শিবিরের কুখ্যাত সন্ত্রাসী,আলবদর কমান্ডার ও কোটিপতি মীর কাশেম আলী-র উত্থান যেভাবে
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২০ আগস্ট, ২০১৫, ১১:৩১:২৬ সকাল
আলহামদুলিল্লাহ । কুক্ষ্যাত শিবির নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় হয়েছে ।
১৪টি অভিযোগের মধ্যে ৮টি সন্দেহাতীতভাবে ও দুটি আংশিক প্রমাণিত :: ১১ নং অভিযোগে ৩ বিচারকের সর্বসম্মত মৃত্যুদণ্ডের রায় :: ১২ নং অভিযোগে ফাঁসির সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যার নেতৃত্বে বৃহত্তর চট্টগ্রামে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী নৃশংস নির্যাতনের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল, যার নাম শুনলে চট্টগ্রামের মানুষ আতঙ্কে থাকতো, সেই ভয়ঙ্কর কমান্ডার বর্তমানে জামাতের নির্বাহী কমিটির সদস্য,দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার পৃষ্ঠপোষক ও সৌদি এনজিও রাবেতা আলম আল ইসলামী এনজিও-র নির্বাহী মীর কাসেম আলীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ রোববার , ২ নভেম্বর ২০১৪ জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরুর পর এটি একাদশ রায়।
এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও আল বদর কমান্ডার কীভাবে কোটিপতি হলো ও তার গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে । সেই সব প্রশ্নের কিছুটা জবাব রয়েছে আমার এই লেখায় ।
১৯৭৮ সালের ৬ ই ফেব্রুয়ারীর আগে ইসলামী ছাত্র শিবির পরিচিত ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘ নামে । ১৯৭১ সালে এই সংগঠণ আল বদর নামে ঘাতক বাহিনী গঠণ করে ও বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণকে হত্যা করে ও ধ্বংসাত্মক কাজ-কর্ম করে ।
জামায়াত নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিত্তবৈভবের মালিক হচ্ছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এই মীর কাসেম আলী ওরফে খান সাহেব। জামায়াতের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলী একজন বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী। জামায়াত-শিবিরের অর্থের প্রধান জোগানদাতাও তাকেই বলা হয়।
নামে-বেনামে শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক এই জামায়াত নেতা। মূলত অর্থবিত্তের কারণেই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে রয়েছে তার ব্যাপক প্রভাব।
মীর কাসেম আলীর বেড়ে ওঠা :
মীর কাসেম আলীর জন্ম ১৯৫২ সালে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা গ্রামে। তার বাবা তৈয়ব আলী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করতেন। চার ভাইয়ের মধ্যে মীর কাসেম দ্বিতীয়। মীর কাসেমকে এলাকার মানুষ মিন্টু নামেই চেনেন। বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন চট্টগ্রামে। ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে। ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ছাত্র থাকাকালে জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের চট্টগ্রাম সভাপতি হন তিনি।
একাত্তরের ভূমিকা:
৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় জামায়াত পক্ষ নেয় পাকিস্তানের। রাজাকার অর্ডিন্যান্স জারির পর জামায়াতে ইসলামী তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রসংঘের নেতাদের নিজ নিজ জেলার আলবদর বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করেন। সেই সুবাদে মীর কাসেম আলী চট্টগ্রাম জেলার প্রধান হযন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ’৭১ এর ২ আগস্ট চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউটে তার নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সভাপতি হিসেবে তিনি তার ভাষণে বলেন, গ্রামগঞ্জে প্রতিটি এলাকায় খুঁজে খুঁজে পাকিস্তানবিরোধীদের শেষ চিহ্নটি মুছে ফেলতে হবে।
মীর কাসেমের বিরুদ্ধে আরেকটি বড় অভিযোগ হচ্ছে, তিনি সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়ি ‘মহামায়া ভবন’ দখল করে বানান টর্চার সেল। ডালিম হোটেল নামে পরিচিত ওই টর্চার সেলে এনে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্মম নির্যাতন করা হতো।
স্বাধীন দেশে মীর কাসেম আলী :
জানা যায়, স্বাধীনতার পর মীর কাসেম ঢাকায় আসেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই মুক্তিযোদ্ধাদের রোষানলে পড়ার ভয়ে চলে যান লন্ডনে। সেখান থেকে সৌদি আরব। সৌদিতে থাকাকালীন সময়ে সেখানকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে তার সুসম্পর্ক হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশে ফিরে আসেন মীর কাসেম।
মীর কাসেমের নেতৃত্বেই ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ইসলামী ছাত্রসংঘ নাম পরিবর্তন করে ছাত্রশিবির নামে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি হন শিবিরের প্রথম কেন্দ্রীয় সভাপতি। এরপর মীর কাসেমকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার কারণে ১৯৮০ সালে তিনি রাবেতা আল ইসলামীর এ দেশীয় পরিচালক হন।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর টাকায় আস্তে আস্তে গড়ে তোলেন ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা ট্রাস্ট ও ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস। জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের আয়ের এবং কর্মসংস্থানের বড় উৎস হয়ে দাঁড়ায় এসব প্রতিষ্ঠান। সঙ্গে সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে বাড়তে থাকে তার আধিপত্য।
যত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক মীর কাসেম : মীর কাসেম আলী যেমন দলীয় আর্থিক ফান্ড সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি নিজেও হয়েছেন শত শত কোটির টাকার মালিক।
ব্যাংক, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, টেলিযোগাযোগ, গণমাধ্যম ও শিক্ষা—সব খাতেই রয়েছে তার দাপুটে বিচরণ ।
মীর কাসেম আলী মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রাবেতা আল ইসলামীর বাংলাদেশ পরিচালক, ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিচালক, ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ইবনে সিনা ট্রাস্ট (প্রশাসন) ও ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের বোর্ড অব ডিরেক্টরের সদস্যও তিনি।
এই ট্রাস্টের আটটি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক ও ইমেজিং সেন্টার, ১টি মেডিকেল কলেজ, ১টি নার্সিং কলেজ ও একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক স্কুল ও কলেজ এবং দিগন্ত পেপার মিলের মালিক কাসেম আলীই। তিনি ফুয়াদ আল খতিব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট (এআইটি) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলী। এর অধীনে রয়েছে দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকা আর দিগন্ত টেলিভিশন।
এ ছাড়া মীর কাসেম আলীর ব্যক্তিগত বাণিজিক গ্রুপের নাম ‘কেয়ারী’। তিনি কেয়ারি হাউজিং ও ইডেন শিপিং লাইন্সের চেয়ারম্যান। নামের আগে ‘কেয়ারী’ রয়েছে—এ রকম ১০টি কোম্পানির পরিচালক মীর কাসেম আলী। এগুলো হলো কেয়ারী লিমিটেড, কেয়ারী পোলট্রি হ্যাচারি অ্যান্ড প্রসেস, কেয়ারী স্প্রিং, কেয়ারী শান, কেয়ারী ট্যুরস অ্যান্ড সার্ভিসেস, কেয়ারী তাজ, কেয়ারী কালার সেন্টার, কেয়ারী ঝর্ণা, কেয়ারী রিয়েল এস্টেট ও কেয়ারী টেলিকম লিমিটেড।
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার জন্য রয়েছে মীর কাসেমের একক মালিকানাধীন বিলাসবহুল পাঁচটি প্রমোদতরি কেয়ারী ক্রুইজ, কেয়ারী ডাইন, কেয়ারী সিন্দবাদ, কেয়ারী কর্ণফুলী ও কেয়ারী তরঙ্গ।
এ ছড়া কেয়ারী গ্রুপের সহস্রাধিক অ্যাপার্টমেন্ট ও বিপণিবিতান রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে।
বিচার ঠেকাতে মীর কাসেমের তৎপরতা :
জানা যায়, মানবতাবিরোধী বিচারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে মীর কাসেম আলী ২০১০ সালের ১০ মে ছয় মাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কনসালট্যান্সি ফার্ম কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে চুক্তি করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ ও লবিং করাই ওই চুক্তির লক্ষ্য।
চুক্তি অনুযায়ী কনসালট্যান্সি ফার্মটি মীর কাসেম আলীর পক্ষে আমেরিকান কংগ্রেস, সিনেট সদস্য এবং ইউএস প্রশাসনের প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করবে। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার বৈদেশিক নীতির বিষয়ে মতামত দেবে।
তারই লবিংয়ে হাউস অব কমন্সের শক্তিশালী একটি লবিস্ট গ্রুপ কাজ শুরু করে এবং তারা যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন শহরে সেমিনার ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে থাকে।
মীর কাসেম আলীর ভাই মীর মাসুম আলী ও জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাকীবুর রহমান নিজামীর তত্ত্বাবধানে ‘অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস’ এবং ‘হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ চালাতে শুরু করে নানা প্রচারণা। ‘ক্লোয়াক্রম অ্যাডভাইজর’ ও ‘কে গ্লোবাল’ নামে দুটি লবিং প্রতিষ্ঠানও সাব-কনট্রাক্ট এর ভিত্তিতে কাজ শুরু করে তাদের সঙ্গে।
অবশেষে বিচারের মুখোমুখি:
এত কিছু করেও শেষরক্ষা পাননি জামায়াতের প্রভাবশালী এই ব্যবসায়ী নেতা। জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
ওই দিন বিকেলেই মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয়ের (দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশন) থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এরপর গত বছরের ১৬ মে মীর কাসেমের বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ দাখিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ২৬ মে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-১। এরপর মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তর করা হয়। গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর মীর কাসেম আলীকে ১৪টি ঘটনায় অভিযুক্ত করে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
বিচারিক কার্যক্রম শেষে গত ৪ মে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল। গত বৃহস্পতিবার মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য আজকের এ দিন নির্ধারণ করা হয়। ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলোর মধ্যে মীর কাসেমের মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম সবচেয়ে কম সময়ে শেষ হলো।
ইসলামী ছাত্র শিবিরের মহাআহমক ও ভোলাবালা শিবির কর্মী । মূলত এমন ছেলেই শিবিরে বেশী । এদের অনেকে গেলমান বলে থাকে । আর প্রায় সব শিবির কর্মী নেটে ছাগু নামে পরিচিত ।
খবরের উৎস
বিষয়: বিবিধ
২৯৯২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি আপনার লেখা লিখুন ।
আমাকে লেখা নিয়ে অযাচিতভাবে পরামর্শ দিতে আসবেন না ।
লেখার সাথে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মন্তব্য করবেন । অন্যথায় ব্লক করবো ।
এক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হল, আপনার দৃষ্টিতে তিনি কবে থেকে কুখ্যাত হয়েছেন? আপনার শিবিরে যোগ দেবার আগে থেকে? নাকি শিবির থেকে চলে আসার পর থেকে?
আচ্চা আপনি তো লেখালেখি করেন, তাই অভ্যাস আগে থেকেই আছে বলে বিশ্বাস করি। তাছাড়া আপনি দাবী করেছেন, শিবিরের প্রকাশনার সাথে যারা জড়িত তাদের সাথে আপনার পরিচিত খুবই একান্ত, আপনি আরো দাবী করেছেন শিবিরের ফুল কুড়ি অথবা কিশোর কন্ঠে আপনি লিখতেন! সঠিক কথাটি আমার মনে নাই, তবে আপনি লিখতেন এমন দাবী ওয়ালা কথা আমি পড়েছি।
প্রশ্ন হল, আপনি যখন শিবিরে থাকতেও লিখতেন, তখনকার সময়ের আপনার কোন লিখা এমন আছে কি, যা দিয়ে আমরা বুঝতে পারি, আপনি আসলেই একজন প্রতিবাদী যুবক, সত্য উৎঘাটনে আপনি তখন থেকেই সজাগ ও সচেতন একজন মানুষ। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
কোনটা আপনি শিবিরে
১। আপনি বলেছেন :
আপনি আগে থেকেই তার বিরুদ্ধে খেপে আছেন। তার মেয়েদের ছবি দিয়ে বহু পোষ্ট দিয়েছেন। আজকের প্রতিবেদনও তারই ধারাবাহিকতা মাত্র।
উত্তর : আমি অনুরাগ ও বিরাগের বশবর্তী হয়ে লেখালেখি করি না । সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য তুলে ধরি ।
প্রাসঙ্গিকতার কারণে মহিলাদের ছবি ব্যবহার করা খারাপ কিছু নয় । উল্লেখ্য নিকাবী মহিলাদ্বয় ফেসবুকে আলোচিত সন্ত্রাসীকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লোকদের অন্যতম বলে দাবি করেছেন । এই কথার সাথে আমি একমত নই ।
২। আপনি বলেছেন :
আপনি বহু জায়গায় দাবী করেছেন আপনি শিবির করতেন এমনকি শিবিরের উচ্চ পর্যায়ের সাথে যোগাযোগ ছিল।
উত্তর : দাবি করতেই পারি । কারণ
১।আমি শিবির অধ্যষিত এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়েছি কয়েক বছর ।
২। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতাম । যেমন : দৈনিক ইনকিলাব । সুতরাং যোগাযোগ থাকা অসাভাবিক কিছু নয় ।
৩। আপনি বলেছেন :
এক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হল, আপনার দৃষ্টিতে তিনি কবে থেকে কুখ্যাত হয়েছেন? আপনার শিবিরে যোগ দেবার আগে থেকে? নাকি শিবির থেকে চলে আসার পর থেকে?
উত্তর : যে দিন থেকে বুঝতে পেরেছি জামায়াত-শিবির বাংলাদেশের জন্ম হোক সে দিন থেকেই আমি জামায়াত-শিবিরের লোকদের ঘৃণা করি । শিবিরে যোগ দেওয়ার সাথে এই ঘৃণার কোন সম্পর্ক নেই । আমি ক্লাস এইট থেকেই জানি জামায়াত-শিবির রাজাকারদের দল । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হল ও আবাসিক এলাকাগুলোতে আজও সাধারণ ছেলেরা অবস্হান করতে পারে না । বাধ্য হয়েই অনেক সাধারণ ছেলে শিবিরের সাথে সম্পৃত্ত হয় ।
৪। আপনি বলেছেন :
আচ্চা আপনি তো লেখালেখি করেন, তাই অভ্যাস আগে থেকেই আছে বলে বিশ্বাস করি। তাছাড়া আপনি দাবী করেছেন, শিবিরের প্রকাশনার সাথে যারা জড়িত তাদের সাথে আপনার পরিচিত খুবই একান্ত, আপনি আরো দাবী করেছেন শিবিরের ফুল কুড়ি অথবা কিশোর কন্ঠে আপনি লিখতেন! সঠিক কথাটি আমার মনে নাই, তবে আপনি লিখতেন এমন দাবী ওয়ালা কথা আমি পড়েছি।
উত্তর : আপনার কথা সঠিক । আমার তখন লেখালেখি করা এক অর্থে পেশাই ছিল । কিশোর কন্ঠে লেখার জন্য আমাকে সম্মানি দেওয়া হতো । যেমন : ইত্তেফাকের সাহিত্য সম্পাদক কবি আল মুজাহিদীকেও দেওয়া হতো ।
উপরন্তু আমি সেখানে লিখতে গিয়েছি লেখক হিসেবে । শিবির হিসেবে নয় ।
শিবিরের মুখপাত্র ছাত্র সংবাদে ক্যারিয়ার গাইড লাইনেও লিখেছি । অবশ্যই লেখক হিসেবে লিখেছি । শিবির হিসেবে নয় ।
৪। আপনি বলেছেন :
প্রশ্ন হল, আপনি যখন শিবিরে থাকতেও লিখতেন, তখনকার সময়ের আপনার কোন লিখা এমন আছে কি, যা দিয়ে আমরা বুঝতে পারি, আপনি আসলেই একজন প্রতিবাদী যুবক, সত্য উৎঘাটনে আপনি তখন থেকেই সজাগ ও সচেতন একজন মানুষ।
উত্তর : আমি এক জন লেখক হিসেবে সেখানে লিখতে গিয়েছি । এসব পত্রিকা বা ম্যাগাজিনের লোকরাই তাদের প্রয়োজনে আমাকে লিখতে বলেন । তার বিনিময়ে আমি আমার কাজ করতাম । এতটুকু । তবে আমি লেখালেখির কারণেই তাদের অনেক তথ্য আমি জানতে পারি যা অন্যদের কাছে বিস্ময়কর মনে হতে পারে ।
পরিশেষে আপনাকে বলছি, সমাজের আবাল বা কম জানা-শোনা ও ব-ল-দ ভদ্র ধরনের ছেলেরা শিবির করে । তবে তরুণ সমাজের একটা বড় অংশ ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতের ১২ হাজার প্রতিষ্ঠানে চাকুরী পাওয়ার লোভের বশবর্তী হয়ে এবং জামায়াতের লোকদের নিকাবী মেয়ের প্রলোভনের কারণে শিবিরে যুক্ত হয় ।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন