরআন নামে প্রতি রবিবার এক প্রোগ্রাম হয় কোপেনহেগেনের নরেব্রোর মিনহাজুল কোরআন মসজিদে । তাদের একটা প্রোগ্রামে আমি জয়েন করি একজন গ্রীনকার্ডধারী খুব সুন্দর করে বয়ান দিলেন।উনি সুন্দর করে কোরআন হাদীস ব্যাখ্যা করলেন। ইসলাম এবং বিজ্ঞান নিয়ে উনি বক্তব্য রাখলেন। সবাই উনার বক্তব্যে মুগ্ধ।
পরের দিন উনার বাসায় গেলাম। তখন উনি উনার বন্ধুদের সাথে আগের রাতের পার্টি নিয়ে আলোচন করতেছেন। কে কত টুকু মাল খেয়েছে। অমুক মাল খেয়ে ঢাল হয়ে গেছে। একট প্রসঙ্গে উনি বললেন আমরাও মাল খাই কিন্তু টাল হই না কিন্তু অমুক কেন মাতলামী করল। এখন উনি যদি উনার আমলের উপর মেহনত করতেন নিজের আখলাক সংশোধন করে কোরআন হাদীসের উপর বয়ান দিতেন তবে উনার দ্বারা কত মানুষ সংশোধিত হত! লাইট অব কোরআন সব কিচুই ঠিক মত করতেছে সবাই অনেক কষ্ঠ করতে মানুষকে হেদায়াত করার জন্য কিন্তু আসল জায়গায় কাজ করতেছে না। তাদের অবস্তা এমন> মনে করেন আপনার কাছে একটা বোতল আছে কিন্তু বোতলটা জীবানুযুক্ত আর এই বোতলে আপনি ওষুধ ঢাললেন ? আপনার ওষুধ কি কাজ করবে? ঠিক তেমনি অনেকে তাবলীগে গিয়েই কোরআন হাদীসে বয়ান করতে চান, তখন মুরব্বীরা তাদের নিষেধ করেন তখন তারা ক্ষেপে গিয়ে তাবলীগকে গালাগালি করেন। মুরব্বীরা প্রথমে নফসকে পরিষ্কার করতে বলেন ফাজায়েলে আমল অনুশীলনের মাধ্যমে যেন ওই অন্তরে কোরআন হাদীস ঢাললে বেশী কার্যকর হয়।
বন্ধুরা এখন দেখেন যার নিজের আমলের ঠিক নাই তার দ্বারা মানুষ কতটুকু হেদায়াত প্রাপ্ত হবে। আর ঠিক ওই জায়গায় কাজ করে তাবলীগ জামাত। যারা তিন চিল্লাহ দেন না তাদের কে কুরআন হাদীস নিয়ে আলোচনার আগে নিজের ইমান আমল সহিহ করার প্রশিক্ষণ দেয় তাবলীগ জামাত। আর এ জন্য ফাজায়েলে আমলের উপ জোর দেয়া হয়। একটানা যারা তিন চিল্লাহ না দেন তাদেরকে সরাসরি কোরআন হাদিসের উপর বয়ান করতে নিরুত্সাহিত করা হয়। তাবলীগ জামাত একজন মানুষকে খাটি মুসলীম হতে উত্সাহ দেয়।
তাবলীগ জামাতের একজন আমীরকে যখন প্রশ্ন করা হয় আপনারা কেন ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন না কেন? তখন তিনি বললেন আমাদের উদ্যেশ্য লালবাগের কেল্লায় আবার ইসলামের পতাকা উড়ানো। কিন্তু এর জন্য এখনও সময় আসে নি।
অনেকে তাবলীগ সম্পর্কে বলেন তারা কেন ৪০ বছর ধরে একই কাজ করে যাচ্ছেন। তারা কেন জিহাদ বিরুধী। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তাবলীগ যদি এখন জিহাদের সাথে যুক্ত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায় তবে ইসলামের প্রচারের কাজ কঠিন হয়ে যাবে। তারা মানুষের কাছে গিয়ে মানুষের পিঠে হাত বুলিয়ে মানুষকে দিনের পথে আহ্বান করেন তাদেরকে সেই কাজ করতে সহযোগিতা করা হোক। প্রত্যেকটা মুসলী যদি তাবলীগের সাথীদের মত হয়ে যায় তবে সমাজ থেকে ঘুষ দূর্নীতি এমনিতে দূর হয়ে যাবে তখন জিহাদের দরকার হবে না অমুসলীমরা ঝাকে ঝাকে ইসলামের ছায়ায় চলে আসবে। আর জিহাদের জন্য যে বিশাল কর্মীবাহিনী দরকার তা কোথায়।
এখন বিশ্ব ইজতেমা চলতেছে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ জমায়েত হবে কিন্তু এখান ৪০০০/৫০০০ হাজারের বেশী নতুন কেউ তাবলীগের সাথে চিল্লায় বের হবে না।এই ৪০০০/৫০০০ নিয়ে কিভাবে জিহাদ করা যায়
“ তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের(কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।" (সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০)[৩]
তাবলিগ জামাত একটি ইসলাম ধর্মভিত্তিক সংগঠন যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মুসলমানদের আল্লাহর পথে ডাকা। সাধারণত মানুষকে আখিরাত, ঈমান, আমল-এর কথা বলে তিনদিনের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। এর পর যথাক্রমে সাতদিন ও চল্লিশদিন-এর জন্য আল্লাহর রাস্তায় দাওয়াত-এর কাজে উদ্বুদ্ধ করা হয়ে থাকে। তাবলিগ জামাত-এর মুল ভিত্তি হিসেবে ধরা হয় ৬টি উসুল বা মূলনীতিকে। এগুলো হলো: কালিমা, নামায, ঈল্ম ও যিকির, একরামুল মুসলিমিন বা মুসলমানদের সহায়তা করা, সহিহ নিয়ত বা বিশুদ্ধ মনোবাঞ্ছা, এবং তাবলিগ বা ইসলামের দাওয়াত ।
বিষয়: বিবিধ
২৩৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন