জঙ্গী জাহাঙ্গীর ভালোবেসেছিল জুলেখাকে , তারেক মনোয়ার, আমিরুল মুমেনীন মানিক ও মারিয়া তাসকিন প্রসঙ্গ
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৪ জুলাই, ২০১৫, ০৪:৩৫:১২ বিকাল
এবারের ঈদে টিভি দেখার সুযোগ পাইনি । কারণ আমার পেছনে ব্লগ ও বাস্তব জীবনে কিছু জঙ্গী লেগেছিলো । আগের বার ঈদে জঙ্গীদের উপর একটা ৫ খন্ডের ধারাবাহিক নাটক দেখেছিলাম । তবে এবার জামায়াতী জঙ্গী তারেক মনোয়ারের গাওয়া একটা জিহাদী গান “দিন যায় দিন যায় চলে ” এবং তার সাথে জিহাদী গান গাওয়া ছোট্ট মেয়ে মারিয়া তাসকীন অনি-র ”মা, আমি কেনো জানি কখনো তোমায় ভুলতে পারিনি মা “’ গানটা শুনলাম । মূলত মারিয়া তাসকিনকে ভুল বুঝিয়ে জিহাদী গান গাইতে বাধ্য করা হচ্ছে ।
https://www.youtube.com/watch?v=6lC1USsMrWY
https://www.youtube.com/watch?v=bSDIwLEj6oI
https://www.youtube.com/watch?v=X1SwrWslmkw
জামায়াতী সাংবাদিক-গায়ক আমেরুল মুমেনীন মানিকের এই গানটাও শুনলাম । ভাল লাগলো । তিনি যে কেন জঙ্গী দল জামায়াত-শিবিরের দিগন্ত টিভিতে দিনের পর দিন থাকলো তা আমার বোধগম্য নয় । দিগন্ত বন্ধ হয়েছে - ভালই হলো । এর ফলে আমেরুল মুমেনীন মানিকরা ভাল কিছু দিতে পারবে । তার প্রমাণ তার এই গানের ভিডিওটা ।
জঙ্গীদের পোষাক অবিকল ইসলামী পোষাক । বাস্তব অবস্হা হলো সব ধর্মেই জঙ্গী আছে । বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া ইসলামী পোষাক পরা জঙ্গীদেরই আমরা দেখে থাকি ।
শায়খ রহমান ও বাংলা ভাইদের পুলিশ কীভাবে ধরেছিলো তা আমরা টিভিতে লাইভ দেখেছি । আমার বোনের ৩ বছর বয়সী মেয়েটা তাদের কর্মকান্ড দেখে ভীষণ ভয় পেয়েছিল । ওর যখন সাড়ে তিন বছর বাড়িতে হুজুর দাওয়াত দেওয়া হলো । এক হুজুরকে বাড়ির ছোটদের কুরআন শেখানোর জন্য ঠিক করা হলো । সে হুজরকে দেখে ভয় পাই বলে জোড়ে দৌড় দিলো । পরবর্তীতে আমরা তার ভুল বোঝাতে পেরেছি । এই হুজুরের কাছে আজও সে কুরআন পড়ে ।
যাক সে কথা । আমি এবারও নেট থেকে ডাইনলোড করে “জঙ্গী জাহাঙ্গীর ভালোবেসেছিল জুলেখাকে” নাটকটা মনযোগ দিয়ে দেখলাম ।
৫ খন্ডের ধারাবাহিক ।
এর আগের বছর ঈদের পরদিন থেকে ষষ্ঠদিন পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ১০.৪০, এটিএন বাংলা- তে প্রচার হয়েছিলো ।
Part 1
https://www.youtube.com/watch?v=90o6K3cmFOk
Part 2
https://www.youtube.com/watch?v=T_Qs3ieZw50
Part 3
https://www.youtube.com/watch?v=NNNFiiA9Zjw
Part 4
https://www.youtube.com/watch?v=10sbjF3qDeU
Part 5 Last Episode
https://www.youtube.com/watch?v=HgD4hN12IjA
জাহাঙ্গীর একজন জঙ্গি সংগঠনের সিনিয়র সদস্য। বান্দরবানের পাহাড়ী এলাকায় কমান্ডার হিসেবে মাদ্রাসার ছাত্রদের জঙ্গী ট্রেনিয় দিলেও সে একটা নার্ভাস টাইপের ছেলে। এ জন্য তার লিডার মুফতি রুমী ক্ষুদ্ধ। কারণ জাহাঙ্গীর একটা ছেলেকেও পরিপূর্ণ জঙ্গী বানাতে পারেনি। রুমী গালমন্দ করে তার টিমের ভাতা বন্ধ করে দেয়। সাগরেদদের ভরণপোষদের দায়িত্ব নিয়ে বিপদে পড়ে সে। জাহাঙ্গীরের একজন সাগরেদ ফরিয়াদ বিষয়টি বুঝতে পারে। জাহাঙ্গীর তাকে নিয়ে কি করা যায় চিন্তা করে।
ডিভোর্সি বিলকিস আমেরিকা থেকে ছেলে আরিয়ানকে নিয়ে দেশে আসে। তার মন ভালো করার জন্য ভাগ্নি লেখা তাকে বান্দরবান নিয়ে যায়। লেখা সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করে। পুরো নাম জুলেখা, সংক্ষেপে লেখা নাম ব্যবহার করে। তারা বান্দরবান গিয়ে যে রিসোর্টে ওঠে তার পাশেই জাহাঙ্গীরের ট্রেনিং সেন্টার।
ফরিয়াদের মাধ্যমে আমেরিকা প্রবাসী পরিবারের খবর পেয়ে জাহাঙ্গীর ধাপে ধাপে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে। একদিন লেখা তাদের আস্তানায় আসলে মুফতী রুমী তাকে বন্দী করে। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনা জাহাঙ্গীর। প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে সেও মুফতীর কাছে বন্দী হয়। জাহাঙ্গীর নিজের ভুলের জন্য লেখাদের কাছে ক্ষমা চায়।
সে রাতেই দলবলসহ সবাই ধড়া পড়ে।
এরপর ঘটে নাটকীয় ঘটনা। জুলেখা জাহাঙ্গীরের জামিননামা নিয়ে আসে হাজতে। অফিসারকে সে বলে জাহাঙ্গীরের মতো অসংখ্য শিশুকে ছোটবেলায় ভুল শিক্ষা দেয়া হয়েছে বলেই আজ তার এই পরিনতি।
জাকির হোসেন উজ্জ্বলের রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন জাহিদ হাসান। অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, অহনা, হীরা, শামীম জামান, আ খ ম হাসান, তুষার খান, ডি এ তায়েব, তোফা হাসান, ফারহানা মিঠু প্রমুখ।
কৃতজ্ঞতা :
সাতদিন/পিকে
http://saatdin.com/Details/1195
https://www.youtube.com/watch?v=dkGBD72j2f8
তারেক মনোয়ারের গাওয়া জিহাদী গান
তারেক মনোয়ার নামক জামায়াত সমর্থক জঙ্গীটা মূলত আহলে হাদিস সম্প্রদায়ভুক্ত লোক । তিনি ওয়াজে বলেছেন : “ আল্লাহ আর মুহাম্মদ নাম এক সাথে লেখা ও পড়া গুনাহ ।“ নেটে একটা ভিডিও আমি পেলাম তাতে তিনি এমন বলেছেন দেখলাম । ভিডিওটা হলো : http://www.youtube.com/watch?v=dpMixIaVHRU
আমি বিনীতভাবে বলছি :
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ , মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ ” বাক্য দুইটার গুরুত্ব :
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ , মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ ” বাক্য দুইটাকে আমরা বেশ কিছু কারণে নিয়মিত পড়বো, আবৃত্তি করবো, স্মরণ করবো বা জিকির করবো এবং হৃদয়ে স্হান দিবো । কারণ :
১.” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ” অর্থাৎ ” আলস্নাহ্ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই ” কথাটি আছে কুরআনের ৩৭ নং সুরা সাফ্ফাতের ৩৫ নং এবং ৪৭ নং সুরা মুহাম্মাদের ১৯ নং আয়াতে ।
” মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ ” অর্থাৎ ”মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বার্তা বাহক” কথাটি আছে কুরআনের ৪৮ নং সুরা ফাতাহ্ - এর ২৯ নং আয়াতে ।
কুরআন হচ্ছে আল্লাহর প্রত্যাদেশ যা মুহাম্মাদ (সা.) - এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে । মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর কথাগুলো আমাদের কাছে পৌছে দিয়েছেন । মুহাম্মাদ (সা.) সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেছেন :
”রাসুল তোমাদের যা দেন তা গ্রহণ কর, যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর । নিশ্চয আল্লাহ্ কঠোর শাস্তিদাতা । ” ( সুরা হাসর : ৭ )
২. ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ , মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ ” প্রকাশ্যে ঘোষনা না দিলে, এই দুই বাক্য মনের মধ্যে স্হান না দিলে এবং এই দুই বাক্য অনুযায়ী কাজ না করলে মুসলিম হওয়া যায় না ।
৩. কোন অমুসলিম মুসলিম হতে হলে তাকে প্রকাশ্যে ঘোষনা দিতে হয় : ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ , মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ ” অর্থাৎ ” আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই , মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বার্তা বাহক ।”
৪. এই দুই বাক্য বাস্তব জীবনে চর্চা করলে এবং উচ্চারণ করে পৃথিবী ছেড়ে গেলে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার আশা করা যায় ও জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হয় ।
৫. এই দুইটা বাক্য উচ্চারণ করলে মনের মধ্যে অসীম সাহস সৃষ্টি হয় ।
৬. এই দুই বাক্য মুসলিমদের শেষ আশ্রয় ।
৭. এই দুই বাক্য মুসলিম জাতির ঐক্য ও সংহতির প্রতীক ।
এই বিষয়ে আমার একটা লেখা আছে । আপনারা দেখতে পারেন : সবাই “লা ইলাহা ইল্লাহ্ , মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ “ বলুন ( ১ম পর্ব )
http://www.monitor-bd.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/53927
উপসংহার :
বাবা-মা-কে সতর্ক হতে হবে যাতে মারিয়া তাসকীনরা জঙ্গীদের খপ্পরে না পড়ে । তারা যাতে জঙ্গীদের মগজ ধোলাইয়ের স্বীকার না হয । ছোটবেলায় ভুল শিক্ষা দেয়ার পরিনতিতে জঙ্গী সৃষ্টি হয় বা শিশুরা বড় হয়ে জঙ্গী হয় ।
জঙ্গীদের বলছি, মেধা-যোগ্যতা-দক্ষতা-প্রতিভা বিকাশমূলক কাজ করুন এবং মানুষের ভালবাসা পাওয়ার চেষ্টা করুন । কারণ ভালবাসা ছাড়া মহৎ ও বড় কিছু সৃষ্টি করা যায় না ।
বিষয়: বিবিধ
২৮৬১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার অবস্হা এই প্রবাদটার মতোই ।
সুতরাং আমি মহিলাদের প্রতি দুর্বল থাকবো - এটাই তো স্বাভাবিক ।
আমি যত দুর জানি আপনি জামায়াত-শিবিরের নেতা ।
আপনার মন্তব্য করার আগে কিছু জামায়াতী উল্টা পাল্টা মন্তব্য করলো । কারণ তারা গ্লাসের পানি অর্ধেক খালি - কথাটার মতো মনমানষিকতা সম্পন্ন ।
https://www.youtube.com/watch?v=dkGBD72j2f8 এটা কি শুনেছেন ?
তিনি ইসলামী ছাত্র শিবির করতেন । এই গানের মাধ্যমে তিনি ছাত্র শিবিরের কিছু কর্মীর অপঘাতে মৃত্যুর বিবরণ দিচ্ছেন । আজব হলেও সত্যি এই গানে কিছু সুন্দরী কিশোরীদের সাথে নিয়ে গান গাচ্ছেন । তারা প্রচন্ড সাজ গোজ করে গান গাচ্ছে তার সাথে । অথচ তারা নিকাব বা মুখ ঢাকার পোষাক পরেনি । জামায়াতী বা ওহাবী মত অনুযায়ী মেয়েদের মুখ ঢাকা ফরজ ও অপরিচিত লোকদের সামনে কর্কশ ভাষায় চিৎকার করে কথা বলা ফরজ । সুতরাং জামায়াতী ও ওহাবী মত অনুযায়ী এসব মেয়ে গুনাহের কাজ করছে ।
তারেক মনোয়ার নামক জামায়াতী হুজুর ভীষণভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন । তিনি কলেমা হতে শুরু করে বাবা-মাকে পা ছুয়ে সালাম করা পর্যন্ত সব কিছুকে বিদাত বলে ঘোষণা করছেন । তিনি টিভিতে যুবতী ও কিশোরীদের নিয়ে প্রোগ্রাম করছেন । যেমন : এই ভিডিওতে ৭ টা সুন্দরী কিশোরীকে নিয়ে শোকের গান বা জিহাদী গান গাচ্ছেন । এই গানে শিবিরের কিছু নেতাকে ছাত্র লীগ কীভাবে হত্যা করেছে তার বিবরণ রয়েছে । কিন্তু মারামারি ও খুন খারাবীর কথা শুনেও এসব কিশোরীর চোখে মুখে শোকের ছায়া পর্যন্ত নেই । উপরন্তু তারা ভীষণ হাসিমুখ নিয়ে কোরাস গাচ্ছে । এর ফলে গানের আবহটা ও ভাবটাও নষ্ট হয়ে গেছে । উপরন্তু এসব কিশোরী বিউটি পার্লার হতে সেজে এসেছে : https://www.facebook.com/bangla.islami/videos/1563926743878755/
সুন্দর কণ্ঠ আর রসিক উদাহরণ দেয়ার কারণে তার ভক্ত অনেক। তিনি একজন জামায়াত ইসলামী পন্থী লোক।
আমাদের দেশে এক ভয়ংকর গোমরাহী কথা প্রচার হচ্ছে, তাহলো, কালেমায়ে তাওহীদ, কালেমায়ে তাইয়্যেবাহ অর্থাৎ ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’’ –এটা বলা গুনাহ। শিরক। কালেমায়ে শিরক। নাউযুবিল্লাহ।
মাওলানা তারেক মুনাওয়ার সাহেবও একই বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন,
‘‘আমাদের দেশে পাশাপাশি যে লেখা হয়, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। এটা ঠিক না...’’
তিনি আরো বলেন,
‘‘এই কালেমাটা বিশ্বনবীর জীবনে ৬ টি জায়গায় ছিল, (১.) বদরের যুদ্ধের পতাকায় এটি ছিল। (২.) উহূদের যুদ্ধে ছিল। (৩.) খয়বরের যুদ্ধে ছিল। (৪.) বিশ্বনবীর আংটিতে এটি ছিল...
বাস এতোটুকু বলেই, তিনি বললেন, ‘‘সেখানে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ পাশাপাশি ছিল না। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ টা ছিল উপরে, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ টা ছিল নিচে।’’
এবার আমার কথা,
মাওলানা সাহেব বললেন, আমাদের দেশে যে লেখা হয় ....! কথাটি সম্পূর্ণ ভুল। শুধু আমাদের দেশেই নয়, সঊদী আরবের রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় পতাকায়, এই কালেমায়ে তাওহীহ পাশাপাশি পুরোটা লিখা। আজ থেকে বহু বছর পূর্বে বাদশাহ সাঊদ সঊদী আরবে শাসন কায়েম করেন। তাঁর ধর্মবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন, সবার পরিচিত, সালাফীদের প্রাচীন পুরুষ, কথিত আহলে হাদীসদের নিকট অতিগ্রহণযোগ্য শায়খ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী (রহ.)। তখন থেকে সঊদী আরবে এই কালেমা খচিত পতাকা চালু হয়েছে, যা আজও বহাল আছে।
তারেক মুনাওয়ার সাহেব বললেন, ৬ জায়গার কথা, কিন্তু উল্লেখ করলেন চার জায়গার। বাকী দুই জায়গা কই????
আর এই কালেমাটা যে উক্ত জায়গাসমূহে ছিল তার কি কোনো প্রমাণ দিলেন????
আর উপরে ছিল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ আর নিচে ছিল মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ এই কথা কোন সহীহ হাদীসে আছে ???
এরপর তারেক মুনাওয়ার সাহেব, এই কালেমাটাকে শিরক আখ্যা দিলেন। আর আরবী গ্রামার (ব্যাকরণ) এর উদাহরণ দিলেন যে, ‘‘যদি আল্লাহ মুবতাদা হয়, তাহলে মুহাম্মাদ খবর। আল্লাহ ও মুহাম্মাদ একই হয়ে গেলো।’’
নাউযুবিল্লাহ। ছুম্মা নাউযুবিল্লাহ।
সাধারণ মানুষ তো সবাই কাওয়ায়িদুল আরাবিয়্যাহ বা আরবী ব্যাকরণ বুঝে না। কোনো আলেম যদি এভাবে বলেন, তাহলে তো তারা মহাবিভ্রান্তিতে পড়ে যাবে।
আসুন দেখি আরবী ব্যাকরণ কি বলে,
أن يكون بين الجملتين تباتين تام --- بأن لا يكون بينهما مناسبة في المعنى كقولك عليّ كاتب الحمام طائر
অর্থাৎ ‘‘দু’টি শব্দ বা বাক্য যদি অর্থগতভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত বা ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাহলে এর মাঝে বিভাজন শব্দ ছাড়াই স্পষ্ট বিভাজন বোঝা যায়। যেমন- আলী লেখক পাখিটি উড়ন্ত।’’
[দুরুসুল বালাগা, ১৪৭; মুখতাসারুল মা‘আনী, ২/২৩৮]
আরো পরিষ্কার বুঝতে, আগুন-পানি, আকাশ-পাতাল, আসমান-জমীন ইত্যাদি বিপরীতমুখী শব্দ অথচ পাশাপাশি। এটা ভাষার মাধুর্যতা।
আরবী ভাষার ব্যাকরণে বালাগাত বা ভাষার মাধুর্যপূর্ণ ধারাবাহিকতা ও বর্ণনা বিন্যাস নামক একটা পাঠ রয়েছে। মাওলানা তারেক মুনাওয়ার সাহেবের সে কথা মনে হয় স্মরণ নেই।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বাক্যটিতে প্রথম অংশে আল্লাহর তাওহীদ ও একত্ববাদের ঘোষণা ও বর্ণনা রয়েছে। দ্বিতীয় অংশে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসেবে মেনে নেয়া এবং তার রিসালাতের স্বীকৃতি, ঘোষণা ও বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
তাই এই কালেমা বা বাক্যে স্রষ্টা আল্লাহ ও সৃষ্টি, বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যবধান আকাশ-পাতাল। পূর্বেই আলোচনা করলাম, আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী দুইটি বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ বিপরীত ও ভিন্ন ভিন্ন হলে, পাশাপাশি লিখতে কোনো অসুবিধা নেই এবং বাক্য দু’টি উপর নিচ দূরে থাক, পাশাপাশি লিখতেও মাঝে কোনো বিভাজন চিহ্নও লাগবে না।
আর মাওলানা তারেক মুনাওয়ার সাহেবকে এও বলবো যে, আপনি আরবী ব্যাকরণে অনেক চৌকস ও পাকা হতে পারেন। কিন্তু স্বয়ং আরবরা এবং আরব আলেমগণ আপনার চাইতে আরবী ব্যাকরণ কম জানেন না। তাদের কাছে ব্যাকরণ অনুযায়ী সম্পূর্ণ সহীহ এবং তাতে শিরকের বিন্দুমাত্র গন্ধ নেই। অথচ আপনার কাছে তা গলত এবং আপনার নাকে শিরকের গন্ধ ঢুকলো কিভাবে???
আপনারা খেয়াল করেছেন কি-না জানি না। তারেক মুনাওয়ার সাহেব কিন্তু বক্তব্য দেয়ার মধ্যে বেশিরভাগ সময়ই চোখ বন্ধ করে বা চোখ বুজে বক্তব্য দেন। আমার মনে হচ্ছে, তিনি শুধু বক্তব্যের সময়েই নয়, তাহকীক ও মুতালাআ (অর্থাৎ গবেষণা ও পড়াশোনা) করার সময়ও চোখ বন্ধ করে বা বুজে থাকেন। তাই এই বিষয়গুলো তার দৃষ্টি গোচর হয় নি।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকল অপপ্রচার ও ফিৎনা থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন