দয়া করে কেহ ২৮ অক্টোবর বা পল্টন ট্রাজেডি দিবস পালন করবেন না
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:৪৭:৩০ রাত
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া’আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া’আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া’আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া’আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ”।
আমি আমার এই লেখাটা দীর্ঘ করবো না । আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
আমি ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিবেকবান ভাইদের প্রতি করজোড়ে অনুরোদ করছি :
”দয়া করে । ভাইয়েরা । আপনাদের হাতে ধরছি । পায়ে ধরছি । আল্লাহর দোহাই লাগে । কাল ২৮ অক্টোবর পল্টন ট্রাজেডি দিবস পালন করার নামে আপনারা বিক্ষোভ মিছিল বা ঝটিকা মিছিল বা সভা-সমাবেশ করা হতে বিরত থাকুন । দেশকে অস্হিতিশীল করবেন না ।
এসব বিক্ষোভ মিছিল বা ঝটিকা মিছিল বা সভা-সমাবেশ এর ফল ভাল হবে না । এর জন্য ১০০ বার ইস্তেখারা নামাজ পড়ারও প্রয়োজন নেই । কারণ বিষয়টা অত্যন্ত পরিস্কার ।
বিক্ষোভ মিছিল বা ঝটিকা মিছিল বা সভা-সমাবেশ এর ফল কী হবে আপনারা ভাল করে জানেন । আমরা সাধারণ মুসলিমরা দেখেছি , আপনাদের এসব কার্যক্রমের কারণে আল্লাহর ঘর মসজিদ অমুসলিমদের দ্বারা ও বেনামাজীদের দ্বারা অপবিত্র হতে ও রক্তাত্ব হতে এবং আমাদের ইবাদত বন্দেগী ব্যাঘাত ঘটতে ।
আমি মুসলিম । সে হিসেবে আমারও আবেগ আছে । অনুভতি আছে । একজন মুসলিম হিসেবে আমার আবেগ ও অনুভতি আহত হয়েছে মসজিদকে অপবিত্র করায় । আমি আহতবোধ করেছি, নামাজ পড়তে আসা ছেলেকে ক্ষত বিক্ষত করায় ও হত্যা করায় । কিন্তু এর বিচারের ভার আমি আপাতত আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি । কারণ আমি ইস্তেখারা নামাজ পড়ে এই অবস্হানে এসেছি ।
আমি এই ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলছি না । তবে এতটুকু বলছি :
১. আপনারা মুসলিম । মুসলিমি হিসেবে প্রজ্ঞাবান ও দুরদর্শী লোকদের মতো আচরণ করুন ।
২. আপনারা সাধারণ মুসলিম পরিবারের লোক । আপনাদের জান-মাল ও পড়াশোনার ক্ষতি হলেও আপনাদের নেতাদের ছেলে-মেয়েদের জান-মাল ও পড়াশোনার ক্ষতি হবে না বা হয় না । তবে ব্যতিক্রম মাওলানা রফিকুল ইসলাম সাহেবের ছেলের ক্ষেত্রে ।
৩. আপনারা ছাত্র । আপনাদের উচিত মেধা-যোগ্যতা-দক্ষতা-ক্যারিয়ার গঠণের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে নেওয়া । ক্যারিয়ার সেক্রিফাইস বলে ইসলামী পরিভাষা নেই । ইসলামে আছে ফাতহুন বা বিজয় বলে শব্দ । আপনি পড়াশোনা করে বড় কিছু হলেন ও সমাজের সেবা করলেন - এটা হবে ইসলামের বিজয় বা ইসলাম বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অবদান রাখবে আপনার পড়াশোনা-জ্ঞান-দক্ষতা-যোগ্যতা ।
মিছিল-মিটিং আর ওয়াজ মাহফিল করে বর্তমান জামানায় মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় । কারণ এখন বুদ্ধির রাজনীতি চলে । গায়ের জোড় আর চাপার জোড়ের রাজনীতি এখন অচল ।”
কুরআন ও হাদিসের কোথাও ২৮ অক্টোবর পল্টন ট্রাজেডি দিবস পালন, বদর দিবস পালন, কুরআন দিবস পালন, ইসলামী শিক্ষা দিবস পালন, নবী দিবস পালন, ৬ ই ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন - করার কথা নেই । অথচ আপনার এসব পালন করছেন । আপনারা বিদাত ও কুফরী-শিরকী কাজ করছেন বলে মনে করি । আমার কথা যদি ভুল হয়, তাহলে বলুন, আপনারা ইসলামী নববর্ষ ও আশুরা পালন করেন না কেন ? এগুলোর মধ্যে কি কোন বরকত নেই ? শিক্ষনীয় বিষয় নেই ?
আপনারা ইসলাম কায়েমের কথা বলেন, ইসলামী খেলাফত কায়েমের কথা বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের কথা বলেন, অথচ সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক শাসকদের সমর্থন করেন কেন ?
পরিশেষে আপনাদের অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন :
১. আপনি যদি এত জ্ঞানীই হোন, তাহলে আমরা কীভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা-নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিশোধ নিবো ?
উত্তর : কুনুতে নাজেলা,খতমে খাজেগান, আয়াতে হেজাব এবং খতমে সাইফিল্লাহ পড়ে আপনারা চাইলে আপনাদের শত্রুদের বদ দুয়া করতে পারেন । এসবের ফল বহুল পরীক্ষিত ।
সুলতান মাহমুদ এসব আমল করার মাধ্যমেই আধ্যাত্মিকভাবে বলীয়ান হয়েছিলেন । সুলতান মাহমুদ কে তার পরিচয় আমি দিচ্ছি না ।
যদি আপনারা এসব পড়া বিদাত মনে করেন, তাহলে আমার কিছু বলার নেই ।
উপরন্তু এসব আমল করার কিছু নিয়ম কানুন আছে এবং উপযুক্ত শিক্ষকের কাছে এসব চর্চা করতে হয় । আর এসব আমল কারণ জন্য প্রেক্ষাপট আছে । যেমন : খতমে সাইফিল্লাহ – এমন এক আমল যা কোন দেশ অধিকার করার জন্য পড়তে হয় । এটা অত্যন্ত কঠিন একটা আমল । এই আমল একা করা যায় না। কম করে হলেও এক হাজার লোক মিলে এই আমল করতে হয় । প্রচন্ড নিয়মানুবর্তীতা অবলম্বন করতে হয় । এই আমল করেই হযরত শাহ জালাল রহ. অত্যাচারী হিন্দু শাসক গৌড় গোবিন্দ হতে সিলেট অধিকার করেছিলেন । তার আধ্যাত্মিক শক্তির কারণে গৌড় গোবিন্দ আগেই দুর্বল হয়ে পড়ে । ইসলামের আধ্যাত্মিক দিক আছে । আধ্যাত্মিকতা ছাড়া ইসলাম অচল । ইস্তেখারা নামাজটা পর্যন্ত আধ্যাত্মিক আমল । এক অর্থে প্রতিটা নামাজই আধ্যাত্মিক আমল । কারণ নামাজ মুমিনের মিরাজ স্বরুপ ।
আমার কথা অনেকেই বোঝবেন না । কারণ আপনাদের পাঠ্যসুচীতে এসম্পর্কে বলা নেই ।
২. আপনি এমন সব লেখা লিখেন যেগুলো ইসলামবিরোধী এবং আপনি আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার কাজ করছেন না ?
উত্তর : আমি কোন ইসলামবিরোধী লেখা লিখি না । আমি ইসলামের নামে ভন্ডামী-গোড়ামী-উগ্রতা-অদুরদশীতার বিরোধীতা করে থাকি এবং এই ব্যাপারে জনসচেতনামূলক লেখা লিখে থাকি ।
আমি মুসলিম । এক জন মুসলিম মাত্রই আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য সদা সচেষ্ট থাকে । ইসলাম প্রচার ও প্রসারের কাজ করে থাকি ।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবীন ।
https://www.facebook.com/fakhrul.info
বিষয়: বিবিধ
২০১৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা' আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
الرَّحْمـنِ الرَّحِيمِ
যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
مَـالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
যিনি বিচার দিনের মালিক।
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ
আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ
সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
اللهم اهدناو جميع المسلمين الصراط المستقيم ...أمين ثم أمين
যে হাত তলোয়ার ধরার ক্ষমতা রাখে, সে হাত দুর্বল না হওয়া অবধি কুনতে নাজেলা পড়লে সে দোয়া কবুল হবার কোনই সম্ভাবনা নাই, যে ধরনের সম্ভাবনা থাকেনা হাতের তালুতে লোম গজানো। ইমাম হোসাইন তরবারী চালিয়ে নিথর হয়েছিলেন কুনতে নাজেলা পড়ে চোখের পানিতে বুক ভিজান নাই।
আপনার সেই পরামর্শটি খুবই যুক্তিযুক্ত যে, মুসলমানদের লেখাপড়ার বেশী বেশী করে সময় দিতে হবে। বিদ্যার জগত তাদের করায়ত্ব করতে হবে।
আমি বর্তমান সময়ে জিহাদ করছি । আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী পোষাক নিষিদ্ধ করার বিরোদ্ধে আমি সোচ্চার । আমাদের যার যার অবস্হান হতে কাজ করে যেতে হবে । সবার কর্মপদ্ধতি এক হওয়া অসম্ভব ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন