হিন্দুয়ানী শিরকী-কুফরী-শালীনতাবর্জিত ও ঈমানবিধ্বংষী বাংলা নববর্ষ পালন করা বাদ দিয়ে মুসলিমদের ইসলামী নববর্য পালন করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য (১ম পর্ব )
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ১৪ এপ্রিল, ২০১৫, ১০:০৭:৩৭ সকাল
মান্যবর মুসলিম ভাই-বোনেরা । বাংলাদেশের জনগণের ৯১% মুসলিম । কিন্তু মুসলিমরা অমুসলিম ও নাস্তিকদের সুদুর প্রসারী ষড়যন্ত্র ও কর্মকান্ডের কারণে আজ হিন্দুয়ানী শিরকী-কুফরী-শালীনতাবর্জিত ও ঈমানবিধ্বংষী বাংলা নববর্ষ পালন করছে । মুসলিমদের এই অবস্হা হতে বের হয়ে আসতে হবে । আর এই লক্ষ্যে মুসলিমদের ইসলামী নববর্ষ পালন করতে হবে । সারা বিশ্বে মুসলিমরা ইসলামী নববর্ষ পালন করে (সৌদি আরব ব্যতিক্রম ) । আমি ধারাবাহিকভাবে কীভাবে ইসলামী নববর্ষ সারা বিশ্বে পালিত হয় তা তুলে ধরবো । আজ আমি মালয়েশিয়ায় কীভাবে ইসলামী নববর্ষ পালিত হয় তা তুলে ধরেছি ।
আমরা কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে ইসলামী নববর্ষ পালন করছি । আশা করি আপনারাও আমাদরে সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে নিজেদের ইমান ও আমলকে সুদৃঢ় করার পাশাপাশি দুনিয়া ও আখিরাতের কামিয়াবী হাসিল করবেন ।
আমাদের ফেসবুক পেজ : https://www.facebook.com/IslamicNewYearCelebration (ইসলামী নববর্ষ পালন করুন )
https://www.facebook.com/pages/Muhammadiyah-Mission-Bangladesh/288830894619402 ( Muhammadiyah Mission, Bangladesh )
মূল নিবন্ধ :
মালয়েশিয়ার প্রধানবিরোধী দল "পিকেআর"- এর নেত্রী নুরুল ইজ্জাহ-র শুভেচ্ছা ব্যানার
২৫ ই অক্টোবর ২০১৪ খৃষ্টাব্দ মোতাবেক ১ লা মহররম ১৪৩৬ হিজরী তারিখ ইসলামী নববর্ষ বিশ্বব্যাপী যথাযোগ্য ভাব-গাম্ভীর্য ও ধর্মীয় আবহের মধ্য দিয়ে পালিত হলো । ইসলামী বর্ষকে হিজরী বর্ষ বলা হয় । কারণ রাসুল (সা.) – এর মক্কা হতে মদিনায় হিজরত করার ঘটনার স্মরক হলো এই পঞ্জিকা ।
http://www.youtube.com/watch?v=x3XVR5g_mNE
মালয়েশিয়ার ইসলামপন্হী দল পাস-র শুভেচ্ছা ব্যানার ও কার্যক্রমের ভিডিও । এই দল দুইটি প্রদেশে প্রভাবশালী
দিবসটি গুরুত্বপূর্ণ বিধায় মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই , আরব আমিরাত , ফিলিস্তিন, আলজেরিয়া, মরক্কো-সহ ২৮টি মুসলিম প্রধান দেশ সরকারী ছুটি ঘোষনা করেছিল ।
পাকিস্তান , মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই , আরব আমিরাত , বসনিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন –সহ মুসলিম ও অমুসলিম প্রধান অনেক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানবৃন্দ দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে জনগণের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাণী প্রদান করেন ।
মালয়েশিয়ার প্রধানবিরোধী দল "পিকেআর"- এর নেত্রী ওয়াং আজিজা -র শুভেচ্ছা ব্যানার
আমার প্রাপ্ত তথ্য মতে, এবার ৭৮টি দেশের লোকরা ইসলামী নববর্য পালন পালন করেছেন । বিভিন্ন দেশের টিভি চ্যানেলে দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা আয়োজন করে । দিবসটিতে দিবসটির তাৎপর্য নির্ভর শোভা যাত্রা, আলোর মিছিল, মিলাদ মাহফিল, ক্বিরায়াত প্রতিযোগিতা ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে । পত্র-পত্রিকাগুলোও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে ।
মালয়েশিয়ায় হিজরী নববর্ষকে বলা হয়, মা,আল হিজরাহ্ যার অর্থ হলো হিজরী বছর শুরু । অনেকে বলে আউয়াল মুহাররম । কিছু লোক বলে তুহান বারু । তারা পরস্পর এদিন ”সালাম মা,আল হিজরাহ্” বা হিজরী বছরটি শান্তিময় হোক বলে শুভেচ্ছা জানায় । তারা আগের দিন মাগরিবের নামাজ পড়ে ও একটি বিশেষ দুয়া পড়ে দিনটি শুরু করে । অনেকে নফল রোজাও রাখে ।
আজ আমরা মালয়েশিয়ার হিজরী নববর্ষ বা ইসলামী নববর্ষ পালন করা সম্পর্কে ধারণা লাভ করবো । পোস্টটি ভিডিও ও ছবি পোস্ট হওয়ায় আমি এই লেখায় খুব একটা তথ্য ব্যবহার করবো না । কারণ : ভিডিওগুলো একটা ১ লক্ষ্য বাক্যের চেয়েও বেশী শক্তিশালী ।
মালয়েশিয়ায় দিনটি ১০টি কাজের মাধ্যমে শুরু হয় :
১. আগমনী সংগীত :
মালয়েশিয়ায় এই দিনটি আগের দিনে মাগরিব নামাজ পড়ার সময়ের পর টিভিতে এই গানটি দিয়ে শুরু হয় । ব্যাপারটা অনেকটা আমাদের দেশে ঈদের আগের দিন টিভিতে “রমজানের ঐ রোজার শেষে” গান প্রচারের মতো । গানের কথাগুলোর বাংলা ভাবানুবাদ নিচে উল্লেখ করছি :
http://www.youtube.com/watch?v=awBmd9aiNN0
http://www.youtube.com/watch?v=lSEXCuc6ak0
বছর ঘুরে মহররম মাসের প্রথম দিন এলে মনে পড়ে যায়,
আমাদের নবী হিজরত করেছিলেন মক্কা থেকে মদীনায় ।
আনসার আর মুহাজিররা মিলে মিশে আস্থা ও বিশ্বাস দিয়ে,
তাদের জীবন ও সম্পদ বিসর্জন করে ইসলাম করেছিলেন প্রচার ।
আজ তাই আমরা হয়েছি মুসলমান, পেয়েছি সুমহান আদর্শ ইসলাম ।
তাই -
হিজরত হলো আত্মত্যাগ
হিজরত হলো সংগ্রাম
হিজরত হলো ভ্রাতৃত্ব
হিজরত হলো ঐক্য ।
এজন্য -
এসব দিনের চেয়ে আলাদা করে আমরা পহেলা মহররম করি উদযাপন ,
আমরা এই দিন বলে যাই সব বয়সের লোকদের কাছে
সাহস, ন্যায়পরায়ণতা ও ইসলামের ভ্রাতৃত্বের কথা
অন্য দিনের চেয়ে বেশী করে । ”
এই গানটা এত জনপ্রিয় যে দুই বছরের বাচ্চারাও গাইতে পারে ও গেয়ে নাচানাচি করে । যেমন :
http://www.youtube.com/watch?v=ZdsDVCaA6Vo
টিভি অনুষ্ঠানের ফাকে ফাকে বিশেষ বিজ্ঞাপন প্রচার হয় যাতে হিজরী নববর্ষের তাৎপর্য বর্ণিত হয় :
http://www.youtube.com/watch?v=08bxjvYErw4
টিভিতে হিজরী নববর্ষের তাৎপর্য উপর কার্টুন ছবি দেখানো হয় যাতে হিজরী সনের তাৎপর্য তুলে ধরা হয় :
http://www.youtube.com/watch?v=1emuj1C8ocI
২.টিভিতে বিভিন্ন ভাষায় ইসলাম প্রচার ও প্রসার মূলক গান সম্প্রচার করা :
http://www.youtube.com/watch?v=6smeEtUo0EY
মালয়েশিয়া বহু জাতি ও ভাষার দেশ । এজন্য বিভিন্ন ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচার হয় । মালয়েশিয়ায় মালয়, চীনা, তামিল, বিহারী –সহ বিভিন্ন ভাষা ও জাতির লোক বাস করে । এজন্য গানের মধ্যেও তার প্রভাব । একটা গানের মধেই অনেক ভাষার বাক্য ও শব্দ থাকে । যেমন : এই গানট তিনটা ভাষায় গাওয়া হয়েছে । আরবী , উর্দু ও ইংরেজী ভাষায় । এই গানটা হলো বিখ্যাত গান – “তালা আল বদরু আলাইনা ” । এই গানটা মদীনার লোকরা রাসুল (সা.)- হিজরত করার পর সর্বপ্রথম মদীনায় প্রবেশ করার সময় তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বাদ্য যন্ত্র ব্যবহার করে গেয়েছিল । আজও কোন লোক বিদেশ হতে নিজ দেশে অনেক দিন পর ফিরে আসলে তাকে আরবরা এই গান গেয়ে অভ্যর্থনা জানায় । (এই গানটির বাংলা অনুবাদ পরবর্তীতে দেওয়া হবে । )
আরবী ভাষার গান হিজরী নববর্ষের উপর :
http://www.youtube.com/watch?v=_4WTrQwDwr4 আরবী গান
http://www.youtube.com/watch?v=2n8K8y7ejFU আরবী গান
জনপ্রিয় মালয়েশিয়ান গান হিজরী নববর্ষের উপর যার অধিকাংশ বাক্য আরবী
http://www.youtube.com/watch?v=uwXHkjf8F5o
A-Hijrah - Raihan.flv
অসাধারণ একটা গান হিজরী নববর্ষের উপর
http://www.youtube.com/watch?v=h233pkXeQQU
http://www.youtube.com/watch?v=QvAy6s_UYKc
http://www.youtube.com/watch?v=0bse_EF0efY
http://www.youtube.com/watch?v=-NkDCB0aQxU
৩. শোভাযাত্রা : এই দিনের গুরুত্ব প্রকাশক শোভাযাত্রা বা মিছিল অনুষ্ঠিত হয় । এসব শোভাযাত্রা বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও আলেমবৃন্দ নেতৃত্ব দান করেন । এই ভিডিওতে এমন একটা শোভাযাত্রার তুলে ধরা হলো :
http://www.youtube.com/watch?v=A-zjncGpVL0
৪.ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ মাহফিল ও হাল্কায়ে জিকিরের অনুষ্ঠান আয়োজন : যেমন :
http://www.youtube.com/watch?v=V1W4lr8N-Wo
এদিন তারা বিশেষ দুয়াও পড়ে যাদের তারা দুয়া আউয়াল তুহান ও দুয়া আখির তুহান বলে থাকে । যেমন :
হিজরী নববর্ষের দিনের প্রথম ভাগে তারা এই দুয়া পড়ে
http://www.youtube.com/watch?v=TiwM3og9D5Q
Doa Awal Tahun
হিজরী নববর্ষের দিনের শেষ ভাগে তারা এই দুয়া পড়ে
http://www.youtube.com/watch?v=G66gJt13Uqc
Doa Akhir Tahun
৫. বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠণ এ দিনের তাৎপর্য আলোচনা করে বিশেষ অনুষ্ঠান , আলোচনা সভা ও দুয়া মাহফিল করে থাকে । যেমন : এই ভিডিওতে মালয়েশিয়ার প্রধান বিরোধী দল ”পার্টি কিদালান রাকায়াত (পিকআর)” -এর নেতা ও বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আনোয়ার ইব্রাহিম হিজরী নববর্ষ উপলক্ষ্যে ওয়াজ করছেন । দেখুন ভিডিওটা
http://www.youtube.com/watch?v=M3bhsaOVN58
৬. টিভিতে রম্য টক শো পর্যন্ত হয় :
http://www.youtube.com/watch?v=T7m0C9KRfXI
৭. পত্র-পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে ।
৮.সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বিশেষ বানী প্রদান করেন ও জনগণকে শুভেচ্ছা জানান । দিবসটি উপলক্ষ্যে সামরিক কায়দায় তোপ ধ্বনি দেওয়া হয় ।
৯. গরিব – দু:খীদের সাহায্য করা হয় ।
১০. স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় ।
http://www.youtube.com/watch?v=9xDyA_P0CfU
http://www.youtube.com/watch?v=hd3-vXC1gm8
হিজরী নববর্ষের তাৎপর্য :
http://www.youtube.com/watch?v=j5zmtrwWsYU
আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিতে বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ বরণ করার অনুষ্ঠান বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপিত হলেও হিজরী নববর্ষকে সেভাবে পালন করা হয়নি। অথচ মুসলিম উম্মাহর সংস্কৃতি চর্চায় হিজরী সনের গুরুত্ব বেশি।
প্রতিটি জাতির নিজস্ব কৃষ্টি-কালচার বা সংস্কৃতি রয়েছে। এ সংস্কৃতি বাদ দিয়ে আসল পরিচয় নিশ্চিত করা যাবেনা। আমরা জাতিগতভাবে মুসলমান। শ্রেষ্ট জাতী হিসাবে আমাদের রয়েছে গৌরবোজ্জল আদর্শ। বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়াতে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে হবে।
বাঙালীত্ব ও ইসলাম এক ও অভিন্ন :
‘আমরা বাঙালী সংস্কৃতি ও ইসলামী সংস্কৃতিতে কোন বিভাজন তৈরী করতে চাই না। ‘হিজরী নববর্ষ’ পালনের মাধ্যমে আমরা দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চাই ।’ আর এর ব্যতিক্রম করা উচিতও নয় । কারণ ভাষা ও স্হান ব্যক্তির আশ্রয়স্হল । যা কিছু ইসলামী নয় – তা আমাদের ইসলামীকরণ করতে হবে ।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসণকে সুস্হ ও ইসলামী সংস্কৃতি দিয়ে রক্ষা করতে হবে :
আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসনে সুস্থ ধারার দেশীয় সংস্কৃতিক আজ হুমকির পথে। অপসংস্কৃতির ছোবলে আজ চিরায়ত দেশীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বসেছে। বিকৃতি আবেদনময়ী যুক্ত আকাশ সংস্কৃতির বিপরীতে সুস্থ ধারার নির্মল সাংস্কৃতিক চর্চা আজ জোরদার করা প্রয়োজন । আর এজন্য আমাদের বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার মতো
মানুষের মাঝে নৈতিকতার উৎকর্ষতা সাধনে ও সুস্থ মননশীলতা জাগ্রত করতে ইসলামী সংস্কৃতি প্রসারিত করার তাগিদ দিয়ে পহেলা মহররম বা হিজরী নববর্ষ পালন করতে হবে ।
মুসলমান ভাই – বোনদের বলছি, হিজরী সাল কি আমাদের জন্য নয় ? :
পহেলা বৈশাখ এলে আমরা ঐ দিন কি করব, কোথায় যাব ? সবকিছু আগে থেকেই ঠিকঠাক করি । আর দিনটির অপেক্ষায় প্রহর গুনি । কি রং-এর কাপড় পড়ব, সারা দিন কয়টা কাপড় লাগবে, কার সাথে ঘুরব, কোথায় যাব, তা ইতিমধ্যে ঠিক করে ফেলি । এমনিতে আবার সরকারি ছুটি থাকে । সারা বছর যাই করি ঐ দিন আমাদের পান্তা ইলিশ খেতে হবে । আমরা যে বাঙ্গালি তা মানুষের কাছে প্রকাশ করতে হবে না !!!!!!
কিন্তু তা সারা বছর করতে পারি না । বর্তমান যুগে তো আর পান্তা ভাত খাওয়া যাবে না । কারন মান- সন্মানে সমস্যা হবে । তাই বাঙ্গালি হিসেবে এক দিন খাই আরকি । যাদের টাকা- পয়সা আছে তারা ইলিশ মাছ ঠিকই খায় । কিন্তু পান্তা ভাত, অসম্ভব । সাথে আছে কনসার্ট, ভাষা প্রতিযোগিতা আরো কত আয়োজন । সব মিলিয়ে ধারুন একটা দিন ।
যাই হোক, সবচেয়ে বড় কথা হল আমরা বাঙ্গালি । তাই বাংলা নববর্ষ নিয়ে আমাদের এত আয়োজন ।
আবার
আছে ইংরেজী 'নিউ ইয়ার' । ঐটা তো কোনো কথাই নেই, একদম জাক-ঝমক আয়োজন করে উদযাপন করি 'নিউ ইয়ার' । সরকারি ছুটিতো আছেই । নতুন জামা- কাপড় পড়ে, পরিবার পরিজন সাথে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে যাই । আবার বিভিন্ন কোম্পানি আয়োজন করে 'লাইভ কনসার্ট' । এইটাই তো আনন্দ করার একটি মোক্ষম সুযোগ । অনেক দিন সব বন্ধুদের সাথে মিলিত হ ই । এটার মজাই আলাদা ।
সবচেয়ে বড় কথা হল, আমরা বছরের প্রথম দিনটি একটু অন্য রকম ভাবে পালন করি ।
কিন্তু
আমরা তো মুসলমান । আমাদের তো আরএকটি বছর আছে, হিজরী । যা আল্লহ তায়ালা নির্ধারিত করে দিয়েছেন । ঐ হিজরী সাল অনূসারেই আমরা রোজা, ঈদ ইত্যাদি পালন করে থাকি । ঐ হিজরী সাল অনূসারেই হবে কিয়ামত ।
এই বছরটারও প্রথম দিন আসে । কিন্তু আমরা সরকারী ছুটি পাই না । কিন্তু এই দিনটাতে আমরা কি করি ?
আমাদের তো প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ । মাথায় টুপি পড়া সুন্নত । মাথা-চুল-পিঠ-গল- কান-পুরো বুক ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখা ফরজ । ........আরও অনেক নিয়ম- কানুন আছে যা আমরা পালন করি না । এর জন্য অবশ্যই আমাদেরকে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে ।
বাংলা নববর্ষের দিন যদি আমাদেরকে বাঙ্গালি হতে হয় । ইংরেজী নববর্ষের দিন যদি আমাদেরকে আনন্দ করে কাটাতে হয় । কিন্তু হিজরী নববর্ষের দিন আমরা কিভাবে কাটাই ?
প্রতিদিন আমাদের নামাজ পড়া ফরজ, কিন্তু ঐ দিনওতো পড়ি না । সবসময় মাথায় টুপি রাখ সুন্নত কিন্তু ঐ একটি দিনও তো আমরা তা করি না ।
আমাদের মাথা-চুল-পিঠ-গল- কান-পুরো বুক ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখা ফরজ । আমরা তা করি না । আমরা এগুলো প্রদর্শন করে যাই । ছেলেরাও এসব দেখে এট্রাকশন ফিল করে । আর আমরাও আনন্দিত হই । এক দিনের জন্যও আমরা এসব হতে বিরত হই না ।
আমরা বাঙ্গালি হই একদিনের জন্য, কিন্তু আমাদেরকে মুসলমান হতে হবে সারা বছরের জন্য । আমাদেরকে যদি কেউ বলে আজকে কত তারিখ ? আমরা ইংরেজী, বাংলা দুটোই বলতে পারব । কিন্তু হিজরী তারিখ কি বলতে পারব ?
হে মুসলিম ভাই-বোনেরা । আমরা বাংলা, ইংরেজী নববর্ষ পালন করব - তবে তা অবশ্যই ইসলামী নীতিমালা মেনে । কিন্তু আমাদের ধর্মের দিকে তো খেয়াল রাখতে হবে । আমাদের সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়ে মালয়েশিয়া - সহ সারা বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর মতো হিজরী নববর্ষ পালন করতে হবে । আর এজন্য আমাদের উদ্যোগী হতে হবে ।
আজকের কুইজ:
১. আমরা কেন হিজরী নববর্ষ পালন করি বা করবো ?
২. আমরা কেন আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে হিজরী সন ব্যবহার করবো ?
৩. হিজরী নববর্ষের প্রথম দিন আমাদের কি করণীয় ?
৪. আমরা কেন বিশ্বব্যাপী একই বার ও একই তারিখে রোজা-ঈদ-হিজরী নববর্ষ –সহ ইসলামী সব অনুষ্ঠান পালন করবো ?
৫. হিজরী নববর্ষ পালন করলে কেন সোয়াব হবে ?
(এসব প্রশ্নের উত্তর আজকের পোস্ট ও আমার আগের লেখাগুলোতে রয়েছে । প্রয়োজনে বিভিন্ন বইয়ের সাহায্য নিতে পারেন । )
এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর যে বা যারা দিবেন তাকে বা তাদের ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজ বন্ড অথবা মুদারাবা বন্ড উপহার স্বরুপ প্রদান করা হবে ।
বিষয়: বিবিধ
২৪৯৬ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সাহাবাদের শাসন আমলে পালিত হয়েছে কিনা জানিনা!! সম্ভব হলে এ বিষয়ে তথ্য দিয়ে উপকৃত করবেন।
ধন্যবাদ তথ্য নির্ভর পোস্টটির জন্য।
মুহাম্মদ সা-এর সময় হিজরী পঞ্জিকা তেরী হয়নি । হিজরী পঞ্জিকা হযরত ওমর রা ও আলী রা এবং হরমুজান নামক অগ্নিপুজক ইরানী (পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন )জোর্তিবিজ্ঞানী মিলে হিজরী পঞ্জিকা বানান । তাদের বানানো পঞ্জিকা দিয়ে বিগত ও আগত ৫০০ বছরের হিজরী ক্যালেন্ডার বানানো যেতো । তাদের এই পদ্ধতি বা প্রোগ্রামটাকে মুজার্রদ বলা হতো ।
আমরা অনেক কিছু জানি না । কারণ আমরা পড়াশোনা করি না । গবেষণা করি না ।
মুসলিমদের ধর্মে হালখাতা বলে কিছু নেই । মুসলিমদের আলাদা অর্থ বছর আছে যা রমজান মাসে শুরু ও শেষ হয় । ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ঈদুল ফিতরের আগে তাদের বাৎসরিক হিসেব শেষ করে । এক সময় হিন্দুরা জমিদার ছিল আর মুসলিমরা ছিল প্রজা । মুসলিমরা বাধ্য হয়ে হিন্দু জমিদারদের নিয়ম মেনে নিতো । এখন সময় বদলেছে ।
মুসলিমরা মুসলিমদের ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করবে । আর হিন্দুরা হিন্দুদের ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করবে । পহেলা বৈশাখের সাথে হিন্দুদের অনেক উৎসব ও ধর্মীয় আচার জড়িত । কোন মুসলিম এসব কাজে অংশ নিতে পারে না । আমি তাই বলতে চাচ্ছি ।
মুসলিমরা তাদের ধর্ম ও সংস্কৃতির মাধ্যমে সময়ের সাতে তাল মিলিয়ে চলছে । যেমন : মালয়েশিয়া । সেখানের মুসলিমরা ইসলামী নববর্ষ পালন করে যা হিন্দুয়ানী বাংলা নববর্ষ হতে ১০০ আধুনিক ও প্রগতিশীল । সেখানে অশালীনতা নেই । চরক পুজার নামে বিভৎসতা নেই । সেখানে নোংড়ামী নেই । বিস্তারিত এই লেখায় তুলে ধরেছি । হিন্দুরা সময়ের সাথ কতটুকু অগ্রসর হয়েছে - তা আমরা ভাল করেই জানি । হিন্দুরা এখনও জাত-পাত নিয়ে ব্যস্ত থাকে । হিন্দুরা মেয়েদের পিতার সম্পত্তি দেয় না । আর বাহ্মণ ও শুদ্রের মধ্যে সম্পর্ক এখনও হয় না । তারা নিজেরা এক জন আরেক জনকে দেখতে পারে না । অথচ তারা নাস্তিকদের সাথে নিয়ে তাদের পুজা ও অর্চনা এবং বেহাপনা - অশ্লীলতা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে । এটা সুদুর প্রসারী ষড়যন্ত্র যারা মাধ্যমে হিন্দুরা মুসলিমদের আবার হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় । নাস্তিকতা মুসলিমদের নাস্তিক বানিয়ে দেশটাকে নাস্তিকদের দেশে পরিনত করতে চায় ।
আমরা তা হতে দিতে পারি না ।
ইসলামী নববর্ষ মানে হিজরী বছর উদযাপন । হিজরী সন উদযাপিত হতো, হয় এবং হবে । ওমর রা. ও সাহাবী রা. - গণ হিজরী সন তাদের মতো করে পালন করেছিলেন । আর এখনও সারা বিশ্বে ইসলামী নববর্ষ পালন হয় । আর সেই তথ্যই আমি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ ।
আর শিরোনাম সর্বোচ্চ ৮ শব্দের হ্ওয়া চাই যত কম শব্দে শিরোনাম তৈরি করতে পারবেন তত ভাল
আপনার পরামর্শ গ্রহণ করার চেষ্টা করবো ।
আওয়ামী লীগ যদি সব শাহবাগী নাস্তিকদের বিচার করে ও হেফাজতের সমাবেশে আসা লোকদের শহীদ করার ব্যাপারে জাতীর কাছে ক্ষমা চায় এবং সত্যিকার ভাবে মদিনা সনদ অনুযায়ী দেশ পরিচালন করে, তাহলে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে একটা কথাও বলবো না ।
আমার লেখা পড়ার জন্য আপনাকে হৃদয়ের অন্তস্হল হতে দুয়া ও শুভেচ্ছা ।
জাজাকাল্লাহ খাইর ।
আশা করি বাস্তব জীবনে ইসলামী নববর্ষ পালন করবেন । আমরা কয়েক বছর ধরে পালন করছি । আমরা পারিবারিকভাবে পালন করছি এবং এলাকাভিত্তিকও পালন করছি । বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজনও আমরা করে থাকি হিজরী নববর্ষের প্রথম দিনে । এবার ১৫ অক্টোবর ২০১৫ তারিখ ১ লা মহহরম ১৪৩৭ হিজরী হবে । এই দিন ও রাতে আমরা অনুষ্ঠানমালা তেরী করে রেখেছি ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন