বিশ্বের সব মুসলিমকে ”ঈদ মোবারক”

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১৬ জুলাই, ২০১৫, ১১:৪৪:০০ রাত



আগামীকাল ১৭ জুলাই ২০১৫ তারিখ শুক্রবার মালায়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ঈদ পালন করবে । কারণ এসব দেশে বৃহস্পতিবার শাওয়ালের নতুন চাঁদ দেখা গিয়েছে ।

পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ও অন্যান্য দেশ আগামীকাল ১৭ জুলাই ২০১৫ তারিখ শুক্রবার ঈদুল ফিতর পালন করবে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে ।

ইন্দোনেশিয়া সরকারীভাবে জানিয়েছে যে ৪ টা জায়গা থেকে নতুন চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেছে ।

http://www.thejakartapost.com/news/2015/07/16/idul-fitri-falls-friday-says-govt.html

কাল ১৭ জুলাই ২০১৫ তারিখ শুক্রবার এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী

সৌদি আরব, কুয়েত, আরব আমিরাত,ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া,সিঙ্গাপুর,জাপান,অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশ,

লেবানন, যুক্তরাজ্য, বসনিয়া, কসোভো,

ভারতের কিছু অংশ, ফ্রান্স, মন্টিনিগ্রো,মেসিডোনিয়া,

নেদারল্যান্ড, ইতালি, রাশিয়া,সার্বিয়া,স্লোভেনিয়া,তুরস্ক,

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ এলাকার মুসলিমরাসহ প্রায় ৫০ টি দেশের মুসলিমরা ঈদ পালন করবেন ।

এই ব্যাপারে মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল আল আরাবিয়া বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টায় খবর প্রচারিত হয়েছে । এই প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে বলা হয়েছে -

A new moon has been sighted in Saudi Arabia, heralding the start of Eid Al-Fitr holiday, Al Arabiya News Channel cited local reports Thursday evening.

For Muslims, Eid al-Fitr celebration begins after the fasting month of Ramadan ends. During Ramadan, Muslims abstain from food, drinks and sexual intercourse from dawn to dusk, which is an exercise in self-restraint, intended to bring the faithful closer to God.

Eid al-Fitr starts when the new moon is spotted in the sky, making the Eid holiday different around the world.

Muslims in the UK, Kuwait, Saudi Arabia and the UAE will celebrate Eid al-Fitr on Friday, while Muslims in other nations such as Iraq and Bangladesh will observe the holiday on Saturday.

Last Update: Thursday, 16 July 2015 KSA 19:18 - GMT 16:18

http://english.alarabiya.net/en/News/world/2015/07/16/Friday-is-the-first-day-of-Eid-al-Fitr-.html



সৌদি আরবের জনপ্রিয় পত্রিকাতেও বলা হয়েছে ১৭ জুলাই ২০১৫ তারিখ শুক্রবার ঈদুল ফিতর

JEDDAH: The Supreme Court declared Thursday as the last day of Ramadan 2015 and Friday as the start of the Eid al-Fitr holidays.

In a statement carried by the Saudi Press Agency (SPA), the Royal Court said a number of adult witnesses in a number of provinces across the kingdom have testified to have seen with the naked the new moon of the month of Shawwal 1436 in the Islamic calendar.

Eid al-Fitr celebration begins after the fasting month of Ramadan ends. During Ramadan, Muslims abstain from food, drinks and sexual intercourse from dawn to dusk, which is an exercise in self-restraint, intended to bring the faithful closer to God.

http://www.arabnews.com/featured/news/777491

যেহেতু মুসলিম দেশ ও মুসলিমদের নিকট থেকে নতুন চাঁদ দেখার নিখুত সংবাদ এসেছে । সুতরাং কালই বাংলাদেশে ঈদ - এটাই ইসলাম সম্মত কথা ।

সারা বিশ্বে একই বার ও তারিখে রোজা ও ঈদ পালন করাই ইসলামের বিধান

ইসলাম সমগ্র মানবতার একমাত্র দ্বীন। সেজন্য এর আচার-অনুষ্ঠানগুলোও বিশ্বজনীন। বিশ্ব মুসলিমের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করছে এই সব ইবাদত অনুষ্ঠাগুলো। রমজানের সিয়াম সাধনা এর অন্যতম।

আল-হেলাল বা নতুন চাঁদ দেখার মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় যে, পৃথিবীতে রমজান এসে গেছে। বিশ্বময় এ মেহমানের আগমনে সাড়া পড়ে যায়। কারণএ নতুন চাঁদটি যে বিশ্বের সবার জন্য। আল্লাহ তায়ালার কালামে রয়েছে-

“হে নবী ! আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। আপনি বলে দিন, এটা সকল মানবমণ্ডলীর জন্য চিরস্থায়ী ক্যালেণ্ডার এবং হজ্বের সময় নির্ধারক।” ২/১৮৯

হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে অনেকগুলো সমর্থক রেওয়াতে এসেছে যেমন- নতুন চাঁদ দেখে সওম আরম্ভ কর আর তা দেখেই ঈদ কর। যদি আকাশ আচ্ছন্ন থাকে তাহলে ৩০ দিন পুরা কর। অন্য বর্ণনায় রয়েছে- সময়কে নিধারণ কর। (বুখারী ও মুসলিম)

হাদীসে যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর উম্মতকে ব্যাপকভাবে সম্বোধন করেছেন নতুন চাঁদের উদয়ের স্থান কাল ও কোন দেশ বা জাতি নির্বিশেষে এ নির্দেশ আরোপিত হয়েছে। এজন্যই এ হাদীসটিকেই মাজহাবের ইমামগণ সারা দুনিয়ায় এক হুকুম-এর সুদৃঢ় ভিত্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। ইমাম আবু হানীফা (রাঃ), ইমাম মালেক (রাঃ), ইমাম আহমদ (রাঃ) ও প্রখ্যাত আলেমগণ এ হাদীসের সম্বোধন ব্যাপক ও বিশ্বজনীন হওয়ার যুক্তিতেই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, যদি পৃথিবীর এক প্রান্তে প্রথম চাঁদ দেখা যায় তাহলে অন্য প্রান্তে সে খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণিত হলে তাদের উপরও একই দিনে রোজা শুরু ও ঈদ করা ফরজ। কারণ নতুন চাঁদ উদয়ের স্থানের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই এবং সর্বপ্রথম হেলালকেই সারা বিশ্বের সকলের অনুসরণ করতে হবে।

(উপরোক্ত বক্তব্য প্রমাণের জন্য দেখুনঃ সিয়াম অধ্যায়- ফাতাওয়া, শামী, আলমগীরি, মারাকিউল ফালাহ, বাহ্রুর রায়েক, কাজীখান, ফাতহুল কাদীর, বাজাজিয়াহ, আল ইখতিয়ার, আল-ফিকহুল ইসলামী। মালেকী মাজহাবের আল-মনুতাকা, শরহে জুরকানী, আশ সরহুছ ছগীর, ফাতহুর রাহীম, হাম্বলী মাজহাবের- মুগনী, রওদুন নাদী, জাদুল মুসতাকান, আস-আলসাবীল ফি মারেফাতিদ দালীল, আল-কাফী আল-মুর্হারের ইত্যাদি কিতাব)

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, আমাদের দেশে স্থানীয়ভাবে নতুন চাঁদ দেখার উপর নির্ভরের যুক্তি নতুন চাঁদ দেখে রোজা রাখ, নতুন চাঁদ দেখে ভাঙ্গ। প্রশ্ন হচ্ছে , কারা দেখবে? বিশ্বের সকল রোজাদারকেই কি নতুন চাঁদ দেখতে হবে ? না, কিছু লোক দেখলেই চলবে। সে কিছু কতজন কমপক্ষে? আবার তারা, কি প্রত্যেক দেশের হতে হবে, না কি কোন এক দেশের কেউ হলেই চলবে? ইত্যাকার প্রশ্নদির জওয়াব উপরোক্ত হাদীসেই রয়েছে- সম্বোধন যেহেতু আ’ম (ব্যাপক) কাজেই যে কোন দেশের কেউ দেখলেই হবে। রমজান শুরুর বেলায় মেঘলা আকাশে চাঁদ দেখা গেছে বলে, একজন সাক্ষ্য দিলেই তা গ্রহণীয় অবশ্য সমাপ্তির বেলায় কমপক্ষে দু’জন সাক্ষী লাগবে। আর আকাশ পরিস্কার থাকলে কয়েকজন সাক্ষীর দরকার হবে। তবে নির্দিষ্ট কোন দেশের লোক হওয়া শর্ত নয়। প্রথম দেখাই হল বড় কথা ।

আমরা হানাফী মাজহাবের হয়েও এতকাল যাবত শাফেয়ী মাজহাবের অনুকরণে স্থানীয় দেখার উপর ঈদ, রোজা করে আসছিলাম ওজরের কারণে। কিন্তু দ্রুত যোগাযোগ মাধ্যম আবিষ্কৃত ও সহজ লভ্য হবার কারণে বহু পূর্বেই সে ওজর দূর হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তবুও আমরা অবচেতনভাবে আগের মত করে যাচ্ছি। অনেক আলেম তো রেডিও - টিভিকে যাদুর বাক্স বলেই দায়িত্ব সেরে ফেলেছেন। অনেকের ধারণা, নতুন করে করতে গেলে ফেতনা বাড়বে। প্রশ্ন হচ্ছে, ফরজ সিয়াম ও ওয়াজিব ঈদ যদি সঠিকভাবে কারার পদক্ষেপকে ফেতনা বলেন, তাহলে ফেতনা জিনিসটা কি জানতে ইচ্ছে হয়। সরকারীভাবে উদ্যোগ নিলে তো আর এ ধরনের মতানৈক্যের প্রশ্ন উঠতো না।

ঢাকায় ১৯৮৩ সালে ইসলামী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ওআইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, অভিন্ন তারিখে গোটা মুসলিম বিশ্বে ইসলামী ইবাদত অনুষ্ঠানগুলো করা হবে। তখন ইস্তাম্বুল ভিত্তিক হেলাল কমিটি এসে রিপোর্টও দেন যে, সারা বিশ্বের আলেমদের মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে যে, একই দিনে সারা বিশ্বে রোজা আরম্ভ ও ঈদ করাই শরীয়তের বিধান এবং তা আধুনিক বেতার যুগে পালন করা সম্ভব। কিন্তু কই অন্যান্য বিষয়ের মত ইসলামের এ রুকনটিও কাণ্ডজে সিদ্ধান্তই রয়ে গেল।

সত্যি কথা বলতে কি এটা এখন আমাদের জাতীয় সমস্যা। হানাফী মাজহাবে যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তা গ্রহণ করে বৃহত্তর মুসলিম বিশ্বের সাথে প্রথম হেলাল-দর্শনকে ভিত্তি করে একই দিন রোজা শুরু করে একই দিন ঈদ পালন করলে একদিকে যেমন কিতাব অনুযায়ী আমল হবে অন্যদিকে এক উম্মাহ্ চেতনা আরো জোরদার হবে।

বর্তমানে আমরা যেভাবে রোজা ও ঈদ পালন করছি এটা শাফেয়ী মাজহাবের মতে হচ্ছে। এমনকি শাফেয়ী মাজহাব যে ৪৮০ মাইলকে একটি হেলাল-দর্শনের আওতা বলে রায় দিয়েছেন । অভিন্ন পাকিস্তান আমলে লাহোর-পিণ্ডিতে চাঁদ দেখলে পূর্ব-পাকিস্তানেও ঈদ করা হতো। এখন কখনো কখনো তারা আমাদের ১ দিন আগে ঈদ করে যাচ্ছে।

সন্দেহ নিরসনের জন্য বলতে হয় হানাফী মাজহাবসহ তিনটি মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো : নতুন চাঁদ উদয়ের স্থানের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই এবং সর্বপ্রথম নতুন চাঁদকেই সারা বিশ্বের সকলের অনুসরণ করতে হবে।

দেশে দেশে সময়ের যে ব্যবধান তাতে ২৪ ঘন্টার (১ দিনের) পার্থক্য হয় না। স্থানীয় সময়কে অনুসরণ করলেই সর্বোচ্চ ১১ ঘন্টার ভিতর পুরো বিশ্বে মুসলিম বিশ্বে (ইন্দোনেশিয়া হতে মরক্কো পর্যন্ত) ঈদ করা যায়। তেমনি রোজাও রাখা যায়।

একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়- ধরুন একই দিনে জুমা ও ঈদ হলো। এখন আমরা সকাল ৮টায় ঈদের নামাজ পড়লাম ১টার সময় জুমা আদায় করলাম। সৌদি আরব আমাদের তিন ঘন্টা পর ঈদ ও জুমার নামাজ আদায় করল। যুক্তরাষ্ট্র করল বার ঘন্টা পর ।

আমরা টিভিতে দেখি আজ আরাফাতে হজ্ব হচ্ছে, কিতাব মতে কালই তো ঈদ হবে। কিন্তু আসলে আমরা করি ১/২ দিন পর। আমরা যে আলাদা হিসেবে ১০ তারিখে ঈদ করব সে আলাদা হিসেবের স্বীকৃতিই তো হানাফী মাজহাবে নেই। কোন ঠেকার কারণে শাফেয়ী মাজহাব পালন করতে যাচ্ছি আমরা?

অনেকে নামাজের সাথে রোজাও তুলনা করেন। এটা ঠিক নয়। কারণ নামাজ ফরজ হয় এবং আদায় করা হয় সূর্যের উদয় অস্ত দিয়ে । রোজ শুরু কিন্তু হয় চন্দ্র দিয়ে, আদায় করা হয় সূর্যের উদয় অস্ত দিয়ে। সচেতন পাঠকগণ বুঝে নিবেন। সীমিত পরিসরে বিস্তারিত বলার অবকাশ নেই।

পরিশেষে, বাংলাদেশ সরকার, মুহাক্কেক আলেমগণ ও সচেতন শিক্ষিত নাগরিকদের কাছে অনুরোধ- হানাফী মাজহাব অনুসারে যাদে আমরা রোজা শুরু করতে পারি এবং বিশ্বে সর্বপ্রথম চাঁদ দেখাকে অনুসরণ করে সঠিকভাবে ঈদ পালন করতে পারি সেজন্য এগিয়ে আসুন।



ইসলামী আইন শাস্ত্রে : সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ


ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) -এর অভিমত :

১. যে কোন একটি দেশে নতুন চাঁদের উদয় প্রমানিত হলে বিশ্বের সকল মানুষের উপর তার অনুসরন জরুরী হয়ে পড়ে।

[উৎস: আল মুখতার ১ম খন্ড ১২৯ পৃঃ / ফতহুল কাদীর (শেরহে ফাতহুল কাদীয়সহ) ১ম খন্ডঃ পৃ ২৪৩/মারাকীন ফালাহ পৃঃ ৫৪০-৫৪১/ আল-বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০)]।

২.আর উদয়ের স্থান ও সময়ের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই।

(উৎসঃ কাদী খান ১ম খন্ডঃ পৃঃ ১৯৮/ মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড পৃঃ২৩৯ / আল মুখতার ১ম খন্ড পৃঃ ১২৯ আল-ফাতওয়া আল হিন্দিয়াহ ১ম খন্ড, পৃঃ১৯৮/ আল বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০/ ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড, পৃঃ ২৪৩/ রদ্দুল মুহতার (শামী) ২য় খন্ড পৃঃ ৩৯৩)।

৩.যদি পৃথিবীর পশ্চিমাংশের বাসিন্দারা রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেন তাহলে তাদের এ দেখাতেই পূর্বাংশের লোকদের উপর (রোজা ও ঈদ) ওয়াজিব হয়ে যাবে।

(উৎসঃ আল-বাহুরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০ / মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড ২৩৯ পৃঃ আল হিন্দিয়াহ (ফাতোয়ায়ে আলমগীরী) ২য় খন্ড ১৯৮-১৯৯ পৃঃ। ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড ২৪৩ পৃঃ। বাজাজিয়াহ ৪/৯৫)।

সুতরাং হানাফী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো : পৃথিবীর যে কোন দেশেই নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নতুন চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসবসমূহ পালন করতে হবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ৯০% -এর বেশী মুসলিম হানাফী মাযহাবের অনুসারী।

ইমাম মালিক (রাঃ) -এর অভিমত :

১.যখন বসরা শহরবাসী রমজানের নতুন চাঁদ দেখবে, অতঃপর তা কুফা, মদীনাও ইয়েমেনবাসীদের কাছে পৌছবে তাহলে ইমাম মালিক (রহঃ) থেকে তাঁর শিষ্যদ্বয় ইবনুল কাসিম ও ইবনে ওয়াহাবের বর্ণনামতে শেষোক্ত দেশবাসীর প্রতিও ওয়াজিব হয়ে যাবে। অথবা যদি বাদ পড়ে তবে সে রোযা কাযা করতে হবে।

(উৎস আল-মুনতাকা-শরাহল মুয়াত্তা ২য় খন্ড পৃঃ ৩৭)।

২.এবং রোযা রাখার নির্দেশ ব্যাপকভাবে সকল দেশকে শামিল করবে। চাই সে দেশ কাছে হোক বা বহুদুরে হোক।

(উৎসঃ শরহুজ জুরকানী ২য় খন্ড পৃঃ ১৯২/ আশ্-শরহুছ ছগীর ২য় খন্ড পৃঃ৪/ ফাতহুর রাহীম ১ম খন্ড পৃঃ১৩০)

সুতরাং মালিকী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসব সমূহ পালন করতে হবে। উল্লেখ্য, হযরত মালিক (রাঃ) ছিলেন সাহাবী।

ইমাম আহম্দ ইবনে হাম্বল (রহঃ) -এর অভিমতঃ-

কোন একটি দেশের ১.লোকেরা নয়া চাঁদ দেখবে সকল দেশের লোকদের উপর রোযা ফরজ হয়ে পড়ে।

(উৎসঃ মুঘনী পৃঃ ৭৯/ আররদুন নাদী শরহ কাফীল মরতাদী পৃঃ ১৬১/ জাদুল মুসতাকনে পৃঃ ৭৮ /আস-সালসাবীল ১ম খন্ড পৃঃ২০২ / উমদাতুল ফিকহ- পৃঃ৪৯)

২.চাই সে দেশ কাছে হোক বা দূরে হোক।

(উৎস : উদমাতুল ফিকহ- পৃঃ ৪৯ / মুযনী পৃঃ ৭৯)।

৩.চাই চাঁদ উদয়ের স্থান ও কাল ভিন্নই হোক।

(উৎসঃ উমদাতুল ফিকহে পৃঃ ৪৯)।

সুতরাং হাম্বলী মাযহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলোঃ নতুন চাঁদ উদয় প্রমানিত হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে চাঁদ উদয়ের খবর দূরবর্তী কোন দেশে পৌছে তাহলে সে দেশের মুসলিমদের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় উৎসব সমূহ পালন করতে হবে।

শাফেয়ী মাযহাবঃ

যদি চাঁদ কোন এক দেশে দেখা যায় অথচ অন্য দেশে দেখা গেল না, তাহলে দেশ দুটি কাছাকাছি হয় তাহলে উভয় দেশ এক দেশের মতো গন্য হবে। আর দূরবর্তী হয় তাহলে দুটি মত রয়েছে। তার মধ্যে শুদ্ধতর মত হলো এক্ষেত্রে অন্য দেশের লোকদের প্রতি এর হুকুম বর্তাবে না।

(উৎসঃ রওদাতুত্তালেবীন ২য় খন্ড পৃঃ ৩৪৮/ মাতনুল মিনহাজ মা’মুযনিল মুহতাজ ১ম খন্ড পৃঃ ৪২২। আল-মুহাজ্জাব ১ম খন্ড পৃঃ ১৭৯ শরহমুসলিম (লিন্-নব্বী) ৭ম খন্ড, ১৯৭ পৃঃ। এহইয়াউ উলুমিদ্দীন ১ম খন্ড পৃঃ ২৩২)

সুতরাং পৃথিবীর যে কোন স্থানে যে কোন ভাবে চাঁদ দেখা প্রমানিত হলে সারা বিশ্বে মুসলিমদের উপর ইসলামের বিধি-বিধান পালন করা এবং হিজরী সন গণনা করা সম্পর্কে একমাত্র ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) ছাড়া বাকী সব ইমাম ঐক্যমত পোষন করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে শাফেরী মাযহাবের মুজতাহিদরা (গবেষক) এ নিয়ে গবেষণা করে বিভিন্ন ধরনের মত পোষন করেছেন। শাফেয়ী মাযহাবে দ্বিমত থাকায় এবং বাকী তিন মাযহাব ঐক্যমত পোষন করায় পৃথিবীর যে কোন স্থানে যে কোন ভাবে চাঁদ দেখা প্রমানিত হলে যারা বিশ্বে মুসলিমদের উপর ইসলামের বিধি-বিধান পালন করা এবং হিজরী সন গণনা করা অবশ্য করণীয় (ওয়াজিব)।

কারণ হানাফি মাযহাবসহ সব মাযহাবের ইমামরা এক মত বিশ্বের যে কোন এক স্হানে নতুন চাঁদ দেখার খবর পেলে বিশ্বের বাকি অংশের লোকদের ঈদ পালন করা ওয়াজিব ।

তাকাবাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম !!! ঈদ মোবারক !!!

বিশেষ ঘোষনা :

কাল ঢাকায় ১০ টি স্হানে ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে । আমি কাল ‎সামুরাই‬ কমিউনিটি সেন্টার (বসুন্ধরা মার্কেটের অপজিটে) ঈদের নামাজ পড়তে যাবো ।

সেখানে প্রথম জামাত সকাল ‪‎পৌনে‬ আঁটটায়। দ্বিতীয় জামাত সকাল পৌনে নয়টায়।

মেয়েদের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে ।

সবাই আমন্ত্রিত ।

1st Day of Eid al-Fitr in Different Countries

Friday, 17 July 2015:


Australia (Follow Saudi criteria)

Afghanistan (Follow Saudi)

Albania (Follow Saudi)

Algeria (Follow Saudi)

Armenia (Follow Saudi)

Austria (Follow Saudi)

Azerbaijan (Follow Saudi)

Bahrian (Follow Saudi)

Bangladesh (Some areas follow Saudi)

Belgium (Follow Saudi)

Bolivia (Follow Saudi)

Bosnia and Hercegovina (Follow Turkey)

Bulgaria (Follow Saudi)

Chechnia (Follow Saudi)

Cosovo (Follow Turkey)

Croatia (Follow Turkey)

Denmark (Follow Saudi)

Finland (Follow Saudi)

Georgia (Follow Saudi)

Hungary (Follow Saudi)

India - Hijri Committee of India, a small minority in India (The day after conjunction is the first day of the month)

France (ECFR - European Council for Fatwa and Research - Somewhere on the globe Altitude > 5°, elongation > 8°)

Iceland (Follow Saudi)

Indonesia ( Official Announcement - Age > 8 hours, altitude > 2°, elongation > 3°)

Iraq (Follow Saudi)

Ireland (ECFR - European Council for Fatwa and Research - Somewhere on the globe Altitude > 5°, elongation > 8°)

Italy (ECFR: European Council for Fatwa & Research: Somewhere on the globe Altitude > 5°, elongation > 8°)

Japan (Follow Saudi criteria)

Jordan (Follow Saudi)

Kazakhstan (Follow Saudi)

Kuwait (Follow Saudi)

Kyrgizstan (Follow Saudi)

Lebanon (Religious Authority, Sayyed Muhammad Hussein Fadlullah) Calculations Ittihadul-Matale'

Luxembourg (ECFR - European Council for Fatwa and Research - Somewhere on the globe Altitude > 5°, elongation > 8°)

Macedonia (Follow Turkey)

Malaysia (Age > 8 hours, altitude > 2°, elongation > 3°)

Mauritania (Follow Saudi)

Montenegro (Follow Turkey)

Netherlands (Follow Turkey)

Norway (Some follow Saudi)

Palestine (Follow Saudi)

Philippines (Follow Saudi)

Qatar (Follow Saudi)

Romania (Follow Saudi)

Russia (Follow Turkey)

Saudi Arabia (Official Announcement)

Serbia (Follow Turkey)

Singapore (Follow Saudi criteria)

Slovania (Follow Turkey)

Spain (Some Follow Saudi)

Sudan (Follow Saudi)

Sweden (Follow Saudi)

Switzerland (Follow Saudi)

Syria (Follow Saudi)

Taiwan (Follow Saudi)

Tajikistan (Follow Saudi)

Tatarstan (Follow Saudi)

Turkey (Somewhere on the globe Altitude > 5°, elongation > 8°)

Turkmenistan (Follow Saudi)

U.A.E. (Follow Saudi)

UK (Follow Saudi) [Coordination Committee of Major Islamic Centres and Mosques of London]

USA (FCNA/ISNA - Fiqh Council of North America/Islamic Society of North America) The criteria are Moon must be born before Sunset in Makkah, and moonset after sunset in Makkah.

Uzbekistan (Follow Saudi)

Yemen (Follow Saudi)

সূত্র : http://moonsighting.com/1436shw.html

বিষয়: বিবিধ

২১৬৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

330301
১৭ জুলাই ২০১৫ রাত ১২:৪৪
বেআক্কেল লিখেছেন : আমনের দেওয়া এই ইদের খবর মধ্য এশিয়ার মানুষ কাইল সকালে ঘুম থেইকা উইঠা জানিতে পারিবে ইনশায়াল্লাহ।

তারা রোজা মনে কইরা ঘুমাইয়া পড়িছে অলরেডি তারা এহনও ঘুমে। সকালে সেহেরী খাইয়া তারা সিদ্ধান্ত নিবে রোজা কন্টিনিউ করিবে নাকি রোজা ভাংগিয়া ইদ করিবে।

আমনেরেও ইদ মোবারক
১৭ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:২৬
272536
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন :

মধ্য এশিয়ার মানচিত্র দিলাম । আমার লেখায় মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশের নাম আছে যারা কাল ১৭ জুলাই ২০১৫ তারিখ শুক্রবার ঈদ করবে ।

উপরন্তু

১।মধ্য এশিয়ার দেশগুলো বাংলাদেশের আগে সৌদি আরবের ঈদ ঘোষনার খবর পেয়েছে । ২।এসব দেশ জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসেবকে গুরুত্ব দেয় ।
৩।এসব দেশ সৌদি আরবের সাথেই ঈদ পালন করাকে বা সৌদি আরবের ঘোষনাকে গুরুত্ব দেয় । যেমন : আফগানিস্তান ।

৪।সারা বিশ্বের যে কোন দেশে নতুন চাদ দেখার খবর পেলেই বাকী দেশগুলোর লোকদের ঈদ ও রোজা পালন ওয়াজিব যা মাযহাবের ইমামগন বলে গেছেন । যদি তারা সকালে চাদ দেখার খবর পায় তাহলেও তাদের ঈদ পালন করতে হবে যা মাযহাবের ইমামগনের ফাতওয়া ।


৫। উপরন্তু জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসেবের মাধ্যমেও নির্ভুলভাবে চাদের অবস্হান বা নতুন চাদ দেখার স্হান সম্পর্কে অাগেই জানা যায় । যেমন : এবার কোথায় কীভাবে নতুন চাদ দেখা যাবে তা এই চিত্রেই বলা আছে যা আমি চার পাচ মাস আগেই দেখেছি । আর যার কাছে এই প্রোগ্রাম আছে সে আগামী দশ বছর পরের ঈদের দিনটাও বের করতে পারবে ।

১৭ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:৪০
272538
বেআক্কেল লিখেছেন : ইন্টারনেট থেইকা সার্চ কইরা লিষ্ট একখান দিয়া দিলেন, বে-আক্কেল হইলেও এই ধরনের লিষ্টের খবর জানা নাই মনে করিলেন ক্যামনে! সৌদি আরব যখন ইদের ঘোষনা দিল তখন মধ্য এশিয়ার রাত কত? সেইটা ভাবিলেন না! মধ্য এশিয়ার সরকার গুলো খবরটা পাইলেই যথেষ্ট মনে করেন! গ্রামাঞ্চলের ঘুমন্ত মানুষ গুলারে এই খবর পৌছানোর পদ্ধতি কেমুন হইবে, একটু চিন্তা করিছেন?

বিজ্ঞানের সমাধান সোজা হইলেও বাস্তব সমাধান অতডা সোজা না, সেই জন্যই চৌদ্দশ বছর ধইরা পৃথক দিনে ইদ-কোরবানী চইলা আসিছে। কারন এইটা হল বাস্তবতা। বাস্তবতায় ধাক্কা খায় বইলাই ইজমা আর কেয়াসের আশ্রয় নিতে হয়।
১৭ জুলাই ২০১৫ রাত ০২:৫৩
272544
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : বেআক্কেল :


সৌদি আরব যখন ইদের ঘোষনা দিল তখন মধ্য এশিয়ার রাত কত? রাত ৯ টা হতে সাড়ে এগারটা । আমি শুধু একটা সাইটের নিউজ দিয়েছি । আরবী ভাষার ওয়েব সাইটগুলোতে অনেক আগেই খবর দিয়েছে ।

সৌদি আরব স্হানীয় সময় সন্ধ্যায় ঘোষনা দিয়েছে । টিভিতে একটু দেরীতে প্রচার হয় । মধ্য এশিয়ার দেশগুলো অগ্রসরমান দেশ । সব ধরনের প্রযুক্তি সেখানকার লোকরা ব্যবহার করে ।

১৮৮৪ সালে International Meridian Conference এর মাধ্যমে গ্রেগরীয়ান বা ইংরেজী বছরের সমস্যা দুর হয় । আর তা বাস্তবে রূপ লাভ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর । মুসলিমদের হিজরী সনের এই সমস্যা দুর হতে আরো কয়েক দশক লাগতে পারে ।

বাস্তবতার ধাক্কাই বলে দিচ্ছে, আমরা মুসলিমরা সচেতন হলেই এই সমস্যা দ্রুত দুর হবে । কারণ তথ্য প্রযুক্তির বিস্তার, জ্যোর্তিবিজ্ঞানের অগ্রগতি, দ্রুত যোগাযোগ মাধ্যম আবিষ্কৃত ও সহজ লভ্য হবার কারণে বহু পূর্বেই ভিন্ন ভিন্ন বার ও তারিখে মুসলিম দেশগুলোর রোজা ও ঈদ করার কার্যক্রম দূর হয়ে গিয়েছে । এখন একই বার ও দিনে সলিম দেশগুলোর রোজা ও ঈদ করার কার্যক্রম শুরু করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ।

330334
১৭ জুলাই ২০১৫ রাত ০৪:০০
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : সময়উপযোগী পোষ্ট, অসংখ্য ধন্যবাদ। শুক্রবারেই বাংলাদেশে ঈদ পালন করছি ইনশাআল্লাহ।
১৭ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:৩১
272573
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন :
330344
১৭ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:২৪
মুিজব িবন আদম লিখেছেন : আজকের ঈদুল ফেতর উপলক্ষ্যে সবাইকে শুভেচ্ছা। ফকরুল ভাইয়ের জন্য বিশেষ শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
১৭ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:৩১
272574
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন :

ঈদ মোবারক

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File