কবর ও মাজার জিয়ারত করা বরকতময় ইবাদত ।
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ৩০ জুলাই, ২০১৪, ০৭:৪৮:০৫ সন্ধ্যা
মাওলানা দেলওয়ার হোসেন সাইদীর ছেলে রফিক বিন সাইদির হঠাৎ মৃত্যু সংবাদে পরিবারের সদস্যদের শোকাবহ অবস্হা । সৌজন্যে : নয়া দিগন্ত , মেহেদী হাসান
মাওলানা দেলওয়ার হোসেন সাইদীর ছেলে রফিক বিন সাইদী
রফিক বিন সাইদীর কবর যিয়ারতরত ভক্তদের একাংশ
সূচনা :
আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র ইবাদত করার জন্য । আল্লাহ বলেছেন :
وَما خَلَقتُ الجِنَّ وَالإِنسَ إِلّا لِيَعبُدونِ
আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি। সুরা জারিয়াত : ৫৬ । কবর ও মাজার জিয়ারত করা ইবাদতগুলোর মধ্যে অন্যতম বরকতময় ও মুস্তাহাব ইবাদত বলে স্বীকৃত ।
বর্তমানে মাজার ও কবর ধ্বংস করার সংস্কৃতি :
ইবনে আব্দুল ওহাব আনুমানিক ১৭৪০ সাল থেকে ভ্রান্ত ওহাবি মতবাদ প্রচার করতে থাকেন যে মাজার জিয়ারত করা মাজার পুজার শামিল । তাই মাজার জিয়ারত ও এর জন্য সফর উভই হারাম। তাঁর এ ভয়ংকর মতবাদ দেখে তার পিতা তাঁকে তা থেকে বিরত থাকতে বলেন। ১৭৪৫ সালে তার পিতার মৃত্যু পর্যন্ত তিনি তার এ ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারে বিরত থাকেন। কিন্তু তার পিতার ইন্তেকালের পরপরই আবার শুরু হয় তার এ প্রচারনা। তারই আপন ভাই তাঁকে এ ব্যাপারে পিতার নির্দেশের কথা স্মরণ করেও কোন ফল হয় নি। ভায়ের বাধার কারণে পরবর্তিতে সে তার নিজের ভাইকে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, তারা আরবে অবস্থিত মাজার গুলো ধ্বংস করতে থাকে। উনবিংশ শতাব্দির শুরুতে এই ওহাবিরা মক্কা-মদিনা আক্রমণ করে সব কবর ধ্বংস করে ফেলে। কেবল মাত্র মসজিদে নববীতে অবস্থিত রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর দুই সঙ্গী হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত ওমর (রা) এর রওজা গুলো রক্ষা পায়। তারা বারবার ওগুলো ভাংতে উদ্যোগ নিলেও মুসলিম বিশ্বে বিশেষ করে মিশর ও তুরুস্কের প্রবল বাধা ও হুমকির মুখে তা থেকে বিরত থাকে।
এভাবে মাজার ভাঙার সংস্কৃতি তাদের মাধ্যমে বিবিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে, যা লিবিয়া, মালি, সোমালিয়া, তিউনিসিয়া,ইরাক ও সিরিয়াতে আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। ইরাকে যৌন জিহাদীরা হাজার হাজার মাজার ও কবর ধ্বংস করছে ।এরা নবি ও সাহাবীদের মাজারগুলোকেও রেহাই দিচ্ছে না । তারা মাজারের মধ্যে থাকা তাজা লাসকেও পর্যন্ত পা দিয়ে পিছে মারাতে কার্পন্য করছে না । কত বড় বেয়াদব এরা ! আল্লাহর অভিশাপ তাদের ও তাদের সমর্থকদের উপর পড়ুক ।
বাংলাদেশেও তাদের দোসররা হযরত শাহ জালাল (রা) সহ ভিবিন্ন স্থানে বোমা হামলা করেছিলো। এরা তালেবানি আর আল-কায়েদার উত্তরসূরি। সন্ত্রাসির মাধ্যমে তারা ইসলামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা বুঝে না যে স্বয়ং নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাজার জিয়ারতের জন্যে অসিয়ত করে গেছেন। তারা যুক্তি দেখায় নবীজি ইন্তেকালের পুর্ব মুহুর্তে মাজার পুজারিদেরকে ভর্তসনা করে গেছেন। নবীজি ইহুদি-খৃস্টান্দেরকে লানত দিয়ে গেছেন যারা নবীদের মাজারকে মসজিদ বা সেজদার জায়গা বানিয়েছিল। মাজার জিয়ারত কে নিষেধ করেন নি। ওহাবী আর তাদের দোসররা মুনাফিক। মানুষকে হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করে বিভ্রান্ত করছে।
ফিলিস্তিনি তিন শিশুর কবর জিয়ারত যাদের বাবাকে ইসরাইলের ইহুদিরা হত্যা করেছে
https://www.facebook.com/freepalestine.reistance/photos/a.452077461572017.1073742002.231625700283862/622106241235804/?type=1&theater
ফিলিস্তিনি কিছু মহিলার কবর জিয়ারত যাদের আত্মীয়কে ইসরাইলের ইহুদিরা হত্যা করেছে
https://www.facebook.com/freepalestine.reistance/photos/pcb.621975927915502/621975907915504/?type=1&theater
জামায়াত-শিবিরের লোকদের কবর ও মাজার জিয়ারত :
জামায়াতে ইসলামী মওদুদী মতবাদ বা ওহাবী মতবাদ নির্ভর দল হলেও এই দলের নেতা-কর্মীদের বড় অংশই কবর ও মাজার জিয়ারত করেন । এমন কি যে লোক (রফিক বিন সাইদী ) জামায়াতে টিভি দিগন্ত টিভিতে বলেছিলেন কবর জিয়ারত হতে বিরত থাকা উত্তম । সেই লোকের কবর টাইলস দিয়ে পাকা করা হয়েছে এবং প্রতি দিনই তার করব লোকেরা যিয়ারত করতে আসে ।
তবে ইলামের দুষশন ওহাবি - সালাফী - আহলে হাদিস- যৌন জিহাদিদের মতে কবর বা মাজার জিয়ারত করা গুনাহের কাজ । তাদের মতে কবর বা মাজার ধ্বংস করা সোয়াবের কাজ । এই কয় দিন আগে ইরাকে যৌন জিহাদীরা ইউনুস আ., ওয়াসেস কুরনী রহ. -সহ অনেক নবী , সাহাবী ও তাবেয়ীদের মাজার ধ্বংস করেছে । আল্লাহর উপর তাদের গজব পড়ুক ।
কিন্তু জামায়াত - শিবিরের ভাইরা নিয়মিত মাজার ও কবর জিয়ারত করছেন । তারা মরহুম রফিক বিন সাইদী ও মরহুম কাদের মোল্লার কবর নিয়মিত জিয়ারত করছেন এবং তাদের কবরের সামনে দুয়া-দুরুদ-মুনাজাত করছেন এবং কান্নাকাটির মাধ্যমে আবেগ প্রকাশ করছেন ।
দেখুন, শিবিরের ভাইরা কীভাবে মরহুম কাদের মোল্লার কবর জিয়ারত করছেন https://www.facebook.com/photo.php?fbid=874319329264693&set=a.712098222153472.1073741838.100000599018799&type=1&theater;।
রফিক বিন সাইদীর কবর জিয়ারত করছেন জামায়াত-শিবিরের লোক ও তার ভক্তরা
https://www.facebook.com/masood.sayedee.supporters.forum/photos/a.232624040258164.1073741828.231971456990089/256005811253320/?type=1&theater;
ইদানিং আহলে হাদিস বা ওহাবি সম্প্রদায়ের লোকরা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার ধ্বংস করার জন্য ফেসবুকে ফতোয়া পর্যন্ত দিচ্ছে । জনগণ এসব এসব অসভ্য বেয়াদবদের চিনে রাখছে ।
ইবনে তাইমিয়া এবং তাঁর ছাত্র ইবনে কাসিরের মাজার, সিরিয়ার দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। মাজার মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলার হাদিস সঠিক হলে তাদের গুরুদের মাজার গুলো এভাবে স্বযত্নে রেখেছে কেন? কবর ভাঙার হাদিসটি মুনাফিকরা ভুলভাবে উপস্থাপন করে। প্রকৃতপক্ষে রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরবের মুশরিকদের কবর গুলো ভাংতে হযতর আলি (রা) কে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কোন সাহাবীর কবর নয়। তাদের হাদিস যদি মুসলমানসহ সবার কবর ভাঙ্গার ব্যাপারে হত তাহলে হযরত আলী (রা) এর খেলাফতের পর থেকে কোন কবর উঁচু হতোনা আর তাদের ভাঙার জন্য আজ কোন কবরই অবশিষ্ট থাকত না। এটা একটা অতি সরল্ল অংকের মত সোজা। উল্লেখ্য ইমাম ইবনে তাইমিয়া ওহাবিদের প্রধান নেতা ।
কবর জিয়ারত সম্পর্কে হাদিস গ্রন্হের ভাষ্য :
মাজার জিয়ারত জায়েজ এবং সুন্নাতে রাসুল (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। দেখুন প্রমাণ>
ইব্রাহিম বিন মুহাম্মদ (রা) বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বছরের প্রারম্ভে ওহুদ যুদ্ধে শহীদদের সমাধি জেয়ারতে যেতেন এবং বলতেন: السلام عليکم بما صبرتم فنعم عقبي الدار.
আপনাদের উপর সালাম! আপনারা আপনাদের ধৈর্যের ফলস্বরূপ আখেরাতে কি চমৎকার জায়গাই না পেয়েছেন।
আবু বকর, উমর এবং ওসমান (রা) একই ভাবে জেয়ারতে যেতেন।
সুত্র: -
১. মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক: ৩:৫৭৩
২. আইনি, উমদাদুল কারী, ৮:৭০
৩. তাবরী, জামি আল কুরআন, ১৩:১৪২
৪. ইমাম সুউতি, দারুল ময়ানসুর, ৪:৬৪১
৫. তাফসীর ইবনে ই কাসীর।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: "তোমরা ক্কবর জিয়ারত কর কারণ এই অভ্যাস পরকালের কথা মনে করিয়ে দেয়। (এ হাদিসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে)
সুত্র:
১. মুসলিম ১:৬৭১ .. ৯৭৬
২. হাকীম আল মুস্তাদরাক: ১:৫৩১ .. ১৩৯০
পবিত্র মহানবী (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) 'র রওজা জিয়ারতের ফজিলত: -
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: যে আমার রওজা জিয়ারত করবে, কিয়ামতের দিনে তাঁর জন্যে আমার শাফায়াত অবধারিত।
সুত্র:
১. দারুল কুতনী, আল সুনান ২: ২৭৮)
২. বায়হাকি, শোহবুল ঈমান ৩: ৪৯০, এবং ৪১৫৯ এবং ৪১৬০)
৩. হাকীম তিরমিজি, নাওয়াদিরুল উসুল ২: ৬৭)
কবর জিয়ারত সম্পর্কিত আরো হাদিস ও ফিকহ গ্রন্হের উদৃতি :
(১): হযরত বুরহিদাহ্ রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা তা করতে পারো (মুসলিম শরীফ)।
(২) অন্য হাদিস শরীফ উনার মধ্যে আছে: হযরত ইবনে মসউদ রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা তা করতে পার। কেননা উহা দুনিয়ার আসক্তিকে কমায় এবং আখিরাতকে স্মরণ করায়। (ইবনে মাযাহ)
(৩) কবর জিয়ারতের বৈধতা প্রসঙ্গে বিভিন্ন হাদীস পরিলক্ষিত হয়, আর এ সমস্ত হাদীসের ব্যাখ্যা হাফেজে হাদীস আল্লামা ইবনে হাযার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনি দিয়েছেন এভাবে:
জেনে রাখুন পুরুষ ও মহিলাদের জন্য কবর জিয়ারত করা এ সমস্ত হাদীসের রায় অনুযায়ী মোস্তাহাব প্রমাণিত, তবে মহিলাদের ব্যাপারে মতানৈক্য আছে। (ফতহুল বারী ফি শরহে বোখারী ৩য় খন্ড ১১৮ পৃষ্ঠা)
(৪) আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
কবর জিয়ারত এতে কোন অসুবিধা নেই, বরং এটা মোস্তাহাব। (ফতওয়ায়ে শামী)
(৫): পুরুষের জন্য কবর জিয়ারত করা মোস্তাহাব। (ফিক্বহুস সুন্নাহ্, ১ম খন্ড পৃঃ৪৯৯)
(৬) আল্লামা ইবনে আবেদীন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
ওহোদ পাহাড়ের শহীদগণের (কবর) জিয়ারত করা মোস্তাহাব। ইবনে শায়বা হতে বর্ণিত আছে যে, “রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি বৎসরান্তে ওহোদের শহীদগণের (কবর) জিয়ারত করতে আসতেন। অতঃপর বলতেন, তোমাদের প্রতি সালাম, যেমন তোমরা ধৈর্য্য ধারণ করেছিলে তেমনি পরকালে উত্তম বাসস্থান লাভ করেছ।
(৭) বর্ণিত আছে যে, পরবর্তীতে খলিফাতুল মোসলেমীন হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিআল্লাহু আনহু ও আমিরুল মো’মেনীন হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহু হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এই ধারাকে বজায় রেখেছিলেন। (উমদাতুল ফিক্বাহ)
(৮) বিখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন: সাইয়্যিদাহ্ ফাতিমা রাদিআল্লাহু আনহু প্রতি শুক্রবার হযরত হামযাহ্ রাদিআল্লাহু আনহু এর কবর জিয়ারত করতে যেতেন, অনুরূপভাবে হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিআল্লাহু আনহু স্বীয় ভ্রাতা আবদুর রহমান রাদিআল্লাহু আনহু এর কবর জিয়ারত করার জন্য মক্কা শরীফ যেতেন। (উমদাতুল ক্বারী ফি শরহে বোখারী)
উপরোক্ত বর্ণনা থেকে এ ফতওয়াই স্পষ্ট প্রমাণিত যে, নিয়ত করে মাজার শরীফ জিয়ারত করা সম্পূর্ণ জায়েজ।
(৯) অন্য হাদীসে আছে:
তাবেয়ী মুহম্মদ বিন নোমান রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন॥ যে ব্যক্তি প্রত্যেক শুক্রবার আপন মা॥বাপের অথবা তাঁদের মধ্যে একজনের কবর জিয়ারত করবে, তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং মা॥বাপের সহিত সদ্ব্যব্যবহারকারী বলে লেখা হবে। (বায়হাকী)
এ হাদীসেও এককভাবে কবর জিয়ারত করার কথা বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি তাঁর মাতা॥পিতার কবর জিয়ারত করতে যাবে সে বাড়ী থেকে নিয়ত করেই রওয়ানা হবে অর্থাৎ জিয়ারতকারী একমাত্র কবর জিয়ারত করার জন্যই কবরস্থানে গমন করবে। আর এ ক্ষেত্রে দূর বা নিকট এর কোন পার্থক্য নাই। নিকটের যে হুকুম, দূরেরও একই হুকুম।
(১০) আল্লামা আবদুর রহমান যাফিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
কবর জিয়ারত এর ক্ষেত্রে নিকট ও দূরের কোন পার্থক্য নাই। (কিতাবুল ফিক্বাহ আলা মাযাহিবিল আরবা ১ম খন্ড ৫৪০ পৃঃ)
(১১) আল্লামা ইবনে আবেদীন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন॥
দূরবর্তী স্থানেও (কবর) জিয়ারতের জন্য গমন করা মোস্তাহাব। (শামী ২য় খন্ড ২৪২ পৃঃ)
(১২) হাকিমূল উম্মত মাওলানা আশ্রাফ আলী থানভী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন॥ “পুরুষদের জন্য কবর জিয়ারত করা মোস্তাহাব। জিয়ারত করার অর্থ দেখাশুনা। সপ্তাহে অন্ততঃ একদিন কবর জিয়ারত করা উচিৎ। সেই দিন শুক্রবার হওয়াই সবচেয়ে ভাল। বুজুর্গানে দ্বীনের কবর জিয়ারত করার জন্য সফরে যাওয়াও দুরস্ত আছে”। (এমদাদুল ফতওয়া)
(১৩) হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি শাফেয়ী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা তিনি যখন কোন মাসআলা সমস্যার সমাধানে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তেন তখন আলমে ইসলামীর সর্বশ্রেষ্ঠ ইমামে আযম ইমাম আবু হানিফা নোমান বিন সাবেত কুফী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাজার শরীফে এসে জিয়ারত করে তখায় দু’রাকাত নামাজ পড়তেন। এরপর হযরত ইমামে আযম ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি এর উসিলা দিয়ে আল্লাহ্ পাকের দরবারে ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর সমস্যা জানাতেন। আল্লাহ্ পাক তাঁর দোয়া কবুল করতেন অর্থাৎ মাসআলার যে সমস্যার জালে আবদ্ধ হয়ে তিনি সেখানে যেতেন ইমামে আযম রহমতুল্লাহি আলাইহি এর উসিলার বরকতে তা খুলে যেত। অতঃপর স্বীয় স্থানে প্রত্যাবর্তন করতেন। উল্লেখ্য ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর এ আগমন শুরু হত ফিলিস্তিন হতে, আর এই সূদুর ফিলিস্তিন থেকে আগমনের একমাত্র নিয়ত ছিল মাজার জিয়ারত করা। অন্য কোন উদ্দেশ্যে বাগদাদ এসে মাজার জিয়ারত করা নয় (আন্ নাসিয়াতুলিল ওহাবী)
(১৪) এ প্রসঙ্গে ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
অর্থঃ নিশ্চয়ই আমি ইমাম আযম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বরকত হাসিল করি। যখন আমার কোন সমস্যা দেখা দেয় আমি তাঁর মাজার শরীফে এসে প্রথমে দু’রাকাত নামাজ আদায় করি। অতঃপর তাঁর উসিলা দিয়ে আল্লাহ্ পাকের নিকট সমস্যা সমাধানের জন্য প্রার্থনা করি। তা অতি তাড়া তাড়ি সমাধান হয়ে যায়। (মুকাদ্দিমা,শামী ১ম খন্ড ৫৫ পৃঃ)
(১৫,১৬) শায়েখ ওলি উদ্দীন ইরাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন আমার পিতা জয়নুদ্দীন ইরাকী এবং শায়েখ আব্দুর রহমান ইবনে রজব হাসলী, হযরত ইব্রাহীম খলীল আলাইহিস সালাম এর জিয়ারতে বলেছিলেন; যখন শহরের নিকটবর্তী হলেন তখন ইবনে রজব বলতে লাগলেন, আমি খলীলুল্লাহ্ আলাইহিস সালাম এর মসজিদে নামাজ পড়ার নিয়ত করে নিলাম যেন জিয়ারতের নিয়ত না থাকে। আমার পিতা বললেন, আপনিতো হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এরশাদের বিপরীত আমল করলেন। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তিন মসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মসজিদের জন্য সফর করা যায় না অথচ আপনি চতুর্থ এক মসজিদের নিয়ত করলেন আর আমি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এরশাদের উপর আমল করেছি। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কবর জিয়ারত করতে থাকবে। এমন কোন হাদীস নেই যাতে নবী আলাইহিস সালাম গণের কবরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এরশাদ মোতাবেক আমল করেছি। (ফাযায়েলে হজ্ব, জুরক্বানী)
(১৭) এ ছাড়াও সাহাবী রাদিআল্লাহু আনহু, তাবেঈন, তাবে তাবেঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি গণের কবর জিয়ারতের সুস্পষ্ট ও যথেষ্ট প্রমান রয়েছে। ইমামে রাব্বানী আফজালুল আউলিয়া শায়েখ আহমদ সিরহিন্দী ফারুকী মোজাদ্দেদে আলফেসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সুলতানুল হিন্দ হাবীবুল্লাহ ইমামুত্ব ত্বারীকত হযরত খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতী আজমিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাজার শরীফ জিযারত করতে গিয়েছিলেন। আর এতে জিয়ারত ভিন্ন অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না।(সীরাতে মোজাদ্দেদে আলফেসানীরহমতুল্লাহি আলাইহি
হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি শামদেশ হতে উট সওয়ার শুধু রওজায়ে পাকে তাঁর সালাম জানানোর জন্য পাঠিয়ে দিতেন।
ইহুদীদের বিখ্যাত পন্ডিত হযরত কা’ব ইবনে আহবার যখন ইসলাম গ্রহন করেন তখন হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহু আনন্দিত হয়ে তাঁকে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা মোবারক জিয়ারতের জন্য মদীনা শরীফ আসতে বলেন, তিনি এটা কবুল করে মদীনা শরীফ এসেছিলেন।
কবর ও মাজার জিয়ারতের সময় যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে :
একটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, কবর বা মাজার জিয়ারত করতে গিয়ে যাতে শরীয়ত বিরোধী কোন কার্যকলাপ সংঘঠিত না হয়। এটা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য। শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ বলতে: কবরস্থানে বা মাজারে গিয়ে সিজদা করা, গান বাজনা করা, মহিলা পুরুষের বেপর্দা চলাফেরা ইত্যাদি এসমস্ত কার্যকলাপ মূলতঃই হারাম ।
উপসংহার :
কবর ও মাজার জিয়ারত বরকতময় ইবাদত । এই ইবাদত হতে আমাদের বিরত থাকা উচিত নয় । এজন্য আমাদের উচিত :
১। বাবা-মা-দাদা-দাদী-নানা-নানী-আত্ময় স্বজনদের কবর জিয়ারত করা ।
২। বিভিন্ন সময় বিখ্যাত ব্যক্তি ও ইসলাম প্রচারকদের কবর ও মাজার জিয়ারত করা ।
৩। কবর জিয়ারত করার জন্য বিভিন্ন দুয়া-দুরুদ-তাশবীহ-তাহলীল মুখস্হ করা এবং এই ব্যাপারে বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে চর্চা অব্যহত রাখা ।
কবর জিয়ারত করলে সোয়াব হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর চিন্তা উদয় হয় এবং পৃথিবী শেষ ঠিকানা উদয় হয় বলে নিজেকে পুন্যবান মুসলিম হওয়ার জন্য কবরস্হান ও মাজারে মাঝে মধ্যে যাতায়াত করা উচিত এবং সেখানে যেয়ে শরিয়াত সম্মত উপায়ে দুয়া-দুরুদ-তাশবীহ-তাহলীল পড়তে হবে ।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবিন ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার :
১. http://sahihhadithss.blogspot.com/2014/02/65.html
২. ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপ
বিষয়: বিবিধ
৫২৮২ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জিয়ারত আর ইবাদত কি একই বিষয়? জিয়ারত আর ইবাদত দুটোর উদ্দেশ্য কি সমতুল্য?
সাধারন মানুষ টিপিক্যালী মাজার ভিত্তিক যে কার্যক্রমের কথা জানেন, বুঝেন ও মানেন (যেমন মানত করা, কবর বাসীর কাছে কিছু চাওয়া, কবরের চারপাশে তাওয়াপ করা, কবরকে সামনে রেখে কবর বাসীর উদ্দেশ্যে সেজদা দেওয়া, নামাজ পড়া ইত্যাদি) - তার সাথে জানা শোনা মানুষের কবর জিয়ারত করাকে (ফাতেহা পাঠ, কবরবাসীর মাগফেরাত কামনা ইত্যাদি) কি একই জিনিস বলে চালানো যায়?
এই যে আমি ব্লগে লেখালেখি করছি - এটাও ইবাদত । আর আমি যে পড়াশোনা করছি - এটাও ইবাদত ।
আর আপনি যদি বিয়ে করেন বা আমি যদি বিয়ে করি - তাও ইবাদত ।
আপনি যদি আপনার ছেলে-মেয়েকে আদর করেন - তাও ইবাদত ।
মোট কথা যে সব কাজে সোয়াব হবে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে - সেসবই ইবাদত । যেমন ধরুন, আপনি মঙ্গল গ্রহে যাবেন, কিন্তু আপনার সেখানে গেলে মরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে । তারপরও গেলেন । কারণ আপনি মানুষ সভ্যতার জন্য নতুন কিছু উদ্বাভন করতে যাচ্ছেন যাতে অদুর ভবিষ্যতে মানুষ জাতি উপকৃত হতে পারে ।
১. মানত করা সঠিক কাজ নয় ।
২. কবর বাসির কাছে কিছু চাওয়া গোনাহের কাজ । যারা করে তারা ইসলামের সঠিক শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞ ।
৩. কবরের চার পাশে তাওয়াফ করার বিধান নেই । সুস্পষ্ট গুনাহের কাজ ।
৪. কবরে সিজদা করা গুনাহের কাজ । সিজদা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য ।
৫. কবরস্হান বা মাজারে যেয়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না এবং গুনাহ হবে । কবর, মসজিদ, বাজার, কারখানা, বাড়ি , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান - প্রতিটা আলাদা স্হাপনা । এগুলো একটার সাথে আরেকটার মিশ্রনের সুযোগ নেই ।
কিন্তু আমরা দেখছি : মসজিদ আর বাজার একত্রে হচ্ছে । এতে নামাজের পরিবেশ বিগ্নিত হচ্ছে । অথচ হাদিসগ্রন্হে অসংখ্য হাদিসে বলা আছে, "বচেয়ে ভাল জায়গা মসজিদ । সবচেয়ে খারাপ জায়গা বাজার ।"
আমরা দেখছি , বাড়ির পাশে কবর । এধরনের কবর আর বাড়ি সমৃদ্ধ এলাকা ইসলামের নিয়ম বিরোদ্ধ । কারণ কবর হলো কপর্দকদের স্হান । আর তার পাশে বাড়ি । বাড়ির মেয়েরা ইচ্ছেয় হোক অনিচ্ছায় হোক বেআব্রু হচ্ছে । আর ছেলেদেরও কাজ করতে যেযে বেআব্রু হতে হয় - কাজ করার জন্য । এর ফলে কবরের পবিত্রতা ও ভাব-গাম্ভীর্য নষ্ট হয় । উপরন্তু এধরনের কবর লোকদের মনে মৃত্যু চিন্তা জাগ্রত করতে পারছে না । আর বিভিন্ন সময় বসত বাড়ি নির্মান করলে এসব কবরকে অগ্রাজ্য করা যায় । অনেক সময় এসব কবর ধ্বংস করতে গেলে অক্ষত লাস ও হার-গোড় বের হয়ে পড়ে । এভাবে কবর ধ্বংস করা ইসলামের নিয়ম নয় ।
কবরস্হান হবে জনমানুষের বসবাসের স্হান হতে অনেক দুরবর্তী স্হানে দেওয়াল ঘেড়া এলাকায় । আর এর পবিত্রতা রক্ষা করাও ঈমানি দায়িত্ব । অথচ বাংলাদেশে দেখা যায় । কবরের উপর লোকেরা বসে । আর কবরস্হানে আজে বাজে লোকরা প্রবেশ করে, গরু - ছাগল চড়ায় । নেশা করে ।
আরো অনেক কিছু লিখতে চাচ্ছিলাম । কিন্তু মনে আসছে না ।
আরো কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করতে পারেন । উত্তর দিবো ।
কিন্তু আপনার লিখায় - যেয়ারত আর মাজার পূজার পার্থক্যটি আরো শক্তিশালী হলে হয়তো কিছু পাঠকের কাজে লাগতো।
সেসাথে মাজার পূজার কেন্দ্র হলে, তাওয়াফ ও সেজদার কেন্দ্রবিন্দু, মানুষের বিশ্বাসের স্থল হলে মুসলিম উম্মাহ র কি করনীয় - যাতে সে সব বিদাত হতে সাধারন মুসলিমদের ঈমান ও আকিদা রক্ষা করা যায় - তা নিয়ে আপনার ভাবনা চিন্তা জানার ইচ্ছা ব্যক্ত করছি।
সময়ও সুযোগ পাচ্ছি না । কারণ বেচে থাকার জন্য দিন পার করার জন্য চাকুরী করতে হয় । চাকুরীক্ষেত্রেই ১৩ ঘন্টা সময় ব্যয় করি । চাকুরীর অবসর সময়টুকুতেও নেট ও মোবাইল ব্যবহার করতে পারি না । সুতরাং অনেক বিষয়ে নিয়মিত লিখার ইচ্ছে থাকলেও লিখতে পারি না । উপরন্তু বর্তমানে দুইটা বই লিখছি । কাল একটা প্রথম পর্ব এই সাইটে দিলাম । আরেকটা বই লিখছি । তার নাম দিয়েছি : মেয়েদের মসজিদে যেয়ে নিয়মিত নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য ।
আজই এটার প্রথম পর্ব দিবো । ইনশাআল্লাহ । আশা করি আমার সাথেই থাকবেন ।
গরু মহিশ জবেহ করলে কবরের মুর্দার পেট ভরে না । পেট ভরে যারা বেচে আছে তাদের । মানুষ মারা গেলে মানুষ কোন কিছু খেতে পারে না ।
তারপরও কিছুটা যে পরিবর্তন আনিয়াছেন, সেটাই বা কম কি?
আগের বারে বলিয়াছেন, কবর জেয়ারত উত্তম!! ইবাদত!
এইবার বলিয়াছেন বরকতময় এবাদত!
আর এই বরকতের প্রমাণ দেখাইবার জন্য আমনে আমনে ছবি সাটাইয়াছেন রফিক সাইদী ও কাদের মোল্লার কবরের। মাইজভাণ্ডার শরীফ, লালন সাইয়ের মাজার শরীফ, মাইজা পাগলার রওজা শরীফে ও যে দলে দলে ভক্তরা বরকতের জন্য যায় সেইটার কুন ছবি দিলেন না। প্রচারে লাইগা থাকেন অন্তত বরকতের জন্য ফেরেশতাদের উপ্রে শবে বরাতের রাতের উপর কিছুটা চাপ কইমা কবর, দরবার, মাজার, খানখাহের উপর নিপতিত হইবে। ফেরেশতারাও কিছুটা রিলাক্সড্ হইবে।
আপনি যাদের কথা বল্লেন, তাদের উপর লেখাটা লেখা হয়নি । সুতরাং তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি । এই ব্লগ সাইটে জামায়াত-শিবিরের লোকরা সংখ্যাগরিষ্ট হওয়ায় তাদের নেতাদের কবরের ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে ।
আপনাদের মত জ্ঞানীদের থেইকা জগতবাসির অনেক শিখার আছে।
আগে অস্ত্র যোগাড় করেন, তারপর সেই অস্ত্র কুথায় ব্যবহার করবেন সেইটা নিয়ে ফন্দি ফিকির করেন। তো আপনি নিজেকে ছাড়া, কয়জন শিবিরকে এই পথে আনতে পেরেছেন? সংখ্যা জানতে পারলে পুলকিত হতুম।
ইসলাম প্রচারে আমনে সাইদী সাহেব, ডাক্তার জাকির নায়েক কেও হার মানাইয়াছেন।
ভুল পথে পরিচালিত শিবিরের দশ হাজার মানুষকে আপনি একাই পথের দিশা দিয়াছেন! আপনি একা যদি এত মানুষকে ফিরাইতে পারলেন, সেই দশ হাজারের মাঝে আমনের মত দশ জনও কি বিদ্ধ্যান, বুদ্ধিমান ছেলে নাই। আপনারা এগার জন মিলে লক্ষ লক্ষ শিবিরের ছোকড়াদের সঠিক পথে আনতে পারতেন!!!!! নাকি এগুলোও ফেসবুক মার্কা শিবির!
আর এরা যদি শিবিরের সাথে থেকে ঝটিকা মিছিল ও প্রেক্টোল বোমা মেরে মানুষকে পুরিয়ে অঙ্গার করতো তাহলে তাদের পরিনাম হতো ক্রশফায়ার, নয়তো কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ ।
আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেছেন বলে তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন ।
ছাত্রলীগের ছেলেরা ক্রস ফায়ারে মারা যায় না, সেই জন্য তারা আল্লাহর দয়াপ্রাপ্ত।
সন্ত্রাসী-চাদাবাজেরা কারাগারে যাচ্ছেনা, কারুন তারাও আল্লাহর রহম প্রাপ্ত।
কবরপূজারী পীরদের পুলিশ ধরেনা, কেননা তারা আল্লাহর করুনা প্রাপ্ত।
কাশ্মীরের মুসলমান ক্রশফায়ারে মরে, কেননা তারা আল্লাহর গজব প্রাপ্ত।
মিশরের ব্রাদারহুড আল্লাহর গজব প্রাপ্ত।
হামাস আল্লাহর গজব প্রাপ্ত।
আর শিবির তো রাস্তার চলার পথে উষ্টা খাইলেও, আল্লাহর গজব প্রাপ্ত হয়, কেননা তারা আমনের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে। আচ্ছা বলেন তো, কোন ঘটনায় বনিবনা না হবার কারণে আমনের সাথে শিবিরের এত মতানৈক্য বলবেন কি? দেখি আমরাও শিবিরের বিপক্ষে গজব লইয়া নামতে পারি কিনা?
কারণ জামায়াত বাংলাদেশের জন্মের বিরোধীতা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি । জামায়াতের লোকরা এদেশের লোকদের সাথে হত্যা ও ধবংসাত্মক কাজ করেছে যাতে বাংলাদেশ কোনভাবেই স্বাধীন হতে না পারে । আর এজন্যই জামায়াত-শিবির বেশী অভিশপ্ত ও জনবিরোধী দল ।
মিসরের ব্রাদারহুড, কাশ্মিরের মুজাহিদ, হামাস, হিজবুল্লাহ ইত্যাদি হলো মুক্তিকামী ও স্বাধীনতাকামী জনতার দল ।
ছাত্র লীগ ধর্মনিরোপেক্ষ দলের ছাত্র সংগঠণ । এই ছাত্র সংগঠণ ছেলেরা করতে আসে দুনিয়াবী সুযোগ সুবিধা অর্জন করতে । আর অনেকে আসে ধর্ষন-হারাজানি-লুটপাট করার জন্য । যেহেতু তারা শাসক দলের লোক তাই তাদের সাত খুন মাফ । আর এটাই বাংলাদেশের রাজনীতি ।
অপর দিকে আদালতের রায় এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরোদ্ধে অবস্হান নিয়ে জামায়াত-শিবির বিএনপির কাধে সাওয়ার হয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছিলো । এজন্য তাদের প্রতি কঠোর নীতি অবলম্বন করছে বাল সরকার ।
বেআক্কেল ভাই । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার সাথে থাকার জন্য ।
জামায়াত খারাপ,
শিবির খারাপ,
তাবলীগ খারাপ,
ওয়াবী খারাপ,
সালাফী খারাপ,
সুন্নী খারাপ,
দরবারী খারাপ,
কাদিয়ানী খারাপ,
শিয়া খারাপ,
তবে কয়েকটার নাম এখনও বলেন নাই।
সৌদির সাথে যারা নামাজ পড়ে,
মির্জার খিলের বাহাই,
ঢাকার ইসমাইলিয়া,
দেওয়ান বাগী,
আটার রশি,
এই গুলার নাম সাহস করিয়া বলিতে কুন সমস্যা নাই।
আরো কিছু আছে,
জেএমবি,
হরকাতুল জেহাদ.
ভারতীয় র,
পাকিস্তানের আইএসআই.
এই গুলার কুনটা আমনের পছন্দ আকারে ইঙ্গীত কইয়া ফেলান।
নাকি সাপুরে হুজুর মিছবাহুর মত আমনেই নিজেই একটা ত্বরিকা খাড়া করছেন।
যেমন : এই সাইটে আমি লেখালেখি করি যাতে আপনার মতো জামায়াত শিবিররা ভদ্র ও অমায়িক হওয়ার পাশাপাশি ওহাবী মতবাদ ত্যাগ করে ভাল মুসলিম হতে পারেন - সে চেষ্টা করার জন্য বা সেই দাওয়াত পৌছে দেওয়ার জন্য ।
আমনের এই রুহানী ত্বরিকার নিয়ম দেখিয়া খোদ ইমামে আজম আবু হানিফা পর্যন্ত চিত-কাৎ হইয়া পড়িয়া যাইতেন। আল্লাহ তাঁহারে আগেই দুনিয়া থেইকা লইয়া যাইয়া, বাঁচাইছেন।
সফর করার উদ্দেশ্যে তিনটি জায়গায়র কথা বলা হয়েছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন