সৌদি আরবের আইন বনাম ন্যায় বিচারমূলক আইন (১ম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১৬ জুলাই, ২০১৫, ০৮:৫২:২৯ সকাল

পটভুমি :



আজব হলেও সত্যি সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী যদি কেহ তার মেয়েকে ধর্ষণ করে তাহলে তাকে কয়েক মাস জেল ও কয়েক লাখ টাকা জরিমানা দিলে সে কারাগার হতে বেড়িয়ে আসতে পারে ।

আজব হলেও সত্যি সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী যদি আরবে যদি কেহ তার স্ত্রীকে হত্যা করে তাহলে তাকে স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না। কারণ স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করাই নয় ক্ষধার্ত থাকলে স্ত্রীকে জবাবই করে রান্না করে খাওয়ার অধিকার রাখে ।

এই বিষয়গুলো আগেই শুনেছি । কিন্তু আমার এই লেখায় (http://www.monitor-bd.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/67126

ইরানের সাথে পশ্চিমাদের পরমাণু চুক্তি এবং সৌদি আরবের অন্ধকার ভবিষ্যত ) সৌদি আরব প্রবাসী ব্লগার নজরুল ইসলাম টিপু মন্তব্য করতে যেয়ে লিখেছেন : “ সৌদি আরব মুসলিম রাষ্ট্র তবে ইসলামী রাষ্ট্র নয়। তারা নিজেদের ইসলামী রাষ্ট্র দাবী না করেও কিছুটা ইসলামী শরিয়ত অনুসরন করে। “

আমি তার কথার সাথে একমত নই বিধায় এবং আধুনিক-বিজ্ঞানমনস্ক-জ্ঞানভিত্তিক-সহনশীল মুসলিম উম্মাহ গঠণ করার ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃস্টি লক্ষ্যে ” সৌদি আরবের আইন এবং ন্যায় বিচারমূলক আইন ” শিরোনামে ধারাবাহিক লেখা শুরু করলাম ।

সূচনা :

সৌদি আরব একটা বর্বর ও অনালোকিত দেশ । সৌদি আরবের অনেক আইন-কানুন বর্বর এবং মানব সভ্যতা বিরোধী ।

সৌদি আরবের আইন ও আদালত :

সৌদি আরবের আইন ও আদালত প্রশ্নবিদ্দ । সেখানে অপরাধী কখনোই যথাযথভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারে না এবং উকিলের মাধ্যমে তার অবস্হান ব্যক্ত করতে পারে না ।

সৌদি আরবে মেয়েদের আইনে শিশু ধর্ষণ করে হত্যা করার শাস্তি শিথিলযোগ্য :

কিছু দিন আগে খবর বের হয়, এক ধর্ম প্রচার তার ৫ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করেন । তিনি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন । তাকে মুক্তি দেওয়া হয় ।





ধর্ম প্রচারক বাবা ফায়হান আল ঘামদি কর্তৃত ধর্ষিতা শিশু লামা



ধর্ষক ধর্মপ্রচারক বাবা ফায়হান আল ঘামদি



ধর্ষিতা হওয়ার পর হাসপাতালে লামা

মাত্র পাঁচ বছর বয়সী শিশু মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যাকারী সৌদি আরবের তারকা ধর্মপ্রচারক ফায়হান আল ঘামদিকে মুক্ত করে দিয়েছে দেশটির আদালত। আপন মেয়ে লামাকে উপুর্যপুরি ধর্ষণের পর নির্মম নির্যাতন করে হত্যার দায় থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে ‘রক্তপণ’ বা ব্লাড মানির বিনিময়ে।

এই ভিডিওগুলোতে বিস্তারিত তথ্য আছে ।

https://www.youtube.com/watch?v=


https://www.youtube.com/watch?v=n1EWQVcBSPg




https://www.youtube.com/watch?v=l0uLDDZRU6A




https://www.youtube.com/watch?v=_blNpX1-0Mc




https://www.youtube.com/watch?v=Bje1unewz0k




ফায়হান আল ঘামদি তার মেয়ে লামাকে ধর্ষণের পর নির্যাতন করে তার মাথার খুলি, পিঠ, পাঁজর, বাঁ-হাত ভেঙ্গে দেয়। এছাড়া নির্যাতনের সময় থেতলানোর কারণে মেয়েটির শরীরজুড়ে অসংখ্য জখম ও কালশিটে দাগ পড়ে। এমনকি মেয়েটির শরীরের একটি অংশও পুড়িয়ে দেয় ওই পাষণ্ড বাবা- তথাকথিত ধর্মপ্রচারক ফায়হান। সমাজকর্মীরা জানান মেয়েটিকে উপর্যপুরি ধর্ষণের পর আগুনেও পোড়ানো হয়।

ওমেন টু ড্রাইভ নামের একটি ক্যাম্পেইন গ্রুপ জানিয়েছে,

ফায়হান আল ঘামদি নিজেও তার মেয়ে লামার কুমারীত্ব নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় মেয়েটিকে বেত ও বিদ্যুতের তার দিয়ে পেটানোর পর অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

এমন গুরুতর একটি অপরাধের জন্য ফায়হান নামের ওই ধর্মপ্রচারককে মৃত্যুদণ্ড বা দীর্ঘ কারাদণ্ড না দিয়ে শুধুমাত্র কয়েকমাসের কারাদণ্ডের পর রক্তপণের বিনিময়ে মুক্ত করে দেয় সৌদি আরবের আদালত।

আলবাওয়াবা নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর পেছনে যুক্তি হিসেবে বিচারকরা রায় দেওয়ার সময় বলেছেন, রক্তপণ দেওয়া ও লামার মৃত্যুর পর থেকে সায়হান যতদিন জেলে খেটেছে তাতেই তার যথেষ্ট শাস্তি হয়েছে।

সৌদি আরবের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ফায়হান আল ঘামদি তার স্ত্রী এবং মেয়ে লামার মা-কে রক্তপণ বাবদ প্রায় সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা দিতে সম্মত হয়েছেন।

আইনানুযায়ীই লামার মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই পরিমাণ অর্থ ধার্য করেছে আদালত। তবে লামা যদি ছেলে হত তাহলে এই অর্থের পরিমাণ হত দ্বিগুন।

ওমেন টু ড্রাইভ নামের সংগঠনটি আরো জানিয়েছে, সৌদি আরবের আইন-কানুন খুবই কঠোর হওয়া সত্ত্বেও দেশটিতে নিজ সন্তানকে হত্যার দায়ে পিতাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান নেই। তেমনিভাবে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না।

উপসংহার :

সতীত্বকেই সৌদি আরবে নারীর উপর সহিংসতার যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয় । সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীর উপর শারীরিক সহিংসতার সর্বোচ্চ অভিপ্রকাশ ঘটে ধর্ষণে।

অথচ কী আশ্চর্য, ধর্ষণের পেছনেও অজুহাত হিসেবে দাঁড়িয়ে যায় নারীর সতীত্বের প্রশ্ন। সেখানে পুরুষের সততা বা সতিত্বে প্রশ্ন তোলা হয় না ।

তবে সেখানে পুরুষকে এই প্রশ্নেরউত্তর দিতে হয় না :” কোন নারী স্বেচ্ছায় বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ালে তা যদি অন্যায় হয়, তবে কোন নারীকে জোর করে কোন পুরুষ শারীরিকভাবে নিপীড়ন করে তাহলে তা তারচেয়েও ভয়াবহ অপরাধ নয় কি ?

কারণ সৌদি আরবে নারীকে মানুষ মনে করা হয় না ।

সৌদি আরব এই সেই দেশ - যেখানে ধর্মপ্রচারক ধর্ষণের পর হত্যা করে তাঁর পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে। অজুহাত সতীত্ব নিয়ে সন্দেহ। হায় রে ! পাঁচ বছরের মেয়ের সতীত্ব ।

এসম্পর্কিত আরো তথ্য :

http://www.independent.co.uk/news/world/middle-east/saudi-preacher-who-raped-and-tortured-his-five-yearold-daughter-to-death-is-released-after-paying-blood-money-8480440.html

http://www.dhakatimes24.com/2015/07/07/73465/শিশু-মেয়েকে-ধর্ষণের-পর-হত্যাকারী-সৌদি-ধর্মপ্রচারক-মুক্ত#sthash.SSX8OaVY.QyXXnjiL.dpuf

https://en.wikipedia.org/wiki/Fayhan_al-Ghamdi

http://www.rightnews24.com/international/16536

http://primenews.com.bd/bn/?p=17686

বিষয়: বিবিধ

২২১৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

330237
১৬ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০১:৫৩
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৬ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:০৭
272455
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File