শালীন পোষাক, হিজাব, সংগীত ও কোরিওগ্রাফী প্রসঙ্গ
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১৫ আগস্ট, ২০১৫, ০৫:১০:৪৯ বিকাল
বাংলা গান আর সর্ট ফ্লিমে মেয়েদের হিজাব সামান্য হলেও প্রবেশ করা শুরু করেছে । এই বিষয়টাকে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখছি :
https://www.youtube.com/watch?v=VyV5DjPSTK0
ভিডিওটাতে হিজাব পরিহিতা অভিনেত্রী হলেন অর্পণা ঘোষ । হিজাব শব্দটা ব্যাপক হলেও সাধারণত মেয়েদের মাথা ও বুক ঢাকার কাপড়কে হিজাব বলা হয় ।
আজ আমি আপনাদের এমন একটা ব্যতিত্রমধর্মী গান উপস্হাপন করছি : https://www.youtube.com/watch?v=mxdXBmh1XOI
সংগীত :
গীত, বাদ্য এবং নৃত্য - এই তিনটিকেই একত্রে সঙ্গীত বলা হয় । অর্থাৎ কোন গান সংগীতে পরিনত হতে হলে তার সাথে অবশ্যই বাজনা ও নাচ থাকতে হবে ।
বিনোদন শিল্প সঙ্গীতনির্ভর হয়ে উঠছে । এর ফলে বাড়ছে এই ‘পারফর্মিং আর্ট’-এর মর্যাদা ও গুরুত্ব । কোরিওগ্রাফি হলো এমন একটি পারফর্মিং আর্ট ।
কোরিওগ্রাফি :
কোরিওগ্রাফি হল নৃত্য পরিচালনা। যে কোনও ইভেন্ট, শো, পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান ও সংগীতানুষ্ঠানে নাচ অপরিহার্য। শিল্পীকে অনুষ্ঠানের উপযোগী সঠিক তালিম দেওয়ার দায়িত্ব কোরিওগ্রাফারের। সুতরাং, কোরিওগ্রাফারকেও একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ নৃত্যশিল্পী হতে হয়। এর পাশাপাশি কোরিওগ্রাফারকে জানতে হয় বিভিন্ন ধরনের নৃত্য শৈলী ।
নাচের ধরন ঠিক করার জন্য কোরিওগ্রাফারকে যথেষ্ঠ চিন্তাভাবনা করতে হয়। কোরিওগ্রাফারকে একই সঙ্গে গান, বাজনা, অভিনয় এবং স্টেজ-সেটিং, লাইটিং, কস্টিউম সবকিছুই মাথায় রেখে তৈরি করতে হয় নির্দিষ্ট নাচের ধরন। আবার সবকিছুর নিখঁত সংমিশ্রণের জন্য প্রয়োজন হয় কোরিওগ্রাফারের নিজস্ব সৃষ্টিশীলতা ও সৌন্দর্যবোধ।
একজন নৃত্যশিল্পীর দক্ষতাকে বার করে আনতে হায্য করতে পারেন একজন কোরিওগ্রাফারই । নৃত্য শিল্পীর দেহভঙ্গি, মৌখিক অভিব্যক্তি ও তার নাচের মুদ্রা যে কোনও সংগীত বা মিউজ়ককে সুন্দরভাবে তুলে ধরে এবং সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানকেই সুন্দর করে তোলে । এর ফলে দর্শক ও সংগীত সমোজদারও আনন্দ পায় ও অনুষ্ঠানের গানটাও দর্শকপ্রিয়তা পায় ।
আজ আমি বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটা ইসলামী গানের কোরিওগ্রাফি তুলে ধরছি । এই ইসলামী গানটা হলো : কাজী নজরুল ইসলামের “বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা” । কোরিওগ্রাফিটিতে অংশ নিয়েছেন খুলনার আব্বাস উদ্দীন একাডেমির শিল্পী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ । কোরিওগ্রাফিতে উদিসা নৃত্যের মুদ্রা ব্যবহার হয়েছে।
গানের কথাগুলো হলো :
বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা
বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা
শির উঁচু করি মুসলমান।
দাওয়াত এসেছে নয়া যমানার
ভাঙ্গা কেল্লায় ওড়ে নিশান।।
মুখেতে কালেমা হাতে তলোয়ার,
বুকে ইসলামী জোশ দুর্বার,
হৃদয়ে লইয়া এশক আল্লাহর
চল আগে চল বাজে বিষান।
ভয় নাই তর গলায় তাবিজ
বাঁধা যে রে তোর পাক কোরান।।
নহি মোরা জীব ভোগ- বিলাসের,
শাহাদাত ছিল কাম্য মোদের,
ভিখারির সাজে খলীফা যাদের
শাসন করিল আধা জাহান-
তারা আজ পড়ে ঘুমায়ে বেহুঁশ
বাহিরে বহিছে ঝড় তুফান।।
ঘুমাইয়া কাজা করেছি ফজর,
তখনো জাগিনি যখন যোহর,
হেলা ও খেলায় কেটেছে আসর
মাগরিবের আজ শুনি আজান।
জামাত শামিল হওরে এশাতে
এখনো জমাতে আছে স্থান।।
শুকনো রুটিকে সম্বল ক’রে
যে ঈমান আর যে প্রানের জোরে
ফিরেছে জগত মন্থন ক’রে
সে শক্তি আজ ফিরিয়ে আন।
আল্লাহ আকবর রবে পুনঃ
কাঁপুক বিশ্ব দূর বিমান।।
এই তো গেলো কোরিওগ্রাফি নিয়ে কিছু কথা । এবার হিজাব নিয়ে কিছু বলছি ।
মেয়েদের হিজাব :
হিজাব শব্দটা ব্যাপক । হিজাব বলতে মেয়েদের ক্ষেত্রে সাধারণত মাথা ও বুক ঢাকার কাপড়কে বলা হয়ে থাকে । তবে ইসলাম ধর্মে পোষাক পড়ার নিয়ম-কানুন, চলাফেরা ও পারস্পরিক কথা বলার নিয়ম-কানুন ও নীতিমালাকে হিজাব বা পর্দা বলা হয় । নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য হিজাব বা পর্দা ফরজ বা আবশ্যিক বিষয় ।
ইসলাম ধর্ম পোষাক পড়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দেয় :
১. মেয়েদের হাতের তালু ও মুখমন্ডল ছাড়া সমগ্র শরীর ঢিলা যে কোন পোষাক দিয়ে রাখতে হবে । (বর্তমানে কিছু মেয়ে প্রচন্ড টাইট পোষাক পড়ে থাকে যা তাদের জন্য আড়ামদায়ক নয় এবং টাইট পোষাক পড়ার জন্য তাদের গুনাহ্ও হচ্ছে । )
২. ব্যক্তিগত অঙ্গ (বুক, পিঠ, চুল, গলা, কান, পেট, হাটু, পায়ের গোড়ালী)ভালভাবে ঢেকে রাখতে হবে ।
৩. পোষাক ও আচরনের মাধ্যমে মার্জিতভাব প্রকাশ করতে হবে ।
৪. সাজ সজ্জার ক্ষেত্রে পরিমিতিবোধের দিকে নজর দিতে হবে ।
৫. পোষাক ও আচরনের মাধ্যমে আল্লাহভীতি প্রকাশ পায় সে দিকে নজর দিতে হবে ।
শুধু ইসলাম ধর্মই নয় হিন্দু, বৌদ্ধ , খৃষ্টান, ইহুদী, শিন্টো-সহ প্রায় ৫০ টা ধর্মে বলা আছে কোন মেয়ে বুক ও মাথা সঠিকভাবে না ঢেকে চলাফেরা করলে তার পাপ হবে এবং সে স্বর্গে যেতে পারবে না ।
মেয়েদের পোশাক পরিচ্ছদের পাশাপাশি চোখ,হাত,মুখ,নাক,কান এবং হৃদয়েরও পর্দা বা হিজাবকে আয়ত্ব করতে হবে । এসম্পর্কে যেসব বিষয় মেনে চলতে হবে :
1. পরিশিলীত ভাবে শুদ্ধভাষায় কথা বলতে হবে ।
2. আস্তে আস্তে কথা বলতে হবে । চেচিয়ে বা জোড়ে জোড়ে কথা বলা যাবে না ।
3. হাত দিয়ে বাবা, ভাই, স্বামী ও ছেলে ছাড়া অন্য কোন ছেলের হাত ধরা যাবে না । অথবা বাবা, ভাই ও ছেলে ভিন্ন অন্য কোন ছেলে যাদের বিয়ে করা যায় তাদের বিয়ে করা ছাড়া নিজের হাত বা শরীরের অন্য কোন অংশ তাদের স্পর্শ করতে দেওয়া বা করার সুযোগ দেওয়া যাবে না ।
4. চোখ দিয়ে অপরিচিত বিপরীত লিঙ্গের লোক বা অমুসলিম লোকদের ( তা ছেলেই হোক বা মেয়েই হোক ) গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে না । যদি তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে বা করার চেষ্টা করে, তখন ওড়নার কিছু অংশ দিয়ে নিজের চেহারাকে আড়াল করতে হবে বা মাথা নিচু করতে হবে ।
5. নাক দিয়ে বাবা, ভাই ও ছেলে ভিন্ন অন্য কোন ছেলে যাদের বিয়ে করা যায় তাদের উপস্হিতি অনুভব করা যাবে না । যখন তারা সুগন্ধী ব্যবহার করে চলাফেরা করে ।
6. হৃদয়কে যে কোন ধরনের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্যবহার করা যাবে না ।
7. চেহারার মধ্যে সব সময় মার্জিত ও বিনয়ী ভাব ফুটিয়ে তুলতে হবে ।
8. সব সময় মুখে ও চিন্তায় আল্লাহকে স্মরণের মধ্যে রাখতে হবে ।
9. বাবা,মা ও স্বামীর সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে । কারণ তাদের সাথে সুসম্পর্ক ছাড়া আল্লাহর সন্তোষ অর্জন করা যাবে না ।
10. শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অধিকার আদায় করতে হবে । তাদের ভালবাসতে হবে । শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে ভালবাসার অর্থ হলো তাদের যত্ন নেওয়া ।
11.ভাই ও ছেলে ভিন্ন অন্য কোন ছেলে যাদের বিয়ে করা যায় তাদের বিয়ে করা ছাড়া নিজের হাত বা শরীরের অন্য কোন অংশ তাদের স্পর্শ করতে দেওয়া বা করার সুযোগ দেওয়া এবং পরবর্তীতে এসব ছেলেদের বাবা-মার অমতে নিজেই বিয়ে করা অথবা হিডেন বিয়ে করা বা ইডেন বিয়ে করা যাবে না ।
যদি করা হয় তাহলে জাহান্নামের বাসিন্দা হতে হবে এবং বাবা-মা-ভাই-বোনের সাথে চির দিনের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে ।
ছেলেদের হিজাব :
অনেক ছেলে থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পরে । অনেক ছেলে এমনভাবে প্যান্ট পরে যাত তার জাইঙ্গা দেখা যাওয়ার পাশাপাশি পশ্চাৎদেশও পর্যন্ত দেখা যায় । অনেক ছেলে লুঙ্গি পরে খালি গায়ে মেয়েদের সামনে দিয়ে চলাফেরা করে । অনেক ছেলে মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সাজগোজ করে । অনেক ছেলে মেয়েদের মতো কানের দুল পরে এবং গলা ও হাতে অলংকার ব্যবহার করে । এতে এসব ছেলেদের পর্দা লঙ্গিত হয় ।
উপসংহার :
আমাদের সব কিছুতেই পরিমার্জিতবোধ ও শালীনতা বজায় রাখতে হবে । শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির উপর সবারই কম-বেশি জ্ঞান অর্জন করার চেষ্টা করা উচিত ।
https://www.youtube.com/watch?v=K-X04EQcIFk
কোন গান বা কোরিওগ্রাফী করার সময়ও এই দিকটা লক্ষ্য রাখা উচিত । সঠিক ও শুদ্ধ নিয়তে সংগীত ও নাচ শেখা এবং মেতে থাকাও সাওয়াবের কাজ । আর এসব সহায়তা করলে সাওয়াব হয় । সংগীতের মাধ্যমেও স্রষ্টাকে পাওয়ার আকুতি সহজভাবে অন্যের কাছে তুলে ধরা যায় ।
বিষয়: বিবিধ
১৯৫৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাদ্য যন্ত্র-গান-গায়ক হওয়া-কবি হওয়া-ছবি আঁকা সম্পর্কে নেতিবাচক অনেক হাদিস রয়েছে ।
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা করার ক্ষেত্রে এসব হাদিসকে ব্যবহার করে এক শ্রেণীর লোক বরাবরই শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা করা হতে বিরত রাখার চেষ্টা করেছে ।
কিন্তু বাস্তব অবস্হা হতে মুসলিম সমাজকে তারা কোনক্রমে এসব হতে বিরত রাখতে পারছে না । কারণ এগুলো মানুষের হৃদয় হতে উঠে আসা বিষয় ।
আশা করি উত্তর পেয়েছে ।
আমরা যদি সংস্কারকৃত মনের অধিকারী মুসলিম হতে চাই, তাহলে আমাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে ।
যদি না করি, আমাদের ঘরগুলোতে স্টার জলসা-সনি প্লাস-দুরদর্শন চ্যানেলগুলো রাজত্ব করবে আর আমাদের মেয়েরা পাখি ড্রেসের পাখি হবে আর সানি লিউনি হতে থাকবে ।
আফসুস । ইসলামী পোষাক বা হিজাব পড়ে অভিনয় করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেয়ে । এই জাতীর হুস কবে হবে ।
https://www.youtube.com/watch?v=jcHhWtGmX_o
হিন্দু মেয়ে হিজাবের গুরুত্ব বোঝে । মুসলিম মেয়ে বোঝে না । মিডিয়াতে ক্যারিয়ার নষ্ট হবে - এই কথা চিন্তা করার পরও বিষয় ও প্রাসঙ্গিকতার কারণেও অনেক মুসলিম নামধারী নায়িকা হিজাব তো দুরে থাক আল্লাহর নামটুকু নেয় না । নাম নেয় ভগবানের । কবরকেও বলে স্মসান ।
দয়া করে সামান্য হলেও দুরদর্শী হোন । প্রজ্ঞাবান হোন ।
সুতরাং, যদি উপযুক্ত দলীল থাকে তো পেশ করুন অথবা আপনার এই ফালতু চিন্তা নিজের মাথায় রাখুন।
এবার আমার প্রশ্নের উত্তর দিন :
১। টেলিভিশন ব্যবহার করে ইসলাম প্রচারের কথা কুরআন হাদিসের কোথায় আছে ?
২। নামাজ পড়ার জন্য ও সময় জানার জন্য ঘড়ি ব্যবহার করার কথা কুরআন হাদিসের কোথায় আছে ?
৩। ইসলাম প্রচারের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করা কুরআন হাদিসের কোথায় আছে ?
৪। জিহাদ করার জন্য (!)বা রাষ্ট ক্ষমতা দখল করার জন্য পরমাণু প্রযুক্তি আয়ত্ব করার কথা কুরআন হাদিসের কোথায় আছে ?
৪। ইসলাম কুরআন ও অকাট্য হাদীসের যেটাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে তা কোন ভাবেই কোন অবস্থাতেই বৈধ হবে না। - আপনি বলেছেন ।
উত্তরে বলছি :
১। কুরআনে বৈধ এমন কাজও অগ্রহণযোগ্য অনেক আগে হয়ে গেছে । যেমন :
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاء إِلاَّ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ كِتَابَ اللّهِ عَلَيْكُمْ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَاء ذَلِكُمْ أَن تَبْتَغُواْ بِأَمْوَالِكُم مُّحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً وَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُم بِهِ مِن بَعْدِ الْفَرِيضَةِ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। ( সুরা নিসা : ২৪ )
২। وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاء فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً وَلَا تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً أَبَدًا وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
04
যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই না’ফারমান। ( সুরা নুর : ৪ )
বিশ্বের অধিকাংশ দেশের আদালত ও অধিকাংশ মুসলিম পর্যন্ত এই আয়াতের চর্চা করে না । ঘুটি কয়েক মুসলিম এটা চর্চা করার পক্ষপাতি । এই আয়াতকে ব্যবহার করে সামান্য সংখ্যক বলে যাচ্ছেন যে কোন মেয়ে ধর্ষিতা হলে ও ধর্ষণ হওয়ার সময় চার জন স্বাক্ষী না থাকলে মেয়েকে নিরব থাকতে হবে - কারণ এটাই ইসলামী আইন । যেমন দেখুন - এই ভিডিওতে পাকিস্তানের বিখ্যাত এক লোক এমন কথাই বলেছেন : https://www.youtube.com/watch?v=GZ1RbMau-2Y
সূদ, জেনা, হত্যা ইত্যাদিও বৈধ হয়ে যেত। - আপনি বলেছেন ।
উত্তরে বলছি : সংগীত বা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সাথে সুদ-জেনা-হত্যার তুলনা অবান্তর ।
সুদ বা রিবা সারা বিশ্ব হতে বিলুপ্ত হয়েছে । বর্তমানে সুদ বলতে স্হির মুনাফাকে বোঝানো হয় । অপর দিকে রিবা বা সুদ বলতে চক্র বৃদ্ধি হারে সুদ যা মানুষকে দেউলিয়া করে দেয় ।
বাস্তবে স্হির মুনাফা ( বর্তমান সময়ের ব্যাংকের সুদ ) এবং অতীতের চক্র বৃদ্ধি হারের সুদ বা রিবা - দুইটাই খারাপ । উভয়ই পরিতাজ্য ।
ইসলামে কেন সব ধর্মে ব্যভিচার খারাপ কাজ ।
বিনা কারণে বা আইনগত কারণ ছাড়া হত্যাকান্ড অপরাধ ও গুনাহ ।
বর্তমান সময়ে কুরআন হাদিসে অনেক কিছু না থাকলেও হচ্ছে । যেমন : আত্মঘাতী বোমা হামলা বা আত্মঘাতী হওয়া । এই বিষয়টা সহিহ হাদিস দ্বারা হারাম প্রমাণিত । অথচ অনেক হাদিসে গান করা ও এমন কি বাদ্য যন্ত্র ব্যবহার করে গান করার কথাও দেখা যায় ।
কুরআন-হাদীসের এক বিন্দু পরিমান জ্ঞান যার মাথায় থাকে সে এমন মানসিক প্রতিবন্ধি মার্কা কথা বলতে পারে না। কিসের মধ্যে কি! ঐ আয়াতের কোন জায়গায়, কোন শব্দের মাধ্যমে বলা হয়েছে যে সাক্ষি নারীদেরই আনতে হবে!!!! নূন্যতম অক্ষরজ্ঞান টুকু আছে? যে অনুবাদ কপি করে তুলে দিয়েছেন তা পড়ে বোঝার যোগ্যতা টুকু আছে? অপবাদ আরোপ কি ধর্ষিতা করে? পাঠার মতো ভ্যা ভ্যা করার আগে একটু চোখে দেখে বুঝার চেষ্ঠা করেন।
আপনার মুর্খতার মাত্রা আরো প্রমাণ করেছেন "রিবা"র বিষয়ে মন্তব্যটার মাধ্যমে। কোন আরবী শব্দকোষে আপনি পেয়েছেন যে "রিবা" শব্দের অর্থ চক্রবৃদ্ধি সুদ? একটা রেফারেন্স বলেন দেখি। নাকি আপনার ইমাম আযাযিল আল মালাউন এই সংজ্ঞা শিখিয়েছে?
রিবা আরবী শব্দ। যার মুজমা আলাইহি (সর্বজনবিদিত) ও মুতাওয়ারাছ (অনুসৃত) অর্থ রিবা সংক্রান্ত আয়াত ও হাদীসসমূহের তরজমা থেকেই স্পষ্ট। আর তা এই যে, ঋণের বিপরীতে মূলধনের অতিরিক্ত কোনো কিছুর শর্তারোপ করাই হল রিবার চুক্তি আর অতিরিক্ত বস্তু হচ্ছে রিবা। এতে ঋণের ধরন ও শর্তকৃত অর্থ কম-বেশি হওয়ার কোনো পার্থক্য নেই। 'রিবা'র বেশ কয়েকটি অর্থের মধ্যে একটি অর্থ চক্রবৃদ্ধি সূদ, কিন্তু এটা একমাত্র অর্থ নয়।
এবার আপনার তথাকথিত প্রশ্নে আসি-
(১) এটা বিতর্কিত বিষয়। সবাই কি ঢালাও ভাবে এটার সমর্থণ করে? কিছু আলেম এটার পক্ষে, তবে বেশিরভাগই বিপক্ষে। আর করলেই বা সমস্যাটা কোথায়? যে বাক্সটা নাচগান দেখার জন্য কেনা হয়েছিলো, সেটার মাধ্যমে যদি ২/৩ঘন্টাও এগুলো থেকে বিরত রাখা যায় তাতে সমস্যা কোথায়?
(২) আসলেই আপনার মাথায় মগজের বদলে উৎকৃষ্ঠমানের গোবর আছে। ঘড়ি দেখে নামাযের সময় নির্ধারন করা হয় সেটা আপনাকে কে বলেছে? ঘড়ির সময়টা বলা হয় সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে। সবার কি আসমান দেখে সময় বলার যোগ্যতা আছে?
(৩) ব্লগে বা অনলাইনে-ইন্টারনেটে দ্বীন প্রচার করা যাবে এটা কি কুৃরআন হাদীসে আছে? না থাকলে আপনি করছেন কেন? এটার উত্তর পেলে রাসায়নিক বা আধুনিক অস্ত্রের উত্তরও পেয়ে যাবেন।
তো কোথায় সেই হাদীস? রাম পাঁঠার মতো চর্বিতচর্বন না করে দেখান সেই হাদীসগুলো।
এই রকম আকবরী ইসলাম দেখিনি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন