বাংলাদেশ নিয়ে কারা হতাশ
লিখেছেন লিখেছেন সালাম আজাদী ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১১:১১:৪৬ রাত
এ যাবত বাংলাদেশ কে নিয়ে হতাশ মানুষের সংখ্যা বেশ দেখা যাচ্ছে। আসলে আমি তিন শ্রেনীর মানুষ দেখেছি, যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে সম্পূর্ণ হতাশ। প্রথম দল হলো যারা সমাজতন্ত্রের ভিত্তিতে বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলো। এর জন্য এক পর্যায়ে তারা অস্ত্র হাতেও নিয়েছিলো। তারা বাংলাদেশ নিয়ে খুব ই হতাশ। আরেক দল হলো যারা বাংলাদেশে ইসলামি খিলাফাতে রাশেদাহ কায়েম করতে চেয়েছিলো, এবং তা করতে যেয়ে শক্তি প্রয়োগ করতে চেয়েছিলো, বা করেছিলো বা করতে চায়। আরেক দল হতাশ যারা দেশে ভালো ভালো চাকুরি করে ...নিজদের গড়বে এই আশা করেছিলো। কিন্তু বাংলাদেশের অনিরুদ্ধ করাপশানের কারণে ভালো সুযোগ না করতে পেরে, বিদেশে পাড়ি জমিয়ে সেখানে ভালো কিছু করতে পেরেছেন।
তবে বাংলাদেশের ইতিহাস যারা জানেন তারা কিন্তু হতাশ হন না।কারণ এই অঞ্চলের দ্রাবিড় লোকেরাই আর্যদের বহু দেবতার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রথম অস্ত্র হাতে নেয়, এবং তাকে স্বশস্ত্র প্রতিরোধ করে। এখানের লোকদের মতি ও গতি দেখে আলেক্সান্দার দ্যা গ্রেইট তার প্রধান সেনাপতি সেলুকাসকে লক্ষ্য করে সেই বিখ্যাত উক্তিটি করেছিলেনঃ কী আশ্চর্য এই দেশ, সেলুকাস!কী আশ্চর্য এর মানুষ, কী আশ্চর্য এর প্রকৃতি!! এখানে ষড় ঋতুর সাথে মানুষের মতি ও গতি মারাত্মক চেইঞ্জ হয়। তাছাড়া খুব বেশি ক্ষরা, বন্যা, ও বৃষ্টির কারণে এখানের মানুষদের স্মৃতি শক্তি প্রখর হলেও তাড়া তাড়ি মুছে যায়। ছয় মাস পরপর এদের স্মৃতিতে আগের গুলো ঝাপসা হয়ে নতুন কিছু ঢুকে যায়। ফলে আলেক্সান্দার বুঝতে পেরেছিলেন এই এলাকার লোকদের উপর বিজয় সুনিশ্চিত হওয়ার পর ম্যাক্সিমাম ৬ মাস ধরে রাখা যাবে। এর পর আবার বেদখল হয়ে যাবে তার সাম্রাজ্য। এই জন্য বিহারের সীমান্ত থেকেই তিনি ফিরে গিয়েছিলেন। বাংলা জয়ের চিন্তা মাথায় ও আনেন নি।
এরাই দিল্লী শাহীর বিরুদ্ধে প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণাকারী ছিলো। এরাই সিরাজুদ্দৌলার মত বিদেশী শাসক কে তাড়ায়ে ইংরেজ দের এনেছিলো। এরাই ইংরেজ রাজের বিরুদ্ধে সব চেয়ে বড় বড় আন্দোলন গড়ে তুলেছিলো। এরাই পাকিস্থান প্রতিষ্ঠার জন্য সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠ ছিলো। লাহোর প্রস্তাবে আমরা, প্রাদেশিক নির্বাচনে আমরা, আমরা শেরে বাংলা, আমরা হোসেন সোহরাওয়ার্দি, আমরাই এধার হাম ওধার তুম এবং সালাম আলাইকুম বলা ভাসানী, আমরাই বীর বাঙালিকে এক সুতোয় বাঁধতে জানা শেখ মুজিব, কিংবা সেনাবাহিনীর শৃংখল ভাংগা বিদ্রোহী ভৃগু মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান।
সবচেয়ে বড় কথা হলো এদেশের মানুষ গুলো সংগ্রাম সাধনায় কখনও পরাজিত হয়নি, পরাজয় বরণ করতে শেখেনি। কারন পৃথিবীর সবচেয়ে রক্তের দাম এই ভূখন্ডের লোকদের ই কম। ফলে ৫২, ৬৯, ৭১, ৭৫, ৯১, ২০০৬ ইত্যাদিতে আমরা রক্ত ঢেলেছি, আর রক্তের উপর দিয়ে ছিনিয়ে এনেছি বিজয়। অথবা আমরা রুখে দাঁড়ালে পদ্মার দু’কূল ছাপা ঢেও ও বন্ধ করে দিতে পারি। কিংবা যখন এ দেশের লোকেরা হুংকার দেয়, হিমালয়ের শৃংগ থেকে তার স্পষ্ট প্রতিধ্বনি শোনা যায়। আরেকটা কারণ হলো, আমলে এরা একটু সেক্যুলার হলেও, ঈমানে এরা আরবের সাহাবী যামানার মত পুরাতন। এদের মাটির নিচে কিছু লোকের দেহ লুকিয়ে আছে, যাদের উপর কাফিরদের পা বা গাড়ির চাকা চললে আল্লাহ নিশ্চয় মুসলমানদের সাহায্য করবেন।
বিষয়: বিবিধ
১৬৮৬ বার পঠিত, ৫০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত শ্রেনি নিজেরা অবস্থা পরিবর্তন এর কোন চেষ্টা করিনা বড় চাকরির জন্যই সব দিতে রাজি। সব দোষ রাজনিতিক দের উপর চাপিয়ে দিই। অত্যাচারি পুলিশদের বিসিএস ক্যাডার তাই উচ্চ শিক্ষিত বলে সন্মান জানাই। "পড়াশোনা করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে" জাতিয় ম্যিথা প্রবাদ বাক্য কে অামাদের জিবনে সত্যি হলোনা তা নিয়ে হাহুতাশ করি আর দোষটা দেশের উপর চাপিয়ে নিযেরা দায়মুক্ত হই।
নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন এর চেষ্টা না করে স্রেফ ভাগ্যের উপর দোষ দিয়ে হতাশরা হলেন সংগ্রামে বিমুখ।
খুবই অস্টষ্ট আপনার এ বক্তব্যটি। আশা করি স্পষ্ট করে বাধিত করবেন।
আপনি লিখেছেন:
আরেকটা কারণ হলো, আমলে এরা একটু সেক্যুলার হলেও, ঈমানে এরা আরবের সাহাবী যামানার মত পুরাতন। আমলে বলতে হয়ত আপনি কর্মকে বুঝিয়েছেন, আর ঈমানে বলতে বুঝিয়েছেন আকিদা বা বিশ্বাসকে।
১. আপনি কর্ম আর বিশ্বাসকে ইসলামের কোন নীতির আলোকে আলাদা করলেন? ইসলামে এরুপ করার কোন আদৌ সুযোগ আছে কিনা?
২. সেক্যুলার বলতে আপনি আসলে ভারতিয় ধর্মনিরপেক্ষতা বুঝাচ্ছেন কি না? যদি তাই হয় তবে কি করে এ অঞ্চলের সকলকে একাতারে শামিল করলেন? অথবা অন্য কোনভাবেও কি সকলকে সেক্যুলার বলা যায়? আনি নিজে আসলে সেক্যুলার কি না?
আমার মনে তা আপনি নন!
৩. ঈমানে সাহাবি যামানার মত পুরাতন। এ ক্ষেত্রে পুরাতন শব্দটি যে বড়ই বিভ্রান্তিকর মনে হচ্ছে। তাদের ঈমানের বয়স সাহাবিগণের(রা.) এর সমান? নাকি তাদের ঈমানের গভীরতা সাহাবিগণের মত? নাকি তাদের ঈমানের মর্যাদা সাহাবিগণের সমান? নাকি সাহাবি যামানায় এদের পূর্বপুরুষগণ ঈমান গ্রহন করেছে বলে এ মূল্যায়ণ? যদি অন্তত শেষটিও হয় আপনার কথার অর্থ, তবে আপনার বক্তব্য অনুযায়ি এ প্রশ্ন অবশ্যই দাড়িয়ে যায় যে, এ অঞ্চলের পূর্ববর্তী মুসলিমগণ কি সেক্যুলার ছিলেন? অবশ্যই তা তাঁরা ছিলেন না।
আশা করছি আপনার পরবর্তী জবাবে বিষয়গুলো আলোচনা করে স্পষ্ট করবেন। আপনার কল্যাণ কামনায়, আল্লাহ হাফিজ।
স্বাধীনতার আগে দঃকোরিয়া , মালয়েশিয়া , ভিয়েতনাম এদের অবস্থা সে সময়ের বাংলাদেশের তুলনায় কি খুব একটা ভাল ছিল ?
এর কথা মনে করে লেখা। কিন্তু গায়রাত এর অনুবাদ টা সঠিক হয়নি। মুশকিল হলো ঐ শব্দের কোন অর্থ ও খুঁজে পাচ্ছিনা। ফলে কথা টা বাদ দিয়েছি। জাযাকাল্লাহু খায়রান, আহসানাল জাযা' ভাইজান
--------------------------------
মূর্খ, গায়ক, চোর-ডাকাত হয় যে জাতির কর্ণধার
দুঃখ-দুর্ভোগ, হতাশা, ছাড়া কিইবা তারা পাইবে আর॥
ভদ্র, ভালো, শিক্ষিতলোক এড়িয়ে চলে রাজনীতি
তাইতো জাতির ললাটে আজ এই করুন কঠিন পরিণতি॥
আমাদের অযোগ্যতা এটাও যে আমাদের নতুন প্রজন্মকে ইতিহাসের পাঠ শিখাতে পারিনি-
যদিও আল্লাহতায়ালা তাঁর পক্ষ থেকে কোন না কোন প্রক্রিয়ায় সেটা করে থাকেন!
তাহলে বর্ত্তমান সময়ে আইসিল, বোকোহারাম, তালেবাল, হামাস, আলকায়দা, আলশাহাব এরা নিশ্চয় আপনার আল্লার প্রক্রিয়ার ভিতরেই আছেন।
তাহলে বর্ত্তমান সময়ে আইসিল, বোকোহারাম, তালেবাল, হামাস, আলকায়দা, আলশাহাব এরা নিশ্চয় আপনার আল্লার প্রক্রিয়ার ভিতরেই আছেন।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি একমত হতে পারিনি - আপনার লিখায় দেখানো সাফল্য বা এসিভমেন্ট সমূহের সাথে। যেমন আপনি দিল্লী শাহী বিতাড়ন > ইংরেজ আনায়ন > ইংরেজ বিতাড়ন > পাকিস্থান অর্জন > পাকিস্থান বিতাড়ন > বাংলাদেশ অর্জন ইত্যাদিকে পজেটিভলী দেখিয়েছেন। কিন্তু আমার দেখা, শোনা ও বুঝার প্রেক্ষিতে - ফ্যাক্টস, ফিগার ইত্যাদি বলছে - বাংলার মানুষ যেন সিগারেট এর আগুন হতে গরম পানিতে পড়েছে, আর তারপর বুঝিবা গরম তেল এবং তারপর গরম চুলা আর এখন বুঝিবা সরাসরি পৃথিবীর সবচাইতে বড় নরকে পড়েছে। আর আজকের দিনের ঘটনা সমূহকে বিশ্লেষন করলে মনে হয় আগামীতে তারা বুঝিবা বাংলাকে হাবিয়া দোযখ বানাবার জন্য কাজ করছে।
আমার মনে হয় - আমাদের আশা করার বিষয় হল - বাংলার অনেক মানুষ এখন ন্যায় ও অন্যায়কে চিনতে পারছে, সত্য ও মিথ্যাকে প্রভেদ করতে পারছে, দুনিয়াকে গৌন করে আখেরাতকে মূখ্য করতে পারছে এবং মোহকে ছেড়ে পরকালমুখী হচ্ছে, ক্যারিয়ার সংকুচিত করে হাদিস সংকলন করছে, বাংলাদেশকে ইগনোর করে উম্মাহকে সামনে আনছে ইত্যাদি হল আশার কথা। ইত্যাদি হল পজিটিভ আউটকাম, আশার খোরাক। দুঃখিত দ্বিমত করার জন্য।
আসসালামুআলাইকুম।
যাই হোক বলতে চাইছিলুম আমাগো পূর্ব পুরুষদের স্মৃতিশক্তির দূর্বলতা নিয়ে। কোত্থেকে যে কোথায় গ্যাঞ্জাম লাইগ্যা গেল বুইজবার পারলুম না। তাই কুনো মন্তব্য করতে পারলুম না ওস্তাদ!! মাথায় গ্যাঞ্জাম লেগে গেছে একদম!! কাজ করছে না মোটেও!
★*★*★*★
হজরত ইউনুছ নবীর বংশধর হিসেবে
আশা জাগানিয়া পোস্টের জন্য শুভেচ্ছা জানবেন। জাযাকাল্লাহ খাইরান।
কিন্তু সাহসের যে জায়গাটা টার্গেট করেছেন তার জন্য বর্তমান প্রস্তুত।
আমার বিবেচনায় হতাশার মধ্য থেকেও আশা আর বাস্তবতার একটি মাইল ফলক সিদ্দান্ত আসবে। চুড়ান্ত ফায়সালার জন্য আরো বেশ দুর এগিয়ে যেতে হবে।
প্রস্তুত আছে বাংলাদেশ। আপনাকে মোবারকবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন