ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং বিশ্বব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী পালন আর টুডে ব্লগের সম্পাদকের মৃত্যু কামনা করে দুয়া করা ওয়াজিব

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ০৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ০১:৫৯:২০ দুপুর



পটভূমি :

আজ ঈদে মিলাদুন্নবী সা । পবিত্র একটা দিন ।

আমি সাধারণত গালি - গালাজমূলক কোন শব্দ বাস্তব জীবন তো দুরে থাক নেটেও করি না ।

আজ আমি নেটে জামায়াত - শিবির পরিচালিত এই ব্লগ সাইটে দেখলাম এই দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কিত কোন পোস্ট নেই । কিন্তু সেলিনা হোসেন নামক এক চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকের ছবি সম্বলিত একটা লেখাকে স্টিকি পোস্ট করা হয়েছে (লুকিয়ে বই পড়া ) http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/6613/gmakas/59989 । সেলিনা হোসেনের বেশ কিছু বই ইসলামী ফাউন্ডেশন বাজেয়াপ্ত করার সুপারিশ করেছিল । তার একটা লেখার নাম হলো : মরিয়ম ধর্ষণ করি তা জানে না । তিনি এই লেখায় নবী ইশা আ - এর মা মরিয়মকে অপমান করেছিলেন ও তাকে পতিতা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন । এমন মহিলার ছবি আল্লাহ নবীর দুষমণ জামায়াতী এডমিন এই পবিত্র দিনে সাইটে প্রদর্শন করেছে ।

রাসুল সা-কে অপমান করে এডমিন নিজেই মুক্তিযুদ্ধের কন্যা নাম ব্যবহার করে একটা লেখা লিখেছে : ( দ্বীনের নবী মোহাম্মদকে নিয়ে চারটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন.........) http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/10348/fuljanbibi/60086

আজ ঘুম থেকে উঠার পর এটা দেখে মেজাজ খারাপ হলো ।

তাই আমি জামায়াতী সম্পাদক-বৃন্দের প্রতি প্রশ্ন আমার প্রশ্ন :

১। আপনারা কি মুসলমান ? বা মুসলমানের বাচ্চা ?

২। আপনারা কি মালাউন না মালাউনের বাচ্চা ?

৩। আপনারা কি ওহাবী কুকুর না ওহাবীদের অবৈধ সন্তান ?

৪। আপনারা কি ওহাবী মতাদর্শে বিশ্বাসী সৌদি রাজতন্ত্রের দালাল না সৌদি বাদশাহ বা কোন ওহাবীর জারজ সন্তান ?

৫ । হাসরের মাঠে কি আপনাদের গোলম আজম-নিজামী-সাইদী-কামালুদ্দীন জাফরী পার করবে ? আপনারা কি তাদের জারজ সন্তান ?

আপনারা যদি না হোন তাহলে আপনারা কোনটা ? দয়া করে জানাবেন ।

ভাল কথা । আমাকে এই দৃষ্টি আকর্ষনমূলক পোস্ট লেখার জন্য ব্যান বা ব্লক বা অন্য কিছু করা হয়, তাহলে আপনাদের সোনার বাংলা ব্লগ সাই্টের ব্লগার ও সম্পাদক আমিনুল মোহায়মেন- এর মতো ভাগ্যবরণ করতে হবে ।

এবার আসছি, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে ।




সূচনা :

ঈদে মিলাদুন্নবী মুসলিমদের একটি গুরুপূর্ণ উৎসব। কারণ ইসলামী ক্যালেন্ডারে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ মানবতার মুক্তির দুত, হাসরের ময়দানে শাফায়াতের কান্ডারী ও সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পৃথিবীতে আগমনের করেন ও ওফাত প্রাপ্ত হন ।



রবিউল আউয়াল মাস ও রাসুল সা.- এর জন্মে বছরের গুরুত্ব :

ইসলামী ক্যালেন্ডারের সবগুলো মাসের মধ্যে রবিউল আউয়াল মাসের আলাদা মর্যাদা ও তাৎপর্য রয়েছে । রবি আরবি শব্দ। এর অর্থ বসন্ত, সঞ্জীবনী ও সবুজের সমারোহ । আর বরিউল আউয়াল বলতে প্রথম সঞ্জীবনের মাস বোঝায় । এই নামকরণের তাৎপর্য হচ্ছে মক্কার কোরাইশ বংশীয় কাফেররা অনাবৃষ্টি ও অভাবের দিন যাপন করছিল। হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে বছর পৃথিবীতে আসেন সে বছর মক্কার শুষ্ক ভুমি ফুলে-ফলে-ফসলে সঞ্জীবিত হয়ে উঠলো। চারদিকে একটা আনন্দের জোয়ার বয়ে যেতে লাগলো । উপরন্তু তারা এই বছর অনেক যুদ্ধে জয়লাভ করে । ব্যবসা-বাণিজ্যে সফল হয় । তাই মক্কার কাফেররা রাসুল সা.-এর জন্মের বছরকে বিজয় ও আনন্দের বছর বলে অভিহিত করতে থাকে ।

রাসুল সা. এর জন্ম মাসটা ছিল বসন্ত কালের প্রথম মাস । তাই এই মাসটাকে রবিউল আউয়াল বা বসন্তের প্রথম বলা হয় ।কারণ আউয়াল শব্দের অর্থ প্রথম এবং রবি শব্দের অর্থ বসন্ত ।



রাসুল সা. এর জন্ম ও ওফাতের দিন হিসেবে ১২ ই রবি উল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার গুরুত্ব :


রাসুল সা. পৃথিবীতে এসেছিলেন আনন্দ নিয়ে , খুশি নিয়ে , আনন্দের বার্তা নিয়ে । আর আমাদের মনের মধ্যেও আনন্দ দোলা দিয়ে যায় তার জন্ম ও ওফাতের দিন ক্ষণের কথা স্মরণ করে । কারণ নবীকুল শিরোমণি, অসহায়দের সহায়, রহমতের সাগর মহানবী (স.) - এর আগমনেরই ফলেই আমরা মুসলিম আর আমরা আল্লাহকে চিনেছি ।রবিউল আউয়াল মাসে তার আগমণ না হলে মাসটির কোনো মূল্য হতো না ।



রাসুল এর আবির্ভাব ও ওফাত ১২ ই রবীউল আউয়াল হয়েছে ।

গবেষকরাও প্রমাণ করেছেন এবং আমি নিজে কম্পিউটার প্রোগ্রাম ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের তথ্যের

মাধ্যমে প্রমাণ করেছি : রাসুল সা. এর আবির্ভাব ও ওফাত একই দিনে বা ১২ ই রবীউল আউয়াল হয়েছে । আমি আপনাকে আমার এই বই ও এই বইটা ( Memoirs of Prophet Muhammad )সংগ্রহ করার অনুরোদ করছি :

"Memoirs of Prophet Muhammad's Life" written by Khalid Shaukat presents

the dates in the Christian calendar for important events in Prophet's

life, such as his birth, Me'raj, hijra to Medinah, battles of Badr,

Uhad, and his death. Dates are calculated for visibility of new crescent

moon in the Christian calendar. It is proven that 12th Rabi al-Awwal

(Monday) is the correct date for ALL THREE EVENTS, the Prophet's birth,

his arrival in Medinah, and his death. A copy of the manuscript can be

sent by postage mail, for cost of xeroxing and mailing.

বিস্তারিত জানতে দেখুন : http://www.moonsighting.com/

১২ ই রবিউল আউয়াল সম্পর্কিত আরো তথ্য :

১৫৮৮ সাল হতে ওসমানীয় খেলাফতের সব এলাকায় ১২ ই রবীউল আউয়াল সরকারী ছুটি চালু ছিল । তার ধারাবাহিকতায় মুসলিম দেশগুলোতে সরকারী ছুটি পালিত হয় ।

শিয়ারা ১২ ই রবীউল আউয়াল পালন করে না বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে না । তারা দুই ঈদ ছাড়া আর কোন উৎসবে হিজরী ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে না । উপরন্তু তারা বলে ৯ রবীউল আউয়াল রাসুল সা. আগমন করেছিলেন ও শিয়াদের বড় অংশের মতে ১৭ রবীউল আউয়াল ওফাত হন ।

এবার ইরানের শিয়ারা ১৪ দিন আগে রাসুল সা. এর ওফাত দিবস পালন করেছে । বিশ্বাস না হলে আবু সাহেল ভাইয়ের স্যাটাস দেখেন । আমি তার স্যাটাসটা একটু সংশোধন করে দিলাম : December 22, 2014 ইরানে পালিত হচ্ছে রাসূল সা.-র ইন্তেকাল ও ইমাম হাসান আ.-এর শাহাদাতবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে ইরানের সকল সরকারি অফিসসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। মসজিদ, হোসাইনিয়াসহ বিভিন্ন ধর্মিয় প্রতিষ্ঠানে শোকানুষ্ঠান চলে। প্রধান সড়কগুলোতে শোকমিছিল চোখে পড়ছে। মাহশাদ শহরে অবস্থিত ইমাম রেযা আ. মাযার কমপ্লেক্সে দেশ-বিদেশ খেকে লাখ লাখ শোকাহত নবী প্রেমিক মুসলমান সমাবেত হয়। সেখানে আরবি, ফার্সি, তুর্কি ও উর্দু ভাষায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ।

রাসূল সা.-র ইন্তেকাল ও ইমাম হাসান আ.-এর শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নবী ও তাঁর পরিবারের সদস্য প্রেমিক সবাইকে শোক সমবেদনা জানায় ইরানী শিয়ারা । বিস্তারিত তথ্য জানতে দেখুন ।

https://www.facebook.com/photo.php?fbid=754100197979018&set=a.172308539491523.51410.100001371337565&type=1&theater

শিয়ারা দুই ঈদ ছাড়া বাকী সব উৎসবে নিজস্ব সৌর ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে । এটাকে অনেক শিয়া জালালী ক্যালেন্ডার বলে থাকে । এটা ইরানের জাতীয় ক্যালেন্ডার ।

অপর দিকে জামায়াতী - মওদুদী- ওহাবী - আহলে হাদিস - লামাজহাবী - দেওবন্দী সম্প্রদায় রাসুল সা ১২ ই রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছে তা স্বীকার করে না । আর কবে ওফাত হয়েছেন তা নিয়েও গুরুত্ব দেয় না বা এটাকে প্রয়োজনীয় বিষয় মনে করে না । তাদের কথা হলো তার জীবনীর গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় আছে সেগুলোই মুসলিমদের চর্চা করা উচিত । তারা বর্তমানে

ইন্তেকাল করার দিনটাও বরকতময় মুসলিমদের কাছে :

আমরা মুসলিমরা মারা যাই না । আমরা ইন্তেকাল বা ওফাত হই বা অন্য জগতে

স্হানান্তর হই বা ইল্লিন ও সিজ্জিনে চলে যাই বা আলমে বারজাখে চলে যাই ।

মারা যাওয়া কথাটা ব্যবহার করে অমুসলিম বা নাস্তিকরা বা কম জানা বা অজ্ঞ

মুসলিমরা । মারা যাওয়া কথাটাকে ইংরেজীতে বলে : late বাংলায় গত হওয়া । অন্য

কথায় শেষ হয়ে যাওয়া বা জীবন চলে যাওয়া মানে সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে যাওয়া

বা মরার পর কোন জগৎ নেই বা সব কিছু হতে মুক্ত হয়ে গেলো ।

আমরা মুসলিমরা সাধারণত বলি ইন্তেকাল ফরমানো বা ওফাত হওয়া ।

কুরআন-হাদিসে শহীদদের জীবন্ত বলা হয়েছে । যার যার সম্মান ও মর্যাদা অনুযায়ী

ইন্তেকাল করার পর তার তার উত্তম ও খারাপ অবস্হা হয় । এজন্য কুরআনে শহীদদের

ক্ষেত্রে বল হয়েছে যে শহীদরা রিজীক পান । কিন্তু আমরা জানি রিজীক বা জীবন

উপকরণ পাওয়ার বিষয়টা দুনিয়াবী বিষয় ।

রাসুল সা. - এর আর্বিভাব ও ওফাত দুইটাই আমাদের জন্য বরকতময় । আমরা ইন্তেকাল করলেই শেষ হয়ে যাই না । কারণ আমরা বিশ্বাস করি আমাদের আত্মা শরীর হতে বের হয়ে গেলে আমরা আরেকটা জগতে চলে যাই । সুতরাং ইন্তেকালটা আমাদের কাছে শোকাবহ খুব একটা নয় । আর এজন্য রাসুল সা. বলেছেন, তিন দিনের বেশী শোক প্রকাশ করা যাবে না । ইন্তেকাল আমাদের কাছে আনন্দের । কারণ আমাদের ঠিকানা জান্নাত । আমরা বিশ্বাস করি ইন্তেকাল করলে আমরা জান্নাতে যাবো আর রাসুল সা. ও তার প্রবিত্র সাথীদের সাথে মিলিত হবো । রাসূল সা. বলেন -

حياتى خير لكم ومماتى خير لكم

অর্থ: ‘আমার হায়াত-মউত সব অবস্থাই তোমাদের জন্য কল্যাণের কারণ।’ ( হাদিস গ্রন্হ কানযুল উম্মাল ) । আর তিনি ১২ ই রবীউল আউয়াল আগমণ করেছিলেন ও ওফাত প্রাপ্ত হয়েছিল তা আমি বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দিয়ে আমি উপস্হাপন করছি । ইদানিং ওহাবী - আহলে হাদিস - জামায়াতীরা তার জন্ম তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে । আজ দেখলাম এটিএন-এ জামায়াতী হুজুর কামালুদ্দীন জাফরী ইয়ামুন নবী সা. দিবস পালন করছেন । এবার উত্তর - এটা কি বিদাত নয় ?

সারা বিশ্বে ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হয় :

ওহাবী-মওদুদী-জামায়াতী-আহলে হাদিস ইত্যাদি নামের কিছু মুসলিম সাধারণ মুসলিমদের পবিত্র দিনটা পালন করলে মাজার পুজারী বলে গাল দেয় । কিন্তু সারা বিশ্বে ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হয় । যেমন আমাদের পূর্ব দিকে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সহ সব দেশ । এসব দেশে মাজার পুজারী নেই । যেমন :




1.Sambutan Maulidur Rasul sederhana tapi meriah

http://www.youtube.com/watch?v=zOAm19h-wV4







2. Imam Besar Masjid Negara Tokoh Maulidur Rasul 2015

http://www.youtube.com/watch?v=shQLmcWyxyY




3. Salam Maulidur Rasul 2011 (Ya Nabi Salamun Alaika)

http://www.youtube.com/watch?v=3GMzgccP1wg




4. Salam Maulidur Rasul 2011 (Selawat Nabi)

http://www.youtube.com/watch?v=07lZN0nK73g




5. in Maulid Nabi Muhammad S.A.W di Kp.Cikole Majasari Pandeglang 2014

http://www.youtube.com/watch?v=PxvOJKdppvs




6. [ 24 January 2013 ] Peringatan Maulid Nabi Muhammad SAW bersama Majelis Rasulullah SAW

http://www.youtube.com/watch?v=jqtqZQYQVKM

ওহাবী-লামাযহাবী-আহলে হাদিস-জামায়াতী-মওদুদী-রা নেতাদের মৃত্যু দিবস ও দলের প্রতিষ্ঠা দিবস সহ অনেক দিবস পালন করে । কারণ তারা অত্যাচারী সৌদি রাজতন্ত্র ও ওহাবী মতবাদ গ্রহণকারী লোক । ইসলামের সাথে সম্পৃত্ত অনেক বিষয়কে তারা অস্বীকার করে থাকে ।

বাস্তব অবস্হা হলো ওহাবী-লামাজহাবী-দেওবন্দী প্রভাবহীন এলাকাগুলো ছাড়া সারা বিশ্বে হিজরী তৃতীয় শতক হতে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা, পালিত হচ্ছে । মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে, বিদাত প্রচলন করা সোয়াবের কাজ । ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা, মিলাদ, কিয়াম - এসব যদি বিদাতও হয়, তারপরও ওহাবী-লামাযহাবী-দেওবন্দী সম্প্রদায় ছাড়া সারা বিশ্বের মুসলিমরা সোয়াবের কাজ করছে । সারা বিশ্বে মিলাদুন্নবী পালনের তথ্য সম্পর্কে উইকিতে তথ্য আছে । উইটিউবে এক হাজারের অধিক ভিডিও আছে । http://en.wikipedia.org/wiki/Mawlid



ঈদে মিলাদুন্নবী কেন গুরুত্বপূর্ণ উৎসব :

মুহাম্মদ (স.) এর পৃথিবীতে আবির্ভাব আদর্শ মহামানব রূপে, সৃষ্টিজগতের তিনি সর্বোত্তম সৃষ্টি। তাঁর আগমনে অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবীতে আলোর উত্তরণ ঘটে, তাওহীদের পয়গাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে, রিসালাতের আলোকরশ্মি দিক দিগনত্দে বিচ্ছুরিত হয়। তিনি এলেন গোটা মানব জাতির মহান পথপ্রদর্শক রূপে, মহান আল্লাহর মনোনীত দীন ইসলামের পরিপূর্ণ রূপদান করতে। তিনি ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে আবার ১২ ই রবিউল আউয়াল সোমবার ইসলামের পরিপূর্ণতা প্রদান করে মহান আল্লাহর সানি্নধ্যে চলে গেলেন। তাই ঈদে মিলাদুন্নবী প্রতি বছর নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট দিনে ফিরে আসে নবীপ্রেমে সবাইকে উজ্জীবিত করার জন্য। এ এক মুবারক দিনের মুবারক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে মহানবীর প্রতি সালাত ও সালাম পেশ করা হয়। তাঁর আদর্শ জীবন ও সিরাত পর্যালোচনা করা হয়। মহান আল্লাহ এই উচ্চ মর্যাদার রবিউল আউয়াল বিশ্বের সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ মহানমানব, নবীকুল শিরোমনি মানবতার মুক্তির দিশারি রাহমাতুলি্লল আলামীন মুহাম্মদ (স.)-এর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ১২ ই রবিউল আউয়াল তথা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, '(হে নবী) আমি আপনাকে সমগ্র জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।' এই রহমতের কারণে খুশি উদযাপন করার ঘোষণা দিয়ে মহান আল্লাহ আরো বলেন, 'হে নবী আপনি উম্মতগণকে বলে দিন আল্লাহর ফজল ইসলাম বা আল-কুরআন এবং রহমত মুহাম্মদ প্রাপ্তিতে তারা যেন খুশি বা ঈদ, আনন্দ প্রকাশ করে।' তাই মিলাদুন্নবীর রাত কদরের রাত অপেক্ষা উৎকৃষ্ট এবং দুই ঈদের চেয়েও বেশি মর্যাদাপূর্ণ। কেননা মিলাদুন্নবীর রাত স্বয়ং মহানবী (স.)-এর আগমনের রাত, আর শবে কদর তো তাঁকেই প্রদান করা হয়েছে। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা আমরা পেতাম না যদি মহানবী (স.)-এর জন্ম না হতো।

মহান আল্লাহ সমগ্র জগতের প্রতিপালক, পালনকর্তা, বিধানদাতা, আহারদাতা ও সকল সমস্যার সমাধানকারী। আর তাঁরই প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স.) সমগ্র জগতের জন্য রহমত, বরকত, মাগফিরাতের মাধ্যম ও সুপারিশ করার অধিকারী। যেখানেই মহান আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় সেখানেই তাঁর প্রিয় নবীর নামও উচ্চারিত হয়। যেমন- আজান, একামত, দরুদ, সালাম ও দুয়ার তথা মুমিন-মুসলমানদের সকল কাজে। এই সম্মান ও এই অনন্য মর্যাদা স্বয়ং মহান আল্লাহ প্রদত্ত। আল্লাহ বলেন, 'নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর নবীর ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ আল্লাহর নবীর জন্য মাগফিরাত কামনা করেন; ওহে ঈমানদারগণ, তাঁর ওপর তোমরা সালাত (দরুদ) পাঠাও এবং ভক্তি ভরে সালাম দাও।' মহান আল্লাহ স্রষ্টা হয়ে যে সৃষ্টির নামে দরুদ ও সালাম পাঠান, তাঁর গুরুত্ব, পদমর্যাদা ও সম্মান বর্ণনা করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও ভালোবাসা প্রদর্শন ঈমানের অন্যতম অংশ। তাই মহানবী (স.) বলেছেন, 'তোমাদের কেউ ঈমানদার হবে না, যতোক্ষণ না আমি তার সনত্দান, পিতা-মাতা, সকল মানুষ থেকে অধিক ভালোবাসার পাত্র না হই।'

মূলত আজ থেকে ১৪৮২ বছর আগে এই দিনে মহানবী (স.)-এর এ পৃথিবীতে আগমনের স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনটি মানবজাতির ইতিহাসে একটি রহমত, বরকত ও পরিপূর্ণ দিবস। সৃষ্টির প্রথম থেকেই স্বভাবগতভাবে মানুষ সুন্দর, আনন্দদায়ক, কল্যাণকর কোনো বস', ব্যক্তি ও ঘটনায় আনন্দিত হয়। সুন্দর, মনোরম ও সুদর্শনীয় বস' দেখলেই মানুষ তার প্রশংসায় ও স'তি বর্ণনায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে। সে সুন্দর বস'টি যদি সত্দর ও পদমর্যাদার পর্যায়ের দিক থেকে উন্নত হয়, তখনই তাকে অনায়াসে সম্মান ও মর্যাদাদানের জন্য মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। আর সত্দর ও পর্যায়ের দিক থেকে সম্মান হলে তার প্রতি শুভেচ্ছা, শুভাকাঙ্ক্ষা এবং ছোট হলে স্নেহ আদর করার জন্য মনপ্রাণ চঞ্চল হয়ে ওঠে। যে চাঞ্চল্য, অস্থিরতা দেখা বোঝা ও পাওয়ার কামনা-বাসনা মনের গহিনে দানা বেঁধে তারই নাম 'হাববুন' বা দানা, আর সেখান থেকেই সৃষ্টি হয়েছে মহব্বত বা ভালোবাসা। এ ভালোবাসা যখনই প্রেমিকের মনে বদ্ধমূল হয়, তখনই তার প্রিয় ব্যক্তি বা বস'র প্রশংসা, গুণাগুণ মুখে, কাজে তার শিরা-উপশিরায় ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। প্রেমিক যতো সুন্দর, যতো মনোরম, যতো মহিমান্বিত এবং যতোই গুণান্বিত হন তার প্রশংসা ও গুণাগুণ প্রিয়জনের কণ্ঠে ততোই উন্নত ও আকর্ষণীয় হয়। এ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে আনন্দানুষ্ঠানের মাধ্যমে। ইতিহাসের পাতা উল্টালে এ ধরনের অনুষ্ঠানের সন্ধান মেলবে অসংখ্য। অন্যদিকে মানুষ স্বভাবত অসুন্দর, দুঃখজনক ও অকল্যাণকর অবস্থায় ব্যথিত হয়। তা থেকে বের হয়ে আসতে সে প্রতিনিয়ত চেষ্টাও করে। যখনই মানুষ অন্যায়, অসত্য ও জুলুম-নির্যাতনের যাঁতাকলে নিস্পেষিত হয়েছে, তখনই মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রাণপণে খুঁজছে একজন মুক্তিদাতা-ত্রাণকর্তা, যাকে কেন্দ্র করে এবং যার নেতৃত্বে ঘটাবে সে সকল দুঃখের অবসান, চিরতরে বিলীন করতে সকল অশুভ শক্তিকে।

মানুষ যখনই প্রিয়জনের সানি্নধ্য লাভ করেছে বা দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেয়ে স্বসত্দির নিঃশ্বাস ফেলেছে তখনই স্বধর্মীয়, স্বগোত্রীয় লোকদের নিয়ে আনন্দানুষ্ঠান করেছে। এ আনন্দানুষ্ঠানকে আল-কুরআনের ভাষায় বলা হয়েছে ঈদ বা আনন্দ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর জন্মের সময় কাবাগৃহে তিন শতাধিক মূর্তি স্থান পেয়েছিল। আরবসহ সারা বিশ্বের আইন-বিচারক ও প্রশাসনের ক্ষেত্রে চলছিল বর্বর শাসন, মানুষে মানুষে হানাহানি, উটকে পানি খাওয়ানোর মতো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে যখন চলছিল যুগের যুগ যুদ্ধ, জীবনত্দ কবর দিচ্ছিল বাবা নিজ কন্যা সনত্দানকে, সুদ ছিল দুনিয়ার অর্থনৈতিক ভিত্তি, ব্যভিচার, মদ ও জুয়া ছিল সমাজের উপর তলার লোকদের নিত্যদিনের কাজ, অসহায় অনাথ বঞ্চিত মানবতা যখন গগণবিদারী আর্তনাদ করছিল। নারী জাতি ছিল মর্যাদাহীন খেলার বস', আদর্শিক-নৈতিক অবস্থা বলতে কিছুই ছিল না_ সে সময়, অর্থাৎ ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের আজকের এই ১২ ই রবিউল আউয়াল তারিখে সুখময় বসনত্দকাল হিসেবে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) জন্মগ্রহণ করলেন। তাঁর আগমনে যেমন প্রাকৃতিক বসনত্দ আগমন করেছে, তেমনি নৈতিকতা ও আদর্শের ভুবনেও আগমন করেছে নববসনত্দের জোয়ার। তিনি ছিলেন জাগতিক বসনত্দের চেয়ে লাখো-কোটি গুণ অধিক আলোদানকারী নূর। বহু অলৌকিক ঘটনা নিয়ে তিনি এই মর্তের পৃথিবীতে আগমন করেন। শৈশবের ঘটনাবহুল দিনগুলো পেরিয়ে কৈশোরে প্রতিষ্ঠিত হলেন কিশোর মুহাম্মদ (স.) আল-আমীন মুহাম্মদরূপে। দেশের সামাজিক, চারিত্রিক ও রাজনৈতিক অবক্ষয়ের করুণ অবস্থা দেখে সমবয়সী যুবকদের সমন্বয়ে তিনি গঠন করলেন হিলফুল ফুজুল নামক শানত্দি সংঘ। ফলে অসহায়, অবহেলিত ও দুর্গত মানবতার সেবা, এতিম-বিধবা ও দুর্বল জনতাকে অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তিদান, পথিক-ভিনদেশীর নিরাপত্তা বিধান, অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, শানত্দিশৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে সাম্যমৈত্রীর এক অকৃত্রিম বন্ধন গড়ে তুলতে তিনি সম্পূর্ণ সফল ও সক্ষম হন। যুবক মুহাম্মদ (স.) নিজের সততা, আমানতদারি, বিচক্ষণতা, অনুপম ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের সেরা ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং হালাল উপায়ে উপার্জিত অর্থে উন্নত জীবন গঠনের জন্য আদর্শ ব্যবসায়ী হতে হলে তার বাসত্দব উদাহরণ হলেন যুবক ব্যবসায়ী মুহাম্মদ (স.)। তাই মক্কাসহ গোটা পৃথিবীর নিমজ্জিত শিরক থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্য তাঁর ওপর মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাজিল হলো। এর ফলে সকল স্বার্থন্বেষী, সুবিধাভোগী আমলা ও দুর্নীতিবাজ শ্রেণীর মাথায় এক বজ্রপাত হানা হলো। অত্যাচার, নিপীড়ন অর্থনৈতিক অবরোধ, সামাজিক বয়কট, হত্যার হুমকি, কুৎসারটনা এবং পাগল-জাদুকর, কবি, দেশদ্রোহী গণক, ধর্মবিরোধীরূপে আখ্যানহ সকল প্রকার বাধা-বিপত্তির মুখে তিনি দৃঢ়চিত্ত ঈমান নিয়ে তাঁর সঙ্গীদেরকে আল-কুরআনের আদর্শে গড়ে তোলেন। এই মহামানবের জীবন চরিত্র আলোচনা ও তা বাস্তবে রূপদান করাই হলো আজকে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনের মহান শিক্ষা ও তাৎপর্য।

বাংলাদেশে-ইসলামি সংস্কৃতির অন্যতম অনুষ্ঠান হচ্ছে ফাতেহা দোয়াজদাহম বা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী অনুষ্ঠান উদযাপন করা। পাক-ভারত-বাংলাদেশ উপমহাদেশে প্রতি বছর ঈদে মিলাদুন্নবী অত্যনত্দ ভাবগাম্ভীর্জের সঙ্গে উদযান করা হচ্ছে। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সর্বক্ষেত্রে তাঁর প্রবর্তিত আদর্শ অনুসরণের তৌফিক দান করুন।

আরো তথ্য :

আমরা মুসলমানরা কুরআন হাদীছ শ সম্পর্কিত বিষয়াদিকে প্রাধান্য দেই। কিন্তু বাতিল ফিরক্বা যারা, তারা দলিল দেয় কোন এক মুরুব্বীর। জামাতিরা পড়ে আছে মওদুদীকে নিয়ে, দেওবন্দীরা পড়ে আছে থানভীকে নিয়ে, রেযাখানীরা আছে আহমক রেযা খাঁকে নিয়ে। তাদের ইসলাম উনবিংশ শতাব্দীর মওদুদী, থানভী আর আহমক রেযা খাঁ পর্যন্ত গিয়ে থেমে যায়। রাসুল সা - এর পরবর্তী হাজার বছর ধরে যে ইসলামিক ঐতিহ্য, তা তাদের মধ্যে অনুপস্থিত।”

তারা তাদের মুরুব্বীদের নিয়ে পান থেকে চুন খসালেই প্রতিবাদ করে, কিন্তু নবী সা এর অবমান করলে কিছুই বলার প্রয়োজন বোধ করে না।”

তাদের ফতোয়াবাজি সব মুসলমানদের কার্যক্রম নিয়ে। যেমন-

১) ঈদে মীলাদুন্নবী পালন বেদাত

২) শবে বরাত পালন বেদাত

ইত্যাদি।

১২ই রবীউল আউয়া পালন, শবে বরাত পালন প্রভৃতি যা যা রয়েছে, তার পুরোটাই দোয়া-দুরুদ, যিকির-আযকারকে কেন্দ্র করে। উক্ত সম্মানিত দিবসসমূহ আসলেই সেগুলোকে তারা ফতোয়া দেয়া বেদাত। দোয়া-দুরুদ, যিকির আযকার, মীলাদ শরীফ কেন বিদআত হতে যাবে ? কিন্তু বিপরীতে-



১) পূজার মৌসুমে যখন মুসলমান ছেলেদের ফুসলিয়ে মণ্ডপে নেয়া হয়, তখন এদের ফতোয়ার ঝুলি শুকিয়ে যায়। সেখানে দোয়া-দুরুদের বদলে পূজা অর্চনা, মদ-মহিলার ছড়াছড়ি, কিন্তু সেগুলো নিয়ে তাদের কোন ফতোয়া নেই, কোন কার্যক্রম নেই। দোয়া-দুরুদ, যিকির আযকার, মীলাদ শরীফকে তারা বেদাত ফতোয়া দেয়, কিন্তু পূজার ন্যায় সুস্পষ্ট শিরকের ব্যপারে তারা মুখ বুঁজে থাকে।

২) কয়েকদিন পর থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষে ৩০০ ডিজে প্রস্তুত হচ্ছে। হোটেলগুলোতে লিভ টুগেদারের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে (ডিলাক্স রুমসহ ডিজে পার্টির টিকেট ১৫০০০ টাকা, http://mzamin.com/details.php?mzamin=NTY5Njk%3D&sMg=%3D)। কিন্তু সেসব নিয়ে জামাতি-দেওবন্দীদের কোন প্রতিবাদ নেই। তারা তাদের ফতোয়াবাজি চালাচ্ছে আসন্ন ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফে মুসলমানদের মীলাদ শরীফ, দোয়া-দুরুদ, যিকির আযকারের বিরুদ্ধে।

অথচ এরা যদি উল্টোটা করতো, তাহলে জাতি আজ হারাম কার্যক্রম থেকে রেহাই পেত। এই দেওবন্দী-জামাতিরা ‘বছরে দুই ঈদের বাইরে কিছু নেই’ এই হাদীছ শরীফ বিরোধী ফতোয়া দিয়ে প্রত্যেকটি ইসলামী পর্বকে ‘শেরেক-বেদাত’ ফতোয়া দিচ্ছে, ফলশ্রুতিতে মুসলমানরা তাদের ইসলামী অনুষ্ঠানগুলো ত্যাগ করে হিন্দু-খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিজেদেরকে একাকার করে দিচ্ছে। এই উলামায়ে সূ গুলো যে বিধর্মীদেরই দালাল হয়ে এসব কাজ করছে, তা মুসলমানদের অনুধাবন করতে হবে।

নবীজির জন্ম তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তির পেছনে ইহুদী ষড়যন্ত্র - ১

ইহুদী-খ্রিস্টান চক্রান্তবাজরা সর্বদা মুসলমানদের ইসলামী ইতিহাস ঐতিহ্য থেকে দূরে রাখতে চায়। এজন্য তারা মুসলমানদের ইতিহাসগুলোকে বিকৃত করে প্রচার করে, যেন মুসলমানরা তাদের সঠিক গন্তব্য থেকে দূরে সরে যায়।

আপনারা কয়েকদিন ধরে শুনছেন, নবীজি’র জন্ম তারিখ নিয়ে একটি দল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাদের দাবি, নবীজির জন্ম তারিখ নাকি ১২ রবিউল আউয়াল নয়, অন্যদিন। তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পেছনে রয়েছে একটি বই, এ বইটির নাম ‘আর-রাহীকুল মাকতুম’, বইটি ইংরেজী-বাংলা-তামিলসহ অনেক ভাষায় অনুদিত হয়, ইংরেজী বইটির নাম The Sealed Nectar। বইটির লেখকের নাম সাইফুর রহমান মুবারকপুরী। বইটিতে মিশরের জোতির্বিজ্ঞানী মাহমূদ পাশা’র রেফারেন্স দিয়ে তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়। (পরের পর্বে আলোচনা হবে)

উল্লেখ্য, সাইফুর রহমান মুবারকপুরীর পরিচয় হচ্ছে, সে একজন কট্টর আহলে হাদীস। এই ব্যক্তি ‘তারিখ-ই-আহলে হাদীস’ বইয়ের লেখক। ভারতের উত্তর প্রদেশের বংশোদ্ভূত এ ব্যক্তি ভ্রান্ত আহলে হাদীস আক্বিদার চূড়ান্ত শিখরে আরহণ করার কারণেই সউদী আরবের মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে চাকুরীর সুযোগ পায়।

আপনারা খুব ভালো ভাবেই জানেন,

বর্তমানে সউদ পরিবারকে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদীরা জাজিরাতুল আরবের ক্ষমতায় বসিয়েছে। জাজিরাতুল আরবের ক্ষমতায় বসা মাত্র সউদ পরিবার মুসলমানদের ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংস লীলায় মত্ত হয়। এখনও তারা নবীজির সাথে সংশ্লিষ্ট সমস্ত ইতিহাস-ঐতিহ্য মুছের ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। (সউদী ওহাবীরা ক্ষমতায় এসে মুসলমানদের কি কি ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংস করেছে: http://des-wa.blogspot.com/2014/11/blog-post_13.html)

মূলত: মুসলমানদের নবীজির বিলাদতের সঠিক তারিখ সহিহ হাদীস শরীফে সনদসহ বর্ণিত আছে, এবং সেটা অবশ্যই ১২ই রবিউল আউয়াল (http://goo.gl/JjAhj8)। এতদিন মুসলমানরা এ ইতিহাসই জানতো। কিন্তু ইহুদী বংশোদ্ভূত (http://des-wa.blogspot.com/2014/12/blog-post_70.html) সউদ পরিবার ১৯৮৭ সালে এ ভ্রান্ত ইতিহাস ছড়িয়ে মুসলমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংস করতে চাচ্ছে। তাই এ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিরেুদ্ধে প্রত্যেক মুসলমানের প্রতিবাদ করা ঈমানী দায়িত্ব।



কৃতজ্ঞতা স্বীকার :

১।ড. মোঃ আবু বকর সিদ্দীক : প্রফেসর আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

২। http://www.moonsighting.com

৩। DeswaOfficial

বিষয়: বিবিধ

৬৪২৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299206
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৩১
একলা আগুন্তক লিখেছেন : ভাই আপ্নাকে হাজার সালাম।।
এভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে বুজিয়ে বলার জন্য।।
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৩৯
242222
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকে সালাম । তার সাথে এক বার হলেও মনে মনে দুরুদ পড়ুন । আর এই ব্লগের এডমিন বা এডমিনদের বদ দুয়া করুন - এসব লোক সাক্ষাৎ নাস্তিকই নয়, মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া চরম ইসলামবিরোধী । এই তিন দিনে ১৪ টা ইসলামবিরোধী লেখা এই সব লোক প্রকাশ করেছে । আমরা তিন বার সুরা ইখলাস, এক বার সুরা ফাতিহা আর চার বার এই বরকতময় দুরুদটা পড়ে এই সাইটের এডমিন বা এডমিনদের বদ দুয়া করি । আর বদ দুয়া করতে না চাইলে অন্তত বলুন :
১. লানাতুল্লাহ আলাইহি ।
২. ফি নারী জাহান্নামা খালিদিনা ফিহা ।




আমরা এই কাজ যদি করি, তাহলে আমাদের হাশরের মাঠেই নয়, দুনিয়াতেও সম্মান ও মর্যাদা বেড়ে যাবে এবং একশত শহীদের দরজা অর্জন করতে পারবে । আর এটা যদি এসব লোকদের মতে বিদাতও হয়, তাতেও আমরা সোয়াবের অধিকারী হবো । কারণ মুসলিম শরীফের এক হাদিস মতে বিদাত প্রচলন করা সোয়াবের কাজ ।
299213
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:১৭
ঈগল লিখেছেন : এই দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যু বরণ করেছেন। তাঁর ওফাতকে কেন্দ্র করে সাহাবীরা ভীষন কষ্ট পেয়েছিলেন।
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:৩৪
242233
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : হা । পাবেনই তো । আমার ছোট ভাই ২৮ বছর বয়সে ইন্তেকাল করে । আমি তার ইন্তেকাল করায় কষ্ট পেয়েছি । বিষয়টা সাভাবিক ও মানুষের সহজাত বিষয় । তারপরও আমি শোকে মহ্যমান হইনি । কারণ

রাসুল সা. সাহাবী ও আমাদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন ﺍﻣﺮﻧﺎ ﺍﻥ ﻻ ﻧﺤﺪ ﻋﻠﻰ ﻣﻴﺖ ﻓﻮﻕ ﺛﻼﺙ ﺍﻻ ﻟﺰﻭﺝ .অর্থ: ‘আমাদেরকে নির্দেশদেয়া হয়েছে, আমরা যেনকারো ইনতিকালে তিন দিনের পর আরশোক প্রকাশ না করি। তবে স্বামীর জন্যস্ত্রী চার মাস দশ দিন শোক পালনকরতে পারবে।’ (মুয়াত্তা- ইমাম মালিক,বুখারী, মুসলিম শরীফ, আবূ দাউদ,নাসায়ী, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ,দারিমী )

সুতরাং রাসুল সা. ইন্তেকালের পর শোক করার জন্য তিন দিন ১৩৮২ বছর গত হয়েছে ।


উপরন্তু আমি আগেই হাদিস গ্রন্হ কানজুল উম্মাল হতে হাদিস উপস্হাপন করেছি । যাতে তিনি বলেছেন : حياتى خير لكم ومماتى خير لكم

অর্থ: ‘আমার হায়াত-মউত সব অবস্থাই তোমাদের জন্য কল্যাণের কারণ।’ ( হাদিস গ্রন্হ কানযুল উম্মাল ) ।


আপনাকে অনুরোদ করছি । মৃত্যু আর জন্ম শব্দটা ব্যবহার করবেন না । কারণ জন্ম হলে প্রজনন সম্পর্কিত ব্যাপার । শুত্রাণু ও ডিম্বানু মিলিত হওয়ার ব্যাপার । তার বদলে আবির্ভাব বা পৃথিবীতে আগমন বলুন । অপর দিকে মৃত্যু বা মারা যাওয়া শব্দটাও ব্যবহার করবেন না । কারণ আমরা মুসলিমরা মারা যাই না । আমরা ইন্তেকাল বা ওফাত হই বা অন্য জগতে

স্হানান্তর হই বা ইল্লিন ও সিজ্জিনে চলে যাই বা আলমে বারজাখে চলে যাই ।

মারা যাওয়া কথাটা ব্যবহার করে অমুসলিম বা নাস্তিকরা বা কম জানা বা অজ্ঞ

মুসলিমরা । মারা যাওয়া কথাটাকে ইংরেজীতে বলে : late বাংলায় গত হওয়া । অন্য

কথায় শেষ হয়ে যাওয়া বা জীবন চলে যাওয়া মানে সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে যাওয়া

বা মরার পর কোন জগৎ নেই বা সব কিছু হতে মুক্ত হয়ে গেলো ।

আমরা মুসলিমরা সাধারণত বলি ইন্তেকাল ফরমানো বা ওফাত হওয়া ।

কুরআন-হাদিসে শহীদদের জীবন্ত বলা হয়েছে । যার যার সম্মান ও মর্যাদা অনুযায়ী

ইন্তেকাল করার পর তার তার উত্তম ও খারাপ অবস্হা হয় । এজন্য কুরআনে শহীদদের

ক্ষেত্রে বল হয়েছে যে শহীদরা রিজীক পান । কিন্তু আমরা জানি রিজীক বা জীবন

উপকরণ পাওয়ার বিষয়টা দুনিয়াবী বিষয় ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File