জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা , গুরুত্ব ও তাৎপর্য

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৯ মার্চ, ২০১৫, ১১:২৬:১৫ রাত

পটভুমি :

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৪ শুক্রবার প্রথম আলোতে জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার উপর একটা লেখা বের হয় ।

( ট্রাইব্যুনাল আইনে চতুর্থ সংশোধনী আসছে ,দোষী হলে জামায়াত নিষিদ্ধ - মোশতাক আহমেদ , সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৪ http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/330610/%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%B7%E0%A7%80-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7) এই লেখাটা নিয়ে বন্ধুমহলে আলোচনা হচ্ছিলো । তার প্রেক্ষিতে সবাই যা বল্লো তা সন্নিবেশিত করায় এই পোস্ট সৃষ্টি হলো । আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে ।





সূচনা :

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের প্রাচীনতম দল যা ১৯৪১সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । বর্তমানে সাইদীর ফাঁসির রায় রদ হওয়ার পর অনেকেই আওয়ামী লীগের সাথে জামায়াতের গোপন আঁতাত গড়ে ওঠায় সংকিত ও চিন্তিত । কারণ জাময়াতকে অনেকেই ( বিশেষত বিএনপির সমর্থকদের বড় অংশ ) মনে করেন, জামায়াত একটি অবিশ্বস্হ দল । বিভিন্ন সময় স্বার্থের কারণে বড় বড় রাজনৈতিক দলের কাঁধে জামায়াত সাওয়ার হয় । এবার হবে আওয়ামী লীগের ঘাড়ে । যেমন ১৯৯৫-৯৬ সালে কেয়ারটেকার সরকারের নামে জামায়াত আওয়ামী লীগের সাথে একাত্ম হয়ে দেশে নাশকতামূলক কাজ করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে স্হবির করে ফেলেছিলো । তাদের অভিমত, “জামায়াত ১০০ টি নির্বাচনী আসনের প্রতিশ্রুতি পেলেই বিএনপি-র সাথে আন্দোলন পরিচালনা করবে । কিন্তু বিএনপি-র হাইকমান্ড এই ব্যাপারে কোন ছাড় দিবে না । “

অপর দিকে আওয়ামী লীগ জামায়াত নিষিদ্ধের পাশাপাশি দেশ হতে ইসলামবিরোধী অনেক কার্যক্রম বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে ।

আমরা এই পোস্টে দেখবে জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটা কতটা বাস্তব ও যুক্তিযুক্ত আর আওয়ামী লীগ ইসলামবিরোধী কার্যক্রম বাস্তব রূপ দান করতে কতটা সফল হবে তা তুলে ধরবো ।



আওয়ামী লীগের জামায়াত নিষিদ্ধ করার তৎপড়তার ধরণ :

১.২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ ও সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মওলানা জিয়াউল হাসানের জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিট আবেদনটি পুনরুজ্জীবিত করেছেন। বর্তমানে এ রিটের চূড়ান্ত শুনানি চলছে আদালতে।

http://www.newsevent24.com/2013/04/16/%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%A6/

২. আইনি প্রক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের কাজ চলছে। এ ব্যাপারে আদালতে রিট করা হয়েছে।

http://www.dainikamadershomoy.com/index.php/today-s-news/first-page/item/10981-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%B9%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87.html

এব্যাপারে আইন প্রতিমন্ত্রীর অভিমত :

জামায়াত নিষিদ্ধ করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। যথাযথ আইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জামায়াত নিষিদ্ধ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

http://www.gonojagoronmoncho.com/2013-03-23-14-37-05/359-2013-04-15-19-32-12.html

জামায়াত নিষিদ্ধ হলে জামায়াত কি করবে ? :

১.নিষিদ্ধ করা হলে জামায়াতে ইসলামী আইনি লড়াইয়ে যাবে। তারা নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে যাবে হাইকোর্টে। সেখানে সন্তোষজনক রায় না পেলে সুপ্রিম কোর্টে যাবে।

http://www.mzamin.com/details.php?nid=NDU5MDg=&ty=MA==&s=MTk=&c=MQ==

২. জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নতুন নামে জামায়াতের জন্ম হতে পারে। অথবা জামায়াত কর্মীরা যে দলেই ঢুকবে সেটিকেই জামায়াতে পরিণত করবে।

http://www.newsevent24.com/2013/04/16/%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%A6/

৩. জামায়াত সন্ত্রাসের মাত্রা বাড়িয়ে দিবে । জামায়াত জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, ইসলামিক স্টেট, আল কায়দার সাথে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি করবে । তার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে । ফেসবুক ও ব্লগ সাইটে ইদানিং ইসলামিক স্টেট-এর কথিত খলিফা বাগদাদির হয়ে জামায়াত-শিবিরের লোকরা জনমত গঠণ করে যাচ্ছে ।

যেসব কারণে জামায়াত নিষিদ্ধ হবে :

১.আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে ডিজিটাল যুগের সূচনা করলেও এর সকল প্রকার সুবিধা নিচ্ছে জামায়াত শিবির। জামায়াত শিবিরের তথ্য প্রযুক্তি আন্দোলনের কাছে সরকার চরমভাবে মার খেয়েছে। বাঁশের কেল্লাকে একবার বন্ধ করার কারণেই এখন তারা দেশে-বিদেশে শত শত বাঁশের কেল্লা সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। জামায়াতে শিবিরের লোকরা অসংখ্য ওয়েব সাইট , ব্লগ সাইট , ফেসবুক পেজ পরিচালনা করে তাদের মতবাদ প্রচার করছে ।

( ইসলামের নাম ব্যবহার করে যারা সন্ত্রাস করে তাদের ইসলামী সন্ত্রাসী বলা হয় । ইসলামের সন্ত্রাসবাদের স্হান নেই । প্রচলিত বাংলায় ইসলামী সন্ত্রাসকে জঙ্গীবাদ বলা হয় । মূলত জঙ্গীবাদ সব ধর্মের লোকদের মধ্যে আছে । এই শব্দটা শুধুমাত্র ইসলামী সন্তাসীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ঠিক নয় ।

জঙ্গী শব্দটা উর্দূ জঙ্গ শব্দ হতে এসেছে । এর অর্থ যুদ্ধ । ইসলামী সন্ত্রাসীদের অভিমত, “আমরা ইসলামের সম্মান ও বিস্তৃতির জন্য লড়াই করছি । আমাদের এ লড়াইকে কুরআনে জিহাদ বলে অভিহি করা হয়েছে ।” এই উক্তিটি জসীম উদ্দীন রহমানীর । )

২. দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জামায়াত-শিবির ও কথিত ইসলামী দলগুলো কাজ করে যাচ্ছে । ইদানিং ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়দার নতুন শাখা বিস্তারের ফলে কোমলমতি ছেলেদের এবং নিকাব পড়া ও বোরকা পড়া মেয়েদের অকার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে । তারা ফেসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের সন্ত্রাস করার জন্য আহবান করছে । এতে তাদের ভবিষত ক্যারিয়ার নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে । আর এজন্য অভিভাবক মহল চিন্তিত ।

৩. আওয়ামী লীগের লোকদের মতে, ইসলামী দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী । সুতরাং অসাম্প্রাদায়িক ও ধর্মহীন বা ধর্মনিরোপেক্ষ প্রগতিশীল রাষ্ট্র গঠণের স্বার্থে সব ইসলামী দল-সহ সব ধর্মের রাজনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ হওয়া সময়ের দাবি । এই কথা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসঙ্গের ভাষনের প্রধান উপজীব্য বিষয় হিসেবে ছিলো । তিনি বলেছেন যে তিনি ধর্মভিত্ত্বিক রাজনীতি ও ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স প্রদর্শন করছেন এবং তার সরকার এই নীতিতে প্ররিচালিত হচ্ছে ।

৪.জামায়াতে ইসলামীসহ সব ইসলামী রাজনৈতিক দল ধর্মীয় লেবাসে ধর্ম ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

http://www.dainikamadershomoy.com/index.php/today-s-news/first-page/item/10981-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%B9%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87.html

৫. গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার পরই কিছু ব্লগার কাদের মোল্লার ফাঁসি ও জামায়াত নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেয়। এরপর সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন এসে তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।



দলের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের জের ধরে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও মহাজোটের নেতারা জামায়াত-নিষিদ্ধের জোরালো দাবি তোলে। এরপর সরকার আসামি পক্ষের মতো রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সমান সুযোগ রেখে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে। এ সময় ব্যক্তির পাশাপাশি অভিযুক্ত দলের বিচারের বিষয়টিও যোগ করে।

http://www.newsevent24.com/2013/04/16/%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%A6/

জামাত নিষিদ্ধ হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যেসব লাভ হবে :



১. জামায়াত নিষিদ্ধ হলে এই দলটি আন্ডারগ্রাউন্ডে যাবে, তখন এরা আর জনসমাবেশ করতে পারবে না। পারবে না কোনো মিছিল করতে। তবে দলটি নিষিদ্ধ হলেও যে বিলীন হয়ে যায়নি, তা তারা অবশ্যই জানান দিতে চাইবে। আর যেহেতু তারা কোনো মিছিল-মিটিং করতে পারবে না, তাই তারা তাদের অস্তিত্বের জানান দিতে নানা ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারে।

২. ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হওয়ার পরে তারা কিন্তু বিলীন হয়ে যায়নি; বরং তারা গোপনে তাদের কর্মতত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছিল এবং অপেক্ষায় ছিল এমন একদিনের জন্য, যেদিন তারা আবার রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। বাস্তবে হয়েছিলও তাই। নিষিদ্ধ ঘোষণা করা ছাড়াই দেশ স্বাধীনের পর অনেক দল বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। আবার অনেক বড় বড় দল এখনও বেঁচে আছে বেঁচে না থাকার মতো, কিন্তু জামায়াতের বেলায় তা হয়নি; বরং জামায়াত নবগঠিত হওয়ার পরে এমনভাবে সুসংগঠিত হয়েছে, যা কি-না ১৯৭১ সালের আগে পূর্ব পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর যে কার্যক্রম ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।

তাই এখন যদি আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে বন্ধ করেও দেয়, তাহলে তারা সেই ১৯৭১-পরবর্তী অবস্থায় যে পলিসি নিয়েছিল, সেই একই পলিসি আবারও গ্রহণ করতে পারে। আর এই পলিসির মাধ্যমে তারা যদি নতুন করে আবার ফিরে আসে, তাহলে বর্তমানে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য যে সময়, যে চিন্তা, যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে তার সবই বিফলে পর্যবসিত হবে।

৩. বর্তমানে জামায়াতে ইসলামী একটি বড় সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী দল। এদের সাংগঠনিক ভিত্তি অনেক মজবুত। তাছাড়া বর্তমানের বাংলাদেশ যুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশ নয়। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ যত পার্সেন্ট ভোট পায়, বঙবন্ধু শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ তার চেয়ে অনেক বেশি ভোট পেত। তাই জামায়াত নিষিদ্ধ করতে হলে আওয়ামী লীগের এবং জামায়াতে ইসলামীর অতীত এবং বর্তমান সব দিক বিবেচনা করেই তা করতে হবে।

৪. ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে বাংলাদেশের বিখ্যাত সব দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় অনেক গুরুত্বের সঙ্গে বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ব্যারোনেস সৈয়দা ওয়ার্সির কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে নিজের এবং তার দেশের স্পষ্ট মনোভাব ছাপা হয়েছে। এখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করাই সমাধান নয়। সেটিকে রাজনৈতিক এবং আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করা যেতে পারে। আবার তিনি এ কথাও বলেছেন, যে আদর্শের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক দল মোকাবিলা করা হবে, সে আদর্শ জনগণ ঠিক করবে। ব্যারোনেস সৈয়দা ওয়ার্সি কোনো দলের নাম সরাসরি মুখে না বললেও তিনি যে জামায়াতে ইসলামীর কথা বলেছেন তা পরিষ্কার। এই ধারণা যদি সত্যিই হয়, তাহলে বহির্বিশ্বের দৃষ্টিতে আওয়ামী সরকার হয়ে পড়বে একটা ফ্যাসিবাদী এবং অগণতান্ত্রিক সরকার। এটা অবশ্যই আমাদের দেশের জন্য এবং সরকারের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।

৫. অনেকে বলেন, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে কিছুই হবে না। ধীরে ধীরে তারা নাৎসি বাহিনীর মতো বিলীন হয়ে যাবে। যারা জামায়াতকে নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করে এমন চিন্তা করেন যে, সরকার যদি জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করে দেয়, তাহলে তা এডলফ হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মতো একদিন ইতিহাসের অতলে হারিয়ে যাবে, তাদের অবশ্যই একটা কথা বুঝতে হবে যে, জামায়াতে ইসলামী আর নাৎসি বাহিনী এক নয়। নাৎসি বাহিনী ছিল একটা জাতীয়তাবাদী দল আর জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির মূল ভিত্তি হলো ধর্ম।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের পতনের অন্যতম কারণ ছিল তার সেনাবাহিনীর কিছু জেনারেলের বিশ্বাসঘাতকতা এবং তার দলীয় কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাওয়া। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী হলো ধর্মভিত্তিক দল। তারা রাজনীতি করে ধর্মকে সামনে রেখে। তাই তারা দুঃসময়ে চুপ করে থেকে অবশ্যই তাদের সময়মত জ্বলে ওঠার চেষ্টা করবে। ইতিহাসও ওই একই কথা বলে। নাৎসি বাহিনীর বিলীন হয়ে যাওয়ার সঙ্গে যারা জামায়াতের পরিণতির কথা ভাবেন, তাদের একটি কথা বুঝতে হবে যে, নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব ক্ষেপে গিয়েছিল। আমেরিকা, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য আর ফ্রান্সের মতো শক্তিশালী সব দেশই নাৎসি বাহিনী ধ্বংস করার পেছনে একযোগে কাজ করেছিল। এদের সঙ্গে ছিল জার্মানির বেশিরভাগ মানুষ।

জামায়াত নিষিদ্ধকরণের জন্য কি আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমেরিকা, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ জাতিসংঘও এক কাতারে দাঁড়াবে? এরা যদি আওয়ামী লীগের পাশে এসে দাঁড়ায়, তারপরও বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন আওয়ামী লীগের অবশ্যই দরকার হবে।

৬. জামায়াতের বর্তমান প্রধান শরিক দল হলো বিএনপি। তাই জামায়াত বন্ধ হয়ে গেলে এরা যদি সবাই কৌশলগত কারণে বিএনপিতে যোগ দেয়, তাহলে তা দিলেও দিতে পারে। আর যদি তা জামায়াত করে, তাহলে তা আওয়ামী লীগের জন্য হবে সবচেয়ে হতাশার।

বর্তমানে জামায়াত আর বিএনপি এক জোট হলেও তারা কিন্তু সব আন্দোলন এক সঙ্গে করে না। সরকারের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন বিএনপি করেছে জামায়াত ছাড়া। আবার জামায়াতও অনেক আন্দোলন করেছে বিএনপির সমর্থন ছাড়া।

কিন্তু জামায়াত যদি বিএনপির সঙ্গে একীভূত হয়ে যায়, তাহলে বর্তমানে জামায়াতের যে শক্তি আছে তা বিএনপির শক্তির সঙ্গে এক হলে দুই দলের যে সম্মিলিত শক্তি হবে তা সামাল দেয়া আওয়ামী লীগের জন্য আগামীতে বড় ধরনের একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৭. আওয়ামী লীগে একটা গ্রুপ রয়েছে, যারা মুসলমানের সন্তান, তবে নিজেদের মুসলমান পরিচয় দিতে ঘৃণা করে। অন্যান্য ধর্মের প্রতি তাদের কোনো অভিযোগ না থাকলেও এদের যাবতীয় আক্রোশ হলো ইসলাম ধর্মের প্রতি। আওয়ামী লীগের এই গ্রুপটা শুধু জামায়াতে ইসলামী নয়, এরা বাংলাদেশ থেকে সব ইসলামী দলই উঠিয়ে দিতে চায়। আওয়ামী লীগ যদি এদের মনোবাসনা পূরণের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে, তাহলে জামায়াত হয়তো এমন এটি দল গঠন করে ফেলবে, যেখানে ইসলামের নাম থাকবে না। তবে তারা তাদের দল পরিচালনা করবে ইসলামী দলের মতো।

জামায়াত নিষিদ্ধ করতে গেলে অবশ্যই কিছু বাধা আসবে। শুধু জামায়াত নয়, যে কোনো দল নিষিদ্ধ করতে গেলেই বড়-ছোট নানা ধরনের বাধাবিপত্তি আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে কি জনস্বার্থের বিরোধী কোনো দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা যাবে না? দেশের ক্ষতি করে এমন কোনো দল নিষিদ্ধ করতে গেলে যত বাধাই আসুক না কেন সেই দলের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এমন কী উপায় আছে, যার মাধ্যমে জামায়াত নিষিদ্ধ করা সম্ভব!

সম্প্রতি বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান আইনজীবী বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রতিক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করেই আইনের মাধ্যমে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব। যদি নাশকতার ওপর ভিত্তি করে জামায়াত নিষিদ্ধ হয়, তাহলে শুধু জামায়াত নয়, আওয়ামী লীগও ওই একই আইনে ফেঁসে যাবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার দলীয় হাজার হাজার কর্মী লগি, লাঠি, বৈঠার নামে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে যেভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষ মেরেছিল ইউটিউবে সার্চ দিলে তার ভিডিও এখনও দেখা যায়। হাজারখানেক মানুষের সামনে বড়াইগ্রাম উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতারা পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেছে তার ভিডিওটা যদি আমাদের আইনজীবী এখনও না দেখে থাকেন, তাহলে তার প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ সময় করে একদিন ভিডিওটা দেখে নেবেন। ইউটিউব সার্চ দিয়ে বাংলাদেশে সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অন্ততপক্ষে এক হাজার ঘণ্টার ভিডিওচিত্র পাওয়া যাবে। আর ওই ভিডিওচিত্র দেখে দেখে যদি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা শুরু হয়, তাহলে জামায়াতকে নিষিদ্ধের আগে অন্য আরও কিছু দল নিষিদ্ধ জরুরি হয়ে পড়বে। কারণ ইউটিউবের ভিডিওগুলোতে জামায়াতের চেয়েও ওইসব দলেরই বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বিএনপি যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে না তা কিন্তু নয়। তবে ইউটিউবে বিএনপির সন্ত্রাসের যে পরিমাণে ভিডিও রয়েছে, আওয়ামী লীগ আর জামায়াতের সন্ত্রাসের ভিডিও তার চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে। তাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে দল নিষিদ্ধ করা শুরু হলে বিএনপিকে অন্তত প্রথম অথবা দ্বিতীয় দফায় বন্ধ করা যাবে না। তাহলে জামায়াত বন্ধের উপায় কী?

জামায়াত যদি বন্ধই করতে হয়, তাহলে আমাদের আজ থেকে ৪২ বছর আগে চলে যেতে হবে। সেই ৪২ বছর আগে আমরা যখন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ শুরু করেছিলাম, তখন এই জামায়াত আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি এই অভিযোগে জামায়াত বন্ধ করাটাই একমাত্র সহজ উপায়। কিন্তু তারপরও শান্তি নেই। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি হওয়া সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ আর বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে যুগের পর যুগ যে সখ্যের ইতিহাস গড়ে তুলেছে বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষ দূরে থাক, গোটা পৃথিবীর ছয়শ’ কোটি মানুষ মিলেও সে ইতিহাস কোনো দিনও বিলীন করতে পারবে না।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/04/11/195978#.UX6T91KdlYU

যে কারণে বাংলাদেশের জনগণ অপছন্দ করে :



১.জামায়াত ইসলামী সিরিয়ার ইমাম ইবনে তাইমিয়া, সৌদি আরবের মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাবের দৃষ্টিভঙ্গিকে অনুসরণ করে । তাদের প্রবর্তিত ইসলাম সন্ত্রাসবাদ আর যুদ্ধাংদেহী মনোভাবের উপর প্রতিষ্ঠিত । অপর দিকে বাংলাদেশের মুসলিমরা স্মরণাতীত কাল হতে সুফি মতাদর্শ এবং হানাফি মাযহারের অনুসারী । সুফি মতাদর্শ প্রেম (সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টিজগতকে ভালবাসা ) এবং হাক্কুল ইবাদ (সৃষ্টিজগতের সেবা ) –এর উপর প্রতিষ্ঠিত । বর্তমানে প্রবলতর হওয়া ইরাক ও সিরিয়ার আইএস সন্ত্রাসীরা ওহাবী মতবাদ এবং খারেজী মতবাদে দীক্ষিত ও অনুপ্রাণিত ।

http://www.facebook.com/pages/Anjuman-E-Rahmania-Ahmadia-Sunnia-Trust/121173284657608?ref=stream



সৌদি আরবের শীর্ষ ওহাবী ধর্ম ব্যবসায়ী । জামায়াত ওহাবী মতবাদ ও মওদুদী দর্শন দ্বারা পরিচালিত হয় ।

২.বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম হিন্দু হতে ধর্মান্তরিত হওয়ায় তাদের মধ্যে হিন্দুয়ানীভাব রয়েছে । এজন্য প্রায়ই জামায়াতের লোকদের সাথে তাদের সংঘাত হয় বিশেষ করে আহলে হাদিস বা ওহাবী প্রধান এলাকাগুলো ।



ইদানিং হেফাজতে ইসলাম-এর সাথে জামায়াতের লোকরা মিলে চট্টগ্রামের মাজার পুজারীদের সংঘাতে লিপ্ত হয় । উপরন্তু তারা মাজার পুজারীদের প্রধান পুরোহিতদের হত্যার হুমকি দিয়েছে । বর্তমানে মাজার পুজারীদের অন্যতম প্রধান নেতা মাওলানা নুরুল ইসলামী ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা করা হয় ।

http://www.facebook.com/BHANDARI.TARIQAH/posts/592819067396206

http://www.facebook.com/BHANDARI.TARIQAH/posts/592494247428688





( জামায়াতের মেয়েদের সৌদী আরবের মেয়েদের মত পোষাক পড়া বাধ্যতামূলক । - মওদুদীর বই পর্দা ও ইসলাম -টাতে মেয়েদের ওহাবী মতবাদ অনুযায়ী ঘরের মধ্যে অবস্হান করা এবং বাহিরে গেলে ওহাবী মত অনুযায়ী জিলবাব বা আবআয়া বা বোরকা ও মুখ ঢাকার জন্য নিকাব পড়ে যাওয়ার কথা কথা বলা হয়েছে । বাংলাদেশে কোমলমতি মেয়েদের এই বই জামায়াত ইসলামী ছাত্রী সংস্হার মাধ্যমে তুলে দিচ্ছে । )

৩.জামায়াতে ইসলামী সৌদি আরবের মতো কঠোর পর্দা প্রথায় বিশ্বাসী । আর এই লক্ষ্যে জামায়াত তাদের দলের মহিলা কর্মিদের জন্য জিলবাব বা আবআয়া বা বোরকা ও মুখ ঢাকার জন্য নিকাবকে বাধ্যতামূলক করেছে । অপর দিকে বাংলাদেশের নারীরা এধরনের পোষাকে আবহাওয়াগত কারণে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না । কিন্তু জামায়াতে ইসলামী সৌদি আরেবর পোষাক এবং মেয়েদের উপর সৌদি আরবের রীতি নীতি চাপিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে ।

http://www.facebook.com/EID.E.MILADUNNOBI.SM

৪.জামায়াতের প্রধান শীর্ষগুরু আবুল আলা মওদুদী -র গুরুর বইগুলোতে রাসুল সা.-এর শানে বেয়াদবীমূলক কথা রয়েছে এবং সাহাবী আজমাইন এবং অলী আউলিয়া কেরাম সম্পর্কে বেয়াদবীমূলক কথা রয়েছে । উপরন্তু তারা মাজার ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে । একারণে চট্টগ্রামের মাজারপুজারীরা তার নামকে বিকৃত করে বলে থাকে “আলু মধু বৌ দুধী” । উল্লেখ্য মাজারপুজারীদের নেতা নাম হলো আহমদ রেজা বেরলভী । যিনি আলা হযরত নামে পরিচিত । তাকেও জামায়াত ও হেফাজতের লোকরা কালা হযরত বলে থাকে । এজন্য প্রায় প্রতিদিন সেখানে মারামারি খুনোখুনি হয় ।

http://www.facebook.com/dailySunniBarta

৫. জামায়াতের লোকরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও গোড়ামীধারণকারী ধার্মিক । তারা জন্মদিন, মিলাদ, মিলাদুন্নবী সা., শবে বরাত, শবে মেরাজ, হিজরী নববর্ষ ও আশুরা পালন করে না । অথচ এসব পালন করাই হলো এদেশের মুসলিমদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ।





জামায়াতে ইসলামী সমর্থক ধর্মযাজক যাদের দৃষ্টিতে জন্মদিন, মিলাদ, মিলাদুন্নবী সা., শবে বরাত, শবে মেরাজ, হিজরী নববর্ষ ও আশুরা পালন কুফরী । আর মেয়েদের বেশী পড়াশোনা গুনাহের কাজ ।


জামায়াত সমর্থক ধর্মযাজকরা এসব উৎসবের অসারতাপ্রমাণ করে বই লিখে জনসাধারণকে বিনামূল্যে বই বিতরণ করেই ক্ষ্যান্ত হচ্ছেন না, বরং তারা টিভি চ্যানেলের টক শোগুলোতে এসব উৎসব পালন হতে দুরে থাকার জন্য জনগণকে রুঢ় ভাষায় উপদেশ দিয়ে থাকেন ।

http://www.facebook.com/EID.E.MILADUNNOBI.SM

উপসংহার :

জামায়াত একটি প্রাচীন রাজনৈতিক দল হওয়ায় বাংলাদেশের জনসাধারণ জামায়াতের নেতা-কর্মীদের কাছ হতে দায়িত্বশীল ভুমিকা আশা করে । আশা করা যায়, যুদ্ধপরাধীদের দল হতে বহিস্কার, ওহাবী মতবাদ ও মওদুদি দর্শন পরিত্যাগ করা, সৌদি আরবের মেয়েদের মতো কঠোর পর্দাকে বিলোপ সাধন, নতুনভাবে দলকে এক বিংশ শতাব্দীর আলোকে গড়ে তোলতে পারলে জামায়াত তার সাময়িক সমস্যা কাটিয়ে উঠবে বলে মনে করি ।

উপরন্তু ইসলাম সহশীলতা ও শান্তির ধর্ম । তাছাড়া আমরা বাংলাদেশের জনগণ শান্তিতে বাস করতে চাই । দেশের শান্তি ও স্হিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে জামায়াত-শিবিরের লোকদের অবশ্যই সহনশীল ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে ।

বিষয়: বিবিধ

১৬৯৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

308119
১০ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:৫৫
আফরা লিখেছেন : ভাল আমল কতটুকু করেন জানি না তবে ব্লগে যে হারে জামাতীদের গীবত করেন তাতে আমার ধরনা আপনার আমল নামায় জমা কিছু থাকে না ।
308122
১০ মার্চ ২০১৫ রাত ০১:৩৬
সজল আহমেদ লিখেছেন : আলোচনা ভাল লেগেছে ।
২. জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নতুন নামে জামায়াতের জন্ম হতে পারে। অথবা জামায়াত কর্মীরা যে দলেই ঢুকবে সেটিকেই জামায়াতে পরিণত করবে।

হতে পারে ।
৩. জামায়াত সন্ত্রাসের মাত্রা বাড়িয়ে দিবে । জামায়াত জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, ইসলামিক স্টেট, আল কায়দার সাথে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি করবে ।

এটুকুর কয়েকটা শব্দের সমালোচনা না করে পারা যায়না ।যেই আনসারুল্লাহ্ টিমের অস্তিত্ব একমাত্র ফেসবুক টুইটার ছাড়া সত্যিই আছে কিনা সে বিষয়ে সবাই সন্দিহান সেখানে আপনি বলছেন জামাতের সাথে এদের আতাত আছে ।যাইহোক একটা আপনার ধারনা প্রমাণিত নয় কাজেই এ আনসারুল্লাহ্ জামাতের প্রেমখেলার বিষয়টা ছাটাই করাই ভাল ।অন্যথায় পোস্টই গোলমেলে আকার ধারণ করে ।পুরো তথ্যবহুল ,ইতিহাস ভিত্তিক এবং জামাতের প্রতি আপনার নিজস্ব ক্ষোভ মিশ্রিত আলোচনাটি মাত্র ৩টি শব্দের জন্য কেমন যেন আনকোড়া হয়ে যায় ।
জামাত নিষিদ্ধ হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যেসব লাভ হবে

জামাত নিষিদ্ধ হলে খালেদা কিংবা হাসিনার কি লাভ হবে সেটাই কি মুখ্য ?
জামাত নিষিদ্ধ হলে আমাদের কি লাভ কিংবা ক্ষতি হবে সেটাই মুখ্য বিষয় ।জামাতের জন্যই যদি রাষ্ট্রের অধিকাংশ ক্ষতিসাধন হয় তাহলে জামাত নিষিদ্ধ হোক ।যদি বিএনপি কিংবা আলীগ দ্বারা হয় তাহলে তাদের ও নিষিদ্ধ করা সময়ের দাবী কারণ জনতা চায় শান্তি।এরপর প্রশ্ন আসবে আলীগ কে নিয়ে ,কারণ যেই আলীগ বঙ্গবন্ধু এত পরিশ্রম করে গঠণ করেছিলেন সে আলীগ বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তো দূরে থাক তার টিকিটা থেকেও দূরে সড়ে এসেছে ।যেই ইনু গংরা ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রাজপথে ট্যাংক নিয়ে উল্লাস করেছিল সেই ইনুগংরা এখন আলীগিও মন্ত্রী পরিষদে আহা !
( ইসলামের নাম ব্যবহার করে যারা সন্ত্রাস করে তাদের ইসলামী সন্ত্রাসী বলা হয় । ইসলামের সন্ত্রাসবাদের স্হান নেই । প্রচলিত বাংলায় ইসলামী সন্ত্রাসকে জঙ্গীবাদ বলা হয় । মূলত জঙ্গীবাদ সব ধর্মের লোকদের মধ্যে আছে । এই শব্দটা শুধুমাত্র ইসলামী সন্তাসীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ঠিক নয় ।

নিঃসন্দেহে এই লাইনগুলো দারুণ সত্য ।
হাসিনা মনে করছে সমস্ত আলেম ওলামাই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ছিলেন

হাসিনা তো মনে করবেই ।
তিনি তো ইতিহাস পড়েননা ইতিহাসের জন্ম দেন ।
কেন ৪১-৪৩ এর ইতিহাস তিনি কি জানেননা ।বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করার অনেক আগে থেকেই তো বঙ্গীয় আলেম ওলামারা পাক বিরোধী ছিলেন ।এক্ষেত্রে হাসিনাকে আমি "বঙ্গীয় আলেম ওলামাদের রাজনীতি" নামক ইতিহাসের বইটি সাজেস্ট করব ।পাক বিরোধী আন্দোলনে মাওলানা পাঁচবাগী ছিলেন অন্যতম ।নিচে তার প্রমাণ তিনি ছন্দে ছন্দে রেখে গিয়েছেন:

১.মিছে কেন পাকিস্তান জিন্দাবাদ
ইংরেজ তাড়াই,পাঞ্জাবী আনতে চাই
বাংলা নহে স্বাধীন ,বাংলা চিরপরাধীন
পাকিস্তান নয় ,ফাঁকিস্তান
পাকিস্তান হবে জালেমের স্থান
২.আমরা নিখিল বাংলার সন্তান
সিরাজুদ্দৌলা বাংলা নামে অভিহিত
কলিকাতাময় নিখিল বাংলা অবশ্যই চাই।
মোদের এহন দাবী করিতে হবে পূরণ মন্ত্রের সাধন হোক আর লরীর পতন।
কে রোধিতে পারে প্রাক্তনের গতি,
মোদের আন্দোলন চলিবে নিতি ।
তাই বলি,
ওগো পান্থ কেন ক্ষান্ত হও হেরি দীর্ঘ পথ,
উদ্যম বিহনে পুরে কিবা কার মনোরথ।

প্রচার পত্র


১|পাকিস্তান ইজ্ ফাঁকিস্তান অর বাকিস্তান, পাকিস্তান ইজ্ নাথিং বাট্ ফল্'স বোগাস।
২|জিন্নাহ্ বৃটিশের দালাল
কে বলে মোদের দুলাল ।
৩|পাকিস্তানের মোহে পড়ি
আজ আমাদের গলায় দড়ি।
দিল্লীর লাড্ডু পাকিস্তান
পেয়ে না পেয়ে সব সমান।
[লেখক মোঃ শামছুল হুদা(পাঁচবাগী)বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতাকামী রাজবন্দী প্রেসিডেন্ট ,ইমারত পার্টি-বিভাগ-পূর্ব তথা শ্যামা -হক-সোরাবর্দ্দী প্রস্তাবিত কলিকাতাময় বিরাট বাংলাদেশ ।ফারুকী প্রেস মৃত্যুঞ্জয় স্কুলরোড ,ময়মনসিংহ ।ছন্দ লেখার সাল(১৯৪৩-১৯৪৭)]
308141
১০ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৭:০৯
শেখের পোলা লিখেছেন : পীর সাহেবা একটা বড় সড়ড় মিছিল দিলেই রাস্তা পরিষ্কার হয়৷ হুজুরদের একটু বোঝান৷ কাজ হলেও হতে পারে৷ আপনারও একটা ছোটখাট গদী টদী মিলতে পারে৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File