বাংলাদেশে দ্বীনী দাওয়াতের নতূন দিক
লিখেছেন লিখেছেন সালাম আজাদী ০৭ এপ্রিল, ২০১৫, ০৮:৪১:৫৪ রাত
আমার বন্ধু শায়খ আব্দুর রহমান মাদানী সেদিন চোখ খুলে দেয়ার মত একটা কথা বললেন। তিনি ফিক্বহ আলদাওয়াহ বা দাওয়াহ বিজ্ঞানের একজন প্রোথিতযশা প্রফেসর। বললেনঃ ইসলামি দেশ গুলোতে দাওয়াত দানের ভাষা ও কর্মপন্থায় আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। এতদিন আমাদের দৃষ্টিভংগি ছিলো, বাংলাদেশের ইসলাম পন্থীরা ছাড়া আর যারা আছে তাদের সাথে সম্পর্ক হলো, ইসলাম ও জাহেলিয়্যাতের। মানে যুদ্ধাবস্থা। এই সম্পর্ককে স্বাভাবিক করে সব দল কে মুসলমানদের দল মনে করে দাওয়াতি একটা কর্মপন্থা বের করতে হবে, যেখানে দুটো মূলনীতিকে আঁকড়ে রাখতে হবেঃ
১। সবার সাথে সুন্দর সহাবস্থান এবং সবাইকে ইসলামের দাওয়াতে আনতে সমান প্লাটফর্মে বসার পরিবেশ তৈরী করা।
২। দেশ ও দেশের স্বাধীনতা এবং দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ইসলাম পন্থীদের আরো বেশি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়তে হবে, দখলের নিয়তে নয়, সেবার নিয়তে।
উনি কথা বলেন কম, তবে কথার ওযন থাকে বেশ।
আপনারা কী মনে করেন............?
বিষয়: বিবিধ
২১০৫ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর কথা বলেছেন মহান আল্লাহ সবাইকে সেই কথার হেকমত মত কাজ করার তৌফিক দিন! আমিন ছুম্মা আমিন!
ইসলামের ইতোহাসের ছাত্ররা স্বরস্বতী পূঁজায় মূর্তিকে ফুলের তোড়া দেয় ।
শুধু জুম্মার নামাজ পড়ে মসজিদে গিয়ে ,খুব মান্জা মেরে । বাকী ৩৪ ওয়াক্ত নামাজের কোন খবর নেই ।
মাসজিদে আসার চেয়ে দীপিকাকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে ।
এরকম দেশে সঠিক ইসলাম কায়েম কোন ভাবেই সম্ভব নয় ।
ইসলামী টিভিতে যেসব বাংলাভাষী আলেমদের দেখানো হয় তারা কি বাংলাদেশের ?
এক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আগে সমন্বয়সাধন ও স্থায়ী ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কিছু প্রাথমিক মতৈক্য হওয়া জরুরী বলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা। যা অনেক ফলপ্রসূ হবে এবং উদ্দেশ্য হাসিলের গতিকে ত্বরান্বিত করবে।
সুন্দর ভাবনায় কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমি ছোট মানুষ কি বলব চাচাজান উণি দুটো গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট বলেছেন ।
ধন্যবাদ চাচাজান ।
আমরা মুরব্বি আনায় বেশি ব্যস্ত থাকি সত্যের চেয়ে। সত্যকে যতদিন গুরুত্ব দিতে ব্যর্থ হব ততদিন সঠিক নিরবে কাঁদবে.......!!!!
(১)সন্ধাতারা আপু:ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কিছু প্রাথমিক মতৈক্য হওয়া জরুরী
(২)লোকমান বিন ইউসুপ লিখেছেন : রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়তে হবে,সমাজে মধ্যে।
(৩) সালাম আজাদী ভাই:সবার সাথে সুন্দর সহাবস্থান এবং দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ইসলাম পন্থীদের আরো বেশি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়তে হবে, দখলের নিয়তে নয়, সেবার নিয়তে।
(৪)হতভাগা :এরকম দেশে সঠিক ইসলাম কায়েম কোন ভাবেই সম্ভব নয় ।
(৫)মাহবুবা সুলতানা লায়লা আপু:মহান আল্লাহ সবাইকে সেই কথার হেকমত মত কাজ করার তৌফিক দিন! নেগেটিভ
আসুন এগুলোর ভাল দিক গুলো যোগ করি ফলাফল দেখুন:(ব্রেন ষ্ট্রমিং ফলাফল)।
হেকমত সহকারে
কাজ করতে হবে যাতে ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা যায় এবং সুন্দর সহাবস্থান শেষে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়তে হবে। ইসলাম পন্থীদের আরো বেশি বেশি উদারপন্থী হতে হবে। হে। এভাবে ইসলামী বিপ্লবের পথ এগিয়ে যাবে।
Thank you.
১। এ ধরনের কথা, চিন্তা ও কাজ - বরাবরই পজেটিভ ও উৎসাহব্যন্জক।
২। ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি, উপরোক্ত কথা, চিন্তা ও কাজ - এ সময়ের জন্য যথাযথ ঔষধ হিসাবে কাজ করবে না, তথা রোগ সারাবে না, স্বস্তি ও নিশ্চিত করতে পারবেনা, উদ্দেশ্য ফুলফিল হবে না।
কেন আমি তা বলছি?
কারন আমি বিশ্বাস করি, অনুভব করি এবং দু একটি ক্ষেত্রে কিছু প্রমান ও পেয়েছি - যাতে আমি কনভিন্সড যে, কোরআন একটি জীবন্ত গ্রন্থ। যা ফারদার এক্সপ্লোরেবল। জীবন্ত বলতে আমি বুঝাচ্ছি - এ গ্রন্থ নিরবিচ্ছিন্নভাবে উম্মাহর সামনে উদ্ভুত সমস্যার - নিত্য নতুন সমাধান, পাথেয় ও দিকনির্দেশনা দিতেই থাকবে।
দিক নির্দেশনা পাবার কন্ডিশান হল একটি। আর তা হল - কোন ট্রু মুমিন বান্দাহ - ট্রুলি কোরান এ সমাধান খুঁজবেন এবং প্রয়োজনে অন্যান্য জ্ঞানের শাখা প্রশাখার সাহায্য নেবেন কিন্তু মূল থাকবে কোরআন। যদি মুমিন বান্দাহ কোরান ছেড়ে কোরানের তাফসীর কিংবা কোরানের অনুবাদে কিংবা কোন পূর্বতন আলেমের লিখা কোন বই এ আজকের সমস্যার সমাধান খোঁজেন - তবে নিশ্চিত তিনি তা পাবেন না।
লম্বা হয়ে যাচ্ছে, তারপর ও আমি একটি উদাহরন দিতে চাই। বিশেষ করে আপনারা যারা আরবী বোঝেন তারা কি সুরা আম্বিয়ার ৯৫ ও ৯৬ নং আয়াত দুটো পড়ে তার অনুবাদ করে একটু চিন্তা করবেন? চিন্তা করলে কি এটা পরিষ্কার হবে না যে -
ক) প্রথম আয়াতে আল্লাহ ক্লিয়ারলী বলেছেন - তিনি একটি শহর ধ্বংশ করে দিয়েছেন এবং (সে শহরবাসীর জন্য) সে শহরে ফিরে আসা হারাম করে দিয়েছেন। আর দ্বিতীয় আয়াতে, তিনি ঐ শহরবাসীর ফিরে আসার কন্ডিশান হিসাবে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, শহরবাসী শুধু তখন ই ঐ শহরে ফিরে আসতে পারবে যখন ইয়াজুজ ও মাজুজ সারা পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়বে - ট্যাকনিক্যালি মিন করে ইয়াজুজ ও মাজুজ এর কন্ট্রোল এ সারা পৃথিবী চলে আসবে।
এবার আপনারা যারা আরবী জানেন তারা যদি - ৫টা ভিন্ন কোরান নেন তবে দেখবেন ৫টা ভিন্ন ভিন্ন অনুবাদ - যা আল্লাহর মূল বক্তব্য হতে অনেক দুরের। আবার যদি ৫ টা ভিন্ন তাফসীর পড়েন এই দুটো লাইন এর উপর - তা আরো কন্ট্রাডিক্টরী মতামত দেবে - এবং তার কোন কোনটি শুধু লজ্যিকাল কন্ট্রাডিকশান ই দিবে না - একই সাথে কোরানের সাথেও কন্ট্রাডিকশান দেবে। শহরবাসীর ফিরে আসা নিয়ে এটলিস্ট ৪টা ভিন্ন ভিন্ন মতামত পাওয়া যায় - যা মূল বিষয়কে তথা আল্লাহর মূল বক্তব্যকেই চিন্তার জগত হতে সরিয়ে ফেলে।
যদি কোন আরবী জানা ভাই উক্তি লাইনদ্বয়ের থিম হিসাবে ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কে কৌতুহলের বশঃবর্তী হন এবং আজকের সময়ে করা অনুবাদ ও পূর্ববর্তী সময়ে করা তাফসীর দ্বারা বায়াসড না হন - তবে তিনি যদি সুরা কাহাফ এর ইয়াজুজ মাজুজ সংশ্লিষ্ট আয়াত কয়টি ও সংশ্লিষ্ট হাদীস গুলোর উপর চোখ বুলিয়ে নেন - তাহলে তিনি নূন্যতমভাবে জানবেন যেঃ
১। ইয়াজুজ ও মাজুজ এর বৈশিষ্ট্য সমূহ কি? কি? এবং নিঃসন্দেহে তিনি আজকের পৃথিবীর মানুষের মধ্যে, সমাজের মধ্যে, রাষ্ট্রের মধ্যে ইনক্লুডিং মুসলিমদের মধ্যে ঐ বৈশিষ্ট্য সমূহের প্রকটতার লেভেল পরিষ্কার দিনের আলোর ন্যায় দেখতে পাবেন। বিশেষ করে দুনিয়াব্যাপী ফ্যাসাদ, করাপশান, ফুড কন্টামিনেশান, কনককশান, ধর্মদ্রোহীতা, আল্লাহকে চ্যালেন্জ করার প্রবনতা ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।
সে সাথে তিনি অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করবেন কিংবা আবিষ্কার করবেন - কয়েক ডজন ইয়াজুজ ও মাজুজ সংশ্লিষ্ট হাদীস এ শুধু মাত্র একটি শহরের নাম উল্লেখ আছে - ঠিক যেন কোরান এই শহরটিকে ধ্বংশ করেছে বলে বলছে। অদ্ভুত ব্যাপার হল - তা বায়তুল মাকদিস্ - জেরুজালেম।
তিনি যদি তার চিন্তা কনটিনিউ করেন এবং বায়তুল মাখদিস এর হিস্টরী পড়েন মানে কারা কখন কবে কিভাবে বায়তুল মাখদিস এ ছিল, তাদের কখন কি হয়েছিল এবং এ নিয়ে কোরান ও হাদীস ই বা কি বলছে। উদাহরন স্বরূপ - কাদেরকে আল্লাহ ঐ শহর দিয়েছেন বলে বলছেন, কি কন্ডিশান ছিল ঐ শহরে থাকার, কারা ঐ শহরে প্রবেশ করতে চায় নি, আবার পরে গেলেও কারা তাদের বের করে দিয়েছে, কারা তাদের ফিরিয়ে এনেছে এবং কারা আবার ও তাদের বের করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে এবং কেন তারা ফেরাউনের লাশ (কোরানে বলা হয়েছে এটা সাইন হিসাবে প্রিজার্ভ করা থাকবে) আবিষ্কারের পরে এমন একটি মুভমেন্ট করার সুযোগ ফেলো যে তারা বায়তুল মাখদিসে ফিরতে পারলো? কারা তাদেরকে সে সুযোগ করে দিল? যারা করে দিল তারা কি আদৌ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে পেরেছিল কিনা? (যা ৯৬ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন) তারা কি ইয়াজুজ ও মাজুজ এর বৈশিষ্ট্য সমূহ হোল্ড করে কিনা, তারা কি ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে কিনা?
যদি উত্তর পাওয়া যায় তখন তো ঐ আলেম ভাই হাদীসে কুদসী হতে জানতে পারেন যে, যেখানে আল্লাহ বলেছেন, তিনি এমন একটি জাতির সৃষ্টি করেছেন - যা তিনি স্বয়ং ছাড়া আর কেউ ধ্বংশ করতে পারবেনা। তাহলে ঐ আলেম ভাই কি এই সিদ্ধান্তে আসতে পারেন না যে - ইয়াজুজ ও মাজুজ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে গিয়েছে এবং শহরবাসী ১৯৪৮ এ তাদের শহর এ ফিরে আসতে শুরু করেছে তথা আল্লাহ যে শহর একদিন হারাম করেছিলেন তা তিনি উঠিয়ে নিয়েছেন?
এবং এই কনক্লুশান এর আলোকে আমার মনে হয়না ঐ আরবী জানা চিন্তাশীল আলেম ভাই, শায়খ আবদুর রহমান মাদানীর সাথে একমত হবেন। বরং তিনি আহ্বান জানাবেন ওনার মত আর যারা বড় বড় আলেম আছেন - তারা যেন দয়া করে কোরান ও হাদীস এ আজকের যুগের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কষ্ট করে আর একবার চোখ বুলান এবং তার আলোকে আজকের দুনিয়াকে বিশ্লেষন করেন এবং সে বিশ্লেষনের আলোকে যে রেজাল্ট পাবেন তার আলোকে আমাদের কর্মপন্থা বাতলে দিন।
আমাদের আলেম ও ওলামারা দয়া করে ভবিষ্যত কেন্দ্রিক বিষয় সমূহের ক্ষেত্রে আর্লি লিটারেচার, আর্লি এ্যানালাইসিস এর উপর নির্ভর না করে পুনরায় কোরান ও হাদীসে চোখ বুলান - তাতে আমার বিশ্বাস আমরা অনেক বেশী উপকৃত হব - এবং ১০০০ এর মধ্যে ঐ ১ জন হবার সুযোগ পাব - যে কিনা মোহাম্মদ সঃ এর উম্মত ও জান্নাতি।
আমি দুঃখিত ও লজ্জিত মন্তব্যটি এমন লম্বা হয়ে যাবার জন্য। ভাবছি যেহেতু লম্বা হয়েই গেছে কাট ছাট করে এটাকে পোষ্ট হিসাবে দিয়ে দিব কিনা?
মন্তব্য করতে লগইন করুন