বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হা (১ম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:২৯:৪৮ সন্ধ্যা
https://www.youtube.com/watch?v=_8VWxZKWJ3Y
বাস্তব ঘটনাকে অবলম্বন করে একটা উপন্যাস লেখার চেষ্টা করছিলাম । কিন্তু পারছি না । কারণ এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেত্রী । আমি প্রচন্ড হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি । এই উপন্যাসের সামান্যতম অংশ নেটে দিয়েছি । দেওয়ার পর হতেই কিছু ইসলামী সংগঠণের লোক আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে । আমি নাকি আল্লাহভীরু মহিলাদের ও তাদের পোষাক নিকাব ও বোরকাকে কটাক্ষ করছি ।
আমি বিনীতভাবে সবাইকে বলছি :
১। আমি মুসলিম । তবে উগ্র ও চরমপন্হী নই । কারণ ইসলাম বিনয়ী ও মধ্যমপন্হীদের ধর্ম ।
২। ইসলাম পালন করার নামে মেয়েদের পোষাক পরার ক্ষেত্রে বা পর্দা রক্ষার নামে সমাজে যা করা হচ্ছে তা মেয়েদের জন্য জুলুম - বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হা - র সাতে সম্পৃত্ত অনেক আপু আমার এই কথার সাথে এক মত হয়েছেন । এব্যাপারে অনেকে কয়েক বছর আগে মেইল করে বা বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন ।
আজ আমি এমন একটা ইমেইলের বার্তা ও তার উত্তর শেয়ার করছি ।
যিনি আমাকে এই চিঠি বা বার্তা লিখেছেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে পড়তেন । তার সাথে আমার কখনোই সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি । আমি ইচ্ছে করলে তার সাথে যে কোন সময় দেখা করতে পারতাম । কারণ মেইলের উত্তর দেওয়ার কাছাকাছি সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন একটা প্রোগ্রামে কিছু দিন আমার পড়ার সুযোগ হয়েছিলো ।
https://www.youtube.com/watch?v=0LfUmZIsPtE
প্রিয় ভাইয়া,
আসসালামু আলাইকুম।
আপনি আমার অনেক অনেক বড়।
আমার ধারণা মতে আপনি শিক্ষক হিসেবে চমৎকার।
আমি কিন্তু ছাত্রী হিসেবে খুব খারাপ নই।আমার খুব ভালো লাগছে যে আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছি।আলহামদুলিল্লাহ।আল্লাহ আমাকে এটুকু সুযোগ করে দিয়েছেন।Islamic minds গ্রুপে আমাকে স্বাগত জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।
সংগঠনের সাথে আমার মত মিলছে না অনেক কিছুতে।আমি আসলে এখনো অনেক ছোট এইসব পরিস্থিতি কেমনে সামাল দিতে হয় তা ভালোভাবে জানি না।আমি ধৈর্যও ঠিক সবসময় বজায় রাখতে পারি না।এইজন্য একটা হতাশাও কাজ করে।কিন্তু আমি আন্তরিকতার সাথেই বলতে চাই.......হয়তো আমারি ভুল ঠিকভাবে বুঝাতে পারি না।
আমি এখন সেলফ ডেভলপমেন্ট নিয়েই চিন্তা ভাবনা করছি বেশি।কারণ ভিত্তিটা দৃঢ় না হলে যত যাই করি কোন অর্থই থাকবে না।আত্মশুদ্ধি এই মুহূর্তে আমার মেইন টার্গেট।
"সকালে দেখি মডারেটররা আমার পোস্ট মুছে দিয়েছেন এবং নোটিফিকেশন পাঠিয়েছেন ।"
সোনার বাংলাদেশ ব্লগের মডারেটররা নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করার জন্য এইসব করছে।একদমই উচিত না।আপনি দেখেন আপনাদের ইসলাম নিয়ে অসাধারণ লিখাগুলো স্টিকি হচ্ছে না কিংবা সম্পাদক দ্বারা নির্বাচিতও কম হয়।অথচ কি যে আগডুম বাগডুম টাইপ লিখা নির্বাচিত হতে দেখি।আমার হাসি পায়।
এদের স্ট্রাটেজি চেইন্জ হওয়া উচিত।প্রথম আলো, সামু ইত্যাদি ব্লগকে তো দেখি না নিজেদের আদর্শকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে।আমরা কেন ভয় পাব.....?
আপনারা সিনিয়ররা বলুন মডারেটরদের।
" জানলাম ইসলাম সম্পর্ক তাদের ধারণা খুবই কম । আমি বুঝতে পারছি না কেন মেয়ের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান কম । তাদের মা আর বাবারা তো তাদের সামান্য হলেও জ্ঞান দিয়েছেন । তারপরও এঅবস্হা হবে কেন ? এব্যাপারে আপনার ধারনা কি ? "
মেয়েদের মধ্যে প্রয়োগিক ইসলাম নিয়ে জ্ঞান সবসময়ই কম।আমাকে তো এই জিনিস আরো ফেইস করতে হয়।উচ্চশিক্ষিত পরিবার গুলো যারা অন্তত ইসলামকে একেবারে অবজ্ঞা করে না,এরা ছেলেমেয়েদের ছোটবেলায় হুজুর রেখে কুরআন পড়াইতে শিখায় আর নামাজের সুরাগুলো শিখায়ে মনে করে ইসলাম শিখানো হয়ে গেছে।ভাইয়া আপনি ভেবে দেখেন আমার ক্লাস মেটের বাবা মা গত বছর হাজ্জ করে আসছে,মেয়ে ফতুয়া আর জিন্স পড়ে... ওড়নাটাও না।
হুম।আমি বেশ উৎসাহিত ভাইয়া একটা ব্যাপারে।আচ্ছা আমি যদি আমাদের ক্যাম্পাসের কমন রুমে সাধারণ ছাত্রীদের আর ইসলামিক কিছু ফ্যামিলির মেয়েদের মধ্যে জরিপ করে দেখি আসলে এরা ইসলামের ড্রেস কোড সম্পর্কে কতটা জানে তাহলে কেমন হয়?
বাস্তব অবস্থাটা জানা যাবে।আচ্ছা জরিপের প্রশ্নগুলো কেমন হতে পারে ? আমি চিন্তা করছি।
ওহ । ভাইয়া আমার খুব ইচ্ছে করে বাইরে যেয়ে পড়তে কিন্তু এটা আদৌ কোন দিন সম্ভব হবে না কি আল্লাহ জানেন।পড়ার ক্ষেত্রে আমার পছন্দ লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস আর এমআইটি। আমি জানি না আদতে বাইরেই যেতে পারবো না কি। প্রথমত আমি জানি না কেমন বিয়ে হবে তারপর আর্থিক অবস্থা কেমন থাকবে, স্কোর কেমন থাকবে.........
আমার খুব ইচ্ছা ইনটারন্যাশনাল ইকোনমিকস অথবা নিউরো ইকোনমিকস (এইটা ইকোনমিকসের নতুন বিভাগ)এর কিছু নিয়ে পিএইচডি করতে।স্বপ্ন অনেক বড়ো আমার ভাইয়া একজন আদর্শ মুসলিম নারী ও অর্থনীতিবিদ হওয়ার।
আমি এটা বুঝতে পারছি না তিউনিশিয়ার যে বোনদের উদাহরণ আপনি দিলেন সেটাকে কিভাবে আদর্শ মনে করেন? ন্যুনতম সতরও তাঁরা রক্ষা করছে না।
আপনি যদি আমাকে চিনতেন তাহলে বুঝতে পারতেন খুব সংগত কারণেই আমি নাম গোপন রেখেছি।
প্রিয় ভাইটার জন্য অনেক দুআ।
আপনার বোন
মা..... সা...। (যদিও এটা আমার সত্যিকার নাম নয়।এই শব্দদুটির অর্থ খুব প্রিয়)
ঠিঠি বা ইমেইলের উত্তর :
প্রিয় বোন,
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ।
হ্যা । আপনি আমার অনেক ছোট । আমি মনে করি, এতে আমাদের জ্ঞান আদান প্রদানের মধ্যে ও চিন্তা-চেতনার মধ্যে পরিশুদ্ধতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোন বাধা হবে না বা হতে পারে না । কারণ আল্লাহ বলেছেন, ঈমানদার নর-নারী পরস্পর বন্ধু । তারা সৎকাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজের নিষেদ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় ও আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে, তাদের আল্লাহ দয়া করেন । আল্লাহ শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী । (সুরা তওবা : ৭১) ।
ছাত্রী আমার অনেক আছে । আমার বেশ কিছু ছাত্রী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । তাদের সাথে শুধু কথা হতো ছাত্রী হিসেবে ।পড়াতাম চলে যেতাম । রাস্তায় এদের অনেকের সাথে দেখা হলে দেখেও না দেখার ভান করে । কেহ হয়তো তার বয়ফ্রন্ডের সাথে বা প্রেমিকের হাত ধরে চলাফেরা করে । আমি এদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি । কারণ তারাই বিব্রত বোধ করে ।
কিন্তু বোন আপনি তো এদের মতো নন । আপনার মতো বোন খুব কমই থাকে ছেলেদের । আমার বোন আছে । বিবাহিত ও দু সন্তানের মা । কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তার আদান-প্রদান বাড়িতে করার মতো পরিবেশ কখনোই আমার ছিল না । কিন্তু তারপরও আমি অনেক বিষয় নিয়ে ভাবি যা আমার মা বা আমার পরিবার অনুমোদন করে না ।১-১১ এর পর এক দিন আমার মা আমার প্রায় ১২শত বই নদীতে আর ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসেন । কারণ তিনি চান না তার ছেলে টিভি-তে দেখানো লোকদের মতো জেলে যাক । কিন্তু আমি কোন সময় বা কখনো জেলে যাওয়ার মতো কাজ করিনি । কিন্তু তারপরও আমার মা এমনই ভাবতেন । তার মতে, নামাজ পড়ো, দুয়া দুরুদ পড়ো আর কাজের বুয়া ধরনের একটা মেয়েকে বিয়ে করে তার সেবায় আমার সহধর্মিনীকে নিয়েজিত করলেই আমার জন্য জান্নাত নিশ্চিত হবে । তার কঠোর নির্দেশে আমাকে দুবেলা সেভ করতে হতো ।এখনও করতে হয়, যদিও অনিয়মিত । খোচাখোচা দাড়ি দেখলেই তিনি রেগে যান । যাক সে কথা । বাড়িতে যদি আপনার মতো আমার একটা বোন থাকতো, তাহলে মনে হয়, আমি অনেক কিছু করার অণুপ্রেরণা পেতাম । সবার জীবনে একজন অণুপ্রেরণা দাতা বা দাত্রী থাকে । পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ-র জীবনে অণুপ্রেরণা দাত্রীর ভুমিকায় ছিলেন তার বোন ফাতেমা জিন্নাহ এবং প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের স্ত্রী রানা http://en.wikipedia.org/wiki/Ra%27ana_Liaquat_Ali_Khan
http://www.wpcp.org.pk/wpcp/LegendBegumRanLiaqatAliKhan.aspx
http://area148.com/cms/index.php/speakers_corner/the-women-of-pakistan
। আমি মনে করি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বেশী ভুমিকা ছিল রানা-র । তিনিই ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম মেয়েদের রাজনীতিতে এমনভাবে সক্রীয় করেছিলেন যাতে ১০-১২ বছরের মেয়েরা পর্যন্ত অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিতো । ১৯৪৭ এর অনেক চরাই উৎরাই পার হয়ে যেতে হয় পাকিস্তানকে । বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয় । পাকিস্তানের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ । কিন্তু আমরা আমাদের মেয়েদের প্রগতির সর্বোচ্চ ধাপে পৌছে দিতে পারিনি । কারণ একটাই, কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী ও ধর্মের অপব্যাখ্যা । সোনার বাংলা ব্লগে দেখি ছেলেদের একটাই কাজ শুধু পাত্রী দেখা, সেগুলোর কথা লিখা : কোন কোন মেয়ে কেমন। অদ্ভুত তাদের ব্যক্তিত্ববোধ আর স্বার্থপরতা । এসব চিন্তা চেতনা এক দিনে হয়নি । তাদের সংগঠনিক সিলেবাসও এভাবে তৈরী । আর তাদের দায়িত্বশীলরাও এমন ছাচে ঢালা । তাদের চিন্তা-ভাবনা চরম পশ্চাৎপদ । এদের দিয়ে কখনোই দেশ-জাতির তো কল্যাণ হবেই না, বরং বাংলাদেশে ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ রূপে প্রতিষ্ঠার করার ব্যাপারটি তাদের দ্বারা হবে সুদূর পরাহত । আমি জানি না আপনাদের সিলেবাস কীভাবে তৈরী করা হয়েছে । কারা আপনাদের দায়িত্বশীল ? তারা আপনাদের কি শেখায় ? আমি মনে করি, প্রত্যেকটি মুসলিম মেয়ে জলে-স্হল-অন্তরীক্ষে দাপিয়ে বেড়াবে । তার প্রতিভার বিকাশ ঘটাবে । একই সাথে তারা হবে কারো বোন, কারো মেয়ে বা কারো প্রাণপ্রিয় স্ত্রী । তারা শুধু মনে রাখবে Never forget your freedom. আমি মনে করি, মুসলিম জাতির প্রতিভা বিকাশের জন্য আগে মেয়েদের স্বাধীনতা অবাদ হতে হবে । বাংলাদেশের কথা চিন্তা করুন না । ৬১০ খ্রীষ্টাব্দে বাংলাদেশে ইসলাম এসেছে । ২০৪ সাল হতে বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে প্রবলতর হয় ইসলাম । দেখুন হযরত শাহজালাল রহ. কোথার থেকে এসেছেন? ইয়েমেন হতে ।
হযরত খান জাহান আলি রহ. কোথার থেকে এসেছেন? তিনি ছিলেন তুরষ্কের সেনাপ্রধান ।
আচ্ছা কেহ কি বলতে পারবে বাংলাদেশের কোন মেয়ে এমন লোক জন্ম দিয়েছেন যারা বিদেশে যেয়ে দেশের নাম উজ্জল করেছে ।ইসলাম প্রচার করেছে ।কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? বাংলাদেশের ৮৭% লোক মুসলিম । কিন্তু সারা বিশ্বে বাংলাদেশের নামকে উজ্জ্বলতর করবে এমন কোন ইসলাম প্রচারক নেই কেন বা এত বছরেও তৈরী হয়নি কেন? তার উত্তর “আমাদের দেশের মেয়েরা এমন লোক জন্ম দিতে অক্ষম” । আসলে তা নয়, আমরা তাদের স্বাধীনতা দেইনি বলে তারাও আমাদের এমন লোক উপহার দিতে পারেননি ।
আপনি লিখেছেন: আমার ধারণা মতে আপনি শিক্ষক হিসেবে চমৎকার।
আমি কিন্তু ছাত্রী হিসেবে খুব খারাপ নই।আমার খুব ভালো লাগছে যে আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছি।আলহামদুলিল্লাহ।আল্লাহ আমাকে এটুকু সুযোগ করে দিয়েছেন।
আমি মনে করি, আপনি ছাত্রী হিসেবে চমৎকার । কারণ আপনার প্রথম বার্তাই তার প্রমাণ । কারণ অনেক লোকই আমার কাছে বার্তা পাঠায়, পোস্টে মন্তব্য করে এবং মেইল পাঠায় ।অনেক সময় সরাসরি কথা বলে । কিন্তু তাদের জ্ঞান ও কথা-বার্তাতে আমার মনে হয় তারা ক্লাস থ্রি-তে পড়েন । আপনি যে শুধু ছাত্রী হিসেবে শুধু চমৎকারই না, বরং আপনি সাহসী ও অনুসন্ধিৎসু মনের অধিকারিনী মেয়ে। কারণ আপনার একটা পোস্টে দেখলাম, আপনি রাস্তায় থাকা এক অপ্রকৃতিস্হ মহিলার সাথে একাই কথা বলার চেষ্টা করেছেন । এধরণের কাজ বাংলাদেশের কোন মেয়েই করে বলে আমার মনে হয় না । কারণ আমি অনেক ছাত্রীকে কাছ থেকে দেখেছি । তাদের না আছে সাহস না আছে অনুসন্ধিৎসু মন । তারা শুধু ছেলেদের মুগ্ধ হওয়ার জন্য সাজতে পছন্দ করে ।এই ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা দেই । আমার এক ছাত্রী প্রায়ই মাথায় ওড়না দিতো । এক দিন দেখি এই ছাত্রী মাথায় ওড়না দেয়নি । সেজেও এসেছে । অসম্ভব হাসি খুশি । আমি সব মেয়েকে বল্লাম । আজ তোমরা সবাই আমার সাথে দেখা করবে । তোমাদের ল্যাব পরীক্ষা নিবো । ছেলেদের নিয়ে ফেলেছি । সাধারণত ছেলে-মেয়েদের এক সাথে পরীক্ষা হয় । এবার ব্যতিক্রম করলাম ।আমি পরীক্ষার সময় বল্লাম তোমাদের বিষয়ের সাথে সম্পৃত্ত কোন প্রশ্ন করবো না । তোমরা সবাই ভাল করবে । কারণ তোমরা সবাই ১০০ তে ৯০ পেয়েছো । ছেলেদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৫ পেয়েছে একটা ছেলে । আর তোমরা ৮ জন মেয়েই ৯০ পেয়েছো । ছেলেরা বলে থাকে আমি মেয়েদের বেশী নাম্বার দেই । কিন্তু আমি তাদের প্রমাণ করছি আমি কাউকে বেশী নাম্বার দেই না ।এখন তোমরা বলো : আমি একজন শিক্ষক হিসেবে তোমাদের থেকে কি আশা করতে পারি ? তাদের মধ্য থেকে এক জন বল্লো: আশা করা সম্পর্কে আপনি কি ভবিষ্যতে কি হতে চাই তা বলতে চাচ্ছেন ?
আমি বল্লাম : সব কিছু ।
: কি রকম ?
আমি বল্লাম : তোমরা হবে –
১. কারো না কারো লক্ষী মা । তোমরা তাদের বিশ্বজয় করতে শেখাবে ।
২. তোমরা হবে কারো না কারো স্বামীর প্রতি অণুরাগ প্রদর্শণকারিণী স্ত্রী যাদের স্বামীরা স্ত্রীর সব সৃজনশীল কাজকে অনুমোদনই করবে না, বরং তারা স্ত্রীর প্রতিভার প্রতি মুগ্ধ থাকবে ও সাহায্যাকারী হবে ।
৩. তোমরা এমনই বলিষ্ট চিন্তা, মেধা ও মননের অধিকারী হবে যে তোমাদের স্বামীরা বলতেও সাহস পাবে না তুমি তোমার চাকুরী, অধ্যাপণা ও ব্যবসায় উদ্যোক্তা হওয়ার তৎপড়তা ছেড়ে বাড়িতে বসে থালা-বাসন মাজতে থাকো ।
: স্যার এসব কথা বলছেন কেন ?
আমি বল্লাম : তোমাদের অনেকের মধ্যে আমি মেয়ে ধরার খপ্পরে পড়ার লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি । আর কাউকে ছেলেধরার ভুমিকায় দেখতে পাচ্ছি ।
(ছেলে ধরা আর মেয়ে ধরা শব্দ দুইটি আমি আমার ছাত্র – ছাত্রীদের মধ্য প্রচলন করেছি ।
ছেলে ধরা হলো এমন মেয়ে যারা এমন সব ছেলের বা ছেলেদের হাত ধরে হাটে বা চলাফেরা করে যাদের সাথে বাবা, ভাই, স্বামী বা ছেলের সম্পর্ক নেই । কিন্তু তাদের সাথে ঘনিষ্টভাবে চলাফেরা করে, হাসি ঠাট্টা করে এবং বিভিন্ন ধরনের সুবিধা লাভের জন্য নিজেকে উন্মুক্ত করে ।
অপরদিকে মেয়ে ধরা হলো এমন ছেলে যারা এমন সব মেয়ের বা মেয়েদের হাত ধরে হাটে বা চলাফেরা করে যাদের সাথে মা, বোন, স্ত্রী বা কন্যার সম্পর্ক নেই । কিন্তু তাদের সাথে ঘনিষ্টভাবে চলাফেরা করে, হাসি ঠাট্টা করে এবং বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিয়ে মেয়ের বা মেয়েদের সর্বনাস করে ।কখনো মেয়েদের হিডেন বিয়ে করে বা পরিস্হিতির শিকার হয়ে বিয়ে করে)
আমি এক জনকে দাঁড় করিয়ে আমি সব তথ্য জানতে পারি বা জিজ্ঞাসা করতে পারি । কিন্তু সবাইকে করবো না । তবে একজনকে করবো । আমি একজনকে দাঁড় করিয়ে বল্লাম : তুমি সুস্পষ্টভাবে মেয়ে ধরার খপ্পরে পড়েছো । তুমি কি তোমার জীবনটাকে নষ্ট করবে ? না,তোমার ক্যারিয়ার গঠণ করবে? দেখ,আমরা পৃথিবীতে আসি স্বল্প সময়ের জন্য । তুমি তোমার মেধা দিয়ে পৃথিবীর মানুষের জন্য কিছু না করতে পারলে তুমি আল্লাহর কাছে কি জবাব দিবে? বলো । তোমার মেধা আছে, যোগ্যতা আছে, ….
: স্যার । এভাবে বলবেন না ।( অনেকটা লাজুক হেসে ) স্যার আপনি ছেলেদের অনেককেও এমন কথা বলেছেন । স্যার আপনি ভীষণ ভাল । তারপরও স্যার আমাকে কিছু বলবেন না ।
: দেখো । তোমরা তোমাদের সুমি আপুকে তো চিনতে, তাই না । তোমরা কি জানো । পালিয়ে বিয়ে করে এখন কেমন আছে? আমি সুমির হাবভাব ধরতে পেরেছিলাম । আমি এমনভাবে তাদের ক্লাসে বলেছিলাম যে ক্যারিয়ার বড় জিনিস । একাডেমিক রেজাল্ট ও পড়াশোনা মূল্যবাণ । আর বাবা-মা সবচেয়ে বড় বন্ধু । একাডেমিক রেজাল্ট ও পড়াশোনা এবং বাবা-মা দুইটা হলো সবচেয়ে বন্ধু । তারা তোমাদের ছেড়ে যাবেন না । আর এক জন ভাল শিক্ষক বা শিক্ষিকাও তোমাদের ভাল বন্ধু হতে পারেন । আমি মনে করি, তোমাদের ভাল মন্দ দেখা আমার দায়িত্ব । তোমরা বলো : কারা ছেলে ধরা বা মেয়ে ধরা । আর কারা LOVE নামক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছো । এটা এক ধরনের মানষিক রোগ । আমি কিন্তু ধরতে পারছি । আমি তোমাদের কান্সিলিং করবো । কিন্তু কাউন্সিলিং এর আগে বলতে হবে কারা আক্রান্ত হয়েছো । কিন্তু আমি ধরতে পেরেছিলাম সুমি এরোগে আক্রান্ত । শুনেছো তো তার অবস্হা । বাবা-মার এক মাত্র সন্তান সুমি-র এমন অবস্হা হবে যা তার বাবা-মারও কাম্য ছিল না ।
: স্যার ছেলেটা আমাকে একাউন্টিং পড়াতো কিছু দিন । মা পছন্দ করে । …….
আমি বল্লাম : ভুল করো না । ভুল করছো । পড়াশোনায় মনযোগ দাও ।এই ছেলে তোমার ভাল চায় না ।
(এই মেয়ে প্রায় দুই মাস ক্লাস করেনি । কাল একটা পরীক্ষা নিবো । পরীক্ষা অবশ্যই ভাল করবে না । দুই দিন আগে আমাকে পড়া বুঝিয়ে দেওয়ার অনুরোদ করে । আমি বলেছিলাম: আমার বাকি ক্লাস আর একাডেমিক কাজ শেষ করে তোমাকে বুঝিয়ে দিবো ।
কয়েক দিন একটা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়েছিলাম । মনে হয়েছিল: এটা তো কোন ক্লাস রুম তো না যেন বৃন্দাবন । বাংলিশ নামক একটা সম্প্রদায়ও সৃষ্টি করেছে এসব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় । বাংলিশ ছেলে-মেয়েরা বাংলাদেশি সংস্কৃতি ঘৃণা করে ও তারা ইসলাম ধর্ম পালন করা কুসংস্কার ও আধুনিকতাবিরোধী মনে করে । তাদের কোন নৈতিকতা নেই । একটা বাক্য বল্লে উদ্ভটভাবে কিছু বাংলা ও বিকৃত উচ্চারণে ইংরেজী শব্দ বলে যায় । আমি মনে করি,এসব প্রবনতা দুর করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে ।)
আমি তাদের সবাইকে ক্যারিয়ার গোল ঠিক করে দিয়েছিলাম । এবং তাদের বলেছিলাম তোমরা নিয়মিত নামাজ পড়বে,ওড়না ঠিকভাবে পড়বে (শালীনভাবে চলবে), বাবা মার কথা শুনবে, স্টার জলসার মতো টিভি চ্যানেল দেখবে না , সিগেরেটখোর-মদখোর- ঘুষখোর-দুর্নীতিবাজদের বিয়ে করবে না, নিজের ধর্ম সম্পর্কে ভালভাবে জানার জন্য বই পড়বে, ২২ বছর বয়স হলে নিজেই বাবা-মাকে বলবে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য । তারা আমার কথাগুলোতে আদৌও হাসেনি বা অবাক হয়নি । কারণ আমি তাদের সাথে এভাবেই কথা বলতে অভ্যস্হ । তারাও আমার সাথে এভাবেই কথা বলে । যেমন: এক মেয়ে তার ওড়নার দৈর্ঘ্য ও প্রস্হ কেমন হওয়া উচিত তা জানতে চেয়েছিলো কিছু দিন আগে ছেলেদের সামনেই ।এই আলোচনায় কোন ছেলেই আপত্তি করেনি । বরং তাদের মধ্যে অনেকেই আমার সমর্থকে পরিনত হয়েছে ।আর আমি কোন ছেলেকে কটু কথা না বল্লেও অনেক ছেলেকে মনে করি, এরা আমার প্রতিষ্ঠানে না থাকুক । আমার এদের সম্পর্কে উদ্যোগ নিতে হয়নি । এক দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া তাবলীগি ছেলেকে বের করে দেওয়া হয় । এর প্রধান কারণ হিসেবে আমাদের এক শিক্ষিকা তিনি জানালেন ,”হিন্দু মেয়ের সাথে প্রেম করবে, আর হলে রাত জেগে ঘন্টার পর ঘন্টায় কথা বলবে- তা মেনে নেওয়া যায় না । কারণ আমি নিজেও প্রেম করেছি । কিন্তু এমন প্রেম করিনি ।”
আপনি লিখেছেন:
Islamic minds গ্রুপে আমাকে স্বাগত জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।
আপনি লিখেছেন :
সংগঠনের সাথে আমার মত মিলছে না অনেক কিছুতে।
এই ব্যাপারে আমার অভিমত :
আপনি আমার সর্বশেষ পোস্ট (দাউয়ুস হতে সাবধান হোন)-এ দেখতে পাবেন, একটা ছেলে একটা সংগঠণ হতে কত হতাশ হলে সে তার নিজের বাড়িতে ফিরে আসে ? অথচ এই ছেলেটা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ২০ হাজার ছেলের মধ্যে ১৮ তম হয়েছিল । এমন ছেলেকে সংগঠণ রাখতে পারেনি । আপনার আলোচিত সংগঠণের সাথে আপনার কোন কিছুতেই মিলবে না । কারণ আপনি এ সংগঠণে ইসলামকে বিজয়ী করার কোন কর্মসুচী পাবেন না । আর থাকলেও তা সাধারণ মেয়েদের কোনভাবেই আকৃষ্ট করতে পারবেন না । কারণ মেয়েরা আপনার সংগঠণের মেয়েদের ভীষণ ভয় পায় । কারণ তারা মনে করে এই সংগঠণ করতে গেলে আপাদমস্তক শরীর ডাকতে হবে শুধু চোখ দুটো খোলা রাখতে হবে । যত কষ্টই হোক ঘর থেকে বের হতে গেলে এই ধরনের পোষাক পড়তেই হবে । আমি বিভিন্ন পোস্টে যুক্তি ও তথ্য প্রমাণ দিয়ে প্রমাণ করেছি এধরনের পোষাক মেয়েদের পড়ার প্রয়োজন নেই । এক মন্তব্য এক আপু মুখ ঢাকার কথা তুলেছে । আমি বিতর্ক এড়ানোর জন্য চেষ্টা করেছি । তবে অদুর ভবিষ্যতে আমি এবিষয়ে যুক্তি ও তথ্য প্রমাণ দিয়ে লিখবো মেয়েদের মুখ ঢেকে চলা ফেরা করার আদৌও প্রয়োজন নেই । অথচ পোষাকের ব্যাপারটা যদি আপনাদের সংগঠণ শিথিল করতো তাহলে বাংলাদেশের মুসলিম মেয়েরা সেলওয়ার, পূর্ণ হাতা বিশিষ্ট কামীছ, চাদর জাতীয় মোটা কাপড়ের ওড়না গায় দিয়ে থাকতো যাতে মুখ ও হাতের তালু ছাড়া মেয়েদর সব সময় সমস্ত শরীর ঢাকা থাকতো ।
বিশ্বে ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম মেয়েদের মধ্যে বোরকা বলে একটা পোষাক আছে যার কোন ভিত্তি নেই । আবওয়া ও জিলবাব বেশ কিছু দেশের জাতীয় পোষাক ।সব ধর্মের মেয়েই এগুলো পড়ে । এটা তাদের আবহাওয়ার সাথে খাপ খায় । কিন্তু আমাদের দেশের মেয়েরা শেলোয়ার কামিজের উপর আবওয়া বা জিলবাব পড়ে । তার উপর ওড়না এবং স্কার্ফ পড়ে । আমি জোড় দিয়ে বলছি, এধরনের পোষাক পড়লে কোন সন্তান সম্ভবা আপু যে শুধু তার নিজেরই ক্ষতি করবে না, বরং তার অনাগত সন্তানেরই ক্ষতি ঢেকে আনবেন বা প্রকারান্তরে মুসলিম জাতিরই ক্ষতি ঢেকে আনবেন । এর প্রভাব তার সন্তানের উপরও পড়বে । অনেক পর্দানশীল মহিলাদের পরিবারে অনেক বিকলাঙ্গ সন্তান থাকার এটাও একটা বড় কারণ হতে পারে ।
আপনি লিখেছেন :
আমি আসলে এখনো অনেক ছোট এইসব পরিস্থিতি কেমনে সামাল দিতে হয় তা ভালোভাবে জানি না।আমি ধৈর্যও ঠিক সবসময় বজায় রাখতে পারি না।এইজন্য একটা হতাশাও কাজ করে।কিন্তু আমি আন্তরিকতার সাথেই বলতে চাই.......হয়তো আমারি ভুল ঠিকভাবে বুঝাতে পারি না।
দেখুন, আপনি এইসব পরিস্হিতি সামাল দিতে পারবেন না । ধৈর্যও বজায় রাখতে পারবেন না । এটা আপনার ভুল না ।কারণ আমি আপনার সময়টা পার করে এসেছি । ভুল আপনার দায়িত্বশীল বা যারা এসংগঠণ সৃষ্টি করেছেন। মানুষের সহ্য ক্ষমতা সীমাবদ্ধ এবং মানুষের সভাবজাত বিষয়ের উপর যতই আঘাত আসুক একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সে সহনশীল থাকে । দেখুন, আল্লাহ ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ বলেছেন । অথচ সংগঠণ যেভাবে চলছে তাতে কিয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও এসব সংগঠণের মাধ্যমে ইসলাম বিজয়ী হবে না । এব্যাপারে ড. হাসান মোহাম্মদাআর ড. তারেক শামসুর রহমানের গবেষণা আছে ।
দেখুন, ইসলামকে বিজয়ী না করার যথাযথ কর্মপন্হা না নিয়ে এসব গতানুগতিক কাজ করলে আল্লাহর কাছে হাসরের মাঠে জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে । তখন আমি ব্যাংক বানিয়েছি, হাসপাতাল বানিয়েছি, কলেজ বানিয়েছি, মিছিল করেছি, মেয়েদের কালো রং-এর পোষাকএমনভাবে পরিয়েছি যাতে গ্রীষ্মের দাবদাহে তাদের শরীর থেকে ঘাম বের হয়েছিল (তাদের মতে এটাই নাকি ইসলামের বিধান । কারণ মেয়েরা এসব পোষাক পড়লে অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে এবং পরিশেষে ঘরে থাকবে । ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকাই নাকি মেয়েদের সঠিক ইসলাম পালন) ।
অত্যন্ত দুভাগ্যজনক কোন মেয়েকই এসব কথার প্রতিবাদ করতে দেখি না ।এসব লেখা হচ্ছে, হয়েছে এবং হবে । এসব দৃষ্টিভঙ্গি হতে বের হয়ে আসতে হবে । না হলে আপনার মধ্যে হতাশা ও হীনমন্যতাবোধ তৈরী হবে । পরিশেষে. কোন সময় মা হলে আপনার সন্তানদের মধ্যেও হতাশা ও হীনমন্যতা প্রবেশ করবে ।
আপনি লিখেছেন :
আমি এখন সেলফ ডেভলপমেন্ট নিয়েই চিন্তা ভাবনা করছি বেশি।কারণ ভিত্তিটা দৃঢ় না হলে যত যাই করি কোন অর্থই থাকবে না।আত্মশুদ্ধি এই মুহূর্তে আমার মেইন টার্গেট।
আমি আপনার সাথে একমত । এখনই সময় পড়াশোনার । নিজের ভিতটাকে মজবুত করার । আমি এখন আগের মতো সময় পাইনা । আজ ১২শত টাকার বই কিনলাম । সব বইগুলোর পৃষ্ঠা সংখ্যার হবে ৬ হাজার প্রায় । ৬ হাজার পৃষ্ঠা শেষ করতে এই ছয় দিন লাগতো । অথছ এখন মনে হচ্ছে ৬ মাসে শেষ হবে কি না? আমি আপনাকে বলছি: শুধু পড়ুন । শুধু পড়ুন । শুধু পড়ুন ।
আত্মশুদ্ধির ব্যাপারটা বুঝলাম না । আপনি তো নামাজ, দুয়া, দুরূদ তো পড়ছেনই । তাহলে আত্মশুদ্ধি বলতে কি সুফী বা পীরদের মতো জিকির করাকে বুঝিয়েছেন । মনের পবিত্রতা বলতে যদি বুঝিয়ে থাকেন তাহলে বলছি, আপনি পবিত্র মনের অধিকারিনী ।
আপনি লিখেছেন :
"সকালে দেখি মডারেটররা আমার পোস্ট মুছে দিয়েছেন এবং নোটিফিকেশন পাঠিয়েছেন ।"
সোনার বাংলাদেশ ব্লগের মডারেটররা নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করার জন্য এইসব করছে।একদমই উচিত না।আপনি দেখেন আপনাদের ইসলাম নিয়ে অসাধারণ লিখাগুলো স্টিকি হচ্ছে না কিংবা সম্পাদক দ্বারা নির্বাচিতও কম হয়।অথচ কি যে আগডুম বাগডুম টাইপ লিখা নির্বাচিত হতে দেখি।আমার হাসি পায়।
এদের স্ট্রাটেজি চেইন্জ হওয়া উচিত।প্রথম আলো, সামহোয়ার ইন ব্লগ ইত্যাদি ব্লগকে তো দেখি না নিজেদের আদর্শকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে।আমরা কেন ভয় পাব.....?
আপনারা সিনিয়ররা বলুন মডারেটরদের।
আপনি লিখেছেন : বল্লে কোন কাজ হবে না । তারা হীনমন্যতা হতে বের হতে পারবে না । আমি এসব লোকদের কাছ থেকে দেখেছি । কিশোর কন্ঠ আর ছাত্র সংবাদে আমি লিখেছি । তবে তারা তাদের অবস্হা বুঝতে পারেনি বলে ছাগু শব্দটারউৎপত্তি হয়েছে । না হলে সিংহ আর বাঘ শব্দটার উৎপত্তি হতো । যাক, আমি এতে বিচলিত না । তবে বিরক্ত ।
আপনি লিখেছেন : আমি এটা বুঝতে পারছি না তিউনিশিয়ার যে বোনদের উদাহরণ আপনি দিলেন সেটাকে কিভাবে আদর্শ মনে করেন? ন্যুনতম সতরও তাঁরা রক্ষা করছে না।
উত্তর : মেয়েরা সব কিছু করবে শালীন পোষাক পড়ে ।আমি এসম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছি এই দুই পোস্টে :
মেয়েদের জন্য প্রচলিত স্কুল কলেজ ড্রেস ইসলামবিরোধী ও মুরতাদ প্রসঙ্গ
http://sonarbangladesh.com/blog/fakhrul/97226
বাংলাদেশের দাইয়ুস সম্প্রদায় ও বাংলাদেশের মুসলিম মেয়ে
http://sonarbangladesh.com/blog/fakhrul/97385
তিউনিসিয়া স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সেখানে ইসলামী পোষাক পরা বা শালীন পোষাক পরা অবৈধ ছিল । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও নিষিদ্ধ ছিল । সুতরাং আপুরা ইসলামী পোষাক পড়া হতে প্রায় তিন প্রজন্ম তিউনিসিয়ার আপু, খালাম্মারা বিচ্ছিন্ন ছিলেন । ইসলামী সংগঠণের লোকরা কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে মৃত্যুর প্রহর গুণছিলেন । কিন্তু হঠাৎ এক দিন মুহাম্মদ বুআজিজি ভাই আত্মাহুতি দিলেন । আমাদের এই আপুরা জেগে উঠলেন । এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না । তারা যে যার অবস্হায় ছিলেন তারা সে অবস্হায় রাজপথে বেড়িয়ে আসলেন । তারা রাস্তায় ফেরাউনের প্রেত্মার পেটুয়া বাহিনীর বিরোদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন । তার পরবর্তি ঘটনা অবশ্যই জানেন । আপু ! এই পরিবর্তনের ঢেউ এখন মিসরে এসেছে । এই ঢেউ যাতে আমাদের দেশে আসে এজন্য আমি আমাদের আপুদের জেগে উঠতে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিচ্ছি ।
আপনি লিখেছেন :
" জানলাম ইসলাম সম্পর্ক তাদের ধারণা খুবই কম । আমি বুঝতে পারছি না কেন মেয়ের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান কম । তাদের মা আর বাবারা তো তাদের সামান্য হলেও জ্ঞান দিয়েছেন । তারপরও এঅবস্হা হবে কেন ? এব্যাপারে আপনার ধারনা কি ? "
মেয়েদের মধ্যে প্রয়োগিক ইসলাম নিয়ে জ্ঞান সবসময়ই কম। আমাকে তো এই জিনিস আরো ফেইস করতে হয়।উচ্চশিক্ষিত পরিবার গুলো যারা অন্তত ইসলামকে একেবারে অবজ্ঞা করে না,এরা ছেলেমেয়েদের ছোট বেলায় হুজুর রেখে কুরআন পড়াইতে শিখায় আর নামাজের সুরাগুলো শিখায়ে মনে করে ইসলাম শিখানো হয়ে গেছে।ভাইয়া আপনি ভেবে দেখেন আমার ক্লাস মেটের বাবা মা গত বছর হাজ্জ করে আসছে,মেয়ে ফতুয়া আর জিন্স পড়ে... ওড়নাটাও না।
আমি আপনার সাথে এক মত । আপনার সাথে মেইলআদান প্রদান না হলে এবিষয়ে (ইসলাম সম্পর্ক মেয়েদের ধারণা খুবই কম কেন) তা জানার জন্য অনেক বই পড়তে হতো । অথচ আপনি কি সুন্দর একটা উত্তর দিলেন । এক অর্থে আমার সময় বাচিয়ে দিলেন । এবং আমার জানার ক্ষেত্রটাকে বড় করে দিলেন । আমি সব সময বলি : নারী-পুরুষ শালিনতার মধ্যে এক সাথে থাকলে জ্ঞানের দিগন্ত উন্মোচিত হয় । কারণ আল্লাহ বলেছন,
ঈমানদার নর-নারী পরস্পর বন্ধু । তারা সৎকাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজের নিষেদ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় ও আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে, তাদের আল্লাহ দয়া করেন । আল্লাহ শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী । (কুরআন ৯ : ৭১) ।
আপনি লিখেছেন :
হুম।আমি বেশ উৎসাহিত ভাইয়া একটা ব্যাপারে।আচ্ছা আমি যদি আমাদের ক্যাম্পাসের কমন রুমে সাধারণ ছাত্রীদের আর ইসলামিক কিছু ফ্যামিলির মেয়েদের মধ্যে জরিপ করে দেখি আসলে এরা ইসলামের ড্রেস কোড সম্পর্কে কতটা জানে তাহলে কেমন হয় ?
বাস্তব অবস্থাটা জানা যাবে। আচ্ছা জরিপের প্রশ্নগুলো কেমন হতে পারে? আমি চিন্তা করছি।
আমার অভিমত :
দারুন কাজ হবে । তবে সতর্কভাবে করতে হবে । আগে বাছাই করা মেয়েদের মধ্যে জড়িপ করবেন । ছাত্র লীগ , ফ্রন্ট আর ইউনিয়ন ঘেষা মেয়েদের মধ্যে এবিষয়ে কথা বল্লে বিপদে পড়বেন । আপনি আমার পোস্টগুলো হতে এব্যাপারে সাহায্য নিতে পারেন । ইসলাম সহজ সরল ধর্ম (সুরা বনী ইসরাইল)। আমরাই কঠিন করেছি । ধর্ম ব্যবসায়ীরা তাদের হীনস্বার্থ এমন করেছে । সোনা ব্লগে অনেক ধর্মব্যবসায়ী আছে । এরা ইর্ন্টানেটেও প্রবেশ করেছে যা আমাদের জন্যই ভাল । কারণ আমরা তাদের ভুলগুলো আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারবো । বেশ কিছু পোস্টে এদের কয়েকটা আমি চ্যালেন্জ করেছি । আমার চ্যালেন্জ গ্রহণ করতে তারা সাহস পায়নি ।
আপনি লিখেছেন :
ওহ ভাইয়া আমার খুব ইচ্ছে করে বাইরে যেয়ে পড়তে কিন্তু এটা আদৌ কোনদিন সম্ভব হবে না কি আল্লাহ জানেন।পড়ার ক্ষেত্রে আমার পছন্দ লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস আর এমআইটি। আমি জানি না আদতে বাইরেই যেতে পারবো না কি।প্রথমত আমি জানি না কেমন বিয়ে হবে তারপর আর্থিক অবস্থা কেমন থাকবে, স্কোর কেমন থাকবে.........
আমার খুব ইচ্ছা ইনটারন্যাশনাল ইকোনমিকস অথবা নিউরো ইকোনমিকস(এইটা ইকোনমিকসের নতুন বিভাগ)এর কিছু নিয়ে পিএইচডি করতে।স্বপ্ন অনেক বড়ো আমার ভাইয়া একজন আদর্শ মুসলিম নারী ও অর্থনীতিবিদ হওয়ার।
আমার অভিমত :
মানুষ আশা চেয়ে বড় । মানুষ আশা নিয়ে বেচে থাকে । আপনার আবেগ আছে, স্বপ্ন আছে । খাস দিলে আল্লাহর কাছে চান । তিনি আপনাকে ফিরিয়ে দিবেন না । তবে আপনাকে অনেক অনেক চেষ্টা ও সাধনা করতে হবে । হা, আমি আপনার জন্য প্রাণভরে দুয়া করবো । আমি আমার মরহুম ছোট ভাইয়ের জন্য দুয়া করি নামাজ শেষে । সে মাত্র ২৭ বছর বয়সে বাংলাদেশে করা যায় চিকিৎসাবিদ্যায় এমবিবিএস শেষ করে এফসিপিএস ফাস্ট পার্ট শেষ করেছিলো । তার ইন্তেকালের মাত্র তের দিন পর বিএসএস স্বাস্হ্য ক্যাডারের মৌখিক পরীক্ষা ছিল । আমি তার রুহের মাগফেরাতের জন্য দুয়া করি । একটা বিষয় লক্ষ্য করে থাকবেন: আমি সোনা ব্লগে কেহ দুয়া চাইলে বা ভাল কিছু করলে দুয়া সূচক বাক্য লিখি । ঠিক তেমনি অনেক সময় নামাজ শেষেও অনেকের জন্য করে থাকি । আপনার জন্যও না হয় করলাম । কারণ আপনি তো আমার প্রিয় বোন । ইসলামী বোন । আপনার নিয়ত আদর্শ মুসলিম নারী ও অর্থনীতিবিদ হওয়া যাকে অনাগত ভবিষ্যতের মুসলিম মেয়েরা একজন আইকন হিসেবে দেখবে । তাহলে কেন আমি আপনার জন্য দুয়া করবো না । আপনি আল্লাহর কাছে চান, আপনাকে বুঝতে পারে এবং আপনার ক্যারিয়ারের জন্য সহায়ক হয় এমন সহধর্মী বা সহচর দান করেন যাতে আপনি মুসলিম বিশ্বের জন্য খেদমত করার পাশাপাশি সুখী ও সমৃদ্ধশালী পারিবারিক জীবন লাভ করতে পারেন ।
আপনি লিখেছেন :
আপনি যদি আমাকে চিনতেন তাহলে বুঝতে পারতেন খুব সংগত কারণেই আমি নাম গোপন রেখেছি।
থাক । বোন বলছেন, আপনি যদি আমাকে চিনতেন তাহলে বুঝতে পারতেন ।হ্যা, তাই তো চিনলেই তো বুঝতে পারতাম । তবে আমি না চিনেও বোনকে বুঝতে পারছি যে আমার এই বোনটা ভীষণ ভাল মেয়ে যে অনেক বড় হতে চায় । জ্ঞান আর মেধা দিয়ে মুসলিম বিশ্বের সেবা করতে চায় ।
প্রিয় বোনটার জন্য অনেক দুয়া ।হে আল্লাহ! আমার প্রিয় বোনটা সব নেক আশা আকাঙ্খা পূরণ করে দাও । তার মুখের হাসি অমলীন থাকুন । তার বাবা-মার মুখেও আমার প্রিয় বোনটাও হাসি ফুটাতে পারে সেই ব্যবস্হা করে দাও । তার জ্ঞান ও প্রজ্ঞা ও মেধা বাড়িয়ে দাও যাতে সে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ অর্থনীতিবিদ হতে পারে ।
আপনার ইসলামী ভাই
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম
( এটা আপনার ভাইটার সত্যিকার নাম ।এই নামটা রেখেছিলেন আমার দাদু । আমার কাছে আমার নামটা প্রিয় । কারণ এর অর্থ মুহাম্মদ ইসলামের অহংকার/গৌরব। আসলেই আমি ইসলামের জন্য গৌরবজনক কাজ করতে চাই । এবং গৌরবজনক কাজ করার চেষ্টা করে যাবো ।)
২০ শাবান ১৪৩৩ হিজরী বুধবার (১১ জুলাই ২০১২খৃষ্টাব্দ) ১.৩১ এ.এম বিএসটি
বিষয়: বিবিধ
২৬৪৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি দিচ্ছেন উপদেশ!!!!!!!
লেখা ভাল করে পড়ে মন্তব্য করবেন । ধন্যবাদ ।
আমি আমার লেখায় কি লিখেছি তা দেখুন ।
””” এক দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া তাবলীগি ছেলেকে বের করে দেওয়া হয় । এর প্রধান কারণ হিসেবে আমাদের এক শিক্ষিকা তিনি জানালেন ,”হিন্দু মেয়ের সাথে প্রেম করবে, আর হলে রাত জেগে ঘন্টার পর ঘন্টায় কথা বলবে- তা মেনে নেওয়া যায় না । কারণ আমি নিজেও প্রেম করেছি । কিন্তু এমন প্রেম করিনি ।” ”””
এখানে আমার কথা নেই বা আমি আমার নিজের কথা বলিনি । আমি শিক্ষিকার উদৃতি দিয়েছি ।
এই দুই লিংকে ছাত্রী সংস্হার এক নেত্রীর প্রেমের কথা উঠে আসে
:
http://www.bd-monitor.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/69553
[ নিকাব ও বোরকা পরা সেই প্রেমিকা ( ১ম পর্ব )]
http://www.bd-monitor.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/69814
[ নিকাব ও বোরকা পরা সেই প্রেমিকা ( ২য় পর্ব )]
এই দু্ই লেখার কারণেই ছাত্র শিবিরের ছেলেরা আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ।
পোষাক বা বাহ্যিক দিক দেখেও মানুষের মন বোঝা সম্ভব নয় - তা আমি তুলে ধরছি । আমি মূলত সত্য ঘটনা তুলে ধরছি ।
কাদিয়ানির কথা মনে পড়লো আপনার লিখা পড়তে পড়তে,
কাদিয়ানি প্রথমে জ্বিহাদ নিয়া লিখা ও আন্দোলন শুরু করলো,
শেষ করলো জ্বিহাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়া এবং স্থায়ী ফিত্নার জন্মদিয়া,
আপনি ব্লগে লিখা শুরু করলেন ইসলামের দাওয়াত নিয়া,
ভয় হয় আপনি না আবার শেষে প্রকাশ হন জঙ্গি-লীগের চ্যালা হইয়া ,
মাইনাস
মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। সুরা হুজরাত : ১২ ।
এই আয়াতটাকে আমি ভালভাবে প্রতি সপ্তাহে এক বার হলেও পড়ি ।
দয়া করে আপনি অন্তত আজ এক বার পড়ুন ও ভাবুন ।
মাইনাস, মাইনাস , মাইনাস , মাইনাস
আপনাকে ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন