এক মুসলিমের সাথে আরেক মুসলিমের আচরণ কেমন হওয়া উচিত এবং মুসলিমদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য (২য় পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১২ আগস্ট, ২০১৫, ০১:০১:২১ দুপুর



মুসলিম জাতি পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জাতি হলেও মুসলিম জাতি আজ ধর্ম-ভাষা-বর্ণ-দেশ-অঞ্চলভিত্তিতে হাজারে ভাগে বিভক্ত । এর প্রধান কারণ হলো, মুসলিমদের বেশির ভাগই জানেন না যে এক মুসলিমের সাথে আরেক মুসলিমের আচরণ কেমন হওয়া উচিত এবং মুসলিমদের কি কি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আছে ।

আমি মুসলিম । এক জন মুসলিম হিসেবে আমার উপর নৈতিক দায়িত্ব হয়ে পড়েছে, এক মুসলিমের সাথে আরেক মুসলিমের আচরণ কেমন হওয়া উচিত এবং মুসলিমদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা ।

এর আগের পর্বে আমি ৬ টা বৈশিষ্ট্যের কথা তুলে ধরেছি । আগের পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।

আজ আরো কয়েকটা বৈশিষ্ট্য তুলে ধরছি :



৭. মুসলিমরা সময়ানুবর্তী

৮. মুসলিমরা ক্ষতিকর কাজ হতে দুরে থাকে

৯. মুসলিমরা আল্লাহর উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী

১০. মুসলিমরা সৎ ও ভাল কাজ করে

১১. মুসলিমরা ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার চর্চা করে ।

এই ৫ টা বৈশিষ্ট্যের কথা সুরা আসরে বলা হয়েছে । এটি কুরআন শরীফের ১০৩ নম্বর সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর আয়াত সংখ্যা ০৩ ।

আমরা এক নজর সুরা আসরটা পড়ি ও শুনি :

https://www.youtube.com/watch?v=Sd2SxP4JYXk




بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

وَالْعَصْرِ

01

কসম যুগের (সময়ের),

إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ

02

নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;

إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ

03

কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।

এ সূরার মৌলিক শিক্ষা গুলো হলো:

১. সময়ের গুরুত্ব অপরিসীম । সময়ের ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের জিজ্ঞাসিত করা হবে।

২. অধিকাংশ মানুষই ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছে।

৩ তারা ব্যতীত যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে

৪. যারা নিজে সৎকর্ম করেছে ও সেই সাথে অন্যকে সৎকর্ম করার উপদেশ দিয়েছে।

৫. যারা নিজেরা ধৈর্য ধারণ করেছে ও পরষ্পরকে ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছে।





ব্যাখ্যা:

সময়ের গুরুত্ব বুঝাতেই আল্লাহ সময়ের কসম খেয়ে মানবজাতিকে সতর্ক করেছেন যে, মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। অথচ আমরা দৈনন্দিন জীবনে কত সময় না নষ্ট করছি। আর মানুষের জীবনে সময় ফুরিয়ে আসছে । মৃত্যুর পর এ সময়ের সদ্ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে। তখন আমাদের জওয়াব কি হবে তা আমাদের ভাবা দরকার। আমাদের জীবনকাল সীমিত । দিন দিন আমরা মৃত্যুর হওয়ার সময়ের দিকে যাচ্ছি । আমাদের সময়ের সদ্ব্যবহারের প্রতি সচেতন হতে হবে।

আমাদের আল্লাহর উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্হাপন করতে হবে । আমাদেরকে আল্লাহর দেয়া আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী কাজ করতে হবে । ভাল কাজ করতে হবে । শুধু নিজে করলে হবে না । সেই সাথে সমাজের সবাইকে ইসলামের কথা পৌছে দিতে হবে ও ভাল কাজগুলো পরস্পর সংঘবদ্ধভাবে করত হবে ।

কুরআনে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ সম্পর্কে অনেক বেশী তাগিদ দেয়া হয়েছে। আর ধৈয্য ও সহিষ্ণুতরা ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে । বলা হয়েছে : অন্যথায় সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃৃষ্টি হবে এবং বিশৃঙ্খলার পরিণামও ভয়াবহ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।







ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবীন ।

বিষয়: বিবিধ

১৮৮১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

335354
১২ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০১:২৮
বেআক্কেল লিখেছেন : ভাইরে! সুরা আছর এর গুরুত্ব যদি অন্তত আপনে বুঝতেন তাইলে কলম লইয়া এইভাবে ফেতনা-ফ্যাসাদে লিপ্ত হইতেন না। সময়কে গুরুত্ব দিয়া মুসলিম উম্মার একত্রিত কিভাবে হওয়া যায় সেইটা লইয়া কাজ করিতেন। মানুষের সমস্যা হইল, কোরআনের আয়াত দিয়া খালি অন্যের গলদ দেখে নিজেরটা মোটেও দেখেনা।
১২ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০১:৪৬
277315
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আমি মুসলিম উম্মার ঐক্য ও সংহতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি ।

আমি চাই চাই সামান্য হলো মুসলিমদের মধ্যকার বিভিন্ন দল ও উপদলগুলোর লোকরা সামান্য হলেও তাদের ভুল-ভ্রান্তিগুলো পর্যালোচনা করে অগ্রসর হবেন । কিছু ভুল আর গোঁড়ামীর কারণে মুসলিমদের মধ্য বিভেদ ও বিশৃঙ্খল অবস্হা সৃষ্টি হয়েছে । আমি আমার বিভিন্ন লেখায় এই কথাটাই জোড় দিয়ে বলার চেষ্টা করি ।
১২ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০৩:০২
277328
বেআক্কেল লিখেছেন : খোঁচা মাইরা ভুল সংশোধন,
ক্ষিপ্ত কইরা পথ দেখানো,
বেইজ্জত কইরা দাওয়াত প্রদান,
ধমক মাইরা উপদেশ দান,
শাসন কইরা ক্ষমা করণ,
পিটাইয়া মাফ করে দেওন,

এই পদ্ধতি কুরআন-হাদিসের কুথায় পাইছেন বলিবেন কি? কুরআনের কতা বাদ দেন। গীতা, রামায়ন, ত্রিপিটক, বাইবেলের কুথাও কি পাইছেন? উদাহরণ দিবেন।
335360
১২ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০১:৫৩
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : আপনার গান শেখার যে চেষ্টা চলছে বলে জানতে পারলাম তাও কি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ধরে রাখার স্বার্থে নাকি!
১২ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০২:৫২
277325
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : https://www.youtube.com/watch?v=X1SwrWslmkw
এখন এই গানটা শেখার চেষ্টা করছি । কিন্তু পারছি না । ভাবছি এই গানের গায়ক ও সুরকারের কাছে যেয়ে শিষ্যত্ব গ্রহণ করবো ।


হ্যা । গান মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ধরে রাখার স্বার্থেই গাওয়া ও শেখা উচিত ।

এই গানটা শুনুন । বসনিয়ার জনপ্রিয় সংগীত যাতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির জন্য শহীদ হওয়ার কথা বলা হয়েছে ।


https://www.youtube.com/watch?v=MUO3BPAH53I


https://www.youtube.com/watch?v=lFnYHja6R0U

১২ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০৩:২৩
277332
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন :
হ্যা । গান মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ধরে রাখার স্বার্থেই গাওয়া ও শেখা উচিত ।


দারুন!!! মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ধরে রাখার জন্য গান!!
গান দিয়েই যদি হয়ে যেত তাহলে পড়া, লেখা, দাওয়াত এতকিছুর দরকার কি! সব বড়বড় উলামায়ে কিরামরা রেডিও টিভিতে গান গেয়েই কেল্লা ফতে করে ফেলতো।

সবচেয়ে বড় কথা হলো ইসলামে কি গান অনুমোদন করে? সাধারণ অর্থে গান বলতে আমরা বুঝি কথা,সুর ও বাদ্যযন্ত্রের মিলিত রুপ। কিন্তু ইসলামে বাদ্যযন্ত্র কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আবার আপনাকে দেখলাম রীতিমতো বাদ্যযন্ত্রসমেত গানের কোর্সের মডিউল দিয়ে বসে আছেন, তাও এক বেপর্দা মহিলার।এই দিয়ে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য স্থাপন করবেন?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File