ইসলামী ছাত্র শিবির সন্ত্রাসীদের সংগঠণ (২য় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৬ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:৫০:২২ রাত
এই ধারাবাহিক লেখার কোন ভুমিকা দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করছি না । এই ধারাবাহিক লেখাটা শুরু হবে কিছু খবর ও সেই খবরের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের লোকরা কীভাবে মিথ্যাচার করে ও জনসাধারনের কাছে ধর্মানুভতি ব্যবহার করে জনসমর্থন আদায় করার চেষ্টা করে তা তুলে ধরা হবে ।
[রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির কর্মীরা হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়ার পর হাবিবুর রহমান হলের মেঝেতে পড়ে আছে ছাত্রলীগ কর্মী বাদশা। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/ রাজশাহী, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১০]
বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে বারবার শিরোনাম হয়েছে জামাত শিবির কর্মীরা। যেভাবে একাত্তরে নৃশংসতম বাঙালি হত্যায় শিরোনাম হয়েছিলেন নিজামী-মুজাহিদ-কামারুজ্জামানেরা।
স্বাধীনতার এত বছর পরেও তারা ক্ষমতায় গিয়ে প্রতিশোধের হিংসায় জ্বলে উঠে রাজনীতির ছত্রছায়ায়।
[বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতিতে সবচেয়ে বর্বর ও নৃশংস সংগঠনের নাম হল ছাত্রশিবির। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থা 'ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির' দৃষ্টিতে শিবির একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ছাড়া আর কিছু নয়। ] ৮০ এবং ৯০ এর দশকে এরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সহ নানা শিক্ষাপ্রতিস্ঠানে মারামারির সময় প্রতিপক্ষের রগ কেটে আলোচনায় চলে আসে। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে রগ কাটা বন্ধ করে তারা তাদের মুখ রক্ষা করার জন্য যথারীতি ধর্মের পেছনে আশ্রয় নেয় - আর গত কয়েক বছর ধরে নির্লজ্জ ভাবে বলে আসছে... কে বলেছে আমরা রগ কাটি। পারলে দেখাক তো কেউ। কিন্তু যখন আবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে তখন ছাত্রশিবিরের নোংরা লোকজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার শুরু করেছে রগ কাটার বীভৎসতা। গা শিউরে ওঠে এদের বর্বরতা দেখলে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির একটি গবেষণা সংস্থা। বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে শিবিরের যোগাযোগ আছে বলে ওই সংস্থা মন্তব্য করেছে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অধীভুক্ত ন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম ফর দ্য স্টাডি অব টেরোরিজম অ্যান্ড রেসপন্সেস টু টেরোরিজমের (এসটিএআরটি) তৈরি ফাইলে ছাত্রশিবিরের পরিচিতিতে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাড়াও ছাত্রশিবির আরো বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী সংস্থার সঙ্গে জড়িত।
শিবিরকর্মীরা এদেশে জঘণ্যতম হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটায়।
এভাবেই পত্রিকায় শিরোনাম হয় তারা।
হরকাতুল জিহাদ এবং জামা'আতুল মুজাহিদীনের মতো বাংলাদেশের বিভিন্ন সন্ত্রাসী দলের কর্মী সংগ্রহের একটি ইউনিট হিসেবেও শিবিরের ভূমিকা আছে বেল সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফ্রন্ট হিসেবে শিবিরকে ব্যবহার করা হয়।
এসটিএআরটির তুলে ধরা এ পরিচিতি প্রসঙ্গে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি রেজাউল করীমের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে শিবিরের সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ছাত্রশিবির প্রমাণ করেছে, এ সংগঠনটি সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না। তাই কোনো ধরনের সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আরো বলেন, অনেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংঘর্ষ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে শিবিরের যোগসাজশের অভিযোগ করলেও তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এসটিএআরটি বিশ্বের বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের যে তালিকা করেছে, তাতে ছাত্রশিবিরেরও নাম আছে। আইনগতভাবে পরিচালিত হওয়ার দাবি করলেও ছাত্রশিবির 'নিঃসন্দেহে' একটি সন্ত্রাসী সংগঠন বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের এ সংস্থাটি।
এ গবেষণা সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশের বৃহৎ ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের আইনগত বৈধতা থাকলেও এটি মূলত একটি উগ্র সন্ত্রাসী দল এবং দীর্ঘ সময় ধরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অজানা সংখ্যক সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত এ জঙ্গি ছাত্র সংগঠনটি বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। এ লক্ষ্যে এটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতেও পিছপা হয় না।
এতে আরো বলা হয়েছে, ১৯৪১ সালে মূল সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় (যদিও তখন এর নাম ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘ)। বিশ্বের ইসলামী ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বর্তমানে এটি বৃহত্তর। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে এ সংগঠনের মূল ভিত্তি রয়েছে। এ ছাড়া দেশের বড় মাদ্রাসাগুলোতেও এর শক্ত অবস্থান ও প্রভাব রয়েছে।
শিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে এর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ছাত্রশিবিরের আক্রমণে বিগত বছরগুলোতে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই ফাইলে। ২০০০ সালে চট্টগ্রামে শিবিরের গুলিতে ছয় ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হওয়ার কথাও এতে উল্লেখ রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরের আওতায় ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সিলেন্সের অধীনে এসটিএআরটি কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটির কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। এটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হ্রাস এবং বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মনোবল বাড়াতে গবেষণা করছে।
এসটিএআরটিতে জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের উইলিয়াম এ অ্যান্ডারসন, ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্সের সুসান ব্রানডনসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
উপসংহার :
তরুন সমাজের কাছে ইসলামের আহবান পৌছানোর কথা শিবির বলে - তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট । সন্ত্রাস, মিথ্যাচার ও মওদুদী মতবাদ প্রচারই হলো শিবিরের প্রধান কাজ এবং শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করাই শিবিরের প্রধান কাজ ।
এব্যাপারে আমার কিছু লেখা আছে । সবাইকে দেখার অনুরোদ করছি :
ইসলামী ছাত্র শিবির হলো মিথ্যা ও সন্ত্রাসের প্রতিচ্ছবি (১ম পর্ব)
( http://www.bd-monitor.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/66240 )
শিবির নেতা মীর কাসেম আলীরও ফাঁসি
( http://www.bd-monitor.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/67670 )
বিষয়: বিবিধ
৫১৪৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন