আল আকসা মসজিদসহ ফিলিস্তিন স্বাধীন করার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান ও আল কুদস দিবসের শুভেচ্ছা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২৪ জুলাই, ২০১৪, ০৬:৩৬:৩৮ সন্ধ্যা



http://elderofziyon.blogspot.com/2014/01/hamas-calls-to-give-military-training.html

বিশেষ ঘোষণা :

১.এই পোস্টে যারা গঠণমূলক মন্তব্য করবে তাদের পুরস্কৃত করা হবে ।

২.সবাইকে পোস্টের সাথে সম্পৃত্ত এই পেজটিতে লাইক করার পাশাপাশি এই পেজের দৃষ্টিভঙ্গিকে বাস্তবে প্রয়োগ করবে তাদের পুরস্কৃত করা হবে : https://www.facebook.com/pages/%E0%A6%87%E0%A6%B9%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A7%9F-%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A8/790669470984481 ( ইহুদী ও ভারতীয় পন্যের বিকল্প বাংলাদেশি পন্য ব্যবহার করুন )

মূল লেখা :

আল কুদস দিবস কি?:

বিশ্বব্যাপী প্রত্যকে রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে ১৯৭৯ সাল হতে বিশ্ব আল কুদস দিবস হিসেবে পালন করা হয় । আল-কুদস মানে মুসলিম জাতির দ্বিতীয় কেবলা বায়তুল মুকাদ্দাস খ্যাত আল-আকসা মসজিদ যা ফিলিস্তিনে অবস্হিত । ফিলিস্তিন আজ মুসলিমদের হাতছাড়া হয়ে গেছে । এ দিবসটিতে ফিলিস্তিনমুক্ত করার জন্য জনমত গঠণ করা হয় । এবছর ২৫ জুলাই ২০১৪ তারিখ শুক্রবার বিশ্ব আল কুদস দিবস হবে ।



বায়তুল মুকাদ্দাস বা মাসজিদুল আকসার গুরুত্ব:

১. মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) যে তিনটি মসজিদের উদ্দেশ্যে সফর করার কথা বলেছেন তার অন্যতম হচ্ছে বায়তুল মুকাদ্দাস।

২. ফিলিস্তিনের জেরুজালেম নগরীতে অবস্থিত এই মসজিদটি মুসলিমদের প্রথম কেবলা ও পবিত্র স্থান ।

৩. মুসলিম ইতিহাসের অগণিত স্মৃতি বিজরিত ঘটনার সাথে এর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।



৪. অসংখ্য নবী রাসূলের পদধূলে ধন্য এই নগরী।

৫. মিরাজ রজনীতে এই মসজিদেই রাসূল সা. সমস্ত নবীগণের ইমামতি করেছিলেন।

৬. সুলায়মান ( আ. ) সর্বপ্রথম এই সমজিদ নির্মাণ করেন। অসংখ্য নবী রাসূলের দাওয়াতী মিশন পরিচালিত হয়েছে এই মসজিদকে কেন্দ্র করে।

দু:খজনক দিক :

রাসূল ( সা. ) বলেন “বায়তুল মাকদিস"-এ এক রাকাত নামায পড়লে পঞ্চাশ হাজার রাকাত নামাজের সওয়াব হয়।” । কিন্তু মুসলিমরা আজ সেই ছোয়াব থেকে বঞ্চিত। তারা তাদের পবিত্রস্থানে যেতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য পর্যন্ত সেখানে যাওয়া নিয়ন্ত্রিত ।

ইহুদীরা সেখানে মুসলিমদের যাতায়াত নিষিদ্ধ করছে বা বিধি নিষেধ আরোপ করেছে । হাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্যমন্ডিত এই নগরীতে মুসলিমরাই আজ নিগৃহিত। অথচ উড়ে এসে জুড়ে বসা ইহূদীরা সেখানে বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কর্তৃত্ব । শুধু ফিলিস্তিনী মুসলিমদের জন্যই নয়, সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহ :

১. ফিলিস্তিন আয়তনে মাত্র ২৭হাজার বর্গ কিলোমিটার। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ইহূদী খৃষ্টান ও মুসলমান তিন ধর্মের লোকদের কাছেই ফিলিস্তিন পূণ্যভূমি হিসেবে গণ্য।

২. দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর রা. এর যুগে ইসলামী সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটে। তারই শাসনামলে ৬৩৬ খৃষ্টাব্দের ২০ আগস্ট ঐতিহাসিক ইয়ারমুকের যুদ্ধের মাধ্যমে খৃষ্টানদের হাত থেকে মুসলমানরা এই পবিত্র নগরীর কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। সে সময় নিজের ভৃত্যকে উটের পিটে বসিয়ে সেই উটের রশি টানতে টানতে এই মহান নগরীতে এসে ইসলামের বিজয় কেতন উড্ডয়ন করেন খলীফা ওমর ( রা. )। এর পর থেকে ফিলিস্তিন মুসলিমদেরই দখলে থাকে।

৩. মাঝে বিশ্বব্যাপী খৃস্টানদের ক্রুসেড চলাকালে স্বল্পকলের জন্য আল কুদস্ খৃষ্টানদের কর্তৃত্বে গিয়েছিল। কিন্তু সালাহউদ্দীন আইয়ূবী তা পুনরায় উদ্ধার করেন । এরপর থেকে মুসলিমরা নির্বিঘ্নে পবিত্র এই নগরীতে তাদের নিজেদের ধর্ম কর্ম করে আসছিলো। একে কেন্দ্র করে মুসলিম দেশ সমূহে গড়ে উঠেছিলো ঐতিহ্যের আবহ। আরব বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিলো ফিলিস্তিন ।

৪. বিপত্তি বাধে বিগত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। ১৯৪৮ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য -এর নেতৃত্বে অমুসলিমরা কৃত্রিম রাষ্ট্র ইসরাইল সৃষ্টি করে মুসলিম অধ্যুষিত তেলসমৃদ্ধ অঞ্চলকে তাদের কর্তৃত্বে রাখার জন্য । সারা বিশ্ব থেকে ইহুদিদের এনে জড়ো করা হয় এই রাষ্ট্রে । আরব আবাসভূমিতে গড়ে তোলা হয় ইহুদি বসতি । আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এ ব্যাপারে জোর তৎপরতা চালায়।

৫. ইসরাইলের অভ্যুদয়ে দীর্ঘদিন এ অঞ্চলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা নিজভূমে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি বসতি এক কথায় কারাগারের সমার্থক হয়ে ওঠে ।

৬. ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট ও যুক্তরাজ্য -এর নেতৃত্বে অমুসলিম মদতপুষ্ট ইসরাইল মিসরের সিনাই ও গাজা এবং সিরিয়ার বেকা উপত্যকা দখল করে। পশ্চিম তীরে জর্ডানের আনুষ্ঠানিক কর্তৃত্ব বিলুপ্ত হয় । জেরুজালেমসহ আল আকসা মসজিদ চলে যায় ইসরাইলের নিয়ন্ত্রনে। লাখ লাখ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু প্রথমে জর্ডানে তারপর লেবাননে এবং সবশেষে তিউনিসিয়ায় আশ্রয় নেয়।

৭. ১৯৭৩-এর আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইল বড় ধরনের সাফল্য পায়নি। তবে এ যুদ্ধেও ফিলিস্তিনি জনপদে চলে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ। পিএলও প্রধান ইয়াসির আরাফাত আর তার সহকর্মীরা যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন আম্মান থেকে বৈরুত—বৈরুত থেকে তিউনিসে।

অন্যদিকে একের পর এক ইহুদি বসতি গড়ে তোলা হয়েছে পশ্চিম তীর ও গাজায়। যেসব ফিলিস্তিনি এর প্রতিবাদ করেছে তাদের ওপর ট্যাংক চালিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি ইসরাইল। যখন-তখন সন্ত্রাস দমনের নামে ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে চড়াও হয়। তাদের বাড়িঘরে বুলডোজার চালায়। তাদের নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করে।

৮. আরাফাতের মৃত্যুর পর মাহমুদ আব্বাস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তাঁর অমুসলিমদের তাবেদার ঘেঁষা নীতি তাকে ও পিএলওকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলে।

২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে হামাস সরকার গঠন করে। হামাস পিএলও’র তুলনায় কট্টর ইসরাইল বিরোধী। তারা ইসরাইলের অস্তিত্বকে মেনে নেয়নি। তাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হামাস সরকারের বিরুদ্ধে শুরু হয় ষড়যন্ত্র ।



ফিলিস্তিনি নারী মুক্তিযোদ্ধা । মুসলিম বিশ্বে এক মাত্র ফিলিস্তিনি নারীরাই সত্যিকারভাবে ইসলাম অনুযায়ী নারী স্বাধীনতা ও নারী অধিকার পেয়ে থাকে । এজন্য ফিলিস্তিনি নারীরা স্বদেশ ও মুসলিম উম্মার জন্য নিবেদিতাপ্রাণ ।

প্রতিদিনই ইসরাইলি ট্যাংক ফিলিস্তিনিদের বসতিতে ঢুকে পড়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতে থাকে দীর্ঘদিনের বাস্তুভিটা। এসবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘ কেউ মুখ খোলেনি।

বরং ফিলিস্তিনি ‘মুক্তিযোদ্ধাদের’ বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হামাসের ওপর চাপ দেয়। এবং মিডিয়ার মাধ্যমে তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে যায় ।

৯. ইসরাইলিরা ট্যাংক বহর নিয়ে লাগাতার ফিলিস্তিনি বসতি গুঁড়িয়ে দেবে, হত্যা করবে তাদের নেতাদের—তারা সে সবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে না, চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা কি সম্ভব!

ফিলিস্তিনিদের এই ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত প্রতিরোধ সংগ্রামের নাম ইনতিফাদা। ইসরাইলি জুলুম-নির্যাতন রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার হলো ইনতিফাদা। ইসরাইল ও তার মুরুব্বিদের ভয় হামাস ও ইনতিফাদা।



ফিলিস্তিনি নারী মুক্তিযোদ্ধা

১০. অমুসলিম বিশ্ব শক্তি ইসরাইলকে স্বীকৃতি ও তার নিরাপত্তার বিনিময়ে একটা মরা কাটা পোকায় খাওয়া ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র চায়। ফিলিস্তিনে গণতন্ত্র থাকা, না থাকা তাদের বিবেচ্য নয়। তাদের লক্ষ্য সেখানে ইসরাইলবান্ধব এক সরকার বহাল রাখা।

১১.লেবাননে হিজবুল্লাহর বিজয়ের যে প্রভাব হামাসের মাধ্যমে ফিলিস্তিনে সূচিত হয় তা ইসরাইল ও তার মুরুব্বিরা ভালো চোখে দেখেনি। সেজন্য লেবাননে ব্যর্থতার পরই হামাসকে টার্গেট করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত হয় হামাস সরকার ।



ফিলিস্তিনি নারী মুক্তিযোদ্ধা

ইসরাইল রাষ্ট্রের হাত প্রতিদিনই ফিলিস্তিনিদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে। তাই মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। ফিলিস্তিনের মজলুম জনতার পাশে দাঁড়াতে হবে ।



২০১৪ সালের জুলাইয়ে সফলভাবে হামাস আবাবিল নামক দ্রোন ব্যবহার করে । মুসলিম বিশ্বে ইরানের পরই দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে ফিলিস্তিনি সংগঠণ হামাসের দ্রোন প্রযুক্তি আছে যারা সফলভাবে দ্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম

আল কুদস দিবস কি করা হয় ? :

পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে বিশ্ব আলকুদস দিবস হিসেবে পালন করা হয় বিশ্বব্যাপী । এ দিবসটিতে জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনমুক্ত করার জন্য জনমত গঠণের জন্য বিক্ষোভ শোভাযাত্রা হয় , আলোচনা সভা হয় এবং কুইজ ও রচনা প্রতিযোগিতা হয় ৷

এদিন বিক্ষোভ মিছিল হয় । বিক্ষোভকারীরা “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক এবং ইসরাইল ধবংস হোক বলে শ্লোগান দিয়েছে৷ ইসরাইলের প্রতিষ্ঠার সহযোগী সৌদি আরব ধ্বংস হোক ।“ প্রভৃতি স্লোগান দেয় এবং প্ল্যাকার্ড বহন করে ।

আল কুদস দিবস-এর আলোচনা সভায় বক্তারা কি বলেন ? :

এদিন আলোচনা সভা হয় । আলোচনা সভায় বক্তারা আবেগময়ী কন্ঠে বলেন :

১. ইহুদীবাদী ইসরাইল ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র যে মুসলিম বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকী ।

২. আমেরিকা শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য নয় গোটা বিশ্ব মানবতার শত্রু৷ এদেশ বিনা বিচারে সন্দেহের বশে মানুষকে মানবিক নির্যাতন করে, কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বছরের বছর আটক রাখে, মানবাধিকার লঙ্গন করে থাকে । বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আগ্রাসন চালায়৷ বিভিন্ন দেশকে অস্হিতিশীল করে ।

৩. ইসরাইলী বাহিনী প্রতিদিন নিরপরাধ ফিলিস্তিনি সাধারণ নাগরিকদের হত্যা করে চলেছে৷ আজ পশ্চিমা বিশ্ব মানবাধিকারের দোহাই তুলে শক্তিশালী ইসরাইলী বাহিনীর সামনে অসহায় ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মরক্ষার অধিকারটুকু কেড়ে নিয়েছে৷

৪. ফিলিস্তিনি জনগণ যখন ইসরাইলী বাহিনীর বর্বরচিত আক্রমণের সামনে ঢিল ছুড়ে তখন পশ্চিমা বিশ্বে ফলাও করে প্রচার করে বলা হয় এরা সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত ৷ এরা মানবাধিকার লঙঘন করছে৷

অথচ ইসরাইলী সৈন্যরা যখনফিলিস্তিনি জনগণের ঢিলের জবাবে অত্যাধুনিক রাইফেলের বুলেট দিয়ে শিশু বৃদ্ধ ও মহিলাদের হত্যা করে তখন মানবাধিকার লঙঘনের কোন প্রশ্ন করা হয় না৷ আর এভাবেই যুগের পর যুগ চলছে ফিলিস্তিনিদের মাতৃভুমি রক্ষার আন্দোলন৷

৫. মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য ও আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্হা ও বিশ্বাস যে কোন শক্তির বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করা সম্ভব ৷ তার সাথে সাথে মুসলিমদের প্রতিরোদ সংগ্রামে সর্বাত্ত্বকভাবে যাপিয়ে পড়তে হবে ।

৬. বিশ্বে ১৮৫ কোটি মুসলিম থাকা সত্ত্বে গুটি কয়েক ইহুদী বাইতুল মোকাদ্দাস দখল করে রেখেছে সম্মিলিত অমুসলিম শক্তির মদদে ৷ আর একমাত্র মুসলিমদের মধ্যে অনৈক্যের জন্যই আজ বিশ্বে মুসলিমরা নির্যাতিত৷ মুসলিমদের ঐক্যই পারে তাদের হারানো ঐতিহ্য ও বাইতুল মোকাদ্দাসকে ইহুদীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে ৷

৭. মুসলমানদের প্রথম কেবলা ইহুদীদের দখলে রেখে কোন মুসলিম নিজেকে সম্মানিত মনে করতে পারে না৷ এই কেবলার সাথে মুসলিমদের অনেক ঐতিহ্য জড়িত রয়েছে৷

৮. ফিলিস্তিনের জন্য প্রতিরোধ সংগ্রামরত হামাস আর হিজবুল্লাহ সংগঠণের মান মর্যাদা ও শৌর্যবীর্য কেবল ফিলিস্তিনের মধ্যেই সীমাবন্ধ নয়, বরং এটা মানবজাতি ও বিশ্ববাসীর মান মর্যাদার বিষয়৷

৯. ইসরাইলি বাহিনী সামরিক দিক থেকে শ্রেষ্ঠ এবং অপারজেয় বলে যে সব গালগল্প গড়ে উঠেছে, ফিলিস্তিনের সাহসী তরুণ এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ সদস্যদের কিছু তৎপড়তা তা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে৷ আর এজন্য সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি মাথায় না রেখে সীসা ডালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ মুসলিম বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে ।

১০. ফিলিস্তিনের বিরাজমান সংকট নিরসনের জন্য ফিলিস্তিনের জনগণকে তাদের নিজেদের ভাগ্য নিজেদের রচনা করার সুযোগ দিতে হবে । দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ৬০ লক্ষ ইহুদির প্রাণ হারানোর কথা সত্যি হয়ে থাকলে ওই যুদ্ধে আরো যে ৫ কোটি ৪লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলো তাদের জন্য কেনো দুঃখ করা হয় না ? আর ৬০ লক্ষ ইহুদি নিহত হয়ে থাকলে তা ইউরোপে হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনের জনগণের অপরাধ কি?কথিত হলোকাস্টের ঘটনা যদি সত্যিই হয়ে থাকে তবে কেনো স্বতন্ত্র গোষ্ঠি গঠন করে এই কথিত হত্যাকান্ডের ব্যাপারে তদন্ত চালানোর অনুমতি কেনো দেয়া হয় না? হলোকাস্টের বিরোধিতাকারীদের কেনো রক্তচক্ষু দেখানো হয় বা তাদেরকে কেনো কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়? আর কেনোইবা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র হলোকাস্টের অজুহাত দেখিয়ে সুবিধা আদায় করছে?

১১. মুসলিম মাত্রই শান্তিকামী, নির্যাতনকামী নয় এবং অমুসলিমদের কোনো চাপিয়ে দেয়া নীতি তারা মেনে নেবে না৷

১২. আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য-এর মদদপুষ্ট ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক নির্যাতন এবং কিছু কিছু সৌদি আরবের মতো কিছু আরব দেশের অসহযোগিতার কারণে ফিলিস্তিনিরা বর্তমান শতাব্দীতে বিশ্বের সবচেয়ে মজলুম জাতিতে পরিণত হয়েছে ।

১৩. ফিলিস্তিনী জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসনের প্রতি মার্কিন সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বলেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ইসরাইল বিরোধী ৩০টি প্রস্তাবে ভেটো প্রদান করেছে ৷ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অর্ধেকের বেশি প্রস্তাবে আমেরিকা যু্ক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছে যার অধিকাংশ প্রস্তাবই ছিলো ফিলিস্তিন সম্পর্কিত ৷

১৪. ইহুদিবাদী ইসরাইল ৫০ লক্ষ ফিলিস্তিনী শরণার্থীকে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে জাতিসংঘের ইশতেহারের প্রতি কর্ণপাত না করে মূলত এ সংস্থাকে হাসির পাত্রে পরিণত করেছে ৷ ইহুদিবাদী ইসরাইল বিভিন্ন ঘাঁটি তৈরি করে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে এই দেশগুলোর তেল বিক্রির অর্জিত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে ৷

উপসংহার:

বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে লক্ষ লক্ষ মানুষের মিছিল করলেও বাংলাদেশ শুধু ব্যতিক্রম । আল কুদস দিবসটি রমাদানের শেষ শুক্রবার । কিন্তু আমাদের দেশের লোকরা আপনজনদের কাছে বা নিজেদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকি বলে এদিনটি আমাদের অগোচরে থেকে যায় । আর আমরাও বিশ্বের অন্যন্য দেশের মতো এদিনটি উদযাপন করতে পারি না ।

যাক, আমাদেরকেও বিশ্বের মুসলিমদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে দখলদারদের হাত থেকে পবিত্র বায়তুল মোকাদ্দাস মুক্ত করার অঙ্গীকার এবং মজলুম ফিলিলিস্তনীদের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করতে হবে ।

অমুসলিম প্রভাবাধীন গণমাধ্যম্যগুলো অপপ্রচার চালিয়ে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিলে লক্ষ লক্ষ লোকের উপস্থিতির বিষয়টিকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে থাকে । বাংলাদেশের প্রায় সব টিভি চ্যানেলসহ ফ্রক্স নিউজ, স্কাই নিউজ, বিবিসি, সি.এন.এন., ডয়েচে ভেলে ও ইউরো নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দখলদার ইসরাইলের আগ্রাসন, হত্যা ও ধবংসযজ্ঞের ব্যাপারে আল কুদস দিবসের আয়োজকদের ও মু্ক্তিকামী জনতার সমালোচনাধর্মী বক্তব্যকে এবং কুদসদিবসের মিছিলে মুসলিমদের অংশ গ্রহণেরবিষয়টিকে গুরুত্বহীন বা খাটো করে দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে থাকে ।

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ইসরাইল বিরোধী অন্তত ৩০টি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যার অধিকাংশ প্রস্তাবই ছিল ফিলিস্তিন সম্পর্কিত৷ নির্যাতিত ফিলিস্তিনীদের প্রতি সহমর্মীতা ও সত্য প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে বিশ্ব কুদস দিবস সব সময়ই বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী রাখে । আমাদের এদিনটিকে যথাযথ মর্যাদদ দিয়ে পালন করতে হবে ।

বিষয়: বিবিধ

২০৫৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

247916
২৪ জুলাই ২০১৪ রাত ১০:০৬
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৪ জুলাই ২০১৪ রাত ১০:৩৭
192496
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ।
247967
২৫ জুলাই ২০১৪ রাত ০৩:৫৯
স্বপন২ লিখেছেন : হিজবুল্লাহ সদস্যদের মধ্যৈ আপনিও আছেন। আসাদ
সরকারকে সাহায্য করে যাচ্ছে। ইরানের কয়েক
হাজার মিলিশিয়া রয়েছে সিরীয়াতে। আপনিও শিয়া
নাকি। মনে হয় না আপনি ইরানে কখনও গিয়েছেন।
২৫ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:৩৪
192525
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনি সম্ভবত লেবাননের হিজবুল্লাহ সংগঠণের কথা বলছেন ।
আমি বিনীতভাবে বলছি, আমি কখনোই বিদেশের কোন সংগঠণের সাথে যুক্ত ছিলাম না ।

আমি এক সময় ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পৃত্ত ছিলাম । বর্তমানে আমি এই সংগঠণের সাথে যুক্ত নই ।
তবে আমি নিজেই একটা সংগঠণ তৈরী করতে চাচ্ছি যার লক্ষ্য হবে অনেকটা এমন :

আমি ভারত, ভুটান, নেপাল - ছাড়া কোন দেশ ভ্রমন করি নাই । উপরন্তু এসব দেশ পারিবারিকভাবে ভ্রমন করেছি । নিজে কখনো একা দেশের বাহিরে যাইনি । সুতরাং ইরান যাওয়ার প্রশ্নই আসে না ।

আমি তো দুরে থাক, আমার পরিবারের কোন সদস্যই বাংলাদেশের প্রচলিত ইসলাম ছাড়া অন্য কোন মতবাদের সাথে যুক্ত নেই । গুটি কয়েক লোক ছাড়া বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলিম সুন্নী । ফিকহগতভাবে তারা সবাই হানাফী মাযহাব অনুসরণ করেন । এমন কি বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইনও হানাফী মাযহাব অনুযায়ী করা । তবে বাংলাদেশে সৌদি আরব সমর্থক আহলে হাদিস যারা বাংলাদেশের সাধারণ মুসলিমদের কাছে লামাজহাবী, ওহাবী, রাফাদানি ও রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের দালাল বলে পরিচিত । তবে ইদানিং বাংলাদেশে দেওবন্দী (কওমী মাদ্রাসার লোকরা), মওদুদী (জামায়াতে ইসলামীর লোকরা ) সৌদি আরবের অর্থ সহায়তায় শক্তিশালী হচ্ছে । কাদিয়ানী নামক একটা দলও রয়েছে যাদের অমুসলিম শক্তি মদদ দান করে যাচ্ছে । এসব উপদলকে মুসলিম জনসাধারণ সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে থাকে ।

ইদানিং আমি লক্ষ্য করছি, নেটে শিয়া মুসলিমদের পদচারণা । এদের সংখ্যা খুবই কম । ঢাকার প্রাচীন অংশে কিছু শিয়া মুসলিম দেখা যায়। তারা তাদের মসজিদে নামাজ পড়ে এবং ইমামবারা নামক কল্পিত ইমাম হুসেন রা. - এর কবরে কান্নাকাটি করে এবং সমস্যায় পড়লে মানত করে । এধরনের একটি উপাসনালয় আমার দেখার সুযোগ হয়েছিল । এটা পুরান ঢাকায় হুসেইনী দালান বলে পরিচিত ।


আপনাকে ধন্যবাদ ।

আপনাকে আল কুদস দিবসের শুভেচ্ছা ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File