বোঝার চেষ্টা করছি কিয়ামত কত দূরে
লিখেছেন লিখেছেন সালাম আজাদী ১৩ মে, ২০১৫, ০২:০১:৫৩ দুপুর
আমাদের সময়ে কিছু কিছু ইসলামি ব্যক্তিত্ব বুঝাতে চাচ্ছেন কিয়ামত আসতে আর দেরি নেই। তার কিছু বড় বড় নিদর্শন নাকি প্রকাশ পেয়েছে। দাজ্জালের আবির্ভাব হয়েছে। ইয়াজুজ মাজুজ আসার মত হয়েছে। আমার একজন প্রিয় হুজুর তো মসজিদে নবভিতে বসে বলেছেন: আবদুস সালাম, আমার কাছে ইলহাম হচ্ছে, ইমাম মাহদির জন্ম হয়ে গেছে।
গ্যালিলি হ্রদ শুকিয়ে যাচ্ছে। মারত্মক ভূমিকম্পে লাখ লাখ মানুষ মরেছে। মানুষ পাখির মত আকাশে উড়তেছে। বৃষ্টি নামানো মানুষের নাগালে চলে এসেছে। ড: ইমরান নাযির হুসাইনগণ এই ময়দানে দারুন উচ্চকণ্ঠ!!
কিয়ামতের আগে একটা মারাত্মক জিনিষ মানুষ দেখতে পাবে। সে সময় 'হারাজ' 'মারাজ' বেড়ে যাবে। 'হারাজ' 'মারাজ' কি? ভাষাবিদগণ বলেন: এমন হত্যাকান্ড যাতে হত্যা করি বুঝবেনা কেন সে একজনকে হত্যা করছে। আর নিহত মানুষ বুঝবেনা কেন সে নিহত হচ্ছে।
আরেকটা বিষয় জেগে উঠবে। তা হলো মিথ্যুকদের সংখ্যা দারুনভাবে বেড়ে যাবে। সত্য কোনটি তা বুঝা যাবেনা।
বাংলাদেশের দিকে তাকালে এই দুইটা এখন অনেক দেখা যায়।
কিন্তু হাদীসে আছে মানুষের দিলে ও মুখে 'আল্লাহ' নাম অবশিষ্ঠ থাকতে নাকি কিয়ামত হবে না। এইটা যখন পড়ি তখন মনে হয় কিয়ামত আসতে মনে হয় দেরি আছে। কারন ঈমান আনার যে জাগৃতি এখন দেখি তা আগের চেয়ে অনেক বেশি। ঈমানের গতি আজ হোয়াইট হাউজ ও ওয়েস্টমিনিস্টারের দিকেও যাচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
৬৫৭৬ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকিল্লাহু খায়রান
সেটাই আশা করি!!
কেয়ামত আসুক তা আজকের যুগের মানুষ মাত্রই চায় না। আমি ও চাইনা। কিন্তু আপনার মত একজন আলেমকে এমন সহজে কি বোর্ড এর নাগালে পেলে - মনের মধ্যে উদ্ভুত প্রশ্ন ও কৌতুহলের ক্লারিটি চাওয়া হতে বিরত ও থাকতে পারিনা। আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
১। আপনি লিখেছেন, আপনি মনে করেন - কিয়ামত আসতে অনেক দেরি আছে। আপনার এই এ্যাসারশানের সাথে - আমি তো কোন কন্ট্রাডিকশান কোথাও পাইনি, শুনিনি। কোন প্রমিনেন্ট আলেমকে তো কোথাও কোনদিন বলতে শুনিনি কেয়ামত শীঘ্রই বা নিকটে কিংবা এ সংশ্লিষ্ট কিছু - ইনক্লুডিং ইমরান নজর হোসাইন।
আমরা কোরান ও হাদীসের রেফারেন্স এ সবসময়ই শুনি কেয়ামত কখন সংগঠিত হবে তা শুধু মাত্র আল্লাহ ই জানেন। কিন্তু দজ্জাল, ইয়াজুজ মাজুজ, দাব্বাতুল আরদ ইত্যাদি বিষয় তো কেয়ামতের সাথে রিলেটেড নয়, বরং কেয়ামত এর পূর্বের অর্থাৎ আখেরী জামানার সাইন হিসাবে - যে আখেরী জামানা মুসলিমদের জন্য লিটারেলী হাইয়েস্ট লেভেল এর ট্রায়াল ও ট্রিবিউলিশান এর - যা সম্পর্কে মোহাম্মদ সঃ তার উম্মাহকে সাবধান করে অনেক কিছু বলেছেন। কেন আমাদেরকে ঐ সাইনসমূহ নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনায় কেয়ামতকে টেনে আনতে হচ্ছে - যার সাথে মানুষের করনীয় কিছু নেই। এটা কি হাদীসকে বিচার বিশ্লেষনের ক্ষেত্রে কোরানকে বোঝার কিংবা এক্সপ্লেইন করার ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসাবে কাজ করবে না? এতে করে আমরা কি আখেরী জামানার সাইন সমূহ বুঝতে ব্যার্থ হব না? আখেরী জামানায় করনীয় নিয়ে দ্বিধায় পড়বো না?
২। কেয়ামতের পূর্বে 'হারাজ' 'মারাজ' ও 'মিথ্যুক' নিয়ে আপনি লিখেছেন এবং বাংলাদেশের দিকে ইন্ডিকেট করেছেন। কিন্তু উক্ত ৩ টি সাইনকে যদি আপনি আখেরী জামানার সাইন হিসাবে ট্রিট করেন (যেহেতু তা কেয়ামতের আগেই) এবং সে সাইনকে যদি বিশ্ব আংগিকে দেখেন - তখন কি কোরানকে আরো বিশ্বজনীন এবং রাসুল সঃ এর প্রফেসীকে আরো বিশ্বজনীন করা হয় না? যেমন আপনার বলা 'হারাজ' 'মারাজ' ক্যালিফোর্নিয়ায় বসে ড্রোন উড়িয়ে আফগানিস্থান, পাকিস্থান, ইয়েমেন, সোমালিয়া, সুদান এর মানুষ হত্যার সাথে অধিকতর প্রামান্য হয়। যেখানে ড্রোন পাইলট (বিভিন্ন চেইন অব কমান্ডের আওতায়) ইন্সট্রাকশান এর বিপরীতে এমন মানুষ হত্যা করছে যে কিনা জানেনা - সে কাকে, কি অপরাধে কেন মারছে। আর যে মরছে সে জানে না কে কেন কিজন্য তাকে মারছে।
আর শতমুখে মিথ্যা বলার জন্য, মিথ্যা প্রচার ও প্রসারের জন্য সিএনএন, বিবিসি, আলজাজিরার পাশাপাশি ফেইসবুক ও টুইটার দের দিকে তাকালে কি তা অধিকতর পরিষ্কার হয়না - কি সর্বগ্রাসী মিথ্যুক আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে জালের ন্যায়?
৩। ঈমানের গতিকে আপনি ওয়েস্টমিনিস্টার ও হোয়াইট হাউজের দিকে যেতে দেখছেন আলহামদুলিল্লাহ্। কিন্তু আমরা কেন দেখছি না কত মিলিয়ান আফটার মিলিয়ন মানুষ সূরা বাকারার ৮ ও ৯ নং আয়াতের মত জীবন যাপন করছে?
সালাম ভাই কষ্ট করে কি আপনি সূরা আম্বিয়ার ৯৫ ও ৯৬ নং আয়াত দুটি পড়বেন? আপনি কি বলবেন আল্লাহ ৯৫ নং আয়াতে কোন শহর এর ধ্বংশের কথা বলেছেন? কোন মানুষ এর জন্য ঐ শহরে ফেরা হারাম করেছেন - যতক্ষন না ইয়াজুজ ও মাজুজ ছড়িয়ে পড়ে কিংবা নেমে আসে?
এরপর কি আপনি দয়া করে জয়নাব রাঃ এর বর্ননায় মোহাম্মদ সঃ এর ঐ হাদীস যা প্রায় একই রকমভাবে ৮ বার বোখারীতে আছে তা পড়বেন - যেখানে রাসুলুল্লাহ সঃ বলেছেন ঐ পার্টিকুলার দিন ইয়াজুজ ও মাজুজ দু'আংগুল জোড়া লাগালে যতটুকু ছিদ্র ততটুকু ছিদ্র করেছে জুলকারনাইন আঃ এর দেয়াল এ?
এরপর আপনি কি দয়া করে আমাদের জন্য একটা ব্যাখ্যা দেবেন যাতে এই প্রশ্নগুলোর একটা যৌক্তিক উত্তর আমরা পাই?
১। কেন আলেম রা গবেষনা করে ঐ শহরটি এবং ঐ শহরের অধিবাসী কারা তা আমাদেরকে জানাচ্ছে না? যেখানে কোরান আমাদেরকে ঐ শহরের সাথে ইয়াজুজ ও মাজুজ এর সম্পর্ক নির্ধারন করে দিয়েছেন?
২। যেখানে রাসুলুল্লাহ সঃ বলেছেন ইয়াজুজ মাজুজ 'ইনশাল্লাহ' বললে পর জুলকারনাইন আঃ এর দেয়াল পূর্বাবস্থায় যাবেনা। এবং যেহেতু মোহাম্মদ সঃ বলেছেন দেয়াল ছিদ্র হয়েছে সেহেতু কেন আমরা উপসংহার টানবো না যে ঐ পার্টিকুলার ছিদ্র সৃষ্টির পর সহজেই ঐ দেয়াল গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে?
৩। আল্লাহ দেয়ালটি এমন একটি লোকেশান এ ইন্ডিকেইট করেছেন - যা দেখতে সি শেল এর মত। আজকের এই স্যেটেলাইট এর যুগে কিংবা জ্ঞান বিজ্ঞানের এই অগ্রগতি স্বত্তেও কেন আমাদের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো এর উপর গবেষনা করছেনা, টাকা বরাদ্ধ করছেনা - যাতে আমরা ঐ দেয়ালটা চিহ্নিত করতে পারি?
৪। ইয়াজুজ ও মাজুজ শব্দদ্বয়ের মূল এবং এদের সম্পর্কে কোরান ও হাদীসে যে সব কারেকটার এর কথা বলা হয়েছে ফেতনা, ফ্যাসাদ ইত্যাদি - কেন আমরা তা একজায়গায় এনে পৃথিবীর মানুষের উপর সে ফেতনা ফ্যাসাদ এর প্রকোপ নির্নয় করছি না? নিশ্চিয়ই টিপিক্যাল মানুষের কারেক্টার এর সাথে ইয়াজুজ মাজুজ এর কারেক্টার যাবে না। যদি আমরা দেখি বেশীর ভাগ মানুষের মধ্যে ঐ কারেকটার বিদ্যমান - তবেতো আমরা উপসংহার টানতেই পারি যে মানুষের মধ্যে ঐ ফেতনা ও ফ্যাসাদ ইয়াজুজ ও মাজুজ ই ছড়িয়ে দিয়েছে।
এমনি দজ্জাল, দাব্বাতুল আরদ, সূর্যের পশ্চিম দিক হতে উঠা নিয়ে ক্লিয়ার অনেক সাইন ই দৃশ্যমান হয় - যা নিয়ে গবেষনা হওয়া প্রয়োজন, লিখালিখি প্রয়োজন - কিন্তু কেন জানি আমাদের মধ্যে অনেকেই এ বিষয়টিকে বড় বেশী নিগ্রহ করে, বড় বেশী অবহেলা করে। বিশেষ করে আলেম ও ওলামা এবং দুনিয়ার সাকসেসফুল লোক জনরা - অথচ সংশ্লিষ্ট হাদীস ও কোরান আমাদেরকে এ বিষয়টির প্রতি মনোযোগী হতে যেন এ্যাম্পাসিস ই করে - সুরা কাহাফ পড়তে বলা ইত্যাদি।
আশা করি আপনি আমার প্রতি অসুন্তুষ্ট হবেন না। ভাল থাকবেন সবসময় - এ প্রার্থনা।
আমি কিয়ামতের আগের সাইন গুলোর উপর মোটামুটি পড়েছি। আর আলিম উলামাগনের উপলব্ধির মাত্রাও বুঝার চেষ্টা করেছি। এই যুগে যাদের ইসলামি ইলম এর উপর আস্থা রাখা যায় এই রকম প্রায় অধিকাংশ আলিমের কাছে সরাসরি ও গিয়েছি, তাদের লেখাও পড়েছি। তারা কেন জানি ড: ইমরান এর বোঝার কাছেও যেতে পারেনা।
যখন ইরাক ভাংগা হয়, ৫৫৬ হিজরিতে, তখন উলামাদের কান্ডারি নাসীর উদ্দীন আত তুসী ফাতওয়া দিয়েছিলেন, তাতাররাই হলো হাদীসে বর্ণিত ইয়াজুজ মাজুজ। তাদের শারীরিক বর্ণনা তো আছেই, যে দেশ থেকে তারা এসেছিলো তাও যুলক্বারনাইনের সেই ড্যামের এলাকা বলে তিনি একটা বই লিখেছিলেন। ঐ ফাতওয়া শুনে খারাপ লাগার কথা ছিলোনা সে সময়। সবাই মনে করে নিয়েছিলো কিয়ামতের মাত্র আর কয়েক বছর বাকি আছে। কাজেই আর বসে থাকা ছাড়া আর কোন কাজ নেই। ইবনে তাইমিয়্যাহ ছিলেন সে সময়ের প্রথম আলিম যিনি এই ধারণা কে ভুল বলেন। তিনি এটাও বলেন তাতার রা যদি ইয়জুজ মাজুজ হয়েও থাকে আমই লড়বো তাদের সাথে।
ইমাম সাইয়ূতী ইন্তেকাল করেন ৯১১ হিজরিতে। ক্রুসেডারদের কীর্তি ও সালাহদিনের বিজয়ের পরে আবার মুসলমানদের পতনের সময়ে তিনি এই সব সাইন নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি স্পষ্টত: দাবি করেন যে, ইমাম মাহদির জন্ম হয়ে গেছে। তিনি দেখাতে চান এখন থেকে কিয়ামতের প্রসেস শুরু হয়ে গেছে।
এর পর ও ৫০০ বছর গেলো।
কাজেই কুরআন হাদীসের এই বিবরণ গুলো যে ভাবে বর্তমান যামানার এই সব ইংরেজ পড়ুয়া শাইখ গণ বুঝাচছেন সে অনুযায়ি আলিম রা কথা বলছেন না।
২০০২ সালের ২৫ ডিসেম্বর ড: ইমরান নামের পাকিস্থানি একজন স্কলারের সাথে দেখা হয় সোয়ানসির মসজিদে। তিনি ড: ইমরান নাযিরের ও খুব ঘনিষ্ঠ। আর ড: ইসরার আহমাদের ভাবশিষ্য। তিনি ইরাক যুদ্ধের ব্যাখ্যা করতেছিলেন। ২ ঘন্টা ছিলো তার ইন্টারেস্টিং আলোচনা। তিনি প্রমান করেছিলেন এটাই হচ্ছে কিয়ামতের আগের সেই ফুরাতের তীরের যুদ্ধ। এখানেই হবে খৃষ্ট-য়াহুদী শক্তি তথা দাজ্জালের শেষ যুদ্ধ। তিনি আমাদের আঁকিয়ে জুঁকিয়ে বুঝাতে চেয়েছিলেন যে ঈসা (আ) এর আগমন ঘটতে যাচ্ছে। আমি আমার বক্তৃতায় ৩৬০ ডিগ্রি ফিরিয়ে নিয়ে আমাদের করণীয় কাজ কি তা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তিনি রাগ করে চলে গিয়েছিলেন, এবং কেন আমি ঈসা (আ) কে আগমনের এই সময়টা কয়েক বছর দূরে নিচ্ছি তা নিয়ে কথা বললেন তার হোস্টের সাথে।
আমি শুধু বলেছিলাম কুরআন হাদীস আমি যা বুঝেছি তাতে আগামি ১০ বছরেও ঈসা (আ) আসবেন না। আমার কথায় উনি রুষ্ট শুধু হননি, তিনি আমাকে এই জন্য 'উলামা সু' বা নষ্ট আলিম বলেও আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন এরা সৌদি আরবের টাকা খাওয়া ওহাবি পান্ডা।
যাহোক তার পরে ১৩ বছর গেলো, ঈসা (আ) এখনও আসেন নি।
কিয়ামতের আলামত গুলো আমাদের নবী (সা) এত স্পস্ট করে বলেছেন যে সে গুলোর অর্থ কাওকে করার দরকার নেই। খুব ই স্পস্ট তা। আর ঐ গুলো কোন আলিম বুঝবেন না এটা ধারণা করা শুধু ভুল নয়, এক ধরণের প্রগলভতা।
আমি বুঝার চেষ্টা করেছি কেন মুহাদ্দিসগণ এই সব হাদীস গুলো তাদের কিতাবের একদম শেষে স্থান দিতেন। কারণ হলো কিয়ামতের প্রস্তুতি গ্রহনের জন্য ওই সব হাদীস জানার আগে আমল গুলো নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হবে।
জাযাকাল্লাহু খায়রান।
ইমরান নজর হোসেন আপনাকে উদ্দেশ্য করে যে কমেন্ট করেছেন - তার জন্য আমি একাধারে লজ্জা বোধ করছি - প্যারালালি অবাক ও হচ্ছি। কারন আমার দেখা ওনার প্রায় ১০০+ ভিডিও হতে আমি যে সেন্স পাচ্ছি তা হল উনি বলতে চাইছেন দজ্জাল ও ইয়াজুজ মাজুজ রাসুলুল্লাহ সঃ এর সমসাময়িক সময়ে ফ্রি হয়েছে এবং এ নিমিত্তে উনি যে কোরান এর আয়াত ও হাদীস কোট করেন এবং তারপর যে ব্যাখ্যা দাঁড় করান - তা রিয়ালিটির সাথে তথা অর্থনীতি, মুদ্রাব্যবস্থা, শাসন ও শোষন ব্যবস্থা, মানুষকে লোভ লালসা ও শৃংখলিত করনের মেকানিজম, ফারাও এর লাশের সাইন, জিওনিস্ট মুভমেন্ট ও ইসরাইলের জন্ম এবং তার আলোকে ন্যাটো বনাম রাশিয়ান এ্যালায়েন্স এর মধ্যস্থিত সংগঠিত মালহামার পরে ইসরাইলের পৃথিবী শাসন ও তারপর মসীহউদ দজ্জাল এর প্রকাশ ও তারপর মসীহ ইবনে মারইয়াম এর আত্মপ্রকাশ ইত্যাদির কথা শুনেছি এবং এর সাথে আশে পাশের যা কিছু দেখছি তার চমৎকার ম্যাচ ই দেখছি। আমি ক্রিটিক্যালী ওনার বক্তব্যকে চ্যালেন্জ করে ভ্যারিফাই করলে - ওনার বিশ্লেষনকে সত্য বলে প্রতিভাত হয়। কিন্তু আমি ওনাকে সামনা সামনি দেখিনি। আমি ওনার বক্তব্যকে আমাদের লোকাল ভাইদের সাথে ভ্যারিফাই করার চেষ্টা করেছিলাম - কিন্তু ওনারা সন্তোষজনক কিছু বলতে পারেন নি - ওনারা মূলতঃ বলতে চাইছেন - আখেরী জামানা সংশ্লিষ্ট হাদীস গুলো নিয়ে গবেষনার কিছুই নেই - এটা যে ভাষায় যেমন আছে তাতে আস্থা রাখাই যথেষ্ট।
আমি অনলাইনে ওনার বক্তব্যের কাউন্টার ও খুজেছি - যেখানে আমি কোরান হাদীস দিয়ে ওনার বক্তব্যকে খন্ডানো হয়েছে তা দেখতে চাইছিলাম। দূর্ভাগ্যক্রমে ওনাকে বকাঝকা করা ভিডিও পেয়েছি ওনাকে কাফের উপাধী দেওয়া ভিডিও র দেখা ও পেয়েছি - কিন্তু সুরা মায়েদার ৫১ নং আয়াত, মুতাশাবেহাত আয়াত, সুরা আম্বিয়ার ৯৫-৯৬ নং আয়াত, সুরা কাহাফের তাফসীর, সুরা রূম এর প্রথম চারটি আয়াতের ব্যাখ্যা সহ অসংখ্য হাদীস যেমন দজ্জাল এর ৪০ দিনের হাদীস, তামিম আদ দারী রাঃ এর হাদীস, ইবনে সাইদের হাদীস, ইয়াজুজ মাজুজ এর হাদীস, সূর্য পশ্চিমে উঠার হাদীস, দাব্বাতুল আরদ এর হাদীস, কনস্টিন্টিনোপল জয়ের হাদীস, মুয়াদ বিন জাবাল রাঃ কে বলা ক্রনলজিক্যাল হাদীস - ইত্যাদির ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন অন্যান্য আলেম ও ওলামা থেকে কম্প্লিটলী ভিন্ন পেয়েছি এবং ইন্টারেস্টিংলী মোর লজিক্যাল ও প্রাকটিক্যাল পেয়েছি।
এমন কি হওয়া সম্ভব যে - ওনাকে মেইন স্ট্রীম আলেম ওলামারা - আলেম বিবেচনা করছেন না আর তাই ওনার বিচার বিশ্লেষনকে সিরিয়াসলী নিচ্ছেন না, শুনছেন না?
আপনার জানা শোনা কোন আলেম ভাই কি আছেন যিনি পিএইচডি করছেন আখেরী জামানা সংশ্লিষ্ট ইসলামিক বিষয়াদি নিয়ে? যদি থাকে কিংবা আপনার কোন ছাত্রকে দিয়ে কি ওনার যে কোন একটি বক্তব্য কিংবা বই এর ইসলামিক রিভিউ করাতে পারেন - যাতে আমরা বুঝতে পারি কোথায় ও কিভাবে তিনি ট্রু ইসলামকে এড়িয়ে কিংবা ম্যালাইন করে বক্তব্য দিচ্ছেন। আমরা তাতে সচেতন হতে পারবো।
ওভারঅল আপনার বক্তব্য আমাকে সাহায্য করবে আগামীতে ওনার বক্তব্যকে আরো ক্রিটিক্যালী নেবার - এবং আশা করবো মেইনস্ট্রীম আলেম ওলামাদের ইসলামিক রেসপন্স এর জন্য।
ধন্যবাদ, আসসালামুআলাইকুম।
আসলে ইসলামের ইতিহাসে কিছু পেসিমিস্ট গবেষকের উদ্ভব সব সময়েই হয়েছে, যারা সমসাময়িক ফিৎনা ও মুসলামানদের আঁধারে হাবুডুবু খাওয়ার সময়কে কিয়ামতের আলামত হিসেবে দেখেছেন, এবং কুরআন হাদীসের ওই সব আয়াত ও হাদীস কে সেই ভাবে ব্যাখ্যা করে নিজে যেমন আত্মতৃপ্তি লাভ করেছেন, উম্মাতকেও একটা অস্থীরতা থেকে বাঁচাবার চেষ্টা করেছেন।
এরা সবাই ছিলো শিয়া ও তাসাউউফপন্থীদের দ্বারা দারুন ভাবে প্রভাবিত। শিয়াদের মাহদীবাদ এমন পর্যায়ে গিয়েছিলো যে সুন্নিদের প্রখ্যাত শাসকদের অনেক কেই তারা সে সময় হয় দাজ্জাল বলেছে নতুবা ইয়াহুদি অক্ষ শক্তির দালাল বলেছে। ইমাম খোমেনির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট হলো তিনিই শিয়াদের এই ব্লাক হোল থেকে বের করে আনেন। তিনি অলায়াতুল ফাক্বীহের কনসেপশান দেয়ায় তারা আবার কোমর সোজা করে দাঁড়িয়েছে।
যাহোক, এই সব বিষয় নিয়ে যথেষ্ঠ গবেষণা হয়েছে। অনেক বই লেখাও হয়েছে। মুশকিল হলো ডঃ ইমরান নাযীর বা ঐ ধরণের গবেষকদের কথা শুনে কোন আলিম আজ পর্যন্ত মুখ খুলেনি, কারণ তা সঠিক ইসলামি জ্ঞানের মাপকাঠিতে অনেক দূর্বল। এই ভাবে যারা ব্যাখ্যা করেন তাদের কে সহজে চেনা যায়, এরা সুফিবাদে দারুন ভাবে প্রভাবিত এবং শিয়া লেটারেচারের সাথে অনেক বেশি খাপ খাইয়ে চলেন।
আশরাতুস সাআতের উপর হিউজ কাজ হয়েছে। ঐ গুলো পড়লে আপনি অনেক উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।
আল্লামা সুয়ূতি ও নাসিরুদ্দিন তূসির যুক্তি ও কুরআন হাদীসের ব্যাখ্যা গুলো ও ডঃ ইমরানের কথা গুলো পাশে রাখলে দেখবেন কী সুন্দর মিলে যাচ্ছে।
আরকেটা কথা হলো, গোলাম আহমাদ কাদিয়ানি যখন নিজকে ঈসা (আ) দাবী করেন, তখন তাকে প্রমান করতে হয় তার পরে কিয়ামত সংঘটিত হতে আর বেশি সময় বাকি নেই। প্রমান করতে হয় ইমাম দাজ্জাল এসে গেছে। তার লেখা "দাজ্জাল ও তার গাধা" বই টা পড়ে দেখবেন। তিনি ইমাম মাহদী হিসেবে নিজকেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এবং বিশ শতকে ইসলামের পতন ঘটাতে পাশাচাত্যের নানা প্লান ও আবিস্কারকে, ইমরান নাযীরের মত, কুরআন হাদীসের আলোকে কিয়ামতের আলামাত হিসাবে দেখাবার চেষ্টা করেছেন। ঐ বই গুলো পড়লে দেখতে পাবেন ডঃ ইমরান নাযীর হুসাইনের গবেষণা কোন পর্যায়ে।
আপনি যে আলিম উলামাদেরকে কিছুটা উদাসীন বলে দুই একটা লেখায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন তাতে আমি আশ্বস্ত করতে চাই, আসলে আলিম রা উদাসিন নন। কাজ করেই যাচ্ছেন হাক্কানী রাব্বানী উলামায়ে কিরাম, আমরা তাদের কাছে যেতে পারিনি সেটা আমাদের ই ত্রুটি।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে আপনার ইসলামি জ্ঞানে জ্ঞানী হওয়ার প্রণোদনাকে স্বাগত জানাই, আবদার করি ইসলামের মেইন স্টীম লেটারেচারে কাছে বেশি বেশি থাকার।
ইনশাল্লাহ আমি চেষ্টা করবো মেইনস্ট্রীম এর বই পড়ার - আপনার কাছ হতে ১/২ টি রেফারেন্স থাকলে উপকৃত হতাম - তবে তা বাংলা কিংবা ইংরেজী হলেই শুধু পড়তে পারবো।
দয়া করে আমার কোন লিখা কিংবা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে যদি আপনি মনে করেন অমুক বই পড়লে আমার চিন্তা ভাবনার ক্লারিটি অধিকতর ভাল হবে - তবে দয়া করে পরমার্শ দিবেন।
সবশেষে অড অনুভব করছি - এই ভেবে যে আমার জন্য লম্বা প্রতিমন্তব্য লিখতে গিয়ে আপনি না - আর সব রিডারকে নতুন পোষ্ট পাওয়া হতে বঞ্চিত করেছেন।
আসসালামুআলাইকুম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন