এডভোকেট সাদ আহমাদ সাহেবরাই ইসলামি রাজনীতি বুঝতেন

লিখেছেন লিখেছেন সালাম আজাদী ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৭:৩২:০১ সকাল



গতকাল সোমবার কুষ্টিয়ায় নিজস্ব বাসভবনে এডভোকেট সাদ আহমাদ সাহেব ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিঊন। আল্লাহুম্মা আজিরনা ফী মুসীবাতিনা, ওয়াখলুফ লানা খায়রান মিনহা।

তিনি জামাআতে ইসলামির প্রথম দিক কার একজন নেতা ছিলেন। পাকিস্থান আমলে সুপ্রিম কোর্টের খুব ই খ্যাতনামা আইনজীবি ছিলেন। এবং একজন পড়ালেখা করা ইসলামি রাজনীতিবিদ ছিলেন। আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাড তিনি। কুষ্টিয়ার বড় বড় কেইসে তিনি বিচারকদের সামনের আইনের ধারা ব্যাখ্যা করলে তা নিঃসংকোচে গৃহিত হত। তার সম্মান ছিলো আকাশ সমান, এবং তাকে দেখা হত পর্বতের মত দৃঢ় হিসেবে। বেশ আগে তার লেখা একটা ইতিহাস পড়েছিলাম, যেখানে তার জীবনী যেমন এসেছে, এসেছে পূর্ব পাকিস্থান থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত সাধারণ রাজনীতি নিয়ে অনেক আলোচনা। আবার ইসলামি রাজনীতির খানা-খন্দ গুলোও তিনি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন।

তার কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারি বাংলাদেশের ব্যক্তি মানস ও সমাজ মানসের একটা ভালো ধারণা। অধ্যাপক সাজ্জাদ স্যার একাত্তরের স্মৃতিতে বাংলাদেশের মানুষের দুইটা বড় বড় মানসিক দূর্বলতার কথা বলে গেছেন। একঃ এরা ইতিহাস স্মরণে রাখেনা। এদের ব্রেইন খুব শর্ট সময়ের জন্য রেকর্ড রাখে। দুইঃ এরা খুব আবেগি। আবেগের ঠেলায় এর কাজ করে বেশি। যাকে ১৯৬৯ এ মানুষ খোদার পরের আসন দিলো, ৬ বছর পর তাকে মেরে ফেললো না শুধু, জানাজা নামাজ ও পড়তে চাইলো না তারা।এড সাদ সাহেব এই দ্বিতীয় রোগ টাকে বাংগালি জাতির একটা চরিত্রগত বৈশিষ্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, এবং এর সাথে এখানের আলোবাতাস ও রক্তের ধারাবাহিকতা কে কারণ হিসেবে ধরে নেবার জন্য উকালতি করেছেন।

পাকিস্থান আমলে জামায়াতে ইসলামির যে শাখা পূর্ব পাকিস্থানে ছিলো, তাকে বাংগালি করণে তিনি ছিলেন বরাবরই মাওলানা আব্দুর রহীমের (র) সাথে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের বিরোধিতা করতে যেয়ে তিনি প্রচন্ড ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। সারা বাংলাদেশের নামকরা আইনজীবি হয়েও তাকে খুব অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হয়। কুষ্টিয়ার কোন একজন লোক ও তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, ফলে জামায়াতের বড় নেতা, শান্তি কমিটির বড় দ্বায়িত্ব পালন করলেও তাকে কুষ্টিয়া তে পরবর্তি পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে জীবন যাপনে তেমন বাঁধার মুখোমুখি হতে হয়নি।

আমার বড় চাচা ডঃ ইয়াহইয়ার রহমানের মাধ্যমে জীবনে একবার মাত্র এই বরেণ্য আইনজীবির সাথে দেখা করতে পেরেছি। অনেক প্রশ্নের জবাব আমি জানতে চেয়েছিলাম। কিছু পেয়েছিলাম, কিছু পাইনি। একবার মাওলানা ইউসুফ সাহেব (র) মদীনাতে যান। তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন ওখানে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ায় তার পাশে থাকার সুযোগ হয় আমার। এবং ইতিহাসের বেশ কিছু ভয়ংকর কাহিনির শ্রোতা হওয়ার ও সুযোগ ও আল্লাহ করে দেন তখন। এডভোকেট সাদের প্রতি আমার ভালোবাসা সেখান থেকেই।

১৯৭১ এ বাংলাদেশ হয়ে গেলে জামায়াতে ইসলামি আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায়। ১৯৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর কিভাবে ইসলাম পন্থীরা কাজ করবে তার একটা রূপরেখা তৈরি হয়। এড সাদ, মাওলানা আব্দুর রহীম, খতীবে আ’যম সিদ্দিক আহমাদ, মাওলানা আতাউর রহমান সহ অনেক আলিম উলামা ও ইসলামি চিন্তাবিদদের উদ্যোগে আইডিএল বা ইসলামিক ডেমক্রেটিক লীগ নামে সব ইসলাম পন্থীদের একটা জামায়াত কায়েম হয়। জিয়াউর রহমানের আমলে প্রথম ভোটে আইডিএল ৬টা আসন পেয়ে সংসদীয় দল হিসাবে স্বীকৃতি পায় এবং ইসলামি আন্দোলন এক নতুন দিক রচনার দিকে মোড় নেয়।

বহুদলীয় গণতন্ত্রের এই মহাসুযোগে ইসলামি আন্দোলন যে স্বাদ পাচ্ছিলো, তার কবর রচনা হয় ঐ সময় থেকেই। মাওলানা ইউসুফ সাহেবের ভাষায়ঃ “এই সময় জামায়াতের কর্মীদের সামনে দুইটা বিষয় খুব খারাপ বিবেচনা হলো। একঃ রাজনীতির ময়দানে জামায়াতের লোকদেরই পদচারণা ছিলো বেশী। এরাই বড় বড় সভা সমাবেশ বা প্রোগ্রাম চালানোর কাজ করতো। টাকা খরচ করে মঞ্চ মাইক ঠিক করতো। প্রচার প্রসার ঘটিয়ে মানুষ জড়ো করতো। আর অন্যান্য দলের মাওলানা ও রাজনীতিকরা ওখানে যেয়ে শুধু মঞ্চ কাঁপিয়ে বক্তৃতা করেই চলে যেতো। আমাদের কষ্ট হবে, আর তারা সুযোগ নেবে, এটা কি ঠিক?

দুইঃ জামায়াতের নেতা কর্মীরা দেখলো এই ধরণের রাজনৈতিক মঞ্চ করে মাওলানা মাওদূদির যে চিন্তা চেতনার আলোকে দল চলার কথা ছিলো তা আর হচ্ছে না। কর্মী গঠন, ব্যক্তি গঠন ও নেতৃত্বের যে নিয়ম মাওলানা মাওদূদি শিখাতে চাচ্ছেন, তা থেকে দলের লোকেরা দূরে সরে এই সব মাওলানা সাহেবদের দেখানো অবৈজ্ঞানিক পথে ইসলামি আন্দোলন করতে যাচ্ছে। এই পথে কখনো দ্বীন কায়েমে সফলতা আসবেনা। যেহেতু সুযোগ তৈরি হয়েছে। কাজেই জামায়াতের নামেই আন্দোলনের কাজ আবার করতে হবে”। অধ্যাপক গোলাম আযম (র) ও এই রকম তথ্যই দিয়ে গেছেন জীবনে যা দেখলামে।

এই বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হলো। মাওলানা আব্দুর রহীম, এড সাদ সহ অন্যান্য আলিম উলামারা দেখেলেন একটা ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে। ইসলামের কাজ করতে যেয়ে ‘জামায়াতে ইসলামি’ নামেই কাজ করতে হবে এটা জরুরি নয়। যে নামেই হোক ইসলামের কাজ করলেই হলো। তাছাড়া আলিম উলামাদের যে বিরল ঐক্য তৈরি হয়েছে, তা আবার ভেংগে গেলে আল্লাহর কাছে জবাব দেয়া যাবেনা। তৈরি হলো জামায়াতের মধ্যে দুইটা মোর্চা। মাওলানা আব্দুর রহীম ও প্রখ্যাত উলামাদের নিয়ে একটা গ্রুপ। এড সাদ ছিলেন এদের খুব বলিষ্ঠ এক কণ্ঠস্বর। আরেকদিকে ছিলেন অধ্যাপক গোলাম আযম সহ আধুনিক শিক্ষিতদের বিশাল গ্রুপ। শেষে শুরার বৈঠকে ভোট হলো বিষয়টা নিয়ে। যেহেতু গণতন্ত্রের বিবেচনায় গোলাম আযম সাহেবগন ছিলেন সংখ্যা গরিষ্ঠ। কাজেই তাদের চিন্তা ‘জামায়াতের নামে রাজনীতি’ জয়যুক্ত হলো, জয়যুক্ত হলো, জয়যুক্ত হলো। আর আইডিএল নামক ঐক্যের চারা গাছটা পানি হীন, বায়ুহীন, জড় হীন, কায়া হীন, পাতাহীন, অবশেষে দাঁড়ানোর মত শক্তিহীনতার কারণে সড় সড় সড় সড় এবং পরিণতিতে ধপাস করে পড়ে গেলো। চারিদিকে মানুষ রাজাকারদের আরেক পতন বলে ‘হর্ষধ্বনি’ তুললো। জামায়াতের কাজ চললো জামায়াতের গতিতে। উনারা সাবাই সরে পড়লেন, ছিটকে পড়লেন এবং ইনেক্টিভ হয়ে গেলেন চিরতরে। গোলাম আযম সাহেবের (র) কাছে একবার জিজ্ঞেস করেছিলামঃ “উস্তায মাওলানা আব্দুর রহীম সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি”? তিনি বলেছিলেনঃ “তিনি ছিলেন উত্তাল সমুদ্রে পাহাড় ভাঙ্গা ঢেওয়ের মত। সমুদ্রে থাকতেই তিনি ঢেও তুলতেন। এখন একটা পুকুরে যেয়ে পড়েছেন। তার থেকে মৃদু তরংগই ওঠে এখন”।

এড সাদ সাহেব বলেছেনঃ আলিম উলামাদের দৃষ্টিভংগীটাই ভালোছিলো। তখন যদি আমাদের ঐক্যটা ধরে রাখতে পারতাম তাহলে আমাদের ৬টা আসনের সাথে সাথে জনগনের সম্পৃক্ততা আমাদের সাথেই বাড়তো। এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে যে কালো তকমা আমাদের কপালে লাগায়ে দেয়া হত, তা থেকে রাজনৈতিক ভাবে মুক্তি পাওয়া যেতো। কিন্তু হলো কৈ। সামান্য দেখা ও আলাপ চারিতায় এড সাদ আইডিয়াল ভেংগে দেয়ায় যে ভয়টা করেছিলেন, তা তিনি দেখেই ইন্তেকাল করেছেন। তিনি আবার জামায়াতে ফিরে এসেছিলেন, তবে কাজ তিনি আর করতে পারেন নি। তার নিরবে চলে যাওয়ায় রুগ্ন হৃদয়ের একটা যায়গায় ব্যাথা পাচ্ছি। কত গভীর রাত এখন, ঘুমাতে পারছিনা তার চেহারাটা মনে পড়ায়। আল্লাহ তুমি এই ভালো মানুষটাকে আদর করে জান্নাতের উন্নত ইল্লিয়্যীনে থাকার ব্যবস্থা করে দাও। মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা আব্দুর রাহীম, খতীবে আযম, মাওলানা আতাউর রহমান ও অধ্যাপক গোলাম আযম রাহিমাহুমুল্লাহ গনের সাথে তাকে একত্রে হাস্যোজ্জ্বল করে রাখো। তার পরিবারের সদস্যদের উপর তোমার রহমাত অবারিত করে দাও। আমীন।

বিষয়: বিবিধ

২২৬১ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

302722
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:১৫
শেখের পোলা লিখেছেন : আমিন৷ আল্লাহই অন্ভরের কথা জানেন৷
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:২৯
244929
সালাম আজাদী লিখেছেন : জী,,,,,,
302730
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:৩৪
হককথা লিখেছেন : নিভৃতচারী বিদগ্ধ এ মহান মানুষটির ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে এককভাবে কয়েকটা ঘন্টা কাটানোর সৌভাগ্য হয়েছিল। মন্ত্রমুগ্ধের মত তাঁর কথা শুনেছি আর ভেবেছি, কত বড় বড় পন্ডিতই না আমাদের অগোচরে নিভৃতে গোপনে রয়ে যান! আমরা কজনই বা তাঁদের খবর রাখি? আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে রাখুন আর তাঁর পরিবারবর্গকে এই শোক কাটিয়ে ওঠার তওফিক দিন। আমিন
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৩১
244930
সালাম আজাদী লিখেছেন : আসলে খুব স্বপ্ন ছিলো উনার সাথে একটু সময় কাটাবো। কিন্তু উনাকে মানুষ সময় খুব কম দিয়েছে। কষ্ট লাগছে তার মত একজন মানুষ চলে যাওয়ায়। ভাইজান, আপনি তার উপরে একটু লিখলে আনন্দিত হতুম।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৫৫
244969
হককথা লিখেছেন : ভাইজান, ফিরোজ ভাই এর সাথে কথা বলছিলাম। সবচেয়ে ভালো হয়, একটা লেখা তাঁর পক্ষ হতে আসলে। আমি আশা করি ফিরোজ ভাই নিশ্চয়ই কলম ধরবেন। আর আপনি যেখানে লিখেছেন, সেখানে আমি?
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:০০
245059
সালাম আজাদী লিখেছেন : ভাই, আপনাকে আমি যে কত শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি তা যদি জানতেন!!! ফিরোজ ভাইএর ফোন নাম্বারটা দেবেন? আমি জানতাম না উনি এডভোকেট সাহেবের জামাতা, তারাচাঁদ ভায়ের মাধ্যমে জানলাম
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:০৭
245097
হককথা লিখেছেন : আকরামাকাল্লাহ কামা আক্বরামতানি ইয়া আখি আল ক্বারিম। ড: ফিরোজ ভাই এর নম্বর এস এম এস করে দিয়েছি আপনার নম্বরে।
302731
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:৩৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
এডভোকেট সাদ আহমদ এর আত্মজৈবনিক রচনা টি অনেক শিক্ষনিয়।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫০
244935
সালাম আজাদী লিখেছেন : হাঁ, জাযাকাল্লাহু খায়রান, রিদওয়ান ভাই।
302736
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৪২
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : সুন্দর বিশ্লেষণ। খুব ভাল লাগলো। আল্লাহ পাক উনাকে জান্নাতে মেহমান বানিয়ে দিন। আমীন।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫০
244936
সালাম আজাদী লিখেছেন : আমীন
302759
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:০০
সুমাইয়া হাবীবা লিখেছেন : নতুন কিছু জানলাম। প্রতিটি পদক্ষেপেই মানুষের জন্য থাকে নিদর্শন। তবে সবার জন্য নয় যারা জিজ্ঞাসু, অনুসন্ধিৎসু ও বুদ্ধিমান তাদের জন্যই। আল্লাহ তাওফিক দিন। আমীন। আর মাওলানা সাহেবের জন্য মাগফিরাতের কামনা করছি।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫০
244937
সালাম আজাদী লিখেছেন : জাযাকিল্লাহু খায়রান
302767
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২৯
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : সুমাইয়া হাবীবা লিখেছেন : নতুন কিছু জানলাম। প্রতিটি পদক্ষেপেই মানুষের জন্য থাকে নিদর্শন। তবে সবার জন্য নয় যারা জিজ্ঞাসু, অনুসন্ধিৎসু ও বুদ্ধিমান তাদের জন্যই। আল্লাহ তাওফিক দিন। আমীন। আর মাওলানা সাহেবের জন্য মাগফিরাতের কামনা করছি।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫১
244939
সালাম আজাদী লিখেছেন : আমীন। জাযাকাল্লাহু খায়রান
302770
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৩৭
মোতাহারুল ইসলাম লিখেছেন : অনেক কিছু জানলাম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫১
244940
সালাম আজাদী লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খায়রান
302783
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:২১
তারাচাঁদ লিখেছেন : আব্দুস সালাম আজাদী ভাই, আপনার লেখা পড়ে আমাদের প্রায়-অজানা ইসলামী ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে ভাল ধারণা পাওয়া যায় । আমরা যারা নতুন প্রজন্মের মানুষ, তারা এক বা দুই প্রজন্ম আগের ইসলামপন্থীদের সম্বন্ধে কমই জানি । তার চেয়েও কম জানি তাদের ত্যাগ ও কুরবানির ইতিহাস । পূর্রসুরীদের ত্যাগ, কুরবানী এবং কর্মকৌশল আমাদের নতুনদের জন্য প্রেরণা হয়ে থাকতে পারে । আমাদের কাছে শহীদ আবদুল মালেক অনেক বেশী স্মরণীয়; কারণ তিনি তার নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়ে গেছেন । কিন্তু অধ্যাপক গোলাম আযম, আবুল কালাম মুহাম্মাদ ইউসুফ, শামসুর রাহমান, সাদ আহমদরা যা দিয়ে গেছেন, তা শহীদ আবদুল মালেকের চেয়ে কম কিসে ? আবদুল মালেক শহীদ হননি, তাকে শহীদ করা হয়েছে । আর গোলাম আযম, আবুল কালাম মুহাম্মাদ ইউসুফ, শামসুর রাহমান, সাদ আহমদরা সারা জীবন শুধু সত্যের সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন । এঁদেরকে শহীদ করা না-হলেও এঁরা সারা জীবনই শহীদি ময়দানে থেকে তিলে তিলে জীবনকে ক্ষয় করে গেছেন ।

মরহুম সাদ আহমদ সাহেব ১৯৪৭ সালে ভারতের আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেন । ১৯৪৯ সালে থেকে এমএ (অর্থনীতি) প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় এবং একই বছর এলএলবিতে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। একই বছর পরীক্ষা দিয়ে অর্থনীতিতে এমএ এবং এলএলবি, উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণী পাওয়ার মত মত মানুষ নিঃসন্দেহে খুবই বিরল । তিনি ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫০ থেকে ’৫২ সাল পর্যন্ত জগন্নাথ কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

সাদ আহমদ সাহেব বেশ কিছু বই লিখেছেন । এর মধ্যে-- # হজরত মোহাম্মদ সা:-এর দাওয়াত ও আজকের মুসলমান, # ইসলামের অর্থনীতি, # সূরা আল আসরের আলোকে আমাদের সমাজ, # আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহানবী সা:, # আমার দেখা সমাজ ও রাজনীতির তিন কাল, # ইসলামে মসজিদের ভূমিকা, # আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মোহাম্মদ সা:, # কোরবানীর শিক্ষা, # দারিদ্র্য বিমোচনে জাকাতের ভূমিকা ।

এডভোকেট সাদ আহমদের মেয়ের জামাই ফিরোজ মাহবুব কামাল সাহেবও একজন ভাল লেখক । মুসলমান এবং বাঙ্গালী মুসলমানদের অবিমৃশ্যকারিতা নিয়ে ফিরোজ মাহবুব কামাল নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন ।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫৩
244941
সালাম আজাদী লিখেছেন : ভাইজান, আমি কোন কিছু লিখলেই আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকি। অনে কম্প্লিমেন্টরী। আমি জানতেও পারি তা থেকে অনেক কিছু। জাযাকাল্লাহু খায়রান
302785
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:২৩
তারাচাঁদ লিখেছেন : "আইডিএল নামক ঐক্যের চারা গাছটা পানি হীন, বায়ুহীন, জড় হীন, কায়া হীন, পাতাহীন, অবশেষে দাঁড়ানোর মত শক্তিহীনতার কারণে সড় সড় সড় সড় এবং পরিণতিতে ধপাস করে পড়ে গেলো। চারিদিকে মানুষ রাজাকারদের আরেক পতন বলে ‘হর্ষধ্বনি’ তুলল । উনারা সাবাই সরে পড়লেন, ছিটকে পড়লেন এবং ইনেক্টিভ হয়ে গেলেন চিরতরে .............।
গোলাম আযম সাহেবের (র) কাছে একবার জিজ্ঞেস করেছিলামঃ “উস্তায মাওলানা আব্দুর রহীম সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি”? তিনি বলেছিলেনঃ “তিনি ছিলেন উত্তাল সমুদ্রে পাহাড় ভাঙ্গা ঢেওয়ের মত। সমুদ্রে থাকতেই তিনি ঢেও তুলতেন। এখন একটা পুকুরে যেয়ে পড়েছেন। তার থেকে মৃদু তরংগই ওঠে এখন”।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫৩
244942
সালাম আজাদী লিখেছেন : হুমম
১০
302793
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:৫০
ইয়াফি লিখেছেন : আইডিএল বা ইসলামিক ডেমক্রেটিক লীগ নামে সব ইসলাম পন্থীদের ঐক্যটা হয়তো রাজনৈতিক ময়দানের ঐক্য ছিল। আপন সংগঠন বিলীন করে কোন ঐক্য হতে পারেনা। তাহলে কর্মী গঠন, ব্যক্তি গঠন কিভাবে হবে? বাংলাদেশের বহু ইসলামী সংগঠনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তাদের হাবভাব দেখে মনে হয় অন্যরা করছে আমাদেরও করা দরকার এ গোছের। নিজেদের মধ্যে ঐক্য, আনুগত্য, দৃঢ়তা ধরে রাখতে পারেনা।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫৫
244944
সালাম আজাদী লিখেছেন : এক দম হুবহু জামায়াতের ভাষায় বলেছেন। এইটাই কারণ ছিলো। জাযাকাল্লাহু খায়রান
১১
302832
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:০৭
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিঊন। আল্লাহুম্মা আজিরনা ফী মুসীবাতিনা, ওয়াখলুফ লানা খায়রান মিনহা।

কয়েকবার তাঁর সান্নিধ্য ও খেদমতের সুযোগ পেয়েছিলাম-
খুব অল্পসময়ে মনের ভেতর ঢুকে পড়ার অনন্য যোগ্যতা ছিল তাঁর! বেশ রসিকতাপূর্ণ কথাও বলতেন!

তাঁর নিরবে চলে যাওয়ায় রুগ্ন হৃদয়ের একটা যায়গায় ব্যাথা পাচ্ছি। কত গভীর রাত এখন, ঘুমাতে পারছিনা তার চেহারাটা মনে পড়ায়। আল্লাহ তুমি এই ভালো মানুষটাকে আদর করে জান্নাতের উন্নত ইল্লিয়্যীনে থাকার ব্যবস্থা করে দাও। মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা আব্দুর রাহীম, খতীবে আযম, মাওলানা আতাউর রহমান ও অধ্যাপক গোলাম আযম রাহিমাহুমুল্লাহ গনের সাথে তাকে একত্রে হাস্যোজ্জ্বল করে রাখো। তার পরিবারের সদস্যদের উপর তোমার রহমাত অবারিত করে দাও। আমীন।

০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫৬
244946
সালাম আজাদী লিখেছেন : জাযাকাল্লাহু খায়রান
১২
302833
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:১২
আবু সাইফ লিখেছেন : প্রিয় মডারেটর,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

কত রকমের কত পোস্টই তো স্টিকি হয়...

মেহেরবানী করে এ পোস্টখানা স্টিকি করার জন্য বিনীত আবেদন করছি

অগ্রীম ধন্যবাদ.. জাযাকুমুল্লাহ
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৫৭
244947
সালাম আজাদী লিখেছেন : ভাইজান, আমি চাচ্ছিনা এটা স্টীকি হোক। বর্তমান প্রেক্ষিতে এই কথা গুলো মানান সই হচ্ছেনা।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:১৬
244965
আবু সাইফ লিখেছেন : আপনার ইচ্ছাই শিরোধার্য

কত বেমানান বিষয়ের সাথেই তো মানিয়ে নিতে হচ্ছে অহরহ!

পোস্টখানা স্টিকি হলে হয়তো কিছু অনুসন্ধানী মনের চিন্তার দিগন্ত প্রসারিত হতো!

১৩
302887
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:১৫
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : মুহতারাম, ওলামায় দেওবন্দীদের একটি বড় অভিযোগ হল গণতন্ত্র এর প্রতিষ্ঠাতা প্লেটো, পরিমার্জনকারী আব্রাহাম লিঙ্কন, যার সাথে ইসলামী খেলাফতের রুপটা মিলেনা, তাই গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী আন্দলন পরিচালনা করা বৈধ হয় না। আর মাওলানা আব্দুর রহিম (যার মাধ্যমেই আমরা বাংলা ভাষাভাষিরা মাওলানা মৌদুদীর ইলমকে জেনেছি)বা আইডিএল এর নেতারাও গণতন্ত্র বিরোধী ছিলেন, মাওলানা মৌদুদীও নাকি গণতন্ত্র বিরোধী ছিলেন, তবে জামায়তে ইসলাম গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলাম কায়েমের স্বপ্ন দেখে কেন, ওলামায় দেওবন্দীদের এ অভিযোগের ব্যাপারে আপনার কাছ থেকে কিছু জানতে চাচ্ছি !মাআসসালাম !
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:১৬
245022
সালাম আজাদী লিখেছেন : ভাই, কোন উলামায়ে দেওবন্দী গণতন্ত্রের বিরোধী ফতোয়া দিয়েছেন আমার জানা নেই। জমিয়তে উলমায়ে হিন্দ সব সময় কংগ্রেসের সাথে থাকে, গণতন্ত্রের সাথেই থাকে। কোন লিখিত ফতোয়া থাকলে আমাকে পাঠালে খুশি হব।
আইডিএল গণতন্ত্র বিরোধী ছিলেন এই তথ্যটা এই মাত্র মাধ্যমে জানলাম। আমার জানা নাই।
মাওলানা আব্দুর রহীম সাহেব শেষ জীবনে গণতন্ত্রের বিরোধিতা করে গেছেন, এবং বলেছেন বিপ্লবের পথে ছাড়া ইসলাম কায়েম হবেনা। সেটা এখন স্টাডী করার সময় এসেছে। কিন্তু সব ইসলামি আন্দোলন এখন গণতন্ত্রের ভেতরে হাবুডুবু করছেন।
কি করব আমরা? সিদ্ধান্তের সময় এসেছে।
১৪
302922
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৩৩
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : অনেক দিন পর ব্লগে আসলাম। আমার পিতা অনেক আগে বলেছিলেন - স্যার সম্পর্কে। আমার তখন তা বুঝার সময় ছিল না।
পরে অবশ্য অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের জীবনে যা দেখলাম তা পড়ে বেশ কিছু বিষয় খটকা লেগেছে। একটি বিষয় আজ পরিস্কার হলাম। আমার জন্ম দাতা পিতার কথাই ঠিক ছিল।
আপনার সাথে একমত। আমি মনে করি এই লেখাগুলো আরো ব্যাপক আকারে লেখা প্রয়োজন। বর্তমান সময়কে যারা মনে করেন ঠিক নয় - তারা সঠিক নয়। বরং বর্তমান সময়ই উত্তম সময়। গ্রহন বর্জন করার একটা বাঁক তৈরী হয়েছে। আশা করবো আপনি এবং ফিরোজ কামাল ভাই আরো লিখবেন।
আপনাকে মোবারকবাদ।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:১৯
245023
সালাম আজাদী লিখেছেন : ইসলামি আন্দোলন রূপ বদলায়, নাম বদলায়, তবে মৌলিক বিষয়ে আপস করেনা। এটা প্রফেসর গোলাম আযমগণ সে সময় বুঝেন নি, এখন সবাই বুঝেছেন।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৪
245038
আবু সাইফ লিখেছেন : @সালাম আজাদী : মুহতারাম, আপনার এ মন্তব্যের সাথে শত-সহস্রবার একমত

কিন্তু কোন কিছুরই সবটা সবার বুঝে আসেনা যতক্ষণ বাস্তবে সে বুঝের অবস্থা প্রকাশ পায়!

আর অকপট অভিমত তো সেটাই- যা নিজের বুঝমত দেয়া হয়! এতে ভুল থাকলেও অসততা থাকেনা!
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:৪৯
245052
সালাম আজাদী লিখেছেন : আর এই জন্যই ইসলামি স্কলার রা ভুল করলেও সাওয়াব পাবে। ভুলে ১ সাওয়াব, নির্ভুল সিদ্ধান্তে ২ সাওয়াব
১৫
304347
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৩৭
আকবার১ লিখেছেন : সালাম আজাদী ভাই,বাংলাদেশের প্রথম আমীরের জামাত কে ছিল?খুব জানতে ইচ্ছা করচ্ছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File