জামায়াতের রক্তের উপর খালেদা ও তারেক জিয়ার চেয়ার, এবং জয়ের তীব্র ভ্রুকুটি
লিখেছেন লিখেছেন সালাম আজাদী ২৩ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৪:২১:২০ রাত
আমার একজন বন্ধু আছেন। রাজনীতি করেন না। তবে তার ভাষায় ‘রাজনীতি হ্যান্ডেল’ করেন তিনি। আমাকে সেদিন বললেনঃ সালাম, জামায়াতে ইসলামির রক্ত এত সস্তা হয়ে গেলো কেন?
‘তোমার ফিলোসফি বুঝলাম না’- বললাম আমি। উনি আমার বোকামি কে একটু রসিকতা করেন বৈকি! বললেন, ‘এদের কে বিএনপির লোকেরা যেভাবে মেরেছে, আওয়ামি লীগের লোকেরা যেভাবে মারে, আর এখন যৌথ বাহিনি যেভাবে কচু কাটা করছে, ইতিহাসে তার উদাহরণ আছে’?
গর্ব করছি না, তবে জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় আমি তার চেয়ে কম হলেও, ইতিহাস নলেজ সামান্য কিছু আছে আমার। আমি তখন হাজ্জাজের হাতে শহীদ হওয়া এক লাখ বিশ হাজার শহীদের মরদেহ চোখের সামনে আনলাম। ইয়াযিদের বাহিনির হাতে শহীদ হওয়া হুসায়ন (রা) এর দেহ শুন্য মাথাটা কারবালা থেকে নিয়ে দামেস্কের লাল প্রাসাদে কিভাবে নিয়ে যাওয়া হলো তার ছায়া ছাবি চোখের আঙিনায় নিয়ে এলাম। খলিফা মানসূরের হাতে মার খাওয়া ইমাম মালেকের ভাংগা হাত উঁচু করে ধরলাম। ঐ এক ই খলিফার হাতে মার খেয়ে এবং বিষ খেয়ে কালো হয়ে যাওয়া ইমাম আবু হানিফার বেহেশতি মুখ আলগা করে দিলাম। খলিফা মামুন, মু’তাসিম এবং ওয়াসিক্ব তিন তিন জন খলিফার হাতে মার খাওয়া ইমাম আহমাদের ফ্যাকাশে চেহারাটা দেখানোর চেষ্টা করলাম। গোয়ালিওর দূর্গে আটকে রাখা মুজাদ্দিদ আলফে সানী, আর আন্দামান দ্বীপে বন্দীশালা গুলোতে ভারতের শ্রেষ্ঠ আলিমদের হাড় গোড় গুলো আঙুলের ফাঁক দিয়ে মেলে ধরলাম।
আমার বন্ধু অবদমিত হলেন। আমার বর্ণনার ধারাতে তিনি কাঁদ কাঁদ হলেন। নিজকে একটু শামলে নিয়ে বললেনঃ ঠিক বলেছো রে। ভালো মুসলিম দের তো এই ভাবেই অত্যাচারিরা মেরে ফেলেছে। তবে জামায়াতের জন্য কষ্ট হলোঃ রক্ত তারাই দেয়, আর রক্তের মজা ভোগ করে একবার আওয়ামিলীগ, আরেকবার বিএনপি। দেখ, বিএনপি কত সহজে রাজনীতি করছে! রক্ত দেবে জামায়াত, রাজপথে থাকবে জামায়াত, ফাঁসি তে ঝুলবে জামায়াতের লীডাররা। আর এখনো বাংলাদেশের সিংহ ভাগ ভোট পাবে বি এন পি। নির্বাচন হলে তো তারাই আসবে ক্ষমতায়। আমি তো দেখছি জামায়াতের রক্তে সারা দেশ ভেজা, আর লাল ঐ রক্ত-সমুদ্রের উপরে স্বর্ণের সিংহাসনে বসে আছেন খালেদা জিয়া। পাশে টেবিলে পা দিয়ে বসে আছেন তার ছেলে ও উপদেষ্টা তারেক। ঐদিকে কোন একজন মহিলা প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। তাকে বিমান বন্দরে রিসিভ করতে এসেছে বাংলার ‘জয়’। মুখে তার উপদেষ্টার মাস্ক, চোখে তার তীব্র ভ্রুকুটি।
আমার বন্ধুর দার্শনিক কথা বার্তায় আমি আবার ঘোলে পড়ে গেলাম। তেমন কিছু বুঝলাম না। তবে বললাম, হযরত, ইসলামের ইতিহাস এমনি। জামায়াত কাজ করছে ইসলাম কে বাঁচিয়ে রাখতে, তাকে শক্তি দিতে এবং শক্তির কেন্দ্রে তাকে এনে দিতে। রক্ত যাচ্ছে। তবে এই রক্ত বৃথা যায়না। আমাদের নবী (সা) অহুদের পরিণতির পর শুনলেন আবু সুফিয়ান হুংকার দিয়ে বলছেঃ মুহাম্মাদ, (সা) তুমি কি বেঁচে আছো? বেঁচে থাকলে শোন তাহলে, আজকে আমি বদরের যুদ্ধে আমাদের সত্তর জন নিহতের বদলা নিলাম। জয় হুবল! জয় হুবল!! আমাদের নবী (সা) উমার (রা) কে বলতে বললেনঃ উমার, চিৎকার দিয়ে শুনিয়ে দাও, আবু সুফিয়ান, তোমাদের মৃতরা জাহান্নামে গেছে, আর আমাদের মৃতরা জান্নাতের বাগীচায়। আর আল্লাহ হলেন আ’লা ওয়া আজাল্ল। সবচেয়ে উঁচুতে সবচেয়ে মহান।
বিষয়: বিবিধ
৬৫৬৩ বার পঠিত, ৪৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গুরুত্বপূর্ণ লিখাটির জন্য বারাকাল্লাহু ফিক।
বৈষয়িক স্বার্থচিন্তায় মশগুল ব্যক্তিদের কাছে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠায় জান-মাল কোরবানকারীদের কর্মকান্ড বেহিসেবীই মনে হবে!
'মরলে শহিদ বাচলে গাজী' এই বানীর মর্ম ওরা উপলব্ধি করবে কি ভাবে.......???
খুব সর্তকভাবে হাটতে হবে। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি দুটোই বাতেলী দল। এদের বিশ্বাস করতে
নেই। এত তাড়াতাড়ি রক্ত ঝরানো ঠিক না।
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
ইসলামের সেই দিন বেশি দুরে নয়- যে দিন জাপান থেকে আমেরিকা সব কাফের করজোড়ে আল্লার মুমিনকে জিজিয়া প্রদান করবেন। মোহাম্মদের কার্টুন আঁকলে কল্লা উড়ে যাবে। বোরকার অন্ধকারে চাপা পরে যাবে দুনিয়ার আম নারীকুল। কি বলেন??
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : আপনার খুশিতে আমিও খুশি।আল্লাহ আমাদেরকে হেকমতে আমলের উপর অটুট রাখুন, আমীন।
এটাই সব চেয়ে বড় প্রাপ্তি, সবচেয়ে বড় সান্তনা।
আল্লাহতায়লা আমাদের কবুল করুন। রক্তের মুল্য আল্লাহই দিবেন।
এ সবতো বুঝি, কিন্তু মনে কষ্ট লাগে তো..
জাযাকাল্লাহ
আর যারা জামাআতের সাথে সমপৃক্ত, এবং একে খালেস ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন মনে করেন, তাদের কাছেও প্রতিটি মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক, তবে সে মরণ শহীদি মরণ হিসাবে সান্ত্বনাদায়ক ।
জামাআতের দুটি বড় ভুল আছে,
এক, জামাআত কি চায়, কেন চায়, কিভাবে চায় -- এবং এ যে একটি শুদ্ধ জনকল্যাণকর ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-- তা জনগণকে বুঝাতে না পারা ।
দুই, কখনও কখনও অপ্রয়োজনীয় অথচ অতিমাত্রায় রাজনীতি সম্পৃক্ততা ।
বিরাট বড় মিছিল এবং সমাবেশ যে কত বড় আত্মঘাতী তা অনেক তরুণ নেতারা বুঝতে চান না ।
১৯৮১ সালে শিবিরের কর্মী সম্মেলনের পর শিবিরের যে ক্ষতিটা হয়েছিল, তা পুরন করতে দুই দশক লেগেছিল ।
আবার ২০১০ সালে চীন- বাংলাদেশ মৈত্রী কেন্দ্রে ঢাক ঢোল পিটিয়ে বিশাল সদস্য সম্মেলন করার পর যে ক্ষতিটা হয়েছে, তা পুরণ করতে অনেক বছর লেগে যাবে ।
কাজ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হয়, তা হলে ঢাক ঢোল পিটানোটা ইখলাস বিরোধী কাজ ।
আবদুস সালাম ভাই, আপনার বন্ধু যে বেদনা এবং শঙ্কা অনুভব করেছেন, তা অবশ্যই সত্য ।
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের রক্ত ভেজানো সিঁড়ি বেয়ে হয়ত তারেক রহমানরা আবার ক্ষমতায় আসবে । পয়সা খেয়ে অথবা আহাম্মকি করে আবার হয়ত মইন উ আহমদদের সেনাপ্রধান বানাবে, সেই মইন উ আহমদরা মুশরিকদের সাথে হাত মিলিয়ে সমঝোতার নির্বাচন করে সেক্যুলারদের আবার ক্ষমতায় বসাবে । আর রক্ত দিয়ে এর ঋণ শোধ করবে আবদুল কাদের মোল্লা, নোমানির মত হাজারো তাজা প্রাণ ।
যত ষড়যন্ত্র হোক না কেন, এর মধ্যে বার বার বাঁধ দিতে পারবে খালেস এবং পুরণাঙ্গ ইসলামের দাওয়াত, প্রশিক্ষণ এবং জানবাজ একদল মুজাহিদ । তখন তাদের মৃত্যু আসবে জান্নাতের খোশ-খবরী নিয়ে ।
আল-কুরান (৬ঃ ১৬২)
দেশ স্বাধীনের পর তারা বহাল তবিয়তেই চলছে । একটি বারের জন্যও তারা ক্ষমা চায় নি তাদের কৃত কর্মের জন্য , উপরন্তু দম্ভ করেছে ।
যাদেরকে তারা মেরেছে এবং মারিয়েছে তারা কি পরকালে আল্লাহর কাছে এর বিচার চাইবে না বা তাদের ওয়ারিশরা ? কিভাবে এতটা নিশ্চিত হলেন যে জামায়াতের ৭১ এর কাজ আল্লাহর কাছে ভাল বলে স্বীকৃত হবে নিরীহ মুসলমান মারার পরেও ?
বান্দার হক বান্দা ক্ষমা না করলে সেটা আল্লাহও ক্ষমা করেন না সেটা কি জামায়াত নেতারদের বন্দনা গাওয়ার সময় মনে থাকে না ?
দুনিয়াতে শাস্তি হোক না হোক আখেরাতে উনারা এসব নিরীহ মুসলমান হত্যার জন্য এত সহজে পার পাবেন না - কারণ একজন নিরীহ মানুষকে মারলে পুরো মানব জাতিকে মারার সামিল।
১। র এর এজেন্ট ৬৯ এর ষঢ়যন্ত্রকারীদের সাথে হাত মেলাতে?
২। ইন্দিরা গান্ধীর ইচ্ছানুযায়ী পাকিস্থানকে দ্বিখন্ডিত করার কাজে সমর্থন দিতে পারে?
ইসলামের আলোকে চিন্তা করলে কি এটা অনেক বেশী গ্রহনযোগ্য নয় যে - যা ইসলাম বিরোধী সেক্যুলার রা চাইছে, যা কিছু মুশরিক রা চাইছে তার বিরুদ্ধে আপনি মুসলিমদের পক্ষে থাকবেন?
-----------------
ব্যাক্তিগতভাবে আমি স্যেকুলার সেন্স হতে চিন্তা করলে লিখকের বন্ধুর সাথে পুরোপুরি সহমত পোষন করি এবং বলতে চাই জামায়াতে ইসলামের নেতৃত্বের দায় ও দায়িত্ব আছে জামায়াতে ইসলামের কর্মীবাহিনীর রক্তের বিনিময় নিশ্চিত করা অথবা অন্যভাবে বললে এ রক্তের উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা।
আর ইসলামের সীমাবদ্ধ আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর আলোকে বলতে ইচ্ছা করছে - পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে, জ্ঞান ও বিজ্ঞানের অগ্রগতি সহ ইসলামের (কোরান ও সুন্নাহ র) বর্তমান রিসার্চ সমূহ ও সময়কালকে বিচার বিবেচনা করে - জামায়াতে ইসলামের লিডারশিপ ও থিন্ক ট্যাংকের উচিত - যথাযথ পলিসি ফরমুলেশান করা। আমি চাই জামায়াতে ইসলামী সামহাউ ইসলামকে অগ্রাধিকার দেয়, ইসলাম মনস্ক মানুষকে অগ্রাধিকার দেয় - আর তারপর দুনিয়াবী বিষয়াদি গণতন্ত্র, রাজনীতি, পুজির সংস্থান ইত্যাদিকে প্রাধান্য দিক। এমন যেন না হয় - দুনিয়াবী বিষয়াদি ইসলাম ও পরকালের উপর প্রাধান্য পাচ্ছে হেকমাহ বা অন্য কোন টার্মস এর নামে।
ওভারঅল লিখাটির জন্য, আলোচনা করার সুযোগ সৃষ্টির জন্য ও চমৎকার উপস্থাপনার জন্য লিখক কে ধন্যবাদ।
হৃদয়ের আকূতি শব্দের নিপুন গাঁথুনিতে লাভ করেছে অপরূপ পূর্ণতা। আল্লাহ আমাদের সকলকে শাহাদাতের মৃত্যুর মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মানিত হওয়ার তাওফীক দিন। আমীন।
চমতকার উপসংহার। মোবারকবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন