আলেম সমাজ কি বালবিম্পির ফাদে পা দিবেন?
লিখেছেন লিখেছেন তায়িফ ০৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:৪৬:১৭ রাত
আজকে আওয়ামেলীগ সরকারের বিরুদ্ধে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের গণ অবস্তান হচ্ছে। আর সরকার আলেম ওলামাদের সাথে দাবী দাওয়া মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আলোচনা করতেছে। এই ঘটনা আমাদেরকে সাবেক আড়াই দলীয় জোট সরকারের কথা মনে করিয়ে দেয়।
বিএনপি জামাতের জোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শরীক দলের সাথে যে চুক্তি করে ছিল তাতে পরীষ্কার ছিল চার দল ক্ষমতা ভাগাভাগি করবে, কওমি মাদ্রাসার সীকৃতি দিবে , সতন্ত্র আরবী বিশ্ববিদ্যালয় করবে কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে বিম্পি আলেম ওলামাদের সাথে বেঈমানী করে।
এমন পরিস্থিতে ২০০৮ সালে শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের খেলাফত মজলিস চার দল থেকে বের হয়ে এসে জোট সরকারের পতনের জন্য গণঅবস্তান শুরু করেন। দিন দিন লোকসমাগম বাড়তে থাকে। অবস্তা বেগতিক দেখে খালেদার সরকার খেলাফত মজলিসের সাথে অলোচনা করে সকল দাবী মেনে নেওয়ার ওয়াদা করে। এবং আসন্য সংসদ অধিবেশনে আইন পাশ করার প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু প্রথম আলোর বিরোধীতার কারনে বিএনপি শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের সাথে বেঈমানী করে।যদি বিএনপি মিথ্য প্রতিশ্রুতি না দিত তবে বিএনপি জামাত সরকারের মেয়াদ পূরণের আগেই পতন হত।
সেই খেলাফত মজলিসের সাথে আওয়ামেলীগ ঐক্য গড়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু খেলাফত মজলিস বিএনপির কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে লাগিয়ে ৫ দফা লিখিত চুক্তি করে এবং আরোও ৬ টি ইসলামী দলকে সাথে নিয়ে মহাজোটে যোগ দেয়। ক্ষমতা গ্রহণের সাথে সাথে বিএনপির মত আওয়ামেলীগও খেলাফত মজলিসের সাথে বেঈমানী করে একতরফা ভাবে চুক্তি বাতিল করে।
এরশাদ সরকারের পতনের জন্য গঠিত বালবিম্পি জামাত এর তিন দলীয় ঐক্য জোটের রূপরেখার অন্যতম ছিল বেতার টিভির স্বায়ত্ব শাসন । কিন্তু বাল বিম্পি কেউই এই ওয়াদা পূরণ করে নি।১৯৯১ সাল থেকে চলে আসা কোন সরকারই ইসলামের জন্য কিচুই করে নি।
বাল বিম্পি যে দলই ক্ষমতার বাইরে থাকে সেই দলই জন দরদী ক্ষমতায় গেলে একই রূপ। বলা হয়ে থাকে বাল বিম্পি একই মুদ্রার এপিট ওপিট । ১৯৯৫ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারীর একতরফা নির্বাচনের জন্য খালেদা অনেকগুলো প্রাণ কেড়ে নিয়েছিলেন । আর হাসিনা ২০১৩ সালে কেড়ে নিয়েছেন অনেকগুলো জীবন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল একটা মিমাংসিত বিষয় কিন্তু নিজেদের দলীয় বিচারপতিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য একটা মিমাংসিত বিষয়কে বিতর্কিত করে ফেলে ক্ষমতার লোভে।
বিএনপি যদি ক্ষমতার লোভ ও দূর্নীতি না করত, মুফতি ইজহার, শায়খূল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের মূল্যায়ন করত।খাম্বা দূর্নীতি না করে যদি বিদ্যুত উত্পাদন করত। তারেক রহমান যদি ক্রয়ক্ষমতার বয়ান না শুনিয়ে সিন্ডগেট নিয়ন্ত্রন করতে তবে তারা আজও ক্ষমতায় থাকত।
খালেদা বিনাবিচারে মানুষ হত্যার ক্ষমতা পুলিশকে দিয়েছিলেন যার নাম ক্রস ফায়ার আর হাসিনা তার আধুনিকায়ন করে তাকে গুমে রুপান্তর করেছেন।
খালেদা এম এ হান্নানের নাম মুছতে গিয়ে রাষ্ট্রের ৩০০ কোটি টাকা অপচয় করেছেন আর হাসিনা জিয়ার নাম মুছতে ১৪০০ কোটি টাকা অপচয় করেছেন।
এই সরকারের প্রথম দিকে যখন নারী নীতি শিক্ষানীতি ও সংবিধান সংশোধনের বিরুদ্ধে আলেম ওলামারা হরতালের ডাক দেন তখন সরকার আলেম ওলামাদের সাথে বৈঠক করে এবং আলেম ওলামারা হরতাল প্রত্যাহার করেন।কিন্তু বাল তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে।
এখন হেফাতে ইসলামের জনসমর্থন দেখে হয়ত বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিবে যে, আমরা ক্ষমতায় গেলে সব দাবী মেনে নেব, কিন্তু হেফাজতকে বিম্পির ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে। কারন এরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী।
সরকার হয়ত লিখিত চুক্তি করতে চাইবে ১৩ দফা মেনে নিয়ে। কিন্তু এদের চুক্তির কোন মূল্য নেই।
হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থকরা ১৩ দফা দাবী নিয়ে মতিঝিলে সববেত হবেন। আমি বলব আপনার তখনই মতিঝিল ছাড়বেন যখন জাতিয় সংসদে ১৩ দফা বাস্তবায়ন করে আইন পাশ হয়।
এই সরকারের পতন নয় বরং এই সরকার দিয়েই ১৩ দফা বাস্তবায়ন করে তবেই আপনারা ঘরে ফিরবেন। বালবিম্পিকে কোন বিশ্বাস নেই।
আর সরকারকে বলব আপনারা বিএনপি সরকারের পরিণতি থেকে শিক্ষা নেন। বিএনপি সরকার আলেম সামজের সাথে বেঈমানী করে ঠিকতে পারে নি, আপনারাও পারবেন না ইনশা আল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন