দাঁড়ি-টুপি-ইসলামী পোষাক পরার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ !!!! প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি- জোরালো প্রতিবাদ করুন !

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৮ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:১৬:০৫ সকাল




https://www.youtube.com/watch?v=YEUZR3_2VOU

আইইউবিএটি’র(ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনলজি) ভিসি ও তার স্ত্রীকে বুঝাতে হবে, শিক্ষার্থীদের ক্ষমতা কি?







ইসলামী পোষাক পরা ছেলেমেয়েদের হয়রানী করার পাশাপাশি পরীক্ষায় ফেল পর্যন্ত করিযে দেওয়া হচ্ছে। এমন অবস্হা নর্থ সাউথ-ব্রাক সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটছে ।

https://www.facebook.com/atikisrak.lemon/videos/866646753453473/

স্নেহের ভাই ও বোনেরা- আজ আমাদের অধিকার আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে আজ ড্রেস কোডের দোহাই দিয়ে আমাদের মৌলিক অধিকার হরণের চেষ্টা চলছে। উগ্র মস্তিষ্কের অধিকারী ভিসি আলীমুল্লাহ মিয়ান আর উনার স্ত্রী সেলিনা নারগিস- পাঞ্জাবি, টুপি আর বোরকার উপর যে আক্রমণ করছে তার সমুচিত জবাব দিন।

তাই উত্তরায় আইইউবিএটি’র ক্যাম্পাসে জোড়ো হয়ে এক যোগে জোরালো প্রতিবাদ করুন। ভার্সিটির গেটে তালা লাগিয়ে দিন। ভিসিকে তার উদ্ভট ও উগ্র নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য করুন।

আরো জানতে দেখুন :

https://www.facebook.com/atikisrak.lemon/videos/866646753453473/?fref=nf

( আমার হাতে সময় নেই । এজন্য বিস্তারিত কিছু লিখতে পারলাম না । এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ২০১২ সালে আমাকে এই বিষয়ে লেখার জন্য হত্যার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিল । অনেকের সাহায্য চেয়েছিলাম । কারো সাহায্য পাইনি ।

ফেসবুকের বিখ্যাত একটিভিস্ট ও বিশিষ্ট আলেম লুৎফর ফরাজীর সাহায্য চেয়েছিলাম । তিনি আমাকে কোন সাহায্য করেননি । এমন কি তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষ মুরব্বী যাকে নিয়ে বর্তমানে সমস্যা হচ্ছে তার সাহায্যও চেয়েছিলাম । তিনিও কোন সাহায্য করেননি ।

আপনাদের উচিত লেখালেখি করা । )



সংযোজন :


দৈনিক নয়া দিগন্ত

ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মার্চ ২০১২, ১৬ চৈত্র ১৪১৮, ৬ জুমাদিউল আউয়াল

রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অগ্রাহ্য আইইউবিএটির

পাঞ্জাবি-টুপি পরায় পরীক্ষায় ফেল বোরখা পরায় নিষেধাজ্ঞা

মেহেদী হাসান

উত্তরায় অবসি'ত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির কয়েকজন ছাত্র পরীক্ষায় পাস করা সত্ত্বেও তাদের ফেল দেখানো হয়েছে। অপরাধ তারা পাজামা, পাঞ্জাবি ও মাথায় টুপি পরে, মুখে দাড়ি আছে।

এ ধরনের পোশাক পরার কারণে কয়েকজন ছাত্রের আইডি কার্ড জব্দ করা হয়। তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে হয় পাজামা, পাঞ্জাবি ও টুপি ছাড়তে হবে, না হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হবে। পাজামা, পাঞ্জাবি ও টুপিকে পরিত্যাগ করার বিষয়ে লিখিত আকারে জানানোর পর কার্ড ফেরত দেয়া হবে। গেটের দারোয়ান ডেকে এসব ছাত্র দেখিয়ে দিয়ে বলা হয়েছে তারা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে না পারে। পাজামা, পাঞ্জাবি ও টুপি পরে যারাই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন তাদের সবার ক্ষেত্রে একই নির্দেশ। ঘটনার এখানেই শেষ নয়। নির্দেশ অমান্য করে পাজামা, পাঞ্জাবি ও টুপি পরে আসায় পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে না দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে কারো কারো ক্ষেত্রে। একই কারণে ছাত্রদের ক্লাস থেকেও বের করে দেয়া হয়েছে।

এ তো গেল ছেলেদের ঘটনা। বোরখা পরার কারণে ছাত্রীদেরও আইডি কার্ড জব্দ করা ও কোনো কোনো কোর্সে ফেল করানোর ঘটনা ঘটেছে। যারা বোরখা পরে তাদের প্রেজেন্টেশন কোর্সে অংশ নিতে দেয়া হয় না এবং একজন মেয়ের ক্ষেত্রে প্রেজেন্টেশন কোর্সে ফেল দেখানোর ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। বোরখা পরায় ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার ঘটনাও ঘটছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রীরা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বর্তমানেও যারা বোরখা পরে আসছেন তাদের বারবার বলা হচ্ছে বোরখা পরে আসা যাবে না। বোরখা নিষিদ্ধ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বোরখা ছাড়তে হবে- প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে গেটে।

বোরখা ও নেকাব পরে আসা মেয়েদের বলা হয়েছে লম্বা বোরখা ছাড়তে হবে। শর্ট বোরখার নিচে জিন্সের প্যান্ট পরতে হবে। তা ছাড়া সমন্বিত একটি কোর্সে শর্ট বোরখা পরেও প্রবেশ করা যাবে না। শর্ট প্যান্ট ব্লেজার বা কোর্ট পরে প্রবেশের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নিরুপায় হয়ে শেষ পর্যন্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী রাষ্ট্রপতিকে লিখিতভাবে ঘটনা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে ঘটনা অনুসন্ধান করে সত্যতা পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরতে বাধা না দেয়ার নির্দেশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন' সে চিঠিতো গ্রাহ্যই করা হয়নি, উল্টো ভিসি প্রফেসর আলীমুল্যাহ মিয়ান চিঠি ভুয়া আখ্যায়িত করেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র। চিঠি ভুয়া আখ্যায়িত করার কথা আবারো ছাত্রদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে জানানোর পর আবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. আতফুল হাই শিবলী গত রাতে নয়া দিগন্তকে জানান, তারা গত বৃহস্পতিবার এ চিঠি পেয়েছেন। ঘটনা তদন্ত করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি। প্রফেসর শিবলী বলেন, পোশাক পরার ক্ষেত্রে এ ধরনের বাধা সৃষ্টির অধিকার তাদের নেই।

পাঞ্জাবি টুপি পরায় পরীক্ষায় ফেল : নয়া দিগন্তের কাছে ফেল করা তিনজন ছাত্রের তিনটি ফরম এসেছে। তাতে দেখা যায় দু’জন জিপিএ ৪-এর মধ্যে পেয়েছেন ৩.৫৬, একজন পেয়েছেন ২.৬৯। কিন' তাদের প্রত্যেকেরই ফরমের ওপর মোটা কালিতে ‘এফ’ লেখা রয়েছে। একজনের পাগড়ি পরিহিত ছবি ও দু’জনের টুপি পরা ছবি। তিনজনেরই মুখে দাড়ি। তিনজনেরই ছবির ওপর ক্রস চিহ্ন দিয়ে লেখা হয়েছে ‘রঙ পিকচার ফরম্যাট’। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সুন্নতি পোশাক পরায় তাদের ফেল দেখানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির দফতরের চিঠি : পোশাক পরিধান বিষয়ে বাধাদানের বিষয়টি অবহিত করে ৬৭ জন শিক্ষার্থী গত ৮ মার্চ লিখিত আকারে রাষ্ট্রপতি মো: জিল্লুর রহমানের কাছে জানান, চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ মার্চ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি বরাবর। রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিষয়টি অফিস কর্তৃক পরীক্ষিত হয়েছে। এটি প্রকৃতই সংবিধান পরিপন'ী ও জবরদস্তিমূলক। এই বিধিনিষেধ আরো আমাদের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদের পরিপন'ী তথা আল্ট্রা ভায়ারস বিধায় অবিলম্বে তা (বিধিনিষেধ) প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করা হলো।’

গতকালের ঘটনা : গতকাল শুক্রবার বেলা ৩টায় এআরটি-২০৩ কোর্সের একটি ক্লাসে দু’জন শিক্ষার্থী পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপি পরে ক্লাসে প্রবেশ করেন। শিক্ষক মো: মুসা প্রথমেই ক্লাসে ঢুকে তাদের দিকে দৃষ্টি দেন। তিনি বলেন, এ পোশাক চলবে না। তখন একজন ছাত্র তাকে রাষ্ট্রপতির চিঠি দেখান। শিক্ষক তখন বলেন, ও চিঠি আমার কাছে আসেনি। এসেছে ভিসির কাছে। ভিসি যদি আমাকে বলেন, তাহলে তোমরা এ পোশাক পরে ক্লাস করতে পারবে। তিনি ছাত্র দু’জনকে বলেন, তোমরা ক্লাসে থাকলে আমি ক্লাস নেবো না। শিক্ষার্থীরা জানান, ওই দু’জন ছাত্র ক্লাসে বসে থাকায় শিক্ষকও চুপ করে বসে থাকেন। এরপর অন্য ছাত্রের পরামর্শ এবং পরিসি'তির কারণে তারা বাধ্য হয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে আসেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন থেকে সব বিভাগে এ জাতীয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আলিমুল্যাহ মিয়া, তার স্ত্রী প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ডিরেক্টর অ্যাডমিন) সেলিনা নারগিস এবং বিবিএ প্রধান তানভির দেওয়ান এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। পাজামা-পাঞ্জাবি পরা ছাত্র, বোরখা পরা ছাত্রী চোখে পড়লেই ভিসির স্ত্রী সেলিনা নারগিস তাদের অফিসে ডেকে নিয়ে হেনস্তা করেন। আইডি কার্ড জব্দ করেন। তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন। পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেন। দারোয়ান ডেকে নির্দেশ দেন তাকে যেন ঢুকতে দেয়া না হয়। এমনকি ক্লাস থেকেও পাজামা-পাঞ্জাবি পরা ছাত্রকে ধরে আনার ঘটনা ঘটেছে।

কয়েকটি ঘটনা : একজন শিক্ষার্থী জানান, একদিন ক্লাসে কুইজ টেস্ট চলছিল। এমন সময় রিসিপশনিস্ট সোহাগ এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায় শিক্ষকের অনুমতি ছাড়াই। এরপর থার্ড ফ্লোর থেকে আরো একজন পাঞ্জাবি ও টুপি পরা ছাত্রকে ডেকে লুৎফর রহমান স্যারের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হলো। এরপর বিবিএর মান্নান স্যার এলেন। তিনি বললেন, এসব পোশাক ছাড়ো। তখন ওই দুই শিক্ষার্থী তাদের পোশাক পরিবর্তন করতে অস্বীকার করায় মান্নান স্যার রিসিপশনিস্ট সোহাগকে বলেন, বল কী করা যায়? তখন রিসিপশনিস্ট তাদের গলা থেকে আইডি কার্ড খুলে নেয়। রিসিপশনিস্ট আইডি কার্ড খুলে নেয়ায় তারা খুব অপমান বোধ করার কথা জানান এ প্রতিনিধিকে। তার পর ক্লাস ও পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করলে তাদের আইডি কার্ডের ফটোকপি দেয়া হয়।

পরদিন ৬ মার্চ তারা সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দেখেন গেটের সামনে অনেক দাড়ি-টুপিওয়ালা পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে আছেন। দারোয়ান তাদের ঢুকতে বাধা দিয়ে বলেন, আগে পোশাক ঠিক করে আসেন। আগের দিন আইডি কার্ড রেখে দেয়া শিক্ষার্থী তার আইডি কার্ডের ফটোকপি দেখালে দারোয়ান তাকে রিসিপশনিস্ট সোহাগের কাছে নিয়ে যান। তখন ওই ছাত্র সোহাগকে জানান, গতকাল তো আপনার সামনেই স্যার আমাকে ক্লাস করার অনুমতি দিয়েছেন। তখন সোহাগ তাকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘পাস্ট ইজ পাস্ট’। তখন এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলে সোহাগ তাকে বলে ‘আই এম দ্য অথরিটি, হোয়াট ক্যান ইউ ডু।’ একপর্যায়ে মান্নান স্যার এসে সোহাগকে ধমক দিয়ে বলেন, কেমন ডিউটি করো যে, এসব ছেলেরা ভেতরে ঢোকে? আমি তখন ভিসি স্যারের সাথে দেখা করতে চাইলে তার স্ত্রী সেলিনা নারগিস এসে আমাকে ধমকাতে থাকেন। তিনি বলেন, ভার্সিটি ছাড়তে হবে, না হয় এ ড্রেস ছাড়তে হবে। আমি তাকে অনেক অনুরোধ করে বলি, পাঁচ মিনিট পর আমার পরীক্ষা। আমাকে অন্তত পরীক্ষাটা দিতে দেন। তিনি তখন বলেন, তাহলে এখনই লিখে দাও যে, তুমি আর এ ড্রেস পরবে না। তাহলে তোমাকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হবে। ম্যাডাম আমাকে বলেন, কখন ড্রেস ছাড়বে বলো? আমি সময় চাইলে তিনি ধমক দিয়ে বলেন, এক্ষুনি বের হয়ে যাও।

আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, গত ২ মার্চ রিসিপশনিস্ট সোহাগের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সে তাকে জোহা স্যারের কাছে নিয়ে যায়। জোহা স্যার তাকে ড্রেস পরিবর্তনের কথা বললে সে এক সপ্তাহ সময় চায়।

পরদিন ৩ মার্চ ক্লাস শেষে দোতলা থেকে অ্যাডমিন ডিরেক্টর সেলিনা নারগিস তাকে ডেকে রুমে নিয়ে যান। তিনি ড্রেস পরিবর্তনের বিষয়ে ধমকাধমকি করে বলেন, ড্রেস পরিবর্তন না করলে তুমি এখানে পড়তে পারবে না। তখন তিনি আমাকে জোহা স্যারের কাছে নিয়ে যান। জোহা স্যার বলেন, তাকে এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে। তখন ম্যাডাম বলেন, কিসের এক সপ্তাহ?

এখনই বলতে হবে সে কি ড্রেস ছাড়বে না ভার্সিটি ছাড়বে? তিনি এ সময় ড. জাকির নায়েকের কোট টাই পরার উদাহরণ দেন। শিক্ষার্থী এ যুক্তির বিরোধিতা করলে তিনি বলেন, নো আরগুমেন্ট। পোশাক না বদলালে বহিষ্কার করা হবে। এরপর তিনি বলেন, এর আইডি কার্ড রেখে দেন। সে যদি বলে কাল ড্রেস পরিবর্তন করবে তাহলে তাকে আসতে দেবেন। তা না হলে নয়। এরপর দারোয়ান ডেকে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে নির্দেশ দেয়া হলো ড্রেস না বদলালে সে যেন গেট দিয়ে ঢুকতে না পারে। কাল যদি সে শার্ট-প্যান্ট পরে আসে তাহলে ঢুকতে দেবে। তা না হলে ঢুকতে দেবে না।

পরদিন ৬ মার্চ আমার পরীক্ষা ছিল সাড়ে ৮টায়। কিন' পোশাক পরিবর্তন করে না আসায় গেটে আটকে রাখা হয় দুই ঘণ্টা। ফলে পরীক্ষা দেয়া হয়নি।

১০ তারিখ আরেকটা পরীক্ষা ছিল ওই ছাত্রের। সেলিনা নারগিস তাকে হলে ঢুকতে দেননি। ওই ছাত্রকে জোহা স্যারের কাছে পাঠান। জোহা স্যার বলেন, তুমি কি ড্রেস ছাড়বে না ভার্সিটি ছাড়বে, সেটা বল। ছাত্রটি জানান, তিনি ড্রেস ছাড়বেন না। তখন জোহা স্যার জানান, তোমার ব্যাপারে ভার্সিটি কী সিদ্ধান্ত নেয় তা ১২টার সময় এসে জেনে নিও। ওই শিক্ষার্থী জানান, এর তিন-চার দিন পর তাকে আইডি কার্ড ফেরত দিয়ে বলা হয়, পোশাক না বদলালে পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল হলে তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তাকেও অন্যদের মতো হয়তো ফেল করানো হবে।

শিক্ষার্থীরা যা বললেন : পোশাক পরিধান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাধাদান বিষয়ে সরাসরি কথা হয় কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে।

তারা জানান, বেশ কিছু দিন ধরে তাদের পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপি পরে আসার বিষয়ে বাধা দেয়া হচ্ছিল। কিন' গত ৫-৬ মার্চের পর তাদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা জানান, অনেকে বাধ্য হয়ে বোরখা বাদ দিয়েছেন। কেউ কেউ পাজামা-পাঞ্জাবি টুপি পরা বাদ দিয়েছেন। প্যান্ট শার্ট পরছেন।

একজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ভর্তির অনেক দিন পর তাকে বলা হয় পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপি পরে আসা যাবে না। পরে অনেক অনুরোধ করা হলে তাকে পরামর্শ দেয়া হয় ওপরে শেরওয়ানি টাইপের কিছু একটা পরতে হবে। পরে সেই অনুযায়ী কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্লাস করেন। এভাবে দ্বিতীয় বছর পার হলো। কিন' এখন বলা হচ্ছে, পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপি একেবারেই পরা যাবে না। বিশেষ করে ক্যারিয়ার প্লানিং নামে একটি কোর্স আছে। সেটি সব ছাত্রকে করতে হয়। সেখানে পাজামা-পাঞ্জাবি পরে প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওই কোর্সে মেয়েদেরও বোরখা পরে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেস কোডে কোথাও বলা নেই পাজামা-পাঞ্জাবি ও বোরখা পরা যাবে না। তা ছাড়া ভর্তির সময়ও যদি তারা এ বিষয়ে জানাত তাহলে আমরা এখানে ভর্তি হবো কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতাম। কিন' অনেক সেমিস্টার পার হওয়ার পর এখন আমাদের এ বিষয়ে বাধা দিয়ে শিক্ষাজীবন বিপন্ন করা হচ্ছে কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানান, তাদের ব্লেজার পরে আসতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, হিজাব পরা আমার স্বাধীনতা ও অধিকার। কিন' তারা এখন আমাদের মানসিক চাপের মধ্যে রেখেছেন এ নিয়ে।

নয়া দিগন্তের পক্ষ থেকে গত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর আলিমুল্যাহ মিয়ানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পাজামা-পাঞ্জাবি পরার কারণে কাউকে ফেল করানো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। একজন ছাত্র বিষয়ে অফিস থেকে আমাকে জানানো হয়েছে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ছবি লাগানো হয়েছে। সে কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস'া নেয়া হয়েছে।

নয়া দিগন্তের পক্ষ থেকে ভিসিকে জানানো হয়, যাদের ফেল দেখানো হয়েছে তাদের সবার ফরম ও ছবি আমাদের কাছে আছে এবং তাদের আমরা দেখেছি ও কথাও বলেছি।

প্রফেসর আলীমুল্যাহ মিয়া বলেন, আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। দেখেন এখানে মেয়েরা বোরখা পরে আসছে। কাউকে বাধা দেয়া হচ্ছে না। সীমিত কিছুসংখ্যক ছেলে পরিসি'তি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে।

নয়া দিগন্তের পক্ষ থেকে বলা হয় আমরা অনেক ছাত্রছাত্রীর সাথে কথা বলেছি এবং তারা জানিয়েছেন, পাজামা-পাঞ্জাবি পরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বোরখা পরতে নিষেধ করা হয়েছে। গেটে বাধা দেয়া হচ্ছে। আপনি বলেন, আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাজামা-পাঞ্জাবি এবং বোরখা পরার অনুমতি আছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, এর মানে কী? আমাদের একটা ড্রেস কোড আছে তা মানতে হবে। এর পর তিনি টেলিফোন রেখে দেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক সময় কোনো কোনো স্যারকে অনুরোধ করলে তাদের দয়া হলে তারা ক্লাস করতে দেন বোরখা পরে। অনেকে দেন না। একজন ছাত্রী গত রাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, তাদের ক্ষেত্রেও এ ঘটনা ঘটছে। তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বোরখা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন কিন' অনেক হয়রানি ও হেনস্তা করা হচ্ছে। গেটের দারোয়ান বাধা দিয়ে বলে, বোরখা পরে আসা যাবে না। তাদের অনুরোধ করতে হয় ভেতরে ঢুকতে। বোরখা পরার কারণে কারো কারো নাম্বার কাটা হচ্ছে কোনো কোনো কোর্সে। যারা বোরখা পরে তাদের সবাইকে বারবার বলা হচ্ছে বোরখা পরা যাবে না। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিবিএর সাবজেক্টে সবচেয়ে বেশি বাধাদানের ঘটনা ঘটছে। পোশাক নিয়ে বিধিনিষেধ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত শিক্ষক বিবিএর হেড তানভির দেওয়ানের কাছে গত রাতে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

দেখুন : http://dailynayadiganta.com/details/36941

আরো তথ্য :

http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=226524

http://www.facebook.com/pages/Iubat-Dress-CODE/346448378740347

http://dailynayadiganta.com/details/36941

http://sonarbangladesh.com/blog/KUMKUM/100970

http://sonarbangladesh.com/blog/TAHER2011/100962

বিষয়: বিবিধ

২৩০৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File