বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হা (২য় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২০ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:৩৯:৪৯ রাত
https://www.youtube.com/watch?v=_8VWxZKWJ3Y
https://www.youtube.com/watch?v=6a77s097Qvw
আমি সোনার বাংলাদেশ ব্লগ নামে একটা সাইটে লেখতাম । এক দিন তিউনিসিয়ার মেয়েরা কীভাবে স্বৈরাচার জয়নালকে তাড়া করে সৌদি আরবের বাদশাহর পায়ের কাছে নিয়ে লাথি মেরে ফেলে দিলো তার বিবরণ দিয়েছিলাম । এই লেখাটা লিখতে যেয়ে নিকাব ও বোরকা পরাবাংলাদেশি মেয়েদের সংগঠণ ইসলামী ছাত্রী সংস্হা-র মেয়েদের কথা প্রসঙ্গক্রমে লিখেছিলাম । এই লেখা পড়ে এই সংগঠণের এক কর্মী আমাকে বার্তা পাঠান । তিনি বার্তাতে লিখেন :
“
প্রেরক: নাম উল্লেখ করা হতে বিরত থাকলাম (উপরন্তু তিনি ছদ্দ নামে লিখেন ও তার আসল নাম উল্লেখ করেননি । আর এই সংগঠণের মেয়েরা সাধারণ মেয়েদের মধ্যেও তাদের আসল নাম ও পরিচয় উল্লেখ করেন না । ) ।
প্রেরণের সময়: ২৭ জুন ২০১২, সকাল ০৯:৫৪
আমি মন্তব্য না করে বার্তা পাঠাচ্ছি কারন সবগুলো লিংক এখনো আমি দেখি নি।সময় পাচ্ছি না।
ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কথাটা সরাসরি বললেন কেন?
আর... "আপনার ছবি আকার খাতাটা সম্পর্কে বোরকা ও নিকাব পরা মেয়েরা প্রশ্ন না করে তারা অনেক কিছু হতে বঞ্চিত হয়েছে" এইটুকু না জানলে কি মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাতো ?
https://www.youtube.com/watch?v=y6S8iQ5KSkU
মেয়েদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ থাকা উচিত - এটা আমি মনে করি। কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারছি না তিউনিশিয়ার যে বোনদের উদাহরণ আপনি দিলেন সেটাকে কিভাবে আদর্শ মনে করেন ? ন্যুনতম সতরও তাঁরা রক্ষা করছে না। যা হোক আর কিছু মনে আসলে পরে বলবো।
আমি যদিও এখনো ছোটই বলা যায়।তবুও আন্দোলনের কিছু কিছু গোঁড়ামী নিয়ে কথাবার্তা বলি আমার সার্কেলে সেটা আমাদের অনেকেই পচ্ছন্দ করে না।
https://www.youtube.com/watch?v=GBqx6sbtL4E
আপনার লেখাগুলো মাঝে মাঝেই পড়ি।কিন্তু আপনি বেশি প্রগতির কথা বলতে গিয়ে মুলনীতি গুলোকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন বলে আমার মনে হচ্ছে।
তবে নতুন নতুন চিন্তা করা উচিত।আপানর কিছু কিছু উদার দৃষ্টিভঙ্গি আমার ভালো লাগে।আল্লাহ আপনাকে ও আমাদের চিন্তাগুলোকে সঠিক পথে পরিচালিত করুক।
আপনার বোন। “
উত্তর :
প্রিয় বোন,
আস সালামু আলাইকুম । আপনাকে আমার হৃদয়ের অন্তস্হল থেকে শুভেচ্ছা ।
আমি পর্যায়ক্রমে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি :
১. প্রশ্ন : ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কথাটা সরাসরি বললেন কেন?
উত্তর : আমি আমার এক লেখায় ইসলামী ছাত্রী সংস্হা এবং বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের পরিবারের মেয়েদের কথা বলেছি । কারণ আমি এসব সংগঠণের সবাইকে ভালবাসি । ভালবাসার লোকদের কথা তো লেখায় আসবেই । তাদের ভাল মন্দ সবই নিয়েই তো আমি লিখবো । কারণ আমি লিখি এবং ভালবাসি তাদেরকে ।
আমি মনে করি ভালবাসা ছাড়া মহৎ কিছু সৃস্টি করা যায় না। তারা মহৎ কিছু সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন । তারা আমাদের দেশটাকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে চায় । আমাদের দেশকে ইসলামের আদর্শের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চায় । তারা ভালবাসে ইসলামের সুমহান আদর্শকে ।
আলোচিত ছাত্রী সংস্হার মেয়েরা দুপুর আড়াইটা না খেয়ে কোন প্রোগ্রাম করার জন্য যাচ্ছিল যা তাদের কথায় বোঝা যাচ্ছিলো । আমি যে গাড়িতে ছিলাম, তাতে তারা আমার সামনা সামনি বসে ছিলেন । আমি মাথা নিচু করে তাদের কথা শুনছিলাম । খুব আস্তে আস্তে তারা কথা বলছিলেন । তবে তাদের কথা বোঝা যাচ্ছিলো । কারণ রাস্তায় খুব একটা শব্দ হচ্ছিলো না । গাড়িতে লোক বলতে আমরা ছিলাম ৮ জন । আমি আর একটা স্কুলে পড়া একটা ছেলে ছাড়া বেশীর ভাগই ছিল বিভিন্ন বয়সের মেয়ে ।
গাড়িতে থাকা আপুদের কাউকেই আমি চিনি না । তাই আমিও আমার ব্যাপারে সতর্ক ছিলাম । তবে এক পলকে যা বুঝলাম । তাদের মধ্যে একজন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এই সংগঠণে এবং খুব সম্ভব ধনী লোকের মেয়ে । বড় জোড় ক্লাস সেভেন বা এইটে পড়ে । তার কথায় বোঝা গেলো তার পড়া আবআয়া বা বোরকাটার দাম দশ হাজার টাকা । সে বোরকা পরা অবস্হায় থাকলেও সে তার মুখ খোলা রেখেছিল যা সাধারণত ছাত্রী সংস্হার মেয়েদের থাকে না ।কারণ ছাত্রী সংস্হার অফিসিয়াল ড্রেস কোড কালো বোরকা ও নিকাব ।
আমি মুখ খোলা থাকাকে খারাপ কিছু মনে করি না । তবে অতিরীক্ত সাজগোজ ও মেকাপ করাকে দোষণীয় মনে করি ।
যেহেতু মেয়ে দুইটা ছাত্রী সংস্হার, এজন্য ছাত্রী সংস্হার কথা উল্লেখ করলাম । উপরন্তু এসব সংগঠণ আমার প্রিয় । তাই এই লেখায় উল্লেখ করার মাধ্যমে আমি এসংগঠণের পক্ষে প্রচার কাজ চালালাম যাতে লোকেরা বুঝতে পারে এ নামে মেয়েদের সংগঠণ আছে যারা ইসলামের কাজ করার জন্য ঘরের বাহিরে যায় এবং অন্য সব সাধারণ মেয়েদের মতো সাজ গোজ ও পরচর্চা-পরনিন্দা-বেপর্দা-অনৈসলামীক কাজ করে না ।
২. "আমার ছবি আকার খাতাটা সম্পর্ক প্রশ্ন না করে সে অনেক কিছু হতে বঞ্চিত হয়েছে" এইটুকু না জানলে কি মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে?
উত্তর : আমি ক্লাস এইট হতে ছেলে মেয়ে পড়াই । একটা কলেজেও পড়াতাম । বেশ কয়েকটা আইটি ফার্মে পড়াতাম । এখনও পড়াই খন্ডকালীনভাবে । প্রায় পনের বছের অভিজ্ঞতায় যা বুঝেছি এবং মানুষের মন সম্পর্কে যতসব বই পড়েছি তার উপর নির্ভর করে বলেছি : মুখ খোলা ছোট মেয়েটা অনেক কিছু হতে বঞ্চিত হয়েছে । কারণ তার চোখে মুখে ছিল জানার অদম্য আগ্রহ । তার ছিল অনুসন্ধেচ্ছু মন ও শেখার আগ্রহ । এই আপুটার সাথে বড় আপু না থাকলে আমাদের এই ছোট আপু আমার খাতা সম্পর্কে অবশ্যই প্রশ্ন করতো ।আমার এই খাতাটা ছিল ছবি আঁকার খাতা । এই খাতাতে ছবি আঁকার সব ধরনের কলা-কৌশল লেখা ছিল । আর আমার আঁকা অনেক ছবিও ছিল । আমার কাছে প্রশ্নের উত্তর পেলে সে হয়তো একজন চিত্র শিল্পী , ভাস্কর, ক্যালিওগ্রাফার, ফটোগ্রাফার, সাংস্কৃতিক সংগঠণের কর্মী, ডিজাইনার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও ফ্যাসন ডিজাইনার হতে পারতো । কারণ আমি আমার অভিজ্ঞতার থেকে বলছি ।
এক বার আমার পরিচিত অনেক ছেলে - মেয়ে মেডিক্যাল কলেজে পড়তে চায়নি । তারা বুয়েটে পড়তে বা অনত্র পড়তে চেয়েছিলো । মৃত দেহ কাটতে হবে এই ভয়ে । কিন্তু আমি তাদের সাথে কথা বলার মাত্র দশ মিনিটের মাথায় তারা সিদ্ধান্ত নেয় মেডিক্যাল কলেজে পড়বেই না বরং এবিষয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে মানুষের সেবা করবে । আল্লাহ চাহেত আমি তাদের নিয়ে পোস্ট দিবো এবং এই সাইটে এমন ছবি দিবো তাতে দেখা যাবে তারা মরা মানুষের শরীর কাটাকাটি করছে । খুব সম্ভব বাংলা ব্লগ সাইটে এমন ছবি কেহ এপর্যন্ত দেয়নি ।
আমাদের দেশে ইসলামী ভাবাপন্ন লোকদের মাঝে চিত্র শিল্পী , ভাস্কর, ক্যালিওগ্রাফার, ফটোগ্রাফার, সাংস্কৃতিক সংগঠণের কর্মী, ডিজাইনার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও ফ্যাসন ডিজাইনার প্রভৃতির অভাব রয়েছে বলে অনৈসলামিক লোকরা আমাদের মাঝে অনৈসলামিক শিল্প চর্চা ও অনৈসলামীক পোষাকের প্রচার ও বিস্তার ঘটাচ্ছে ।
আপনি হয়তো জেনে থাকবেন চার দলীয় জোট ক্ষমতায় থাকার সময় আড়ং ফ্যাসন হাউজ তাগা নামক পোষাক জনপ্রিয় করে যাতে ওড়না অনুপস্হিত ছিল । এই পোষাক মেয়েদের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয়তা পায় । আমার ছাত্রীরা আমার সাথে পড়া সহপাঠিনীরা এপোষাক পড়েছিলো । কিন্তু কোন ইসলামপন্হী লোক এই পোষাকের বিকল্প ইসলামী পোষাক তৈরী করতে পারেনি ।
বাস্তবতা বলে বন্দুকের যুদ্ধ বন্দুক দিয়ে হয় । বন্দুকের সাথে তলোয়ার জয়ী হতে পারে না । ঠিক তেমনি তাগা নামের এই পোষাকের বিরোদ্ধে ”আলা” ( আমার পরিকল্পিত মেয়েদের জন্য তৈরী করা এধরণের পোষাক, যাতে বিশেষ ধরণের ওড়না, সেলোয়ার, কামিজ ও জুতার সমান্ময় ঘটানো হবে ) জনপ্রিয় করা দরকার ছিল চার দলীয় জোটের অংশিদার জামায়াত-কে । তখন কিন্তু অপি করিম কালো বোরকা পরে লাক্স সাবানের বিজ্ঞাপন করেছিলো । (অপি করিমের এই বিজ্ঞাপনটা অনেক খুজেছি । পাইনি । ) । অপি করিম তখন খুব শালীনভাবে মিডিয়ায় উপস্হিত হতো । কারণ তার ধারণা ইসলামী সরকার ক্ষমতায় । উল্টা পাল্টা কিছু করলে খবর আছে ।
https://www.youtube.com/watch?v=9gH0Pvaddzo
কিন্তু ইসলামপন্হী দলগুলো বা আমরা যারা ইসলামী লোক তাকে ব্যবহার করতে পারলাম না । কারণ আমাদের এই লাইনে লোক নেই । আর চিত্র নায়ক মিঠুন ও ইলিয়াস কাঞ্চনের মতো লোক থাকলেও তাদের আমরা ব্যবহার করতে পারছি না বা তাদের মূলধন সরবরাহ করছি না ।
৩. মেয়েদের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গ :
মেয়েদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ নিত হবে ।মেয়েদের শরীর চর্চা করতে হবে । সাঁতার শিখতে হবে । খেলাধুলা করতে হবে । তবে ইসলামী নীতিমালা মেনে । এব্যাপারে ইসলামে কোন বাধা নেই । আমি এবিষয়ে আল্লাহ চাহেত লেখা দিবো ।
আমি মনে করি, সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং ছেলেদের মন বুঝার ক্ষমতা অর্জন করাও প্রয়োজনীয় এবং অপরিহার্য । কারণ :
১. এসব কাজ ইসলাম অনুমোদন করে । আমার কাছে দালিলিক প্রমাণ আছে ।
২. আমাদের দেশের চার পাশে শত্রুরা অবস্হান করছে । ভারতের আরএসএস ও দুর্গা বাহিনী পশ্চিমবঙ্গে অবস্হান করছে । যে কোন সময় তারা বাংলাদেশ আক্রমন করে বাংলাদেশের মুসলিমদের ক্ষতি সাধন করার ক্ষমতা রাখে । শত্রু দেশের মেয়েরা প্রকাশ্যে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে । আর আমাদের দেশের মেয়েরা এসব দেখে বসে থাকবে যা তাদের দেশপ্রেমকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে ।
৩.মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশল জানতে হবে ।কারণ এটা তাদের অধিকারের আওতায় পড়ে ।
৪.ছেলেদের মন বুঝার জন্য পড়াশোনা করতে হবে এবং খারাপ ছেলেদের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে শরীর চর্চা ও আত্মরক্ষার কৌশল জানতে হবে । আমাদের সমাজে কত মেয়ে বড় ধরণের বিপদে পড়ে নিরবে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাদছে শুধুমাত্র এসব দিকে অজ্ঞ থাকার জন্য ।এরা তাদের কষ্টের কথা বলতে পারছেও না । এসব বিষয়ে তাদের অগ্রজাবৃন্ধ কোন দিক নির্দেশনা না দিলেও তারা আমাদের আপুদের কীভাবে বিয়ের পর কৃতদাসী হওয়া যায় তার প্রশিক্ষণ ভালভাবেই দেন । আর অনেক মেয়ে ভারতীয় টিভি চ্যানেল দেখে মিথ্যা স্বপ্নে মোহাবিষ্ট থাকে । ফলে তারা বাস্তবতা বুঝতে পারে না ।
৪. আপনি লিখেছেন : আমি এটা বুঝতে পারছি না তিউনিশিয়ার যে বোনদের উদাহরণ আপনি দিলেন সেটাকে কিভাবে আদর্শ মনে করেন? ন্যুনতম সতরও তাঁরা রক্ষা করছে না।
উত্তর : মেয়েরা সব কিছু করবে শালীন পোষাক পড়ে ।আমি এসম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছি এই দুই পোস্টে :
(সোনার বাংলা ব্লগ সাইটটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লেখা দুইটা সংগ্রহে নেই । তবে এই সাইটে পোষাক বিষয়ক ও শালীনতা সম্পর্কে আমার বেশ কিছু লেখা আছে । মূলত এই লেখাগুলো সেই লেখারই পরিমার্জিত রূপ ) ।
তিউনিসিয়া স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সেখানে ইসলামী পোষাক পড়া অবৈধ ছিল । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শালীন পোষাক পরা নিষিদ্ধ ছিল । ওড়না পরা নিষিদ্ধ ছিল । সুতরাং আপুরা এপোষাকের ব্যাপারে অনেকটা অজ্ঞ এবং ইসলামী পোষাক পড়া হতে প্রায় তিন প্রজন্ম তিউনিসিয়ার আপু, খালাম্মারা বিচ্ছিন্ন ছিলেন । ইসলামী সংগঠণের লোকরা কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে মৃত্যুর প্রহর গুণছিলেন । অনেকে বিদেশে হিজরত করছিলেন । দেশে ছিলো না কোন ইসলামের অভিভাবক । কিন্তু হঠাৎ এক দিন মুহাম্মদ বুআজিজি ভাই আত্মাহুতি দিলেন । আমাদের এই আপুরা জেগে উঠলেন । এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না । তারা যে যার অবস্হায় ছিলেন তারা সে অবস্হায় রাজপথে বেড়িয়ে আসলেন । তারা রাস্তায় ফেরাউনের প্রেত্মার পেটুয়া বাহিনীর বিরোদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন । তার পরবর্তি ঘটনা অবশ্যই জানেন । আপু ! এই পরিবর্তনের ঢেউ এখন মিসরে এসেছে । (পরবর্তীতে মোহাম্মদ মুরশীর দল ক্ষমতায় আসে । সৌদি আরবের বাদশাহ মুহাম্মদ মুরশী ও তার দলের লোকদের হত্যা করছে মিশরের সেনা বাহিনী দিয়ে । কারণ সৌদি আরব সত্যিকার ইসলামী দেশ নয় । সৌদি আরব ওহাবী মতবাদ অনুযায়ী চলে । ইসলাম অনুযায়ী চলে না। ) এই ঢেউ যাতে আমাদের দেশে আসে এজন্য আমি আমাদের আপুদের জেগে উঠতে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিচ্ছি ।
এখন তিউনিসিয়ায় নতুন সরকার এসেছে । এখন হিজাব বা ইসলামী পোষাক পড়তে তো কোন বাধা দেওয়া হয় না । বরং সরকার উৎসাহিত করে । এখন প্রায় সব আপু হিজাব বা ইসলামী পোষাক পড়ে । আপনি চাইলে নেটে এসব আপুদের সাথে কথা বলতে পারেন ।
৫.আপনি লিখেছেন : আমি যদিও এখনো ছোটই বলা যায়। তবুও আন্দোলনের কিছু কিছু গোঁড়ামী নিয়ে কথাবার্তা বলি আমার সার্কেলে সেটা আমাদের অনেকেই পচ্ছন্দ করে না।
উত্তর : একটা কথা মনে রাখবেন । আজ যে ছোট আগামী দিন সে বৃদ্ধ হবে । সুতরাং জ্ঞান, প্রজ্ঞা আর নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জনের সাথে সাথে ভাল ছাত্রী হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাবেন । তারপর কমপক্ষে চালিয়ে নেওয়ার মতো বেশ কয়েকটা ভাষা শিখবেন (ইংরেজি, আরবী , ফরসী, রুশ, চীনা বা অন্যান্য )। প্রতি দিন বিভিন্ন বই পড়বেন । প্রয়োজনে লাইব্রেরীতে পড়তে যাবেন । এজন্য আপনাকে সৃষ্টিশীলতা আয়ত্ব করতে হবে । আয় বর্ধক কাজ করবেন । এসব কাজ করতে যেয়ে প্রয়োজনে আপনার ইসলামী সংগঠণের কাজ কমিয়ে দিবেন । ( কীভাবে মেয়েরা সৃষ্টিশীলতা অর্জন করা যায় ও আয় বর্ধক কাজ করা যায় তার উপর আল্লাহ চাহেত পোস্ট দেওয়ার ইচ্ছা আছে ।) কারণ বর্তমানে সাংগঠণিক কাজের নামে যা হচ্ছে এগুলো কোন ইসলামী কাজ হতে পারে না এবং তা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির কারণ হবে । এক্ষতি কোন ইসলামী সংগঠণ পূরণ করতে পারবে না । অদুরদর্শী, পদলোভী ও দুনিয়াপুজারী নেতারা এসব বুঝতে পারছেন না । বিশ্বের কোথাও এভাবে ইসলামী আন্দলোন পরিচালিত হয় না । বিশেষ করে ইসলামী ছাত্র সংগঠণের ছাত্রগুলো আত্মঘাতী পক্রিয়ায় এগিয়ে চলছে ( আমি মেয়েদের খবর একে বারেই জানি না । )।
আন্দোলনের গোঁড়ামীপুর্ণ কাজ নিয়ে কথাবার্তা বলে যেতে হবে । প্রয়োজনে ব্লগ ও সোসাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলোতে এব্যাপারে কাজ করে যেতে হবে । কারণ আমার অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণে অধিকাংশ নেতৃস্হানীয় লোকগুলো দুনিয়াদার, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, কুপমন্ডুক, গোড়া, অর্থলোভী, আপোষকামী, অমুসলিমদের সাথে আতাতকারী, অনেক ক্ষেত্রে জনবিচ্ছিন্ন ও জনবিরুধী এবং নিজ সন্তান ও পরিবারের প্রতি অতিমাত্রায় বশীভুত । তারা ইসলামী সংগঠণগুলোকে পারিবারিক বা লিমিডেট কোম্পানীর মতো বানিয়ে ফেলেছেন । আমি জানি না এতক্ষণ পর এসব কথা শুনে আপনার কেমন লাগছে ? আমার মনে হয়, আপনার খারাপ লাগছে । আপু খারাপ লাগলে কি করবো । আমি তো এসব অনুসন্ধান করে বুঝেছি ও পেয়েছি ।
৬. আপনি লিখেছেন : আপনি বেশি প্রগতির কথা বলতে গিয়ে মুলনীতি গুলোকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন বলে আমার মনে হচ্ছে।তবে নতুন নতুন চিন্তা করা উচিত।আপানর কিছু কিছু উদার দৃষ্টিভঙ্গি আমার ভালো লাগে।আল্লাহ আপনাকে ও আমাদের চিন্তাগুলোকে সঠিক পথে পরিচালিত করুক।
উত্তর : মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)-তার সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রগতিশীল । তিনি যেসব কাজ তার সময়ে নিয়েছিলেন সেগুলো তার সময়ে সবচেয়ে বেশী প্রগতিশীল ছিলেন ।তিনি আমাদের প্রগতিশীল হওয়ার জন্য নির্দেশন দিয়েছেন । আর এজন্য তিনি পড়তে বলেছেন, হিকমা (বিজ্ঞান)অর্জন করতে বলেছেন । এসম্পর্কিত তার দুশত বাণী (হাদিস)আমার সংগ্রহে আছে । এসব পেরেই আমি অনেক নিবন্ধ ও পোস্ট লিখতে উৎসাহিত হয়েছি ।
আমি মোটেও ইসলামের মূলনীতিকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি না । আমাদের প্রচলিত ইসলামীক ধ্যান ধারণা উপনিবেশিক শাসক ও অমুসলিমরা ঢুকিয়েছেন । এধরণের বেশ কিছু উদাহরণ আমি কোন পোস্টে উপস্হাপন করবো । দেখুন, কওমী মাদ্রাসা, দেওবন্দ আর তাবলীগ জামাতের ধ্যান ধারণার সাথে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পোষা আলেমদের সাথে মিলে যায় । রহস্য তো এখানেই । হামজা ইউসুফ নামক এক জন্মগত আমেরিকান ও নব্য মুসলিম কিন্তু ইসলামী স্কলারের লেখা আমার হাতে আসে ৯-১১ এর পর । তাতে দেখতে পাই, ইসলামে জিহাদ বলে কিছু নাই , মেয়েদের বেশী পড়াশোনা করা যাবে না, মেয়েরা ঘরে থাকবে, তাদের পুজা করবে । এসব লেখা আছে । কিন্তু আপু এখন আমাদের বুঝতে হবে, তারা অসৎ উদ্দেশ্যে এসব বলছে ও লিখছে । ইসলামী ফাউন্ডেশন হতেও এধরনের কথা সমৃদ্ধ বই বের হচ্ছে ।যার এসব বই লিখছে তাদের আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র টাকা দিচ্ছে ইউ.এস.এইড এবং একশন এইড এজাতীয় এনজিও-র মাধ্যমে টাকা দেওয়া হচ্ছে । অথচ এসব এনজিও সরকারের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়ায়ন, পদায়ন ও কাজে অংশগ্রহন সম্পর্কে অনেক কথা বলে । এদের উদ্দেশ্য ইসলামকে হেয় করা ও জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো যাতে মানুষ ইসলাম হতে দুরে সরে যায় । আর আমাদের ধার্মিক মেয়েরা ঘরের মধ্যে আবদ্ধ থেকে তাদের প্রতিভাকে বিনষ্ট করে যাক – এটার পথ ও পদ্ধতি তারা আবিষ্কার করেছে । কারণ একটা সময় আসবে মুসলিম বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ হবে নারী সমাজ ।আমরা যদি আমাদের আপুদের সেই সময়ের জন্য মানষিকভাবে তৈরী না করি তাহলে আমাদের অনাগত মেয়ে সন্তানরা অমুসলিমদের সাথে পেরে উঠবে না ।
বর্তমানে মুসলিম জনসংখ্যার মধ্যে নারীদের সংখ্যা ৫০ % -এর উর্ধ্বে ছাড়িয়ে গেছে । এই কয়েক শতাব্দী শেষে মুসলিম জনসংখ্যার ৬০ % হতে পারেন নারী । সুতরাং তাদের নিয়ে এখন থেকেই চিন্তা ও গবেষণা করতে হবে ।
অমুসলিম মেয়েরা সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে যাদের বলা হতো নরকের দরজা, আত্মহীন আর পুরুষের কৃত দাসী । অথচ তারা জল-স্হল- অন্তরীক্ষ দাপিয়েই বেড়াচ্ছে না, মুসলিম মেয়েদের হত্যাই না ইসলামের নাম নিশানা মুছে ফেলার জন্য প্রকাশ্যে সমরাস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন । আর ওদিকে আপনাদের আসল ইসলাম চর্চাকারীদের পরিবারের মেয়েরা বডি গার্ড নিয়ে চলাফেরা করেন এবং ক্ষেত্র বিশেষে তাদের দ্বারাই অপবিত্র হয়ে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেদে বুক ভাসালেও ধর্মে বিধান হিসেবে তা মনে করে আত্মতৃপ্তি পায় ।
আল্লাহর হুকুম মুসলিম মাত্রই পালন করতে হয় । আমি আল্লাহর গোলাম বলেই আল্লাহর বান্দিদের জেগে উঠতে বলেছি । কারণ এদের আমরা চার পাশে দেখতে পাই । যখন দেখি তারা ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে আমারই সামনে তখন নিজেকে ভীষণ অসহায় মনে হয় । তাদের মধ্যে আমারও মেয়ে থাকতে পারে কোন সময় হয়ত । আমার ভবিষ্যত মেয়ে বা তার যুগের মেয়েরা যেনো ইভটিজিং আর অপবিত্রতার শিকার না হতে পারে এবং বিশ্ব জয় করতে পারে, জল-স্হল-অন্তরীক্ষে দাপিয়ে বেড়িয়ে মানুষ সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে সেজন্যই আমি লিখে যাচ্ছি ।
তবে আল্লাহর হুকুম বলতে যদি পতি ভক্তি বলে থাকেন তাহলে তারা তাও পতিভক্তিপরায়ণা হবে ।
আমার লেখায় যদি ইসলাম বিরোধীতা আছে তা দেখিয়ে দিন । ইসলামে জিহাদের কথা আছে । ইতিহাসের বিভিন্ন উপাত্ত হতে জানা যায়, ইসলামের প্রথম শহীদ আর বিয়ের রাতে স্বামীর সঙ্গ লাভ না করেই অমুসলিমদের সাথে যু্দ্ধ করে আট জন অমুসলিমকে হত্যা করে শাহাদাত বরণ করেছেন এমন মহিলা সাহাবীও রয়েছে । সুতরাং আমি আল্লাহর বান্দিদের জিহাদের কথা , পড়াশোনায় অগ্রগামী হওয়ার কথা, চিন্তার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করার কথা, নরপিচাশদের দ্বারা অপবিত্র হলে কি করণীয় এবং তারা চেষ্টা করলে কি না পারে তা বলায় অনৈসলামিক কি আছে ? বরং আমি মনে করি, এগুলো ইসলামি কাজ ।
আমি বিন্দু মাত্র আল্লাহ ও রাসুলের বিরুদ্ধে কথা বলছি না । আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অমান্য করছি না । আমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিধানকে এক বিংশ শতাব্দীতে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চাই । এটা আমার স্বপ্ন । তাই আমি আমার আপুদের সচেতন করছি মাত্র ।
দেখুন, কুরআনুল কারীমে ফরজ ও অন্যান্য কাজ ছেলেদেরকে সম্বোধন করেই বর্ণনা করা হয়েছে । কিন্তু মেয়েরাও সেই হুকুমের অন্তর্ভুক্ত । যেমন দেখুন, হে পুরুষ ! তোমারদের জন্য স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ঘনিষ্ঠতম অবস্হায় যাওয়ার জন্যও ছোয়াব আছে ।
দম্পতিরা যদি আল্লাহর হুকুম মতো পরস্পরের সাথে ঘনিষ্ঠতম অবস্হায় যায় তাহলে উভয়ই ছোয়াব পাবেন । এবং এই বরকতময় কাজকে সাফল্যমন্ডিত ও স্বাচছন্দ্যময় করা উভয়ের দায়িত্ব ।
ঠিক তেমন মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে নিত ও মুসলিমদের সম্মানজনক অবস্হায় পৌছে দিতে মেয়েদেরও সব করতে হবে সুচারুভাবে ইসলামের নীতিমালার আলোকে । এতে অবশ্যই মেয়েরা ছোয়াব পাবেন । এরা জাহান্নামে তো যাবেই বরং পৃথিবীতে জান্নাতে যাওয়ার পরিবেশ তৈরী করবে । আগে পৃথিবীতে জান্নাতে যাওয়ার পরিবেশ তৈরী করলে আখেরাত জান্নাত পাওয়া সহজতর হবে ।
আজ আর নয় । আশা করি, এধরনের প্রশ্ন করে আমাকে উৎসাহিত করবেন । কারণ ভাল ভাল প্রশ্ন নতুন নতুন লেখার বিষয় বের করতে এবং চিন্তার পরিশুদ্ধতাকে এগিয়ে নেয় । আপনার প্রশ্নগুলো আমার ভীষণ ভাল লেগেছে ।আশা করি, ভবিষ্যতেও এধরনের প্রশ্ন পাঠানো অব্যহত রাখবেন ।
জাজাকাল্লাহ ।
বিনীত
আপনার ভাই
ফখরুল ইসলাম
৮ ই সাবান ১৪৩৩ হিজরী (২৮ শে জুন ২০১২ খৃষ্টাব্দ)
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হা (১ম পর্ব) পড়ুন এই লিংক হতে :
http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/69880
বিষয়: বিবিধ
২৮৬৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি চরম সত্য ও সুন্দরের কথা লিখি ।
আমি চিতা বাঘের মতো ক্ষীপ্র চেতনাধারণকারীদের কথা লিখি ।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
আপনার যদি কোন মেয়ে থাকে বা বোন থাকে আপনার উচিত আমার এই লেখাটা পড়তে বলা ।
আমার এই লেখা পড়লে বল্লে অন্তত আপনার মেয়ে বা বোন একটা জিনিস শিখতে পারবে, তাহলো :
প্রশ্ন কীভাবে করতে হয় ?
আমরা প্রশ্ন করা জানি না । জানি বলে শিখতে পারি না ।
আর প্রশ্নের উত্তর দিতেও জানি না । জানি না বলেই আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান হয় না ।
আমি খারাপকে খারাপ বলি । আমি ভালকে ভাল বলি ।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
.
.
সালাম...
আমি না হয় পাগল ।
লেখাটা তো কেমন হলো - তা একটু বলুন ।
লেখাতে ভুল কিছু আছে - কি না বলুন ।
.
.
.
সালাম...
মন্তব্য করতে লগইন করুন