মুসলিম মেয়েরা প্রকাশ্য স্হানে মুখ খুলে চলাফেরা করবে এবং ছেলেদের সাথে অবাদে মেলামেশা করবে (১ম পর্ব )
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৭ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:৩৬:২৪ সকাল
https://www.youtube.com/watch?v=ehYxS1LJwBg
ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান । ইসলাম নারী ও পুরুষের ব্যক্তিত্বকে আলাদা হিসেবে তুলে ধরেনি । তবে তাদের মধ্যে শালিনতাবোধ যাতে যথাযথভাবে থাকে সেজন্য কিছু নীতিমালা দিয়েছে । সেই নীতিমালাকে বলা হয় হিজাব বা পর্দা । হিজাব বা পর্দা মুসলিম নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য আবশ্যক বা ফরজ বিষয় । হিজাব বা পর্দা ব্যাপক বিষয় । কথা বলা হতে পোষাক পড়া পর্যন্ত সব বিষয় হিজাব বা পর্দার অন্তর্ভুক্ত ।
আজকে আমাকে হিজাব বা পর্দা সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করা হলো মুসলিম মেয়েদের মুখ ঢাকা প্রয়োজনীয় কি ? আমি উত্তরে এক শব্দে বল্লাম “ না “ । মুখ ঢাকার বিষয়টি শুধু মাত্র রাসুল (সা.) - এর স্ত্রীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ছিল ।
https://www.youtube.com/watch?v=5PkeQ_9XBO8
বিভিন্ন সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত রাসুল (সা.) - এর যুগে মুসলিম মেয়েরা মুখ খোলা অবস্হায় সমাজে প্রকাশ্যে চলাফেরা করতো । যেমন :
১.
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنهما قَالَ كَانَ الْفَضْلُ رَدِيْفَ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَتِ امْرَأَةٌ مِنْ خَثْعَمَ، فَجَعَلَ الْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا، وَتَنْظُرُ إِلَيْهِ فَجَعَلَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم يَصْرِفُ وَجْهَ الْفَضْلِ إِلَى الشِّقِّ الآخَرِ-
আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, (বিদায় হজ্জের দিন তার ভাই) ফযল রাসূল (ছাঃ)-এর পিছনে সওয়ারীতে বসে ছিল। অতঃপর খাছ‘আম গোত্রের একটা মহিলা আসল। ফযল তার দিকে তাকাতে শুরু করল এবং মহিলাটিও ফযলের দিকে তাকাচ্ছিল। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) ফযলের মুখমন্ডল অন্যদিকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন।
[ বুখারী হা/১৫১৩; মুসলিম হা/১৩৩৪, আবুদাঊদ হা/১৮১১; নাসাঈ হা/২৬১৩। ]
এ হাদীছ প্রমাণ বহন করে যে, মহিলাটির মুখ খোলা ছিল।
২.
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ شَهِدْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةَ يَوْمَ الْعِيْدِ فَبَدَأَ بِالصَّلاَةِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ بِغَيْرِ أَذَانٍ وَلاَ إِقَامَةٍ ثُمَّ قَامَ مُتَوَكِّئًا عَلَى بِلاَلٍ فَأَمَرَ بِتَقْوَى اللهِ وَحَثَّ عَلَى طَاعَتِهِ وَوَعَظَ النَّاسَ وَذَكَّرَهُمْ ثُمَّ مَضَى حَتَّى أَتَى النِّسَاءَ فَوَعَظَهُنَّ وَذَكَّرَهُنَّ فَقَالَ تَصَدَّقْنَ فَإِنَّ أَكْثَرَكُنَّ حَطَبُ جَهَنَّمَ. فَقَامَتِ امْرَأَةٌ مِنْ سِطَةِ النِّسَاءِ سَفْعَاءُ الْخَدَّيْنِ-
জাবির (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ঈদের দিনে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছালাতে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুৎবার পূর্বে আযান, ইক্বামত ব্যতীত ছালাত আদায় করলেন। অতঃপর লোকদেরকে উপদেশ, নছীহত করলেন। অতঃপর মহিলাদের নিকট এসে ওয়ায-নছীহত করে বললেন, হে মহিলারা! তোমরা ছাদাক্বা কর, ……… দু’গাল লালচে কালো দাগ মিশ্রিত একজন মহিলা নারীদের মধ্যে হ’তে দাঁড়িয়ে বলল, কেন হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)?...।
[মুসলিম হা/৮৮৫।]
এই দুই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হলো মেয়েরা মুখ খোলা রাখবে ।
কুরআনের আয়াতেও মেয়েদের চেনার কথা আছে । মুখ ঢাকা থাকলে মেয়েদের চেনা যায় না । যেমন :
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا “হে নবী! তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মু’মিনদের নারীদেরকে বলে দাও তারা যেন তাদের ওড়নার প্রান্ত তাদের ওপর টেনে নেয়৷ এটি অধিকতর উপযোগী পদ্ধতি, যাতে তাদেরকে চিনে নেয়া যায় । (সুরা আহযাব, ৫৯)
এই আয়াতে জিলবাব বলে একটা শব্দ আছে । যার বাংলা অনুবাদ হলো চাদরের মতো বড় ওড়না যা দিয়ে মাথা,গলা ও বুক ঢেকে রাখা যায় । এটা বোরকা নয় । বোরকা আরবী শব্দও নয় ।
এই আয়াতে স্পষ্টভাবে যেখানে বলা হচ্ছে- তারা যেন তাদের ওড়নার কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে।
তাদের সহজে যেন চেনা যায় এই বক্তবব্যের মাধ্যমে তাদের মুখমন্ডল খোলা রাখার অনুমতিই দেয়া হয়েছে। কারন মুখমন্ডল খোলা না রাখলে চেনার প্রশ্নই আসে না।
ইসলামী স্কলারও মেয়েদের মুখ খোলা রেখে সমাজে অবাদ বিচরণ করুক - তা চান ।
সৌদি আরবের আলেম শেখ আহমেদ আল-গামেদীর স্ত্রী জাওয়াহির বিনতে শেখ আলী
যেমন :
শেখ আহমেদ আল-গামেদী, সৌদি আরবের প্রচার ও অনৈতিকতা প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষের মক্কা অংশের সাবেক প্রধান । তার স্ত্রী জাওয়াহের বিনতে আল-শেখ আলী ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখ এমবিসি টিভিতে মুখ খোলা অবস্হায় বা নিকাব দিয়ে মুখ না ঢেকেই উপস্হিত হন । আর শেখ আহমেদ আল-গামেদীও তার সাথে উপস্হিত ছিলেন । শেখ আহমেদ আল-গামেদী বলেন যে মুখ ঢাকা শুধুমাত্র নবী মুহাম্মদ সা. – এর স্ত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল । তিনি টিভির সাক্ষাৎকারে জনসাধারণের সামনে মহিলারা তাদের মুখ প্রকাশ করা দোষের কিছু নয় এবং মহিলারা সামান্য মেকআপ পরতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ।
ভিডিওটা দেখুন , এই লিংক হতে :
https://www.facebook.com/video.php?v=885018538187908&set=vb.831464740209955&type=2&theater
সৌদি আরবের আলেম শেখ আহমেদ আল-গামেদী
মেয়েরা অবশ্যই সাজগোজ করতে পারেন । মুখ খোলা রেখে চলাফেরা করতে পারেন । তাতে পরিমিতিবোধের দিকে লক্ষ্য রাখবেন । প্রয়োজনবোধে হাল্কা মেক আপ করতে পারেন ।
https://www.youtube.com/watch?v=4WgPJ_Bxu7o
জামায়াত নেতা কামরুজ্জামান-এর পরিবার
জামায়াতে ইসলামী নামক দলের ছাত্রী উইং ইসলামী ছাত্রী সংস্হা-র মেয়েরা যদি সর্বক্ষণ মুখ ঢেকে রাখে ও সমাজ হতে নিজেদের ঘুটিয়ে রাখে - তাদের এই কার্যক্রম বাড়াবাড়ি এবং ধর্মের নামে গোড়ামী ।। জামায়াতে ইসলামী-তে মেয়েদের মুখ ঢাকার জন্য নিকাব পড়া বাধ্যতামূলক বা ফরজ (নাউজুবিল্লাহ) করা হয়েছে । ব্যতিক্রম কিছু আছে । যেমন জামায়াত নেতা কামরুজ্জামান-এর পরিবার ।
সমাজে মুসলিম নারীরা পুরুষের সাথে অবাদে বিচরণ করবে এবং তারা কোন ক্রমেই নিজেদের পুুরুষদের চেয়ে হেয় মনে করবে না । তারা পরস্পরকে বন্ধু মনে করবে । কারণ কুরআনে বলা আছে :
” আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী। " ( সুরা তওবা : ৭১ ) "
বিষয়: বিবিধ
২৭৫২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ অবাধে বিচরন করতে ক্বুরআনের কোথায় বলা আছে ? সে কি তার স্বামীকে ঘরে রেখে আরেকজন পুরুষের সাথে দ্বীনের প্রচারে বের হতে পারে ? একজন মেয়ে কি ৮-১০ জন ছেলের সাথে অবাধে বিচরন করতে পারবে ? মেয়েদেরকে অপরিচিত পুরুষদের সাথে কিছুটা রুক্ষ ভাষায় কথা বলার জন্য বলা হয়েছে তাতে যার মনে কু চিন্তা আছে সেটা বেড়ে উঠতে পারবে না ।
আর বলাই আছে পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী । নারীর ক্ষমতায় আরোহন কিয়ামতের লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম।
ঈমানদার নারী ও পুরুষ একে অন্যের সহায়ক - এটা বলতে বুঝায় যে , যেখানে পুরুষ বা নারীর এক্সেস শরিয়তের খেলাপ সেখানে অন্যজন যাবে । একজন পুরুষ দায়ির চেয়ে একজন নারী দায়ির কথা মহিলাদের জন্য বেশী সহজতর হবে কারণ একজন মহিলা আরেকজন মহিলার যতটা কাছে আসতে পারে শরিয়ত মোতাবেক সেটা পুরুষদের জন্য নিষেধ । বিপরীতভাবেও একই কথা খাটে।
মেয়েদের পর্দার কথা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র ক্বুরআনে বলেছেন যেটা নিয়ে কোন তর্ক হবার অবকাশ নেই । মেয়েদের হাত পা যেগুলো স্বাভাবিকভাবে প্রকাশমান সেটা খোলা রাখতে কোন নিষেধ নেই এবং মুখমন্ডল খোলা রাখতে বলা হয়েছে যাতে তাদেরকে চেনা সহজ হয় । মুখ মন্ডল ঢেকে রাখাটা সন্দেহরই বেশী কাছাকাছি।
জাজাকাল্লাহ খাইর ।
সমাজ নয়। মিনিমাম ঈমান রেখে যতদুর চলা যায়। আমার মতে হিজাব পড়ে চলাফেরায় যথেষ্ট। আপনার জ্ঞায়ানের আলোকে একটি দল তৈরী করুন। যারা সেকুলার ধারায় চলবে।তারপর একটি নিদৃষ্ট সীমানায় এলে ট্রেনিং এর মাধ্যমে পরিপূণ জ্ঞান দান করা। অতি তাড়াতাড়ি মসজিদ গুলো তে সিসটারদের দরজা খুলে দেওয়া ।
যে খান থেকে তারা জ্ঞান আরোহন করবে।
এর ফলে সবাই একই স্রোতে চলত পারবে।
হিজাব বিহীন চললেও দোষের কিছু নাই। আপাতত, নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল। লক্ষ্য হবে হবে, ইসলামী বিপ্লব ত্বরানিত করা। আপনার ডিজাইন থিককিং খুব
প্রোগেসিভ। জামাত ও শিবির ও ইসলামী ছাত্রী সংস্হা, এদের সমালোচনা করে লাভ নেই। তাড়াতাড়ি সেকুলার ফরমেটে দল তৈরী
করুন।
আপনার পরামর্শগুলো সাদরে গ্রহণ করা হবে ইনশাআল্লাহ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন