সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক শাসকদের উৎখাত করা মুসলিমদের ঈমানি দায়িত্ব
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২০ জুলাই, ২০১৪, ০২:০০:২৮ রাত
পটভুমি :
কয়েক মাস ধরে লক্ষ্য করছি, সিরিয়া ও ইরাকে যৌন জিহাদ চালু করেছেন সৌদি আরবের হুজুররা । তারা এই দুই দেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী পাঠিয়ে এসব দেশকে অস্হিতিশীল করে ফেলছে । মেয়েদের ঘর থেকে টেনে হিচড়ে বের করে যৌন জিহাদের অংশ হিসেবে ৩০ মিনিটের জন্য বিয়ের করতে বাধ্য করছে । ইরাকে অবস্হানরত সন্ত্রাসীদের নেতা নিজেকে খলিফা বলে ঘোষনা দিয়েছেন এবং শিরক – বিদাতের কারণে মক্কা শরীফ দখল করে ধ্বংস করার মতো কথা বলা দৃষ্টতাও দেখিয়েছেন । বাস্তব অবস্হা হলো এসব সন্ত্রাসী সৌদি আরবের অর্থ সাহায্যপ্রাপ্ত এবং আমেরিকা ও ইসরাইলের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ।
আজ দেখলাম, ফেসবুকে একটা স্যাটাস । সেই স্যাটাস লিখেছে তিন বাঙ্গালী মেয়ে । কিন্তু ওহাবী মতে মেয়েদের বাবা-ভাই-স্বামী ছাড়া ঘরের বাহিরে বের হওয়া গুনাহ আর প্রতিবাদ করা হতো দুরের ব্যাপার । তারা আমেরিকার মতো দেশে থেকেও প্রতিবাদ করতে যেয়ে লিখেছে -
Painted our cars with Palestinian colors/flags/quotes and with 100+ other cars we are driving into DC to make the statement that we Americans stand with Palestine! Free Gaza!!!!!
https://www.facebook.com/nashiha.pervin , https://www.facebook.com/monika.sarker
এবং https://www.facebook.com/masouna.kochaji
এসব কোমলমতি ও নিষ্পাপ মেয়েরা পর্যন্ত ফিলিস্তিনের মুসলিমদের জন্য প্রতিবাদের উপায় খুজে বের করেছেন । কিন্তু ওহাবী মতবাদে আচ্ছন্ন ও তেতুল হুজুরী মতবাদ পোষনকারী হুজুরদের দ্বারা পরিচালিত সংগঠণ মেয়েদের জড়বস্তু বানিয়ে রেখে বাড়িতে স্টার জলসা ও স্টার প্লাস দেখার ব্যবস্হা করে রেখেছেন । তারা মেয়েদের মসজিদে প্রবেশ করা হারাম ঘোষনা করেছেন । কিন্তু নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের বয়ফ্রেন্ডের সাথে যৌনতা করা জায়েজ বলে পরোক্ষভাবে ঘোষনা করেছেন । এসব বিষয় ভাবছিলাম । চিন্তা করলাম , মুসলিমদের সমস্যার উৎস মুখটা কোথায় ? চিন্তা করে বের করলাম : মুসলিমদের সবচেয়ে বড় সমস্যা সৌদি আরব । এই কয়েক দিন আগে ইসরাইলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলেছে , ইসরাইলের শেষ ভরসা ও সবচেয়ে আস্হাভাজন দেশ সৌদি আরব । তারপর ভারত । তারপর আমেরিকা । এই কথা আসলে সঠিক । এই প্রায় এক বছর হলো সৌদি আরব মিশরের একমাত্র ও প্রথম গণতান্ত্রিক শাসক রাষ্ট্রপতি মুরশী ও তার সমর্থকদের নির্মমভাবে উৎখাত করে তার অনুচর সিসিকে ক্ষমতায় বসিয়েছে সৌদি আরবের বন্ধু ইসরাইলকে সুরক্ষিত রাখার জন্য । সুতরাং এজন্য আমাদের সৌদি আরব দেশটা কীভাবে গঠিত হলো তার সম্পর্কে জানতে হবে । আজ এই জানার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করার জন্য আমি আমার নতুন উদ্যোগ চালু করলাম । আশা করি আপনারা আমার সাথেই থাকবেন ।
মূল লেখা :
সৌদি আরব সত্যিকার মুসলিম রাষ্ট্র নয় । আর ইসলামী রাষ্ট্র হওয়া তো দুরের বিষয় । সৌদি আরব পরিচালিত হয় ওহাবি মতবাদ দ্বারা । অনেকে বলে থাকেন ওহাবী মতবাদ বলে কিছু নেই । ওহাবী বলে আল্লাহকে গালি দেওয়া হয় (নাউজুবিল্লাহ)।
আমার কথা হলো : ওহহাব আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম । এটি কি করে একটি গালি হতে পারে? ইয়া ওয়াহ্হাবু শব্দের অর্থ হে সৎকার্যে পুরুস্কারদাতা । এটা আল্লাহর গুণবাচক নাম । তিরমিজি শরীফের হাদিস বলা আছে যে বা যারা আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো মুখস্হ করবে ও পড়বে সে জান্নাতে যাবে । আর এই হাদিসে বলা আছে ৯৯ টার অধিক আল্লাহর গুণবাচক নাম আছে । আর এই হাদিসে ৯৯ টা গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে ।
সৌদি আরবের নজদ প্রদেশের লোক মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহ্হাব ৭ টি মূলনীতির উপর মুয়াহিদীন নামক সংগঠণ কায়েম করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালান ওসমানীয়া খিলাফতের শাসকদের বিরোদ্ধে । তার প্রবর্তিত নীতি ভারতীয় ও পশ্চিমা লেখকরা ওহাবী মতবাদ বলে অভিহিত করে থাকেন ।
মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহ্হাবের সমর্থক-নেতা-কর্মীরা ১৮০৩ সাল হতে ১৮০৯ সাল পর্যন্ত হজ্জ বন্ধ করে রাখে । ১৮১৩ সাল পর্যন্ত তারা মক্কা শরীফ দখল করে রেখে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে । এভাবে তারা সিরিয়া, ইরাক, জর্দান, ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী তৎপড়তা চালায় ব্রিটিশদের ও অন্যান্য অমুসলিমদের সহযোগীতায় । তারা রাসুল ( সা. ) -এর কবরকেও অপবিত্র করে । তারা ইমাম হোসাইনের মাযার-সহ অসংখ্য ধর্মীয় স্হাপনাসহ ঐতিহাসিক স্হাপনা ধ্বংস করে ফেলে । অসংখ্য ইসলাম ধর্মবিদ্যা বিশারদকে তারা হত্যা করেন । তারা প্রকাশ্যেই ইসলামবিরোধীতায় লিপ্ত হোন এবং ওসমানীয়া খিলাফতের শাসকের বিরোধীতা করে অন্তর্ঘাতমূলক তৎপড়তা চালাতে থাকেন অমুসলিম শক্তির মদদ ও সমর্থন নিয়ে । বর্তমানে তার বা তাদের উত্তর পুরুষ বা তাদের বংশধর বা মতবাদের সমর্থক হলো সৌদি শাসক সম্প্রদায় ।
সুতরাং কারো নামের খন্ডাংশ ব্যবহার করে অবশ্যই একটা দলের নাম করণ হতে পারে । এটা দোষনীয় কিছু নয় । ইয়াহিয়াহ্ শব্দের অর্থ জীবন্ত । কারো নাম ইয়াহিয়াহ্ রাখলেই সে মরে গেলেও জীবন্ত থাকতে পারে না । কোন দলের নাম ওহাবী রাখা হলেও তাদের আল্লাহর গুনবাচক নাম ওয়াহ্হাব হয়ে যায় না ।
( দেখুন :
https://www.facebook.com/SaudiArabianMonarchy/ আমরা সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক শাসকদের পছন্দ করি না )
ইসলামের কোন বিষয়ে মন্তব্য করতে হলে ভালভাবে ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করার সাথে সাথে বিবেক ও বুদ্ধিকেও কাজে লাগাতে হয় ।ইসলামে কোন hanafi, shafeyee, maleki, hambly বা ahle hadis এজাতীয় কোন বিভাজন নেই । এগুলো নিয়ে মাতামাতি করা উচিত নয় । কারণ আল্লাহ বলেছেন :
১. আল্লাহর পথে সংগ্রাম কর যেভাবে সংগ্রাম করা উচিত । তোমাদের তিনি মনোনীত করেছেন । তিনি তোমাদের ধর্মে তোমাদের জন্য কঠিন কোন বিধান দেননি । এ ধর্ম তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের ধর্মের অনুরুপ । আল্লাহ পূর্বে তোমাদের নাম করণ করেছেন মুসলিম আর এ কিতাবেও করেছেন যাতে রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষী স্বরুপ হয় । সুতরাং তোমরা নামাজ কায়েম কর, যাকাত দাও ও আল্লাহকে অবলম্বন কর । তিনিই তোমাদের অভিভাবক । এক মহানুভব অভিভাবক । এক মহানুভব অভিভাবক ও এক মহানুভব সাহায্যকারী । সুরা হজ্জ :৭৮
২. বল, আমার সালাত, আমার ইবাদত, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু বিশ্বজগতের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে । তার কোন অংশীদার নেই, আর আমাকে এ ব্যাপারেই তো আদেশ করা হয়েছে, আর মুসলিমদের মধ্যে আমিই প্রথম ।( সুরা আনয়াম : ১৬২ -১৬৩ )
কিন্তু বাস্তব অবস্হা হলো সৌদি আরবের হুজুররা বা শাসকরা ইসলামের কথা আসলে তারা নিজেদের সালাফী, মুয়াহিদীন, আহলে হাদিস ইত্যাদি পরিচয় দেন । আমাদের সমাজে এসব পরিচয় দানকারীদের লামাযহাবী বা রাফাদানী বলা হয় ।
সৌদি আরবের শাসক সম্প্রদায়কে আমি শয়তানের শিং বলে আলেম সমাজের একটা অংশ মনে করে থাকে । কারণ এই দেশটার প্রতিষ্ঠাতা রাজা ইবনে আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ পনের বছর বয়সে বিয়ে করার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ২২ টা বিয়ে করেন । তার ছেলে-মেয়ে কত জন তিনি তাও জানতেন না । কোন হিসেবে তার ৩৭ টা ছেলে আর কোন হিসেবে ৪৫ টা ছেলে তিনি জন্ম দেন এসব মহিলাদের মাধ্যমে । তার বয়স যখন ১৮ তখন তার প্রথম সন্তান তুর্কি জন্ম গ্রহণ করেন । তার ও তার বংশধররা ইসলাম ও মানবতার দুষমণ এবং নারীর প্রতি সহিংস আচরণে বিশ্বাসী । উপরন্তু তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের মুসলিমদের উন্নায়ন-অগ্রগতি-প্রগতি-ঐক্য-সংহতি বিরোধীই নয়, বরং তারা মুসলিম অস্তিত্ত্ববিনাসী অমুসলিম শাসক সম্প্রদায় ও ইহুদী - খৃষ্টানদের তাবেদার ও দোষর । তারা অত্যাচারী, মদ্যপ, লম্পট, যৌন উম্মাদ । এরা ফিলিস্তিন, কাশ্মির, আরাকান, ফিলিপাইন, আফ্রিকা, পাতানী সহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য অভিশাপ স্বরুপ ।
অত্যাচারী এসব শাসক সম্পর্ক সহিহ হাদিস রয়েছে । হাদিসগুলোতে তাদের শয়তানের শিং বলে অভিহিত করা হয়েছে ।
শয়তানের শিং সম্পর্কিত বেশ কয়েকটা হাদিস আমি বোখারী শরীফের কিতাবুল ফিতানে পেয়েছি । তার মধ্যে দুইটা হলো :
১. হযরত ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেছেন : রাসুলুল্লাহ সা. দোয়া করেছেন - আল্লাহ আমাদের ইয়ামেনে বরকত দিন । কয়েকজন আমাদের নজদ -এ ও বরকত দিন বলতে বল্লেন । তিনি বল্লেন আমাদের সিরিয়া ( শাম )- তে বরকত দিন । আল্লাহ আমাদের সিরিয়া ও ইয়ামেনে বরকত দাও । পুন:রায় উপস্হিত লোকরা বল্লো : ইয়া রাসুলাল্লাহ । আমাদের নজদ এর জন্যও দুয়া করুন । তৃতীয় বারে তিনি বল্লেন, সেখানে তো ভূমিকম্প, ফিতনা এবং শয়তানের শিং উত্থিত হবে । হাদিস নং ৬৬০২ বোখারী শরীফ, কিতাবুল ফিতান
২. হযরত ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত । তিনি রাসুলুল্লাহ সা.-কে পূর্ব দিকে ফিরে (সৌদি শাসকদের কেন্দ্রীয় ভুমি নজদের দিকে ফিরে )বলতে শুনেছেন : সাবধান । ফিতনা এদিক হতে - যেদিক হতে শয়তানের শিং উদিত হবে । হাদিস নং ৬৬০১ বোখারী শরীফ, কিতাবুল ফিতান
(বাংলা অনুবাদের জন্য কৃতজ্ঞতা : মিনা বুক হাউজ, ৪৫ বাংলাবাজার ঢাকা, সহীহ বোখারী ১ হতে ১০ খন্ডে একত্রে, পৃষ্ঠা নং : ১০৪৩ পৃষ্ঠা ।)
বলা বাহুল্য ১৫শ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে যে সেই শয়তানের শিং আর কেউ নয় - সৌদি আরবের ওহাবী মতবাদ ও সৌদি শাসকরাই শয়তানের শিং । নবী সা. এর প্রতি বেয়াদবীমূলক আচরণ, সারা বিশ্বের স্বৈরাচারদের মদদ দান, মুসলিম শ্রমিক ভাই ও মুসলিম ব্যক্তিত্বদের প্রতিপক্ষ জ্ঞানে খাটো করে দেখা, যৌনবিকারগ্রস্হ আচরণ প্রদর্শন ও অমুসলিমদের দালালির কারণে সৌদি শাসক সম্প্রদায় ও সৌদি আরবের ওহাবী মতবাদ-কে শয়তানের শিং বলে অবিহিত করেছেন ইসলামী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মারুফ আল মাদানী আল আযহারী-সহ আরো অনেক ইসলামী ব্যক্তিত্ব ।
অনেকে বলেন, “আমাদের মক্কা মদিনার দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিৎ। যেমন - আমার দেশের নামায আর ওখানকার নামাযের পার্থক্য রয়েছে । তাছাড়া আমরা যেই মক্কার দিকে কিবলামুখি হয়ে নামায পড়ি, সেই কাবায় কেমনে আজান দেয়, কেমনে জানাযা পড়ে, কেন সেখানে মিলাদ পড়ে না, শবে বরাত পালন করে না, কেন নবীজির কবরে আতর নাই, গোলাপ জল নাই, মুমবাতি নাই, কেউ মারা গেলে কেন সেখানে শিরনী বিতরন নিষেধ, আরো অনেক কিছু যা এই দুইটি মসজিদে করা হচ্ছেনা আর আমরা বাংলাদেশে পালন করি।“
আমার মতে, এগুলো খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় । কারণ এগুলো লোকাচার । এগুলো আমাদের দেশের ঐতিহ্য হয়ে দাড়িয়েছে । কারণ আমাদের দেশের মুসলিম শাসকরা ছিল শিয়া ও ইসলাম প্রচারকরা ছিল সুফী ও হানাফি মাযহাব অনুসরণকারী । আমরা তাদের মাধ্যমে ইসলাম পেয়েছি । এজন্য সৌদি আরবের সাথে আমাদের ভিন্নতা । এক সময় সৌদি আরবের লোকরাই আমাদের দেশে এসে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পড়তো । তখন বাংলাদেশের রাজধানীর নাম ছিল সোনারগাও । আর তখনকার বিখ্যাত আলিম ছিলেন শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা রহ. এবং নুর কুতুবুল আলম রহ. ইত্যাদি । এক সময় বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী নৌবাহিনীর দেশ ও ধনী দেশ । কিন্তু সময় বদলেছে । এখন আমরা গরীব আর তারা ধনী । অথচ ১৯৫৩ সালের আগে বিদেশীদের হজ্জ্ব হতে প্রাপ্ত রাজস্ব দিয়ে এদেশ চলতো । কিন্তু প্রেটোলিয়াম এই দেশের ভাগ্যকে বদলে দিয়েছে ।
যেগুলোকে বাংলাদেশের ওহাবীরা বিদাত বলছে, সেগুলো ধর্মের আবহে লোকাচার । এগুলো খুব সহজে দুর হওয়ার বিষয়ও নয় । তবে মানুষের মধ্যে ইসলামের জ্ঞান প্রসারিত হলে এগুলো কমে আসবে । মক্কা-মদিনা মুসলিমদের পবিত্র স্হান । এগুলোর সাথে সারা বিশ্বের মুসলিমদের সম্পর্ক থাকবেই । তাই বলে অত্যাচারী, মদ্যপ, লম্পট, যৌন উম্মাদ,মুসলিমদের উন্নায়ন-অগ্রগতি-প্রগতি-ঐক্য-সংহতি বিরোধী, মুসলিম অস্তিত্ত্ববিনাসী অমুসলিম শাসক সম্প্রদায় ও ইহুদী - খৃষ্টানদের তাবেদার ও দোষরদের মুসলিমরা কোনভাবে সম্মান প্রদর্শন করতে বাধ্য নয় । এত দিন তারা সত্যিকার ইসলাম প্রচারের কথা বলে তাদের খারাপ দিকগুলো লুকিয়ে রেখেছিল । তাদের নিকশ কালো অন্ধকার দিক প্রকাশিত হয়েছে । আমাদের উচিত তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করা । অন্যথায় আমরা মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন, আল্লাহ সন্তোষ লাভকারী, দুনিয়াতে সম্মানিত ও আখিরাতে সফলকাম মুসলিম হতে পারবো না ।
ওহাবীদের দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রভাবিত ইসলামী বই পড়ার ফল কি হয়েছে তা বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্হার মেয়েদের দেখলেই বোঝা যায় । আমরা বুখারী শরীফ-সহ অন্য সব সহিহ হাদিসের গ্রন্হের কয়েক পৃষ্ঠা উল্টালেই দেখতে পাই : মেয়েরা সম্মুখ যুদ্ধ করেছে, যুদ্ধের মাঠে আহত লোকদের পানি পান করিয়েছে, সেবা করেছে, মেয়েরা যুদ্ধ করে অমুসলিমদের হত্যা করে অমুসলিমদের গলা কেটে মাথা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করেছে, মেয়েরা মসজিদে যেয়ে নিয়মিত নামাজ পড়েছে এবং বিভিন্ন সমাজিক অসংগতির ব্যাপারে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলেছে । কিন্তু বাংলাদেশের এসব সংগঠণের মেয়েরা সম্পূর্ন ব্যতিক্রম ।
সুতরাং সৌদি আরবের প্রচারিত ইসলাম মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. প্রবর্তিত ইসলাম নয় । এজন্য আমরা আমরা সৌদি আরবের ইসলাম বা ইসলাম সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি মানতে বাধ্য নই ।
বাংলাদেশের মেয়েরা প্রাণচঞ্চল, সদাহাস্যোজ্জ্বল এবং সাজগোজ করতে পছন্দ করে । তারা তাদের প্রতিভা-মেধা-যোগ্যতাকে বাস্তবে কাজে লাগাতে চায় । বাংলাদেশের মেয়েদের এই প্রবনতা সেই স্মরণাতীত কালের । বাংলাদেশের মেয়েরা স্বামীর প্রতি প্রচন্ড ভালবাসা প্রবন । স্বামীর সম্মান রাখা করার জন্য সখিনা নামক এক নারী মোঘল সম্রাজ্যের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে তার স্বামীর রাজ্যকে উদ্দার করে । অথচ ওহাবী ধর্মব্যবসায়ীরা মেয়েদের যুদ্ধ করা হারাম বলে ফাতওয়া দেয় । বাংলাদেশের ঢাকার মিরপুরের এই প্রাণ উচ্ছল মেয়েগুলো সাভাবিকভাবে হাসতে পারতো না , যদি না বাংলাদেশে সৌদি আরবের মতো ওহাবী মতবাদ প্রবলতর হতো ।
সৌদি আরবের শাসকদের ও উল্লেখিত আলিমদের দৃষ্টিভঙ্গি এক ও অভিন্ন । সঠিক ইসলাম চর্চা কোন দেশের উপর নির্ভর করে না । ইসলাম ব্যক্তি ও সমাজের জন্য । যে দেশ মুসলিম প্রধান নয় সে দেশে মুসলিম আছে ও মুসলিম সম্প্রদায় আছে । অবাদ তথ্য প্রবাহের যুগে কোন তথ্যই গোপন করা যায় না । সৌদি আরব এমন একটা দেশ, যে দেশকে মেয়েরা দুনিয়ার বুকে জাহান্নাম বলে মনে করে । তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ নেই । এমনকি মেয়েরা বিয়েও করতে পারে না । কারণ বাবা যদি চায় মেয়েকে ধনী পাত্র (যে কিনা মেয়ের বাবা-কে বিপুল পরিমান যৌতুক দিতে পারবে) খুজে বিয়ে দিতে তখনি মেয়েদের বিয়ের সুযোগ হয় । এভাবে একটা মেয়ে ৩৫ বছরের বেশী সময় ধরে অবিবাহিত থাকে । উপরন্তু তারা তাদের প্রয়োজনে তাদের বাড়ি হতে বের হতে পারে না । যদি তাদের বের হওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন তাদের ভাই অথবা বাবাকে সাথে নিয়ে বের হতে হয় । উপরন্তু তারা চরমভাবে নিকট আত্মীয় দ্বারা নির্যাতিত হয় । আপনারা চাইলে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক সাইটে এই দেশের নারীদের সাথে কথা বলে সৌদি আরব সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন । আর বাংলাদেশেও সৌদি আরবের অনেক নাগরিক বিভিন্ন কাজ ও পড়াশোনার সূত্রে বসবাস করেন । আপনি তাদের কাছ হতেও তথ্য পাবেন ।
অনেকে বলে থাকেন সৌদি আরবের মত কোরআনের আইন কার্যকর আছে । এই কথা মিথ্যা । কারণ ইসলাম রাজতন্ত্র ও বংশতন্ত্র অনুমোদন করে না । অথচ এই দেশের নাম রাজকীয় সৌদি আরব Kingdom of Saudi Arabia. এদেশের আলিমরা রাজতান্ত্রিত শাসন ব্যবস্হাকে ধ্যান জ্ঞান ও সাধনা বলে মনে করে ।কারণ এশাসন ব্যবস্হা তাদের প্রচন্ড বিত্ত ভৈবব ও মাত্রাতিরীক্ত সম্মান প্রদর্শনের ব্যবস্হা করেছে । তার বিনিময়ে তারা সৌদি রাজতন্ত্রের তাবেদারী করে এবং এমনকি তারা অমুসলিমদের দালালীও করে । http://bn.globalvoicesonline.org/2012/06/12/27757/
উপসংহার :
সৌদি আরবের হুজুরদের কোন কথা আমাদের অনুসরন করার দরকার নেই । কারন ওখানে মাত্র ৪/৫ টা আইন কোরআন অনুযায়ী চলে । তবে মক্কা মদিনা অপবিত্র নয় ! আল্লাহ পাক বলেছেন মক্কা (মসজিদ) বা মদিনা (মসজিদ) এর হেফাযতের দায়িত্ব আমার । সারা বিশ্বে যা কিছু হোক না কেন – এই দুই স্হান সুরক্ষিত থাকবে । এই দুই স্হান সৌদি আরবের দখলে বলে সৌদি আরবকে বা জামায়াত-শিবিরের মওদুদী দর্শন বা আহলে হাদিসদের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি মনে চলতে হবে – এই কথা ভিত্তিহীন । বরং আমাদের নৈতিক দায়িত্ব সৌদি আরব নামক দেশ হতে রাজতন্ত্র উৎখাত করা, এই দেশের নারী সমাজের মেধা-যোগ্যতা-প্রতিভা বিকাশের পথ খুলে দেওয়া এবং প্রাপ্ত তেল সম্পদ ও হজ্জের রাজস্বকে সমগ্র মুসলিম বিশ্বের জন্য ব্যবহার করা ।
আরো তথ্য :
" সৌদি-আরব নামের উৎস ও ইসরাইল গঠনে সৌদের ভূমিকা "
১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকারের অনুচর ও সেবাদাস আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ ব্রিটেনের অনুমতি নিয়ে হিজাজের নাম পরিবর্তন করে নিজ বংশের নাম অনুযায়ী এই বিশাল আরব ভূখণ্ডের নাম রাখে সৌদি আরব।
রক্তপাত, গণহত্যা ও প্রতারণার মাধ্যমে ইবনে সৌদ দখল করেছিল হিজাজ। এই দেশই (বর্তমান সৌদি আরব) বিশ্বের একমাত্র দেশ যার নামকরণ করা হয়েছে দেশটির সংখ্যালঘু একটি গোত্রের নাম অনুসারে।
আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ ছিল ‘নজদ’ নামক মরু অঞ্চলের অধিবাসী। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য সে ওয়াহাবি সম্প্রদায়ের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়। মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য ইংরেজদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই উগ্র মতবাদটির জন্ম দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হয়।
ব্রিটিশরা ওসমানি খেলাফত তথা অটোম্যান তুর্কি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য ইবনে সৌদকে অনুচর হিসেবে বেছে নেয় এবং এ জন্য তাকে প্রতি মাসে ৫ হাজার পাউন্ড স্টার্লিং ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করে।
তুরস্ক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হলে ইবনে সৌদের সাহস বেড়ে যায়। ফলে সে আরব অঞ্চলের নানা অংশে সেনা অভিযান চালাতে থাকে। ক্ষমতাসীন আলে-রশিদ গোত্রকে পরাজিত করার পর সৌদের বাহিনী ১৯২৫ সালে হিজাজে অভিযান চালায়। হিজাজের পবিত্র মক্কা ও মদীনা শহরসহ বন্দর শহর জেদ্দাহ, তায়েফ ও ইয়ানবু শহরে সৌদের বাহিনী অন্ততঃ বিশ-ত্রিশ হাজার মুসলমানকে হত্যা করেছিল।
মক্কা ও মদীনার পবিত্র মাজারগুলোর অবমাননা ও ধ্বংস সাধন ছিল সৌদের জঘন্য হঠকারিতার ঐতিহাসিক সাক্ষ্য। সৌদের বাহিনী ইয়েমেনের জাইদি শিয়া ইমামের শাসনাধীন নাজরান অঞ্চলসহ অন্যান্য অঞ্চল দখল করে। এর আগে তার বাহিনী আরব উপদ্বীপের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের শিয়া মুসলিম শেখ-শাসিত তেল-সমৃদ্ধ কয়েকটি স্বাধীন রাজ্যও দখল করেছিল।
এরপর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের আরেক অনুচর হিজাজের শরিফ হুসাইনকে পুরস্কার দেয়ার জন্য তার দুই পুত্র ফয়সল ও আবদুল্লাহকে যথাক্রমে ইরাক এবং নব-গঠিত জর্দান নামক দেশের শাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। এ অবস্থায় ব্রিটিশরা ইবনে সৌদকে রাজার উপাধি ব্যবহারের অনুমতি দেয় এবং তার দখল-করা অঞ্চলকে ‘সৌদি আরব’ হিসেবে ঘোষণা করারও অনুমতি দেয়। অবশ্য এইসব অনুমতি ব্রিটিশরা তখনই দেয় যখন ইবনে সৌদ এই প্রতিশ্রুতি দেয় যে সে ফিলিস্তিনে অবৈধ ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠার কোনো বিরোধিতা করবে না।
১৯১৭ সালের দোসরা নভেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যালফোর ফিলিস্তিনে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘোষণা ব্যালফোর ঘোষণা নামে ইতিহাসে খ্যাত। এ ঘোষণা দেয়ার আগে ব্রিটিশরা সৌদি রাজা আবদুল আজিজের কাছ থেকে লিখিত সম্মতিপত্র আদায় করেছিল। ওই চিঠিতে লেখা ছিল:
“আমি বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবনে আবদুর রহমান--ফয়সলের বংশধর ও সৌদের বংশধর-- হাজার বার স্বীকার করছি ও জেনেশুনে বলছি যে, মহান ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধি স্যার কুকাস-এর সামনে স্বীকারোক্তি করছি এই মর্মে যে, গরিব ইহুদিদেরকে বা অন্য কাউকে ব্রিটিশ সরকার যদি ‘ফিলিস্তিন’ দান করে দেন তাহলে এতে আমার কোনো ধরনের আপত্তি নেই। বস্তুত: আমি কিয়ামত পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের অভিমতের বাইরে যাব না।” (নাসিরুস সাইদ প্রণীত ‘আলে সৌদের ইতিহাস’ )
একবার (১৯৪৫ সালে) বাদশাহ আবদুল আজিজ সৌদ ইহুদিবাদী ইসরাইল গঠনের বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বসে। সঙ্গে সঙ্গে বা ততক্ষণাত ব্রিটিশ সরকার ও ইহুদিবাদীদের পক্ষে দু’জন প্রতিনিধি এসে বাদশাহ আবদুল আজিজের সঙ্গে দেখা করে এবং বাদশাহকে তার সম্পাদিত সম্মতি-পত্রটির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তখন বাদশাহ তাদের বলেছিল:
“ আমি ইহুদিদের স্বার্থে কার্যত যা করে যাব তার ওপর বিশ্বাস রাখবেন। কি বলছি তার দিকে লক্ষ্য করবেন না। কারণ, এ ধরনের কথা না বললে আমি (ক্ষমতায়) টিকে থাকতে পারব না।” বাদশাহর এই কথা শুনে ব্রিটিশ সরকারের ও ইহুদিবাদীদের প্রতিনিধি খুশি হয়ে ফিরে যায়। (নাসিরুস সাইদ লিখিত ‘আলে সৌদের ইতিহাস’, পৃ-৯৫৩)
১৯১৪ সালে স্বাক্ষরিত আল-আকির চুক্তি অনুযায়ী ইবনে সৌদ তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য দেয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হন। আর বাহরাইন ব্রিটিশ সরকারের কর্তৃত্বে থাকবে বলেও সৌদ কথা দেয় এবং উপসাগরীয় এলাকায় ব্রিটিশ নাগরিক ও ইংরেজদের ব্যবসা বাণিজ্যের রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলেও ওই চুক্তিতে অঙ্গীকার করে। বিনিময়ে ব্রিটিশ সরকার ইবনে সৌদকে সমর্থন দেয়ার ও যে কোনো পক্ষ থেকে তার ওপর আক্রমণ করা হলে তা প্রতিহত করবে বলে ওয়াদা দেয়। (‘সরওয়াতুস সৌদিয়া’, পৃ-৩৯ এবং ‘ব্রিটিশ ও ইবনে সৌদ’, পৃ-২০)
এভাবে সে যুগে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের প্রতীক ও শেষ ভরসাস্থল হিসেবে বিবেচিত তুর্কি খেলাফতের ধ্বংস সাধনে সৌদি রাজা আবদুল আজিজ ও ব্রিটেনের যৌথ ষড়যন্ত্রটি বাস্তবায়িত হয়েছিল। সৌদের অনুগত ওয়াহাবি সেনারা তুর্কি মুসলমানদের গুলি করে হত্যা করেছিল এবং রক্ষা করেছিল ব্রিটিশ নাগরিকদের ও তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে। তাই এটা স্পষ্ট যে সৌদি আরব নামক রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সৃষ্টিতে ব্রিটেনের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ। অথচ ইসলাম রাজতন্ত্র সমর্থন করে না বলে ইসলাম বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন।
উল্লেখ্য, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুর্কি খেলাফতের বিরুদ্ধে ব্রিটেন সৌদিদেরকে তথা সৌদি বংশের লোকদের ব্যবহার করে। ফলে তুর্কি সরকার ওয়াহাবিদের রাজধানী ‘দারইয়া’ শহরটি দখল করে নেয়। আর সৌদি সর্দার আমির আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করে প্রথমে কায়রোতে ও পরে তুরস্কে পাঠিয়ে দেন মিশরের শাসক মুহাম্মাদ আলী পাশা। তুর্কি খেলাফতের সরকার আমির আবদুল্লাহকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে।
কিন্তু বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের অবস্থা দুর্বল হয়ে গেলে ব্রিটিশরা আবারও সৌদ গোত্রের লোকদের নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ব্রিটেন ইবনে সৌদের সঙ্গে কুখ্যাত ‘দারান’ চুক্তি স্বাক্ষর করে ১৯১৫ সালে। কুয়েতের শেখ জাবির আল সাবাহ ছিল সে সময় ব্রিটিশদের আরেক দালাল। ব্রিটিশরা এই দালালের মাধ্যমে ইবনে সৌদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটিশ সরকার সৌদ-পরিবারকে প্রতি বছর ষাট হাজার পাউন্ড ভাতা দিতে থাকে। পরে এ ভাতা বাড়িয়ে এক লাখ পাউন্ড করা হয়। এ ছাড়া তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য সৌদ গোষ্ঠীকে তিন হাজার রাইফেল ও তিনটি মেশিনগান উপহার দেয় ব্রিটেন। (সূত্র: নজদ ও হিজাজের ইতিহাস, পৃ-২১০)
ব্রিটিশ সরকার আবদুল আজিজ ইবনে সৌদের ক্ষমতা গ্রহণের উতসবে পাঠিয়েছিল স্যার কুকাসকে প্রতিনিধি হিসেবে। রাজা উপাধিতে বিভূষিত করে কুকাস তাকে বলেছিল, “হে আবদুল আজিজ, আপনি শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।”
উত্তরে রাজা বলেছিল, “আপনারাই আমার এ ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি করেছেন ও এ সম্মান দান করেছেন। যদি মহান ব্রিটিশ সাম্রাজ্য না থাকত তাহলে এখানে আবদুল আজিজ আল-সৌদ নামে কেউ আছে বলেই জানত না। আমি তো আপনাদের (ব্রিটিশদের) মাধ্যমেই ‘আমির আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ’ শীর্ষক খেতাবটি অর্জন করতে পেরেছি। আমি আপনাদের এই মহানুভবতা আজীবন ভুলব না। আর আমার বিগত আচরণ ছিল আপনাদের সেবক ও ফরমানবরদার (গোলাম) হিসেবে আপনাদের ইচ্ছাগুলো বাস্তবায়ন করা।” ওই উতসবে কুকাস ব্রিটিশ সরকারের দেয়া শাহী তামগা বা মেডেল রাজা আজিজের গলায় পরিয়ে দেয়। কুকাস বলে যায়: “অচিরেই আমরা আপনাকে হিজাজ ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলোর বাদশাহ বলেও ঘোষণা করব এবং তখন হিজাজকে ‘সৌদি সাম্রাজ্য’ বলে ঘোষণা করা হবে।“ এ কথা শুনে রাজা আজিজ স্যার কুকাসের কপালে চুমু খায় ও বলে: "আল্লাহ যেন আমাদেরকে (সৌদিদেরকে) আপনাদের খেদমত (দাসত্ব) করার ও ব্রিটিশ সরকারের সেবা (গোলামি) করার তৌফিক দেন।" ( মুহাম্মাদ আলী সাইদ লিখিত ‘ব্রিটিশ ও ইবনে সৌদ’, পৃ-২৬)
বিষয়: বিবিধ
৬৭৭৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দেশের কি হবে?
আমি অনুরাগ ও বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোন কিছু বলি না ও লিখি না । আমি সব সময় সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপস্হাপন করি । আমি আমার লেখার মাধ্যমে লোকদের সচেতন করার চেষ্টা করি ।
আল্লাহ চাহেত আমাদের দেশের অবস্হা ভাল হবে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন