মেয়েদের পুুলিশে চাকুরী করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২১ জানুয়ারি, ২০১৬, ১১:৩৫:১০ রাত

আজ কথা হচ্ছিলো । চাকুরীর বাজার নিয়ে । কথা প্রসঙ্গে মেয়েদের চাকুরী নিয়ে কথা হলো । আমি আমার পরিচিত মেয়েদের বল্লাম : আর যাই কর না কেন পুলিশের চাকুরীর জন্য আবেদন কর । এখন ১০ হাজার পুলিশ কন্সাটবল নেওয়ার বিজ্ঞপ্তী প্রকাশ হয়েছে । কিছু দিন পর সার্জেন্ট পদের জন্য সার্কুলার দেওয়া হবে । আর বিসিএস পুলিশ তো আছেই ।






https://www.youtube.com/watch?v=d1d0jH5rmv8

কেহ বলা শুরু করলো : বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকুরীর কথা । ব্যাংকের চাকুরীর কথা ।

কেহ পুলিশে চাকুরী ও ব্যাংকে চাকুরী করাকে ভালভাবে দেখছিলো না । আবার কেহ শিক্ষকতা ও আইন পেশাকে না । তাদের একজন বলা শুরু করলো : যার নাই গতি সেই করে ওকালতি আর পন্ডিতি ।

আমি বল্লাম : মেয়েদের পুলিশের পেশায় আসা উচিত । এতে সামাজিক সম্মান ও নিরাপত্তার পাশাপাশি মেয়েদের উপর অবদমন ও নির্যাতনের বিরোদ্ধে নিজেকে কাজ করার মতো যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশের নারী সমাজের জন্যও কাজ করার সুযোগ রয়েছে ।

আমি শুধু তাদের কাছে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের চাকুরীর সুযোগ সুবিধা নিয়ে আলোচনা করলাম ।আমি সেসব বিষয় শেয়ার করছি :




https://www.youtube.com/watch?v=R9slb_yo1jE

মেয়েরা বিসিএস-এ ”পুলিশ ক্যাডার” পছন্দ তালিকায় শুরুর দিকে কেন রাখবেন ?

১. সম্মান :

ট্রেনিং থেকে শুরু করে পোষ্টিং পর্যন্ত হয় অন্য কোন চাকুরীর চেয়ে বেশি সম্মান রয়েছে এই ক্যাডারে । ২৮ তম ব্যাচের মাহমুদা বেগম সোনিয়া(সহকারী কমিশনার, সিএমপি) আমেরিকা থেকে SWAT টিমের সদস্য হিসেবে করে এসেছেন ৪৫ দিনের দুর্দান্ত প্রশিক্ষণ যেটি কিনা এই উপমহাদেশের মেয়েদের মধ্যে প্রথম! নারী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এরকম হাজারো ইতিহাসের হাতছানি আপনার সামনে! বোন, আপনি কি করবেন সিদ্ধান্ত আপনার ।

২. অর্থনৈতিক :

বেতনভাতাঃ সব ক্যাডারে একই বেতন স্কেল হলেও পুলিশে যেহেতু অফিসের বাইরে কাজ থাকে বেশি সেক্ষেত্রে বেতনের অতিরিক্ত দৈনিক ভাতা সবচেয়ে বেশি পাবেন আপনিই । উদাহরণ দেয়া যাক-মাসে ২০ দিন অবরোধ/হরতাল/বা অন্য কোন ডিউটি করলে আপনি পাবেন ঢাকার বাইরে পাবেন ৫০০X২০, ঢাকায় ৬৫০X২০ টাকা ।এছাড়া ইউনিট ভেদে আপনার বিশেষ ভাতাও থাকবে যেমন র্যা বে অতিরিক্ত ৭০%, ট্রাফিকে ৩০%, ডিএমপিতে বিশেষ ভাতা প্রায় ৭০%, সি আই ডি, পুলিশ হেডকোয়াটার্সএ ৫০% ইত্যাদি ।

(নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন ১০২% বৃদ্ধি পেয়েছে । এটা ২০০৮ সালের হিসেব)

রেশনঃ ৪ সদস্যের পরিবারে যে রেশন আপনাকে দেয়া হবে আমি নিশ্চিত প্রয়োজন মিটিয়েও আপনি চিনি ডাল তেল গরীব আত্মীয়স্বজনদের বিলিয়ে সওয়াব কামাতে পারবেন । অন্য কোন ক্যাডারে আপনাকে কিন্তু রেশন দিবে না

মিশনঃ ৫ বছর চাকুরীর সময়কাল হলে আপনি নিজ যোগ্যতায় কোন প্রকার তদবীর ছাড়া জাতিসংঘের SAT Mission এ যেতে পারবেন । এখানে বলে রাখা ভাল, এই পরীক্ষাগুলো বিদেশ থেকে UN এর কর্মকর্তারা এসে নিয়ে থাকেন । মেধা আর যোগ্যতাই এখানে মাপকাঠি । চাকুরীর ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ টি মিশনে আপনি হালাল ভাবে কোটিপতি হতে পারবেন যেটি আপনি অন্য কোন ক্যাডারে অনন্ত জলিলকে দিয়েও সম্ভব করাতে পারবেন না । এক জীবনে বেচেঁ থাকতে কোটি টাকা লাগে বলুন?

চিকিৎসা সুবিধাঃ সিএমএইচ এর মতো এতো উন্নত না হলেও পুলিশে আপনার জন্য রয়েছে রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল । খুবই গোছোনো, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, এই হাসপাতালের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনে আপনি আন্তরিক সেবা পাবেন । সবধরনের অপারশেন এর ব্যবস্থা এখানে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে ।এখানকার সবচেয়ে বড় সুবিধা যেটি আমার কাছে মনে হয়েছে । সেটি হলো সব ধরণের ওষুধ এর পর্যাপ্ত সরবরাহ । কোন ওষুধ না পাওয়া গেলে প্রয়োজনে অর্ডার দিয়ে আনা হয় সেটা যত দূর্লভ আর দামিই হোক না কেন ।এই সুবিধা আপনি অন্য কোন ক্যাডারে পাবেন না ।

আবাসন বিষয়ক কথনঃ প্রথম সারির ক্যাডারদের মতো আবাসন ব্যবস্থা পুলিশেরও একই রকম । তবে সার্কেল বা জোন পেলে আপনি নিশ্চিত আপনার রাজকীয় ব্যবস্থা থাকবে থাকার। তবে অন্যান্য ক্যাডারের চেয়ে বাড়তি সুবিধা যেটি সেটি হলো আপনার জন্য একজন সার্বক্ষনিক একজন Orderly পাবেন যা অন্য কোন চাকুরীতে পাবেন না ।একবারেই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য গাড়ি পাবেন সার্বক্ষনিক আর ভালো পোষ্টিং এ ভাল গাড়ি পাবেন এটা বুঝার জন্য তো আর আইনস্টাইন হওয়া লাগে না ।



ভিন্ন স্বাদের এক জগৎঃ
পুলিশে চাকুরীতে এতো বৈচিত্র্য আপনি আর কোন ক্যাডারে পাবেন ।আপনি পুলিশিং ছাড়াও এখানে ইচ্ছে করলে শিক্ষকতা করতে পারবেন টেনিং একাডেমী ও স্কুলে, পোশাক ভালো না লাগলে সাদা পোশাকে গোয়েন্দাগিরি, সি আই ডিতে কোন বিশেষ শাখায় গবেষণা থেকে আই টি বিভাগের এক্সপার্ট, পুলিশ হাসপাতালে ডাক্তারী থেকে ডিবির বোম্ব ডিসপোজাল টিমের টিম লিডার, ডেস্কজব থেকে শুরু করে রাস্তায় হরতাল ডিউটি আপনার ইচ্ছের এমন সবকিছু যা অন্য চাকুরীতে করতে চাইতেন তা এখানে পাবেন ।প্রত্যেক ইউনিটে আলাদা আলাদা পোশাক আপনাকে দিবে রুচি বদলের সুযোগ ।এপিবিএন থেকে স্পেশাল ব্রাঞ্চ, নৌ-পুলিশ থেকে টুরিস্ট পুলিশ, এসএসএফ থেকে র‌্যাব, বাংলাদেশ পুলিশ থেকে জাতিসংঘ মিশনের সদর দপ্তর সব জায়গায় পদচারনা করতে পারবেন আপনি ।

রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয় থেকে পুলিশ সাইন্সে মাস্টার্স থেকে শুরু করে এফ বি আই গ্র্যাজুয়েশন, নর্থ ক্যারোলিনাতে ব্ল্যাক ওয়াটার টেনিং একাডেমীতে কমান্ডো ট্রেনিং করে কমান্ডো হওয়া থেকে শুরু করে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্টে হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসার সামরিক প্রশিক্ষণ সবই পাবেন এই চাকুরীতে ।

এছাড়া রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুর, প্রধানন্ত্রীর প্রটোকল থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি ভবন, সবার সরাসরি সেবা আপনি করতে পারবেন । পুলিশ ছাড়া অন্য কোন ক্যাডার চিন্তাই করতে পারবে না এই সব !




https://www.youtube.com/watch?v=tnXm3zbnvEM

বিদেশ ঘোরার সুযোগঃ

চোখ বন্ধ করে পুলিশ ক্যাডার দিতে পারেন ।প্রত্যেক বার ইউএন এর মিশনের অর্ধবার্ষিক ছুটিতে ৪৫ দিনে আপনি ঘুরে আসতে পারেন আপনার পছন্দের সব দেশ নিজের মতো করে! দূতাবাস থেকে ভিসা ইস্যু করে আপনকেই উল্টো ফোন করবে পাসপোর্ট নিয়ে যেতে । কারণ আপনিই যে শান্তির দূত !

পড়াশোনার সুযোগঃ

এসব ছাড়াও প্রথম সারির অন্যান্য সব ক্যাডার সার্ভিসের মতো শিক্ষাছুটি নিয়ে বাইরে পড়তে যাওয়া, উজ্জল ভবিষৎ কিংবা পদোন্নতি এই সব তো আছেই । তার চেয়েও বড় কথা পুলিশের ইমেজ পরিবর্তনের যে ধারা চালু হয়েছে এই ধারায় সক্রিয়ভাবে আপনিও একজন কান্ডারী হতে পারবেন ।আপনাদের মতো মেধাবীরা আসছে পুলিশে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে ।আপনারা আসলে আরো সবাই উৎসাহ পাবে । মেধাবীরা হাল ধরলে পরিবর্তন আসতে কতদিন ?

বিষয়: বিবিধ

২৫৬১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

357545
২৪ জানুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৬:০৩
স্বপন২ লিখেছেন : মুসলিম মহিলাদের উচিৎ পুলিশে যোগদান
করা। নচেৎ বামপন্থীরা ঢুকে যাবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File