বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির , ভাললাগা-ভালবাসা-প্রেম এবং তাড়াতাড়ি ক্যারিয়ার গড়ার প্রয়োজনীয়তা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৫ জুলাই, ২০১৪, ০৪:৫৭:০৪ বিকাল



সূচনা :

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির দেশের আলোচিত ও সমালোচিত একটা সংগঠণ । এই সংগঠণ পরিচালিত হয় ইসলামের গোড়া ভাবাদর্শ দ্বারা । কিন্তু ইসলামের গোড়া ভাবাদর্শ কখনোই মানুষের সহজাত আবেগকে দমিয়ে রাখতে পারে না । ভাললাগা-ভালবাস-প্রেম সহজাত বিষয় । এই সংগঠণের লোকরাও এসবের সাথে মনের অজান্তে জড়িয়ে পড়ে ।

আমার অভিজ্ঞতা :

কয়েক দিন আগে আমরা প্রেম করবো না বিয়ে করবো তাড়াতাড়ি ( https://www.facebook.com/WeWillMarryEarly ) পেজের সুত্র ধরে এক শিবির কর্মীর সাথে পরিচয় হয় । সেই শিবির কর্মী বিমর্ষ । কারণ সে একটা নিকাবী মেয়েকে হৃদয়ের অন্তস্হল হতে ভালবাসতো । তার সাথে পরিচয় হয় ফেসবুকে । কয়েক দিন আগে এই নিকাবী আপুর বিয়ে ঠিক হয় ।



শিবিরর কর্মীটার সাথে কথাপকোথনের কিছু অংশ তুলে ধরছি ।

আমি বল্লাম : মুখটা পেঁচার মতো করে রেখেছো কেন ? মনে হচ্ছে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে ।

সে বল্লো : গুরু । বলেই কান্না শুরু করলো ।

: কান্নার কি আছে ? খুলে বলো ।

: গুরু । আমার ফিয়াসের বিয়ে ঠিক হয়েছে ।



: মনটাকে শক্ত করে বাধ । কথায় আছে না , বাস ট্রেন আর মেয়ে মানুষের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না । এগুলো একটা গেলে আরেকটা আসবে ।

: গুরু । আপনিও !

: দেখ আমার আজাইরা সময় নষ্ট করার তো সময় নেই ।

আমি এখন

" বাংলাদেশের মেয়েদের মসজিদে যেয়ে নিয়মিত নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য” ,

“মেয়েদের বাড়িতে বাবা, স্বামী ও ভাইদের প্রতি দিন ইসলামী জ্ঞান দান করা ফরজ” এবং

“নতুন নতুন বিদাত প্রচলন করা সোয়াবের কাজ”

শিরোনামেরবেশ কয়েকটা বই লিখছি ।

আর হাক্কুল ইবাদের কথা চিন্তা করে এবং হযরত শাহজালাল রহ.- এর জীবনীটা অনুসরণ করতে যেয়ে আমি নিজেই বিয়ে করার টাইম-ই পাচ্ছি না ।

আর তুমি অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ছো । এরই মধ্যে তুমি বিয়ে করার টাইম খুজে বের করে ফেলেছো আর প্রেমও করছো ফেসবুকে আর রাস্তা-ঘাটে ।

: আচ্ছা । কিছু মনে করবে না । তুমি এই নিকাবীকে কি দেখে পছন্দ করেছিলে ।



: চোখ দেখে ।

: শুধু চোখ ।

(আমি আর কথা বাড়ালাম না ।)

আমি বল্লাম । দেখো আমি আমার “আমরা প্রেম করবো না বিয়ে করবো তাড়াতাড়ি” পেজে বিয়ে করার আগে ক্যারিয়ার গড়ার কথা বলেছি । তুমি বুঝতে ভুল করেছো ।

চরিত্র ও নৈতিকতা ঠিক রাখার জন্য আগে আগে বিয়ে করার প্রয়োজন অবশ্যই আছে । কিন্তু তার আগে আর্লি ক্যারিয়ার বিল্ড আপ করতে হবে । তা না হলে নিকাবী-হিজাবী-তেজাবী-সুইট গার্লস্ ইত্যাদি ক্যাটাগরির সব মেয়েই তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে । কারণ ক্ষণিকের ভাল লাগা হলো হরমোনের খেলা । আমাদের হরমোন নামক জৈব রাসায়নিক পদার্থ হরমোন আছে বলে আমরা বিভিন্ন অনুভতি প্রকাশ করি । প্রেমও ঠিক একটা এমন অনুভতি । কিন্তু প্রেমের ক্ষেত্রেও আরো অনেক বিষয় জড়িত থাকে । প্রেমকে দীর্ঘ মেয়াদী রূপ দিতে গেলে আগে আছে দৈহিক সামর্থ তারপর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ।

আমি আরো বল্লাম : দেখো । নিকাবী মেয়েটাকে আমি পেছন থেকে দেখলাম । কাল বোরকা পড়া ও ভীষণ মোটা মনে হলো । আর দেখতেও আমার মনে হলো কুৎসীত ও আনস্মার্ট । তোমার ভাল লাগলেও তোমার আম্মুর ভাল লাগবে না । তোমার বোনদের ভাল লাগবে না ।

তোমার ক্ষেত্রে যা হয়েছে তা ভাললাগা । ভাল লাগা মানেই ভালবাসা আর

প্রেম নয় । এগুলো ভিন্ন জিনিস । তুমি বিমর্ষ হয়ো না । এই খালাম্মা ধরনের মেয়ের থেকে ভাল মেয়ের সাথে তোমার বিয়ে হবে এবং তুমি সুখী হবে । পরিশেষে তোমরা আখিরাতে জান্নাতে একত্রে বাস করতে পারবে ।

এর চেয়ে ভাল মেয়েকে বিয়ে করার জন্য দরকার আর্লি ক্যারিয়ার গড়া । এই বিষয়টিকে তোমাদের সামনে উপস্হাপন করার জন্য আমি তিন দিনের ওয়ার্কশপ চালু করেছি । ইফাতারের পরই আলোচনা সভা ও মুভি প্রদর্শনী হবে । দল-বল নিয়ে না আসলে করবো খুন ।

সে বল্লো : আপনার কার্যক্রম বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের লোকরা পছন্দ করে না । শুনেছি, আগের এক দায়িত্বশীল কর্মীদের সাথে নিয়ে আপনার জানাজার নামাজ পড়েছিলেন এবং সবাইকে বলে দিয়েছিলেন যে আপনি মারা গেছেন । কেউ যেন আপনার বাড়ির ধারের কাছেও না যায় ।

আমি বল্লাম : তোমার কথা অতিরঞ্জিত । দাউদ ভাই জানাজার নামাজ কীভাবে পড়তে হয় তা হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন । কারণ অনেক ছেলেই তখন জানাজার নামাজ পড়ার সময় ঈদের নামাজ পড়ার মতো তাকবীর বলার সাথে সাথে হাত তুলতো এবং জানাজার নামাজের দুয়াগুলো জানতো না । দেখ এই বিষয়ে আর কিছু বলছি না । তবে আজ তোমাদের ইফতারের দাওয়াত দিলাম । দল-বল নিয়ে হাজির হবে । সেখানে আওয়ামী লীগের লোকরাও থাকবে । বিএনপির লোকরাও থাকবে । এদের দেখে দৌড়ে পালিয়ে যেয়ো না । এরা আমাদের প্রতিবেশী । সেখানেই আগে আগে কীভাবে এবং কেন ক্যারিয়ার গঠণ করতে হবে এবং সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা হবে ।

তাড়াতাড়ি ক্যারিয়ার গড়ার প্রয়োজনীয়তা :

যথাসময়ে ইফতার আয়োজন করলাম । আওয়ামী লীগের ও বিএনপির লোকরা আসলো না । কারণ শিবিরের লোকরা আসবে শুনে তারা আগেই না । আর যারা আসলো এগুলো আওয়ামী লীগ আর বিএনপি হলেও – এগুলো আধা শিবির । এক সময় আলোচক আলোচনা শুরু করলেন।

তিনি বল্লেন :

আর্লি ম্যারেজ! আর্লি ম্যারেজ! করে গলা ফাটাচ্ছেন, মুসলিম তরুণদের নৈতিক সুরক্ষার দাবী করছেন, অথচ সমস্যার মূল খুঁজছেননা। একটা সমস্যা সমাধানে যদি সমস্যার মূলে আঘাত করা না হয় তবে সে সমস্যা সমাধান অলীক কল্পনা ছাড়া কিছুইনা।

ভার্সিটি লাইফের অনেক অনেক মজার স্মৃতি রোমন্থন করে আনমনে প্রায়ই হাসি। আমাদের ডিপার্টমেন্টে আসিফ স্যারের কথা ভুলতে পারবোনা। অসম্ভব রকমের সুদর্শন এবং প্রচন্ড মেধাবী হলেও, আল্লাহ এই শিক্ষকের জীবনের সব দিকে পূর্ণতা দেননাই। আল্লাহ কোনো মানুষকেই পরিপূর্ণ করে সৃষ্টি করেননা, যদি কেউ সব দিক থেকেই পারফেক্ট হয়, তবে সে আল্লাহকে ভুলে যাবে, অহংকারী হয়ে যাবে।

এতো সুন্দর এবং জ্ঞানী একজন মানুষ যখন তার পলিও আক্রান্ত পা’কে টেনে হেঁচড়ে চলাফেরা করতেন, সত্যিই খুব কষ্ট হতো।

মার্কেটিং-এর এক ক্লাসে আসিফ স্যারের মুখে একটি গল্প শুনেছিলাম, এই একটি মাত্র গল্পই একজন মানুষের চিন্তা চেতনার জগৎকে পাল্টে দিতে পারে।

আসিফ স্যার বলছিলেন, একদিন আমরা তিনবন্ধু রিক্সাতে করে যাচ্ছিলাম, রিক্সা জ্যামে আটকে গেলো, পাশেই পাজেরো গাড়িতে অসম্ভব সুন্দরী এক মেয়ে। বন্ধুরা হৈ হৈ করে উঠলো, দেখ দেখ মেয়েটা কি সুন্দর!! আসিফ স্যার নাকি তখন মুচকি হেসে বলেছিলেন, হ্যা গাড়িটা অনেক সুন্দর!

বন্ধুরা তখন স্যারকে চেপে ধরলেন, ব্যাটা আমরা বলছি মেয়েটা সুন্দর, আর তুই বলছিস গাড়িটা সুন্দর, কাহিনী কি! ভাব লস? এমন একটা মেয়েকে বউ হিসেবে পেলে জীবনে আর কি লাগে!

আসিফ স্যার নাকি তখন হাসতে হাসতেই বলছিলেন, দোস্ত তোমার কাছে যদি এমন সুন্দর একটা গাড়ি থাকে, তবে তুমি এর চাইতেও সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করতে পারবা। অতএব মেয়ের দিকে না তাকিয়ে গাড়ির দিকে তাকাও।

আসিফ স্যার ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করতেন, তার কাছে এই ধরনের পুঁজিবাদি কথাবার্তা শুনে আনমনেই হেসেছিলাম। যাক আমরা ইসলামপন্থীরাই বরং ভালো আছি, আমাদের অতশত লোভ নেই, আমাদের বাড়ি গাড়ির আকাঙ্ক্ষা নেই, আমাদের চিন্তা চেতনা পরকাল কেন্দ্রীক। আমরাই ভালো আছি আলহামদুলিল্লা, (আমার অপরিপক্ষ মস্তিস্কের অপরিপক্ক চিন্তা-ধারা)।

বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন যুবকের ছাত্রজীবন শেষ করতে করতেই জীবনের অর্ধেক সময় চলে যায়। তারপর ক্যারিয়ার গঠন। তেত্রিশ-পয়ত্রিশ বছর বয়সে গিয়ে বিয়ের চিন্তা, এরপর বুড়ো বয়সে ইয়াং বউ নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মোকাবেলা।

কি ভাবছেন? হাবশী কালো সাহাবী যদি চরম দরিদ্র অবস্থাতেও রাসূল(সঃ) এর পছন্দ অনুযায়ী সম্ভ্রান্ত বংশীয় সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করতে পারেন, এবং মেয়েও যদি ধেই ধেই করে রাজী হয়ে যেতে পারেন, তবে আপনার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে কেনো?

আপনিতো ইসলামী সংগঠনের বিশাল নেতা ছিলেন, সুন্দর চরিত্রের অধিকারী ব্যাক্তি, আপনার ক্ষেত্রে এমনটি হবেনা কেনো?

সমস্যা এখানেই ভাই, আপনিতো সাহাবীর পর্যায়ের পাত্র নন এবং যে মেয়েকে পছন্দ করবেন সেই মেয়েও তেমন শক্তিশালী পর্যায়ের ঈমানদার নন।

নিজের মেয়ের জন্য যদি উচ্চ বংশীয় ভালো চাকরীজীবি-ব্যবসায়ী পাত্র পাওয়া যায়, তবে আপনার মতো বেকার পাত্রের কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে কোন বাবা ঠেকায় পড়েছে? আপনি কি পারতেন নিজের মেয়েকে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ-এর দিকে ঠেলে দিতে?! আপনি পারলেও আমি কিন্তু পারতামনা!

মেয়ের বাবার কথা বাদই দিলাম, আজ আবেগের বশে বেকার অবস্থায় বিয়ে করে ফেললেন, কিন্তু আগামী কাল যখন অভাবের সংসারে বউ বলবে, “সংসার চালানোর মুরোদ নাইতো বিয়ে করলা কেনো?” তখন মুখ কোথায় লুকোবেন?

সেদিন জামায়াতে ইসলামীর এক শীর্ষস্থানীয় নেতার মেয়ের বিয়ের দাওয়াত পেলাম। দারুণ খুশি হয়েছিলাম! এমন বিশাল মাপের মানুষের পারিবারিক অনুষ্ঠানের দাওয়াত পাওয়াটা সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার। হাসি হাসি মুখেই জিজ্ঞাসা করলাম, পাত্র শিবিরের কোন দায়িত্বে ছিলো? (আমার ধারণা ছিলো কেন্দ্রীয় না হোক অন্তত সাবেক কোনো জেলা-মহানগরী নেতার কাছেই সম্ভবত মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন।)

নেতার মুখটা চুপসে গিয়েছিলো, আমতা আমতা করে বলছিলেন, ছেলে শিবির করেনা, তবে সংগঠনকে পছন্দ করে।

আমারও ম্রিয়মান গলায় জবাব ছিলো, ও……!

আমার যেটা মনে হচ্ছে আর্লি ম্যারেজ ক্যাম্পেইন বাদ দিয়ে আর্লি ক্যারিয়ার ক্যাম্পেইন করাটাই যুক্তিযুক্ত হবে। আপনার ক্যারিয়ার সুন্দর হলে বিয়ে করতে দেরী হওয়ার কথা নয়। কান টানলে যেমন মাথা আসে, ভালো ক্যারিয়ার থাকলে তেমন ঘরে বউ আসে। আজকে যদি আপনার ভালো একটা চাকরী-ব্যবসা থাকতো তবে এভাবে আর্লি ম্যারেজ ক্যাম্পেইন করার প্রয়োজন হতোনা, হুট করে বিয়ে করে সবাইকে চমকে দিতে পারতেন।

আপনার স্বপ্ন যদি হয় ভালো চাকরী করা, তবে এখন হতেই প্রস্তুতি নিতে হবে। ওই চাকরীর উপযুক্ত জ্ঞান-অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ঝাপিয়ে পড়তে হবে।

আপনার স্বপ্ন যদি হয় আপনি ব্যবসা করবেন, তবে এখনই শুরু করে দেন। পরিবারের সাথে কথা বলে, ছাত্রাবস্থাতেই টুকি টাকি বিনিয়োগ করেন।

আপনার যদি মনে হয় লেখালেখিকেই পেশা হিসেবে নিবেন, তবে এখনই ঝাপিয়ে পড়েন, ছাত্রাবস্থাতেই প্রচুর পরিমানে পড়াশোনা করেন, পত্রিকার বিভাগীয় সম্পাদকদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেন।

আর সেটা যদি না পারেন, তবে ৬০বছর বয়সে নিজের ১৫বছর বয়সী পুত্রকে আর্লি বিয়ে দিয়ে পুত্রবধুর মুখ দেখে মরার জন্য মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।

আর্লি ম্যারেজ ক্যাম্পেইন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তোলা থাক। “



আর্লি ক্যারিয়ার ক্যাম্পেইন বিশেষজ্ঞ ও প্রাক্তন শিবির নেতা শামীম রেজা ।



তারপর আমি সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করলাম । এই বিষয় আরেক দিন ।



এক ছাত্রী সংস্হার এক নিকাবী আপু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল শিশির ভাইয়ের বিয়ের অভিনব দাওয়াত কার্ড । সৌজন্য : ইডেন কলেজের ছাত্রী সংস্হার নেত্রী মায়মুনা ।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কি এবং কেন ? :

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন। আদর্শিকভাবে এটি সর্ববৃহৎ ইসলামী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংযুক্ত।

১৯৭১ এর পূর্বে জামায়াতের তৎকালীন এই সংগঠণটির নাম ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ।১৯৭৭ সালে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তারা ইসলামী ছাত্রশিবির নামে আত্মপ্রকাশ করে।।১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শিবির প্রতিষ্ঠিত হয়।প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মীর কাশেম আলী ।





শিবির নেতা তার স্ত্রী ও আত্মীয়াদের সাথে মীর কাশেম আলীর আবেগময় মুহুর্ত

শিবির দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষার জন্য গাইড ও কোচিং সেন্টারের ব্যবস্থা ছাড়াও মেধা যাচাই, ক্যারিয়ার গাইডলাইন কনফারেন্স, কম্পিউটার মেলা, বিজ্ঞান মেলা, সাধারণ জ্ঞানের আসর, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, ক্রিকেট ও ফুটবল প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে থাকে। ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৮, ২০০০, ২০০১ এর প্রলয়ংকরী বন্যার পর শিবিরের ত্রাণবিতরণ কর্মসূচি পরিচালনা করে। ২০০৭ এ সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ দক্ষিনাঞ্চলের জনপদে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি আটকে পড়া দুর্গত মানুষদের উদ্ধারেও অংশগ্রহণ করে। একই ভাবে ২০০৯ সালে পটুয়াখালী, সাতীরা ও খুলনা এলাকার আইলা আক্রান্ত মানুষদের জন্য ত্রাণবিতরণ কর্মসূচি পরিচালনা করে।



ছাত্র সংগঠনটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কতৃক যুদ্ধাপরাদের দায়ে দন্ডিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তির দাবিতে ধংসাত্বক আন্দোলনের কারনে ব্যপক সমালোচিত হয়।



ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অধিভুক্ত ন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম ফর স্টাডি অব টেরোরিজম অ্যান্ড রেসপন্স টু টেরোরিজমের তৈরি ফাইলে ছাত্র শিবিরকে একটি ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আরও বলা হয় যে এটির সাথে পৃথিবীর বৃহৎ জঙ্গী সংগঠনসমূহের সম্পর্ক রয়েছে।

উপসংহার :

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের উর্ধ্বতন নেতাদের বা দায়িত্বশীলদের ভাললাগা-ভালবাসা-প্রেম, তাড়াতাড়ি ক্যারিয়ার গড়ার প্রয়োজনীয়তা ও সামাজিক ব্যবসার উপর কর্মীদের মধ্যে পাঠ্যক্রম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালু করার অনুরোদ করছি ।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ :

https://www.facebook.com/bangladeshislamichhatrashibir

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট :

http://www.shibir.org.bd/

কৃতজ্ঞতা স্বীকার :

১।আর্লি ক্যারিয়ার ক্যাম্পেইন বিশেষজ্ঞ ও প্রাক্তন শিবির নেতা শামীম রেজা ।

২।আমরা প্রেম করবো না বিয়ে করবো তাড়াতাড়ি : https://www.facebook.com/WeWillMarryEarly

বিষয়: বিবিধ

৪৩০৮ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

248081
২৫ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৫
আফরা লিখেছেন : এখানে মীর কাশেম আলীর প্যারিবারিক ছবি গুলো দেয়ার কি কোন প্রয়োজন ছিল !
২৫ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৪
192626
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : কোন মানুষ যখন বড় হয়,সম্মানীয় ব্যক্তিত্ব হয়, অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়, অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব হয় - তখন তার সব কিছু পারিবারিক থাকে না ।

তাদের সব কিছু দেখে মানুষ তাদের জীবনবোধ সম্পর্কে জানতে পারে ও শিখতে পারে ।

তারা ইসলামী ব্যক্তিত্ব । তাদের দেখে মানুষ ইসলামী সংস্কৃতি ও সভ্যতা শিখবে ।

এই সব বিবেচনা করেই আমি ছবি দিয়েছি । তাছাড়া তাদের ছবি নেটে পরিপূর্ণ । তারা চাইলেও তাদের ছবি ও তথ্য নেট হতে রিমোভ করতে পারবেন না ।

ছবি দেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন ছিল । কারণ একটা ছবি ১০০০ শব্দ এবং ক্ষেত্র বিশেষে ১০০০ বাক্য হতে শক্তিশালী । অর্থাৎ একটা ছবি দিয়ে ১০০০ শব্দ এবং ক্ষেত্র বিশেষে ১০০০ বাক্যের সম পরিমান ভাব প্রকাশ করা যায় ।




248095
২৫ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো লিখাটি ভাইয়া।
২৫ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০১
192632
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ ।
আসলে লেখা মধ্য দিয়ে আমি অনেকগুলো বিষয় তুলে ধরেছি । যেমন :
১। আমাদের ফেসবুক কীভাবে ব্যবহার করা উচিত ।
২। ভাললাগা-ভালবাসা-প্রেম আসলেই কি জিনিস ?
৩। ছেলে-মেয়েরা কেন ভাললাগা-ভালবাসা-প্রেমের মায়াজালে আবদ্ধ হয় ?
৪। ছেলেরা মেয়েদের কোন বিষয়গুলো পছন্দ করে ?
৫। ইসলামপন্হীদের ভাললাগা-ভালবাসা-প্রেম এসব বিষয়ের ব্যাপারে কোন ধরনের ভূমিকা পালন করা উচিত ।
৬। ছেলে-মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের করণীয় কাজগুলো কি কি ?
৭। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের বর্তমান ভূমিকা কি হওয়া উচিত ?
৮। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হার বর্তমান ভূমিকা কি হওয়া উচিত ?
৯। সেই টিনওজ বয়স হতে কেন ক্যারিয়ার গঠণের কাজ করতে হবে ?
১০। সামাজিক ব্যবসা কি এবং কেন ?


এই এসব আর কি !!!

248100
২৫ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৩
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : আফরা লিখেছেন : এখানে মীর কাশেম আলীর প্যারিবারিক ছবি গুলো দেয়ার কি কোন প্রয়োজন ছিল !

সহমত। উনার সাংগঠনিক কার্যক্রম শেয়ার করা যেতো কিন্তু ছবি দিয়ে ........... Worried
২৫ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৪
192631
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আমি এই ছবি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা দিয়েছি ।
248102
২৫ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৯
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : মীর কাশেম আলীর ভাইয়ের ছবি কেন?
আপনি যে প্রোগ্রাম করেছেন, তার ছবি দিতেন।
(১)আপনার লেখা থেকে,ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অধিভুক্ত ন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম ফর স্টাডি অব টেরোরিজম অ্যান্ড রেসপন্স টু টেরোরিজমের তৈরি ফাইলে ছাত্র শিবিরকে একটি ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আরও বলা হয় যে এটির সাথে পৃথিবীর বৃহৎ জঙ্গী সংগঠনসমূহের সম্পর্ক রয়েছে।
এই লেখাটা লিখেছে একজন,summer internships এর ছাএ। যে নাকি ইহূদী পরিবার থেকে আসা। তারা গ্লোবের সব জায়গায় এর গন্ধ পেয়ে থাকে।

(২)যুদ্ধাপরাদের দায়ে দন্ডিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তির দাবিতে ধংসাত্বক আন্দোলনের কারনে ব্যপক সমালোচিত হয়।
কিছুটা একমত। আইনি লড়াই ভাল ছিল। এত তাড়াতাড়ি শক্তি শেষ করা উচিৎ হয়নি।
বিরাট জনগোষ্ঠী ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পায়নি।
(৩)আপনি,ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পেয়েছেন, জামাত শিবির থেকে।
২৫ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৪
192633
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : উত্তরে বলছি :
ছবিগুলো দিয়েছি কেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছি এক মন্তব্যের উত্তরে ।
১।
ছাত্র শিবির কি করে - বাংলাদেশের ক্লাস থ্রিতে পড়া ছেলেও জানে ।

তবে শিবির বরাবরই এধরনের অবস্হা মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে ।
ছাত্র শিবিরের মুখপাত্র ছাত্র সংবাদে আমি টানা ৩ বছর লিখেছি । কাছ থেকে দেখেছি , বুদ্ধিবৃত্তিক ও সৃজনশীল লোকদের যথাযথ অবস্হায় না নেওয়ায় তার কুফল কি হয়েছে ? এই অবস্হা বর্তমানে আরো মারাত্মক হয়েছে ।
২। যুদ্ধাপরাদের দায়ে দন্ডিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তির দাবিতে ধংসাত্বক আন্দোলনের কারনে ব্যপক সমালোচিত হয়। এই কথা ১১০ % সত্যি । আপনি যদি দেশে থাকতেন, তাহলে রাস্তার পাশে মুদি দোকানদারী করে এমন লোকদের আর বস্তি এলাকার লোকদের জিজ্ঞাসা করলেই উত্তর পেতেন । আমি যত দুর জানি আপনি দেশে থাকেন না ।

এসব আন্দোলন করতে যেয়ে কম করে হলেও ৫০০ লোক শহীদ হয়েছে এবং ৩০০০ হাজারের বেশী নারী ইজ্জত হারিয়েছে । অনেক পরিবার পথে বসে গিয়েছে । অনেক ছাত্র তার মূল্যবান শিক্ষা জীবন ও ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়েছেন । এসব ক্ষতি বড় কোন নেতার পরিবারের হয়নি । সাধারন কর্মী ও সাধারণ নেতাদের এই অপুরনীয় ক্ষতি কোনভাবেই জামায়াতের বড় নেতারা শোধ করতে পারবেন না ।

৩। কে কীভাবে ইসলাম বোজার ও জানার সুযোগ পেলো বা হিদায়াত পেলো - তার ব্যবস্হা আল্লাহ তায়ালাই করে দেন । তবে এই ক্ষেত্রে পৃথিবীতে কিছু না কিছু নিয়ামক ও উপায়-উপকরণ আল্লাহ যুগে যুগে তৈরী করে রাখেন ।
২৫ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৭
192634
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আমি কোন প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান করি নাই । প্রায় প্রতি দিনই আমি আলাপ আলোচনা করে থাকি । এই ক্ষেত্রে রাস্তা-ঘাট-দোকান-পাঠ-অফিস-আদালত-বাসা-বাড়ি-ফেসবুক-ব্লগ সব কিছুকেই আমি সাধারণভাবে ব্যবহার করে থাকি । আমি আনুষ্ঠানিকতায় বিশ্বাসী নই । কারণ আনুষ্ঠানিকতা প্রায়ই মানুষকে আলোচনার গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে না । আর লোকরাও আলোচনাতে সাবলীলভাবে অংশ নিতে পারে না ।
248128
২৫ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৮
স্বপন২ লিখেছেন : (১)১৯৭১ এর পূর্বে জামায়াতের তৎকালীন এই সংগঠনটির নাম ছিল ইসলামী ছাত্র-সংঘ।
এই বিষয় হাই লাইট করা ঠিক হয়নি।
(২)মীর কাশেম আলীর পারিবারিক ছবি গুলো দেয়ার দরকার ছিল না। আপনি বিজ্ঞ মানুষ।
(৩)পুরো লেখাটার ৮০ ভাগ ছিল, আপুদের নিয়ে লেখা। ২০ ভাগ ছিল পলিটিকাল।
(৩)বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী,বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির,বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা। এই তিন গ্রুপের উচিৎ ছিল,এক একটা করে প্রফেশনাল গ্রুপ তৈরি করা, যারা সংগঠনের ইন সাইডে জড়াবে না। সংগঠনের বাহিরে
থ্রেট ও উন্নয়ন মূলক এবং সারা বিশ্বের বিভিন্ন মডেল নিয়ে গবেষণায় করবে। যা Administrative Bodies কাছে পেশ করবে। জানি না জামাত শিবিরের এ ধরনের কিছু আছে কিনা।
(৪)লেখাটা কিছুটা আক্রমণার্থক হয়েছে।
(৫)৫০০ লোক শহীদ হয়েছে এবং ৩০০০ হাজারের বেশী নারী ইজ্জত হারিয়েছে । গুটি কয়েক লোকের জন্য। আইনি লড়াই যথেষ্ট ছিল
(৬)আপনি একা আর কি করবেন। লেখালেখি ছাড়া।
আমি দেশের বাহিরে থাকি। আপনার জন্য http://www.storyofbangladesh.com/
সংযুক্ত করলাম
২৬ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৪৮
192795
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ । আশা করি আমার সাথেই থাকবেন ।
248136
২৫ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:২৮
বাজলবী লিখেছেন : ভালো লাগলো।জাযাক অাল্লাহ খাইর।
২৬ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৪৮
192796
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ
248325
২৬ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৩৩
বেআক্কেল লিখেছেন : এখন আমি হাঁড়ে-ঠ্যাঙ্গে বুইজতে পারছি আমনের মত গুনী মানুষ রে ছাত্রশিবির কিল্লাই চিরতরে বহিষ্কার করিছে। আমনের বেদনার সাথে আমিও একমত, তবে আমনের মত হিংসার বাঁশ আমি দেতে জানিনা। আমনে দারুন দক্ষ মানুষ, চেষ্টা কইরলে সালমান রুশদীকেও হারাইতে পারিবেন। সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যত খাড়াই আছে।
২৬ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:৪৯
192797
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আমাকে কোন দল বা ব্যক্তি বহিস্কার করেনি বা হৃদয় থেকে মুছে ফেলেনি ।

আপনাকে ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File