সাঈদী সাহেবের ফাঁসি অথবা ৯০ বছরের সাজা
লিখেছেন লিখেছেন সালাম আজাদী ১৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:১৮:৪৪ দুপুর
বিচারক, বিচারিক কার্যক্রম, প্রসিকিউটারদের ভাব-ভাষা ও সরকারের মতি গতি দেখে বুঝাই যাচ্ছে আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবের জন্য কি রায় অপেক্ষা করছে। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিতে যে সব সাক্ষের উপর ভর করতে হয় তার চেয়েও মারাত্মক সাক্ষী সাঈদী সাহেবের ক্ষেত্রে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইব্রাহিম কুট্টি বলেন আরা বিশাবলি বলেন, আদালতের কাছে অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত করার যে টুকু চৌহদ্দি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনের মাধ্যমে নির্ধারণ করেছে, টিপু সাহেব ও হায়দার আলীদের হাসি মাখা চেহারাই বলে দেয়, সরকার পক্ষ তা সম্পন্ন করতে পেরেছেন।
ঐদিকে গোলাম আযম সাহেবের ৯০ বছরের শাস্তি পেতে যেসব অপরাধ রাষ্ট্র পক্ষ প্রমানিত করেছে, সাঈদী সাহেবের ক্ষেত্রেও তা সমভাবে প্রযোজ্য। কাজেই সুপ্রিম কোর্ট এর যে কোনটাই গ্রহন করবে তা যেন খুব স্পষ্ট মনে হচ্ছে। তবে সুপ্রিম কোর্ট সাঈদী সাহেব কে বেকসুর খালাস দিলে তা শুধু চাঁদ দুই টুকরা হয়ে পড়ার মতই মুজিযা হিসাবে গন্য হবে হয়ত।
আসলে বাংলাদেশে ইসলামের খুব সংগীন সময় চলে এসেছে। আওয়ামিলীগের মত এত প্রাচীন মুসলিম রাজনৈতিক দল কেন জানি ‘প্যারানয়া’ তে ভোগে বুঝলাম না। ১৯৭১-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তারা জাসদ কে যে ভাবে ডরাতো, ২০০৬ থেকে আজ অবধি তারা জামাআত ইসলামিকে ঐভাবেই ভয় করে। জামাতের একজনকে দেখলেও আওয়ামি লীগ কেন জানি ভূত দেখার মত ভড়কে যায়। আর তাই জামাআতকে তা্রা শেষ করতেই একট্টা হয়েছে। এবং জামাআত কে শেষ করতে যেয়ে ইসলাম বিরোধী তকমা নিতেও আওয়ামিলীগের যেন যায় আসেনা। সাঈদী সাহেব কে শেষ করার পেছনে ঐ একটা কারণ ছাড়া আমি আর কিছুই খুঁজে পাচ্ছিনা।
সাঈদী সাহেব আগা গোড়াই একজন ওয়ায়েজ। সুন্দর বাচনিকে আধুনিক বিষয় আশয়ের দিক নির্দেশনা তার ওয়াজে থাকে বলে মানুষ তার খুব ভক্তি করতো। তার ওয়াজ শুনে প্রভাবিত হয়নি এমন কাওকেও পাওয়া যাবেনা। যারা ভালো মানুষ, তারা তার ওয়াজ শুনে আরো ভালো হওয়ার চেষ্টা করেছে। খারাপ মানুষেরা ভালো হওয়ার নিয়ত বেঁধেছে। আর অনেক অমুসলিম তার বক্তৃতা শুনে মুসলিম ও হয়েছে। যাদের সংখ্যা হাজারের ও বেশি আলহামদুলিল্লাহ। তবে তার আলোচনা শুনে আওয়ামি পরিমন্ডলে, সেক্যুলারদের মস্তিস্কে ও আবেগে, নাস্তিকদের মাথায় ও অন্তরে এবং ভারত-বান্ধবদের মননে ও চিন্তায় যেন আগুন লেগে যেতো। এ ক্ষেত্রে তার বক্তব্য এত ক্ষুরধার যে, তা সহ্য করাই কষ্ট হয়ে যেতো অদের। এই জন্য আমির হোসেন আমু কে যখন লন্ডনে একবার জিজ্ঞেস করা হয়, স্যার, সাঈদী সাহেব কে আপনি চেনেন। যুদ্ধাপরাধ তার দ্বারা আসলে হয়নি। তাকে রক্ষা করতে কিছু করা যায়না? তিনি বলেছিলেনঃ ........., কি বলবো, ওনার মুখের বাড়াবাড়ি টাই আজ উনার জন্য কাল। অত বড় বড় কথা না বল্লে হতনা? ছোট মানুষ, কিন্তু কথা বলতো যেন বিশ্বনেতা হয়ে বসেছেন?!!
তার মানে সাঈদী সাহেবের মুখের ইসলামি দিক নির্দেশনা আজ বাংলাদেশে তাকে মৃত্যুর মুখোমুখি করেছে। ওরা জানেনা যারা ইসলামের কথা বলে, ওরা কত উঁচু মানের মানুষ হয়ে থাকেন।
ইসলামের সামান্য কাজ করেও যারা ইন্তেকাল করেন আল্লাহ তাদের কে শাহাদাতের মর্যাদা দেন। কাজেই সাঈদী সাহেব শহীদ হলে, কিংবা হাজতের চার দেয়ালে বন্দী দশায় ইন্তেকাল করলেও আল্লাহর দরবারে তার মর্যদার ঘাটতি হবে না। কিন্তু তার জীবনটা কে যে ভাবে নাটকের মাধ্যমে শেষ করার চেষ্টা চালানো হয়েছে তা বাংলাদেশের জন্য তৈরী করে দেবে বিশাল একটা ক্ষত। যে ক্ষত একদিন আওয়ামি শরীরে ক্যান্সার ও এনে দিতে পারে। তাকে হত্যা করার জন্য বিচার ব্যবস্থা যে নযীর স্থাপন করলো, তা অন্ধকারের বড় বড় ভাগাড় হয়ে থাকবে আইন ও আদালতের ইতিহাসে।
ট্রাইবুনালের দেয়া সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে দেয়া ফাঁসির রায় শুনে প্রায় দুই শ’ ইসলাম পন্থী পুরুষ ও নারী তাদের জীবন দিয়েছে। আমি মনে করি এবারেও যদি ওই রায় বহাল রাখে, তাহলে এই ভাবে শত শত ভাই বোনেরা অকাতরে জীবন দিয়ে দেবে হয়ত। আমি অনুরোধ করবো জামাআত ও শিবির যেন রাস্তায় পুলিশ বাহিনীর গুলিতে আর জীবন না দেন। আমি জামাআত শিবিরের ভাই বোন দের বলবো, সবাই যদি শহীদ হন তাহলে সাঈদী সাহবের উপর চালানো জুলুমের প্রতিশোধ নেবে কে?
জাসদের বড় বড় নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ কিন্তু মেনন, মতিয়া, দিলিপ ও ইনুরা সুন্দর ভাবে নিয়েছে। যাদের কে শেখ মুজিব কচু কাটা করেছেন, তারাই এখন তার মেয়ের চারপাশে বসে দেশ চালাচ্ছে। আপনারা বেঁচে থাকুন এবং রক্ত শপথ গ্রহন করুন, যে বাংলায় সাঈদী সাহেবের উপর জুলুম চালানো হয় সেই বাংলায় আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করে সমস্ত জুলুমের প্রতিশোধ নেয়া হবে।
সাঈদী সাহেবকে যে কষ্ট দেয়া হয়েছে, তার পরিবারকে যেভাবে নিষ্ঠুর হাতে শেষ করার চেষ্টা হয়েছে, তার কিছুটা শহীদ সাইয়েদ কুতুবের পরিবার বা হাসান আল বান্নার পরিবারের সাথে তুলনা করা যায়। এখনও তাকে যেভাবে বন্দীখানায় রাখা হয়েছে তা তার শরীর ও স্বাস্থের জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়। সরকার আজ হয়ত বুঝতে পারছেনা, কিন্তু এক সময় হয়ত তার দীর্ঘশ্বাস গুলো সরকারের উঁচু পর্যায়ের লোকগুলোকে মরেও শান্তি দেবেনা।
বিষয়: বিবিধ
২৭২৪ বার পঠিত, ৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যা করার তরুন প্রজন্মই করবে ।
আষাঢ়ের তর্জন গর্জন সার
েখন তো দেখছেন সরকারি ধোলাই। আরো আসতেছে সামনে। টাকার বান্ডেল পেলে ফাঁাসি চাওয়া যায়
মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী
বাংলাদেশপন্থী এসব বুদ্ধিজীবিদের হায়দারাবাদের ইতিহাসের দিকে নজর দিতে অনুরোধ করবো। ভৌগলিক অবস্থানগত তুলনায় বাংলাদেশ হায়দাবাদের চেয়েও অতীত সেনসেটিভ ও ঝুকিপূর্ণ একটি অঞ্চল ভারতের ইউনিয়ন ঠিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে। হায়দারাবাদকে তিন টুকরো করে গিলে ফেলেছে ভারত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে হায়দারাবাদের মত করুণ পরিনতি ভোগ করতে হবে না তা নিশ্চত করে কেউ বলতে পারবে না। ১৯৯৫ সালে বঙ্গ কে ভঙ্গ করা হয়েছিল। আবার ১৯০৯ সালেই ততকালীন অপরাধী ট্রাইবুনালের হোতাদের বিরোধীতার কারণেই বঙ্গভঙ্গকে রদ করতে হয়েছিল বিটিশ লুটেরাদের। বিটিশ লুটেরাগুলো এখন নেই। কিন্তু তাদের পদলেহনকারী কুযোগ্য উত্তরসূরী চোর ডাকাত এবং গরীব দূঃখী মেহনতী বদি আদম যাদের বেশীর ভাগই ধর্মীয়ভাবে মুসলিম তাদের হকুকাত আত্মসাৎকারীদের চোখে ঘুম নেই, নিরীহ মানুষের রক্ত পিপাসু সেই সাম্প্রদায়িক জানোয়াগুলোর হিংস্র দাতগুলো সব সময় গালের বাহির করেই রাখে।
বর্তমানে বাংলাদেশের যে অবস্থা তাতে এখনো পর্যন্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশকে পূণার্ঙ্গ দখলে নেয়ার সাহস করবে না। এখনো বাংলাদেশ সে পর্যায়ে উপনিত হয়নি। কিন্তু ভারতের থিং ট্যংরা বসে নেই। বাংলাদেশকে পূর্ণাঙ্গ কব্জায় নেওয়ার জন্য যাবতীয় কার্যক্রম তারা পুরো দমে চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের আশংকা হয় অদূর ভবিষ্যতে কোন একদিন সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনতে পাবো বাংলাদেশের মানচিত্রকে টুকরো করে কুমিল্লাকে বলা হবে ত্রিপুরার অংশ, চট্টগ্রামকে বলা হবে মিজুরামের অংশ, খুলনাকে বলা হবে কোলকাতার অংশ, রাজশাহীকে বলা হবে বিহারের অংশ, সিলেটকে বলা হবে মেগালয়ের অংশ। সমৃদ্ধ ঢাকা হবে হায়দারাবাদের মত একটি শুধুই মেগাসিটি। এ ধরনের অলিক স্বপ্ন দেখার হারামজাদাগুলোর আস্ফালন দেখে আজ কেন আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে এভাবে ইতিহাস রচনা করতে উঠে পড়ে লেগেছে তা বুঝতে সহজ হবে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে মুসলমানদের হাতে সর্বশ্রেষ্ট নেয়ামত (কোরআন) থাকার পরেও তারা ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়ার কারনে বৃটিশরা চলে যাওয়ার পরেও ১৯৪৭ সাল থেকে এযাবত ভারতীয় উপমহাদেশে যত নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরেছে তাদের বেশীর ভাগই মুসলমান, যত নিরাপরাধ মানুষের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল তাদের বেশীর ভাগই মুসলমান। যত নারীর ইজ্জত হরণ হয়েছে তাদের বেশীর ভাগই মুসলমান।
অথচ মানবতা রক্ষার জন্য, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, উপমহাদেশের আজাদীপ্রিয় মানুষের হারানো স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য রক্ত দিয়েছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে মুসলমানরাই। পক্ষান্তরে যারা মানুষের অধিকার আদায় ও স্বাধীনতা অর্জনের নামে ডাকাতি এবং মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্মদাতা তারাই আজ বীরের মর্যদা চিনিয়ে নিতে তৎপর। তারাই আজ মজলুম মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে আর্ভিভুত হওয়ার খায়েশ করে!
আজ সময় এসেছে দল মত নির্বিশেষে আল্লামা সাঈদী সাহেবের উপর আরোপিত মিথ্যা এলজামের বিরুদ্ধে সৌচ্চার হওয়ার। মনে রাখতে হবে ব্যক্তি সাঈদী যেমন জাহেল নাফরমানদের তার্গেট তেমনি তার আদর্শ ও ফিলোসফি তার চেয়েও বড় তার্গেট এ জাতির আসল শত্রুদের।
আওমী লীগের রাজনীতি এখন মুসলমানদের হাতে নেই। আওমী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে মানবতা বিরোধী নাস্তিক বামপন্থী এবং মানব সভ্যতার চরম শত্রু তথাকথিত সমাজতন্ত্রের স্লোগান ফেরি করে দুনিয়াতে ফ্যসাদ সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের খুন ঝড়ানো সম্পদের অপচয়কারী বেত্তমিজ নাস্তিকগুলো। তাদেরকে সরাসরি সাপোর্ট দিচ্ছে ইন্ডিয়ার রাষ্ট্রীয় পলিসি নির্ধারণকারী চরম মুসলিম বিদ্বেশ পোষণকারী থিং ট্যাংকের সদস্যরা। দূর্ভাগ্যের ব্যাপার হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশের আজাদীর স্বাদ গ্রহণের জন্য, নিজস্ব তাহজিব তামাদ্দুন ও নিজস্ব সকীয়তার বিকাশ ঘটিয়ে উপমহাদেশের আম জনতার সার্বিক মুক্তির জন্য যারা লড়াই করে রক্ত দিয়েছে, যারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে ইংরেজদের বিতাড়নের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রেখেছে তারাই আজ সবচেয়ে নির্যাতন আর অবহেলার স্বীকার। অপর দিকে চিটার, টাউট বাটপার, চোর, ডাকাতগুলোর হাতেই চলে গেছে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব। সংখ্যার বিবেচনায় সর্ব বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্টীর দেশ ভারত। প্রায় ২৫ কোটির চেয়েও বেশী মুসলিম। অথচ ভারতীয় নীতি নির্ধারণী পলিসি মেকারদের আসনে মুসলমানরা নেই। তা না হলে "র" এর মত একটি শক্তিশালী ও দুনিয়ার বিখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থার যাবতীয় পলিসি সব মুসলমানদের স্বার্থ বিরোধী হয়ে থাকে কেন? প্রতিবেশী দেশ হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত অন্যায় ও জুলুমের যেভাবে চর্চা করে আসছে সেখানে বাধা দেয়ার মত অথবা পলিসি মেকারদের চিন্তার ট্র্যাককে ঘুরিয়ে দেয়ার মত কোন মুসলিম ব্যক্তি বা সংস্থা এখনো যোগ্যতা অর্জন করে উঠতে পারেনি?
ভারতীয় থিং ট্যাংকের একটি গ্রুফের মাস্টারপ্ল্যন বাস্তাবায়ন করার উদ্যেগের সফল বাস্তবায়ন হচ্ছে বাংলাদেশের মানবতা বিরোধী অপরাধী ট্রাইবুনাল।
বেশী লম্বা হয়ে যাচ্ছে মন্তব্যটি, তাই আর বাড়াতে চাই না।
অার আওয়ামি লিগ ইসলামের পুর্ন বিরোধি।
ধর্মদ্রোহী নাস্তিক শক্তিকে তুমি পরাজিত করে দাও।
মন্তব্য করতে লগইন করুন