সাতক্ষীরায় কী হতে কী হয়ে গেল!
লিখেছেন লিখেছেন সালাম আজাদী ১৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৩০:৪৬ সকাল
নিজে সাতক্ষীরার মানুষ বলে এতদিন খুব ভালো লাগতো। আমার বন্ধু মহল খুব খুশী হত আমার বোকা সোকা চেহারা দেখে। অনেকেই প্রশংসা করতো একটু সরল শব্দের সহজ কথার জন্যে। ভাষার টান টান ভাব 'নাতি খাতি সময় গেলু শুতি পারলাম না' ধরণের আলালি শব্দ নাকি ভালোই লাগে অনেকের কাছে। আরেকটা কথা আমার বন্ধুরা বলে থাকেন, সাতক্ষীরার লোক গুলো নাকি একটু এঁটেল কাদার মত, যা গায়ে লাগলে উঠানো বড় কষ্ট। ভালো মন্দ মিলিয়েই আমি সাতক্ষীরার।
ওখানে সব রাজনৈতিক দলগুলোর ছিলো খুব সুন্দর সহাবস্থান। আমার এক মুক্তিযোদ্ধা চাচা স্মৃতি চারণ করতে যেয়ে বলতে ছিলেনঃ 'বাবা, স্বাধীনতার সময় মুক্তিযুদ্ধ করেছি, কিন্তু সাতক্ষীরার আমরা কেও কখনো মারাত্মক চরমপন্থী ছিলাম না'। তিনি বলেনঃ অনেক রাজাকারকে আমরা গুলির মুখ থেকে ছেড়ে দিয়েছি, যখন দেখেছি তার দ্বারা সমাজের অনেক উপকার হয়েছে। আবার অনেক রাজাকার আমাদের সাহায্য করেছে কারণ তারা আমাদের মাঝে কোন খারাপ দেখেনি।
তবে স্বাধীনতার পরে নাকি সাতক্ষীরার বড় বড় রাজাকার ও আলিম উলামাদের যেভাবে মারা হয় ঐরকম বাংলাদেশের আর কোন খানেই হয়নি। আমার পরিচিত একজন জাসদ নেতা বলেছেনঃ 'স্বাধীনতার পর সাতক্ষীরায় কখনো সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হবে, আমরা চিন্তাই করতে পারতাম না। কারণ প্রায় সব বড় বড় রাজাকার মাওলানাদের আমরা শেষ করে দিয়েছিলাম'। আমি দেখতাম এই জেলায় লোকজন ভারতকে খুব বড় সন্দেহের চোখে দেখত। সীমান্ত বর্তী এলাকায় আমরা ভারতীয়দের কাজ-কাম সরাসরি প্রত্যক্ষ করি। এইজন্য মনে হয় সমস্ত সীমান্তবর্তী এলাকা গুলোতে ভারত কে কিছুটা দখলদার হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। ফলে সাতক্ষীরায় আওয়ামিলীগের বিরোধিতা একটু বেশি। কিন্তু সে বিরোধিতাও কখনো সহিংস হয়নি।
সাতক্ষীরা জেলা হিসাবে অনুন্নতই বলতে হবে। সুন্দর বনের প্রগাঢ় সবুজের হাতছানি, চিংড়ি মাছের বিপুল রূপালি মুদ্রার চাকচিক্য, অধুনা প্রতিষ্ঠিত সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলের সম্ভাবনাময় উপস্থিতি না থাকলে সাতক্ষীরায় স্থূল চোখে দেখানোর মত আর কিছুই নেই। খান এ সবুরের করে যাওয়া রাস্থায় এরশাদ সাহেবের উন্নয়নের হাত না লাগলে, এবং এরশাদের সময়ের করা ছোট বড় রাস্তা না হলে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় যাইতে আমাদের শরীরে জ্বর উঠে যেত। ছোট বেলায় সাতক্ষীরা থেকে ঢাকা আসতে প্রায় ২৪ ঘন্টা লেগে যেতো আমাদের। এরশাদের পরে এই জেলায় খুব বেশী উন্নয়ন হয়েছে বলে মনে হয়না। কারণ ও মনে হয় রাজনীতি। অধিকাংশ সময় এখানে বিরোধী দলই জয়লাভ করে। তারা উজানের স্রোত ঠেলে উন্নয়নের তেমন কিছুই হাতের নাগালে আনতে পারেনি।
তবে সাতক্ষীরায় জামাআতে ইসলামির প্রভাব আছে কিছুটা। কারণ হলো এখানে প্রায় সব নামকরা উলামা জামাআতের সাথে সক্রীয়। তাছাড়া এখানে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা সমূহে জামাআত ও শিবিরের শক্তিশালী সাংগঠনিক মজবুতি আছে। সাধারণদের মাঝেও ধর্মীয় ভাবাদর্শ কিছুটা বেশী থাকায় তারা জামাআত কে সমর্থনও করে। কিন্তু এই প্রভাব কখনো হানাহানির পর্যায়ে যায়নি।
গত আট বছরে সাতক্ষীরায় চলেছে ব্যতিক্রমী রাজনীতি, ও রাজনৈতিক সহিংসতা। মনে পড়ে আমাদের প্রতিবেশি দেশের প্রধান মন্ত্রী বাংলাদেশে জামাআতের প্রভাব নিয়ে কথা বলে ছিলেন। তিনি এর সদস্য দেশের জনসংখ্যার ২৫% বলে উল্লেখ করেছিলেন। লক্ষ্য করলাম সেদিন থেকেই যেন সাতক্ষীরার প্রতি সরকারের নযর টা কেমন শকুনি মার্কা হয়ে গিয়েছিলো।
নবম সংসদ নির্বাচনে ‘উদ্দীন সরকারের’ আমলে গোটা সাতক্ষীরায় জামাআত বা বিএনপি ক্ষমতায় না আসতে পারে তার জন্য চলে নানাবিধ কৌশল। এই জেলার সংসদীয় আসন গুলোর সীমানা ভেংগে চুরমার করা হয়। এমন ভাবে তার ভোটারদের ভাগ করা হয় যাতে সুষ্ঠ ভোট দিলেও যেন আওয়ামী বিরোধীরা পাস করতে না পারে। গত নবম সংসদের ভোটে জামায়াত বিএনপি, কেও আসতে পারেনি। এসেছিলো ১৪ দলীয় জোট। সাধারণ মানুষ ভেবেছিলো এই জেলা এখন জামাআতের তো নেই ই, বিএনপি, এমনকি জাতীয় পার্টির ও আর থাকবেনা। কিন্তু আওয়ামিলীগের শাসন আমলে এর নেতা নেত্রীদের অপব্যবহারে সাতক্ষীরার অবস্থা পরিবর্তন হতে শুরু হয়। একজন মন্ত্রী ও এমপিরা সাতক্ষীরা্য ভালো কোন কাজ তো করেননি বরং তাদের নিজদের পেট ও মুখ ভরার চেষ্টা করেছেন গত ৫টা বছর। কাজেই জনগন না তাদের পাশে আছে, না তারা জনগনকে নিজের বলে ভাবতে পেরেছে। ফলে সাতক্ষীরার লোক গুলোকে বানানো হয়ে ভিনগ্রহের এলিয়েন। তারা যেন আওয়ামি লীডারদের ও বড় শত্রু। এদের সবাইকেই যেন সন্দেহের তালিকায় রাখা হলো। এখানের ধর্মপ্রাণ লোক গুলোকে করা হলো নির্দয় নির্যাতনের লক্ষ্যবস্তু। আর জামাআতের কথা বাদই দিন। তারা তো হয়েছে দেখা মাত্র গুলি খাওয়ার একমাত্র টার্গেট। গোটা ইস্রায়েল রাস্ট্রের মধ্যে গাযা বাসিদের ভাগ্যে যেমনটি ঘটে থাকে। আজ সাতক্ষীরার লোকদের বানানো হয়েছে বাংলাদেশের বার্মিজ রোহিংগা।
সাতক্ষীরার আমার এক আত্মীয়কে আওয়ামি সরকার অযথা এরেস্ট করেছিলো বেশকিছু দিন আগে। আমি তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে যেয়ে নিজ এলাকার ও অন্য এলাকার দুই একজন মন্ত্রীদের কাছে অনুরোধ করেছি। দুয়েকজন এমপির কাছেও পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। ছোট বড় বেশ কিছু আওয়ামি নেতার কাছেও কথা বলেছি। তারা একটা কথায় আমাকে জবাব দিয়েছেন, তাহলোঃ দেখুন, ও তো সাতক্ষীরার ছেলে, তার ব্যাপারে সুপারিশ ও করা আমাদের নিষেধ। এমনো হয়েছে তাকে কোথায় রাখা হয়েছে এই খবরটুকুও সামরিক বিভাগে বিশাল পদের অধিকারী আমার জনৈক আত্মীয় ও উদ্ধার করতে ভয় পেয়েছেন। কারণ সে সাতক্ষীরার ছেলে।
সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছেলেকে সাতক্ষীরার ছেলে বলে মারধর করা হয়েছে বেধড়ক। ঢাকায় এখন সাতক্ষীরার পরিচয় দিলে চোখে থাকে সন্দেহের তীর। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুযোগ পেলোনা এক ছাত্রলীগ কর্মী, সেও সাতক্ষীরার ছেলে বলে। সেদিন আমার এক আওয়ামি আত্মীয় খবর দিলেন সাতক্ষীরার ইউনিয়ন ভিত্তিক জামাআত শিবিরের তালিকা করা হয়েছে। সেই ভাবেই সরকার তাদেরকে ধরবে।
এখানে আজ গ্রামে গ্রামে চলেছে জামাআত শিবির নিধন প্রক্রিয়া। এবং তা এতটা নির্মম যে গোটা জাতি আজ শোকে মুহ্যমান। এখানের এমন কোন উপজেলা নেই যেখানের শত শত মানুষকে কারাগারে না রাখা হয়েছে। এখানের পুলিশ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের কে বারবার পরিবর্তণ করতে হয়েছে; তাদের অনেকেই জামাআত শিবিরের উপর কঠোর হচ্ছিলোনা বলে। কারাগারে বাণিজ্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চুষে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। সাতক্ষীরায় ইসলাম পন্থী মধ্যবিত্ত শ্রেনীর কোমর অর্থনৈতিক ভাবে একদম ভেংগে দেয়া হয়েছে। সিডর ও আইলার আঘাতে নুয়েপড়া মানুষগুলো রাস্তায় কাটালেও এখনকার মত এত অসহায় আর কখনো হয়নি। কারণ সে সময় তারা আপন ঘরে না থাকতে পারলেও, তাদের পাশে মানুষের ভালোবাসা দেখতে পেয়েছে। আর এখন দেখতে পায় তাদের চার পাশে যেন ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্ষুদার্ত নেকড়ে। তারা আজ আজরাঈলের উপস্থিতি দেখতে পায় পুলিশ গাড়ির ছাদে, যৌথ বাহিনির বুল ডোজারে, কিংবা বিজেবির উর্দির নিচে। তারা কিয়ামতের লক্ষণ দেখতে পায়, যখন প্রতক্ষ্য করে তাদের সাথে মিশে আছে ছাত্র, যুব, কৃষক কিংবা শ্রমিক লীগের দাজ্জাল ধরণের কিছু ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ।
Click this link
সাতক্ষীরা এখন এক বিরান ভূমির আত্মকথা। জামাআত শিবিরের 'তান্ডব' শেষ করতে এখানে যৌথ বাহিনি যা করেছে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের ৯ মাসে মুক্তি যোদ্ধাদের তা করতে হয়নি, রাজাকার বা পাকিস্থানী হানাদার বাহিনিকেও তা করা লাগেনি। এক বাড়িতে দুই ভাইকে এখানে মারা হয়। তাদের পরিবারের একজনের সাথে কথা বলে জেনেছি ওরা ভীষণ কষ্টে আছে। খেতে পারেনা, জীবন চলছেনা, এর পরেও চলছে বিরামহীন সরকারী তাড়া। এখানে অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক সাহেব ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। ছিলেন বিপুল ভোটে পাস করা এমপি। তিনি এই জেলার সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের একজন। জীবনে উপকার করা ছাড়া এই লোকটি আজ পর্যন্ত ককেও বিন্দু মাত্র ক্ষতি করেন নি। তার গ্রামের বাড়িকে তো বিরান করা হয়েছে। তাকে পাওয়া যায়নি বলে তার দুই গরুকে গুলি করে মেরে ফেলে যৌথ বাহিনি। শহরের দুইতলা ভবন বুলডোজার দিয়ে ভগ্নপ্রায় করা হয়েছে। আমি যখন এর কারণ জিজ্ঞেস করলাম, তার এক ছাত্র কেঁদে ফেললেন। বলেলেনঃ ‘হুজুরের উপর চালানো অত্যাচার দেখে আর সহ্য করতে পারছিনা। বিশ্বাস করুন সাতক্ষীরায় চালানো অত্যাচার কোন বাংলাদেশী নাগরিক করতে পারেনা’।
কিছুদিন আগে একজন আওয়ামিলীগের কর্মীকে জামাআত শিবির কর্তৃক মারার দৃশ্য দেখে আমি খুব মর্মাহত হয়েছিলাম। আমি উষ্মা প্রকাশ করে এর বিরুদ্ধে কথা বলেছিলাম সাতক্ষীরায় পালিয়ে থাকা এক জামাআত নেতার সাথে। তিনি হু হু করে কেঁদে ফেলেছিলেন। বললেনঃ 'ভাই, আমাদের যদি একটা বারের মত বের হতে দিতো, স্বাভাবিক প্রোগ্রাম যদি আমরা করতে পারতাম, দিনের পর দিন যদি একটু নিজের বাসায় ঘুমাতে পারতাম তাহলে এইসব হত না। আমরা কর্মিদের সাথে যোগাযোগ ও রক্ষা করতে পারিনা। ফোনে কথা বললে টেকনোলজির সাহায্য নিয়ে আমাদের ধরে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করে। শত শত ভাই আজ শহীদ। কয়েকজন বোনকে রেইপ ও করা হলো। এরপরে হুজুরের উপর আঘাতের পর, ভাই, কর্মিদের ভারসাম্য আর নেই'। আমিও মন মরা হয়ে গেলাম। আমার একজন মামাতো ভাই ক'দিন আগে মিছিলে যেয়ে মারা গেলো। মামা তাকে শহীদ বলেছেন, কিন্তু ভয়ে বলতে পারলেননা ভাইটা কেন মরেছে, বা তাকে কে মেরেছে। আমার গ্রামের অন্ততঃ ৫০ জনকে জানি যারা বহু মাস নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারতেছেনা।
আমি রোগাক্রান্ত শরীরে রাতের পর রাত জেগে সাতক্ষীরার কথা ভেবেছি। গত ৪০ বছর ধরে দেখা সাতক্ষীরাকে এমন চূর্ণবিচূর্ণ কোন পুলিশ , বিজেবি, সেনা, বা অন্যকোন দেশপ্রেমী বাহিনী কিভাবে করতে পারে, তার হিসেব আমি মেলাতে পারছিনা। অধ্যক্ষ আব্দুল খালেকের মত এত বড় মাপের একজন আলিমে দ্বীনের বাড়ি-ঘর ধ্বংসের যে নমূনা আমি দেখলাম। বিশ্বাস করেন ইনকিলাবের মত হাজারটা পত্রিকা সিলগালা করে দিলেও, আমি এখনো জোর গলায় বলে যাব, আমার সাতক্ষীরায় যারা ধ্বংশযজ্ঞ চালিয়েছে তারা কেও বাংলাদেশের না। ডঃ রুহুল হক আর যাই করুন, সাতক্ষীরার আত্মীয়দের গায় হাত দিলে তার চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরবেই। ইঞ্জিনিয়ার মুজিব, এম এ জাব্বার, গোলাম রেজারা জামাত শিবিরকে না দেখতে পারুক, সাতক্ষীরা বাসির এত বড় ক্ষতি দেখে সহ্য করতে পারেন ই না। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি সাতক্ষীরার প্রতি এত নির্মম হতে পারবেনা বলে আমাদের দেশের হয়ত কেউ অন্যদেশের কোন শক্তিকে ভাড়া করে এনেছে। এবং তাদের অত্যাচারে আজ সিডর বা আইলা জয় করা মানুষেরা চোখের পানি কাঁদতে কাঁদতে শুকিয়ে ফেলেছে। আল্লাহ সাতক্ষীরাকে রক্ষা করুন।
বিষয়: বিবিধ
৪৫৯৬ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ মর্ম স্পর্ষি লেখাটার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ
এরপর সেটি হলো ফিলিস্তিন
এরপর ফিলিস্তিন পার হয়ে সেটি হলো গাযা
অনেক দিন হলো মিডিয়ায় কেবল বলা হতো গাযায় আক্রমণ!
বাহ্
কি দারুণ!
আজ যেমন সাতক্ষীরা...
জাযাকাল্লাহু খায়রান
আয়াতটা পড়ে মনে প্রশান্তি আসতে পারে "অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।" বাক্বারাহ -১৫৫
ফরহাদ মজহার সাহেবের একটা লেখায় পড়েছিলাম "দিল্লি যদি ‘জঙ্গি’ ইসলাম প্রতিরোধের নামে ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের বলয়ের মধ্যে বাংলাদেশকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলার বোকামি অব্যাহত রাখে, তাহলে তার পরিণতি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেয়েও আরও রক্তাক্ত হবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। এ আগুনে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে। "
"ইসলামও তার মনোজাগতিক ও ইহলৌকিক জগতের বিরুদ্ধে দিল্লি ও শেখ হাসিনা কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। শেখ হাসিনার জামায়াত-বিরোধিতা আসলে ইসলাম-বিরোধিতারই নামান্তর। এই সত্য না বোঝার কোনো কারণ নাই। "
তিনি লিখেছেন " এ আগুনে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে " এখন যদি নির্যাতিত কেউ দিল্লি গিয়ে আত্বঘাতি হামলা করে
বসে এর দায় কে নিবে ?? তাই আমরা বলতে চাই ভারতের উচিত হবে না আর একটি কাশম্মির পন্ট কুলে বসা ।
পোস্টের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
গত সংসদে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ বলে হাসিনা যেমন একটা ভবিষ্যদ্বানী সত্যি হিসাবে প্রমানিত করলেন, গত কাল শাহজাহান উমার বীর উত্তম ও 'ভারত জামাআত কে কিনতে পারেনি' বলে দ্বিতীয় ভবিষ্যদ্বাণীকেও অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছেন। এখন কী চেয়ে চেয়ে দেখবো, নাকি উঠে দাঁড়িয়ে যাবো এটা এক লক্ষ এক টাকার কোয়েশ্চন।
জাযাকাল্লাহু খায়রান
সুন্দরবনের কোর এরিয়া সাতক্ষিরার এই অবস্থার জন্য যারা দায়ি তাদের ক্ষমা করা উচিত নয়।
তাই বলছি এই বাস্তবতা মেনে নিন, এ দেশে ঈমানদার মুসলমানরা সংখ্যালঘু । যদি বাস্তবতা মানতে পারেন, তবে বুঝতে পারবেন এ ধরনের রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে জামায়াতের কোন লাভ নেই । আমরা যদি সত্যিকারভাবে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, তবে সবার আগে এ দেশের শিক্ষিত লোকদের প্রকৃত মুসলমান বানাতে হবে এবং অশিক্ষিত জনগণ, যাদের বেশির ভাগ গ্রামে বসবাস করে, ইসলামে সাথে যাদের ভালবাসা আছে, কিন্তু অজ্ঞতার কারণে শিরকে লিপ্ত, তাদেরকে শিরকমুক্ত করতে হবে, তখনই এ দেশে আল্লাহর আইন আসবে । সাতক্ষিরার ভাইয়েরা যে নির্দয় ও নিষ্ঠুরতার সম্মুখীন হয়েছে, তাতে হয়ত এক সময় ফায়দা লাভ করবে বি,এন,পি ক্ষমতায় গিয়ে, কিন্তু তার প্রিয় সংগঠন জামায়াতের কোন লাভ হবে না । সাতক্ষিরায় যে নিষ্ঠুরতা হলো, সে নিষ্ঠুরতার জন্য ১৮ দল নেত্রী খালেদা জিয়ার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা উচিত ছিল, কিন্তু তা কি তিনি করেছেন ? তাই বলছি ৯০ এর পর হতে জামায়াতের ভুল নীতির কারণেই আজকের এই বর্বরতা । তবে এখন হঠাৎ করেই জামায়াত ব্যাক করতে পারবে না । যদি ভুল বুঝে আস্তে আস্তে ভুল হতে বেরিয়ে আসতে পারে, তবেই মঙ্গল ।
অনেক প্রশ্ন জাগছে মনে > একই এলাকায় যুগ যুগ ধরে বসবাসকারীরা কি এত নিষ্ঠুর নৃশংসতা দেখাতে পারলেন?!
এই মন্তব্যেটিও যখন লিখছি তখনও কেন জানিনা, আমার খুবই কান্না পাচ্ছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন